ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ

বাংলাদেশের একটি মিলিটারি উচ্চ বিদ্যালয়

ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) সর্বপ্রথম ক্যাডেট কলেজ।[] ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পূর্বনাম ছিল 'ইস্ট পাকিস্তান ক্যাডেট কলেজ'। এটি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে অবস্থিত।

ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ এর লোগো
ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ এর প্রধান ফটক
অবস্থান
মানচিত্র

,
বাংলাদেশ
,
৫৪০৪
স্থানাঙ্ক২২°২৪′০০″ উত্তর ৯১°৪৫′৪৫″ পূর্ব / ২২.৪০০০° উত্তর ৯১.৭৬২৪° পূর্ব / 22.4000; 91.7624
তথ্য
প্রাক্তন নামইস্ট পাকিস্তান ক্যাডেট কলেজ
নীতিবাক্যকথা নয় কাজ
প্রতিষ্ঠাকাল২৮ এপ্রিল ১৯৫৮; ৬৬ বছর আগে (1958-04-28)
বিদ্যালয় বোর্ডমাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, চট্টগ্রাম
ইআইআইএন১০৫১১৬
অধ্যক্ষমাহিনূর আক্তার (ভারপ্রাপ্ত)
অ্যাডজুট্যান্টমেজর জায়েদ সাদ আল রাব্বি
ভাষাইংরেজী
আয়তন১৮৫ একর (৭,৫০,০০০ মি)
রং     পিকটন নীল
প্রথম অধ্যক্ষস্যার উইলিয়াম মরিস ব্রাউন
ওয়েবসাইটfcc.army.mil.bd

অবস্থান

সম্পাদনা
 
প্রবেশদ্বার

কলেজটি চট্টগ্রাম শহরের অদূরে ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। এই কলেজ থেকে ভাটিয়ারিতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীর দূরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার। কলেজের অদূরেই রয়েছে বঙ্গোপসাগর।

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৫৮ সালের ২৮ এপ্রিল নিউজিল্যান্ডের নাগরিক উইলিয়াম মরিস ব্রাউনের হাত ধরে এ কলেজের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত এটি 'ইস্ট পাকিস্তান ক্যাডেট কলেজ' নামে পরিচিত ছিল। প্রাথমিকভাবে সেনাবাহিনীর জন্য যোগ্য কর্মকর্তা তৈরি করাই ছিল এ কলেজ প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য।

পরিচ্ছদ

সম্পাদনা

সকল শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে মিলিটারি একাডেমীর ক্যাডেটদের মত খাকি ইউনিফর্ম পরিধান করে, সকালে পিটি এবং বিকেলে খেলাধুলার সময় নেভী ব্লু হাফপ্যান্ট ও সবার জন্য নির্দিষ্ট টি-শার্ট পরে এবং রাতে পড়াশুনার সময় সাদা ফুলশার্ট, কালো ফুলপ্যান্ট এবং সবার জন্যে নির্দিষ্ট করা একটি টাই পড়ে। ঋতুভেদে ইউনিফর্মের প্যাটার্ন বদলানো হয়। যেমন : গরমকালে জলপাই রং এর হাফ শার্ট ও শীতকালে খাকি ইউনিফর্মের সাথে খাকি সোয়েটার এবং রাতে পড়াশুনার সময় কলেজ মনোগ্রাম সংবলিত ব্লেজার ব্যবহার করা হয়। শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দও দায়িত্বকালীন সময়ে নির্দিষ্ট পোশাক পরিধান করেন।

অবকাঠামো

সম্পাদনা

জাদুঘর

সম্পাদনা

কলেজ অডিটোরিয়ামের পেছনে কলেজ মিউজিয়ামটির অবস্থান। জাদুঘরের অন্যান্য জিনিসের মধ্যে প্রাক্তন ক্যাডেটদের ছবি ও তাদের নামের তালিকা উল্লেখযোগ্য।

ডাইনিং হল

সম্পাদনা

ডাইনিং হলটির নামকরণ করা হয়েছে কলেজের প্রথম অধ্যক্ষের নামানুসারে "কর্নেল ব্রাউন হল"। এখানে প্রতিদিন পাঁচবার খাবার পরিবেশন করা হয়। ডাইনিং হলে খাবার গ্রহণের সময় ক্যাডেটরা বিশেষ শিষ্টাচার মেনে চলে।

পাঠাগার

সম্পাদনা

কলেজ পাঠাগারটি রেফারেন্স ও আর্কাইভের দিক থেকে দেশের অন্যতম একটি পাঠাগার। এখানে ১০০০০ এরও অধিক সংখ্যক বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]। পাঠাগারটি "রউফ পাঠাগার" নামে পরিচিত। এর নামকরণ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের নামে।

হাউজসমূহ

সম্পাদনা

ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের চারটি হাউজ। প্রতি হাউজের নিজস্ব রং, প্রতীক এবং মূলনীতি রয়েছে।

রবীন্দ্র হাউস

সম্পাদনা
  • প্রাক্তন বাবর হাউস, বর্তমান রবীন্দ্র হাউস।
  • হাউস রঙ হলুদ
  • হাউস প্রতীক সিংহ
  • হাউস মূলনীতি "লড়বো মোরা ছাড়বো না" ।

নজরুল হাউস

সম্পাদনা
  • প্রাক্তন শাহজাহান হাউস, বর্তমান নজরুল হাউস
  • হাউস রঙ নীল
  • হাউস প্রতীক জাগুয়ার
  • হাউস মূলনীতি "মোরা নির্ভীক চির দুর্জয়"।

ফজলুল হক হাউস

সম্পাদনা
  • প্রাক্তন আইয়ুব হাউস, বর্তমান ফজলুল হক হাউস
  • হাউস রঙ সবুজ
  • হাউস প্রতীক প্যানথার
  • হাউস মূলনীতি "মরার আগে মরব না"।

শহীদুল্লাহ হাউস

সম্পাদনা
  • প্রাক্তন আকবর হাউস, বর্তমান শহীদুল্লাহ হাউস
  • হাউস রঙ লাল
  • হাউস প্রতীক বাঘ
  • হাউস মূলনীতি "মোরা অক্ষয় মোরা অব্যয়"।

কৃতি শিক্ষার্থী

সম্পাদনা

মুক্তিযুদ্ধে ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ

সম্পাদনা

ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের নিম্নোক্ত প্রাক্তন ক্যাডেটরা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেন:

  • মেজর আবদুল খালেক, ১ম ব্যাচ
  • ক্যাপ্টেন এ. কে. এম নুরুল আবসার, ২য় ব্যাচ
  • মো. মোশাররফ হোসেন, ৩য় ব্যাচ
  • ল্যাফটেন্যান্ট মো. আনোয়ার হোসেন, বীর উত্তম, ৭ম ব্যাচ
  • বদিউল আলম, বীর বিক্রম, ৭ম ব্যাচ
  • ক্যাপ্টেন শামসুল হুদা, ৭ম ব্যাচ
  • মুফতি মুহাম্মদ কাসেদ, ৮ম ব্যাচ
  • সে. লে. রফিক আহমেদ সরকার, ১০ম ব্যাচ

এছাড়া ফৌজদারহাটের নিম্নোক্ত ক্যাডেটরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন যাদের অনেকেই খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা :

  • উইং কমোডর (অব.) এম. ওয়ালি উল্লাহ, ১ম ব্যাচ
  • মো. আবদুর রব, ২য় ব্যাচ
  • কর্ণেল (অব.) আবু তাহের সালাউদ্দিন, ৪র্থ ব্যাচ
  • ড. এম মুজিবুর রহমান, পি এইচ.ডি, ৪র্থ ব্যাচ
  • লে. জেনারেল (অব.) আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম, ৫ম ব্যাচ
  • মেজর মো. রওশন ইয়াজদানি ভূঁইয়া, মৃত, ৬ষ্ঠ ব্যাচ
  • মেজর জেনারেল মো. আশরাফ হোসেইন, মৃত, ৬ষ্ঠ ব্যাচ
  • কামরুল হক, বীর বিক্রম, ৭ম ব্যাচ
  • কাজী মুহাম্মদ আলী আনোয়ার, ৮ম ব্যাচ
  • এস. এম ইকবাল রশিদ, ৮ম ব্যাচ
  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সৈয়দ আহমেদ, বীর প্রতিক, ৮ম ব্যাচ
  • মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবারাহিম, ৯ম ব্যাচ
 
শ্রেণীকক্ষে ক্যাডেটরা
  • লে. কর্ণেল (অব.) মীর মুখলেসুর রহমান, ৯ম ব্যাচ
  • সৈয়দ আবদুর রাশেদ, ৯ম ব্যাচ
  • ড. আজাদুল ইসলাম, পি এইচ.ডি, ১০ম ব্যাচ
  • ড. কায়সার এম হামিদুল হক, পি এইচ.ডি, ১০ম ব্যাচ
  • ক্যাপ্টেন (অব.) হুমায়ুন কবির, বীর প্রতিক, ১০ম ব্যাচ
  • মেজর জেনারেল (অব.) ইমামুজ্জামান, বীর বিক্রম, ১০ম ব্যাচ
  • ইশরাক আহমেদ, ১০ম ব্যাচ
  • মেজর (অব.) হাশমি মুস্তফা কামাল, ১০ম ব্যাচ
  • লে. কর্ণেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ এ জহির, বীর প্রতিক, ১০ম ব্যাচ
  • এ এফ এম এ হারিস, ১১তম ব্যাচ
  • মেজর (অব.) সৈয়দ মুনিবুর রহমান, ১১তম ব্যাচ
  • মেজর (অব.) দিদার আতোয়ার হুসেইন, ১১তম ব্যাচ
  • মেজর (অব.) সৈয়দ মিজানুর রহমান, ১১তম ব্যাচ
  • ড. শাহরিয়ার হুদা, পি এইচ.ডি, ১১তম ব্যাচ
  • ক্যাপ্টেন (অব.) আহসান আজিজ শেলী, ১২তম ব্যাচ
  • ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রহিম, ১২তম ব্যাচ
  • এম ইবরাহিম আদিল খান, ১২তম ব্যাচ
  • আনিস কাদেরী, ১৩তম ব্যাচ
  • নজরুল কামাল, ১৩তম ব্যাচ
  • এ কে এম শওকত আমিন, ১৩তম ব্যাচ
  • বেলাল উদ্দিন, ১৩তম ব্যাচ
  • মুহাম্মদ আবদুর রহিম, ১৪তম ব্যাচ
  • কর্ণেল (অব.) মাহমুদ রহমান চৌধুরী, ১৫তম ব্যাচ
  • লে. জেনারেল মোল্লাহ ফজলে আকবর, ১৫তম ব্যাচ

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুন ২০১১ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১৪-০৩-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৬-১৮ 

গ্রন্থপঞ্জি

সম্পাদনা
  • প্রসপেক্টাস - ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ
  • বার্ষিকী ২০০১ - ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ
  • বার্ষিকী ১৯৯৯ - ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ
  • বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলীলপত্র - তথ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকার

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা