ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ

ফেনী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত বধ্যভূমি ও স্মৃতিসৌধ

ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি হলো ফেনী সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে অবস্থিত একটি বধ্যভূমি, গণকবরস্মৃতিসৌধবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসররা এই স্থানটিকে গণহত্যা ও নির্যাতনের কাজে ব্যবহার করত।[]

ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
অবস্থানফেনী সরকারি কলেজ, ফেনী
স্থানাঙ্ক২৩°০০′৪২″ উত্তর ৯১°২৪′১৪″ পূর্ব / ২৩.০১১৫৮৫° উত্তর ৯১.৪০৩৮৫২° পূর্ব / 23.011585; 91.403852
অঞ্চলপ্রায় ১.৫ একক[]
স্থপতিভেক্টর প্লিন্থ, চট্টগ্রাম[]
ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশে অবস্থান

প্রেক্ষাপট

সম্পাদনা

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় দোসররা ফেনী সরকারি কলেজ মাঠকে গণহত্যা ও নির্যাতনের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে।[] তারা স্বাধীনতাকামী বাঙালিদের[] এখানে ধরে আনে, নির্যাতন করে এবং হত্যার পর মৃতদেহ মাঠের একপাশে পুঁতে ফেলে।[]

৬ ডিসেম্বর তারিখে ফেনী মুক্ত হওয়ার পর মানুষ তাদের নিখোঁজ আত্মীয়ের খোঁজে এখানে আসে এবং মৃতদেহ খুঁজে পায়।[][] কিছু সদ্যমৃত ব্যক্তির দেহও এখানে পাওয়া যায়। এই বধ্যভূমিতে নিহত মানুষের প্রকৃত সংখ্যা জানা যায় না। তবে ধারণা করা হয়, অন্তত পাঁচশো মানুষকে এখানে হত্যা করা হয়।[][]

স্মৃতিসৌধ নির্মাণ

সম্পাদনা

২০২২ সালে বধ্যভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং এই উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করা হয়৷ ৩০ আগস্ট স্থানীয় সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং চট্টগ্রাম-ভিত্তিক স্থাপত্য প্রতিষ্ঠান ভেক্টর প্লিন্থকে এই স্মৃতিসৌধের নকশা করতে নিযুক্ত করা হয়।[]

স্থাপত্যশৈলী

সম্পাদনা

ফেনী সরকারি কলেজ মাঠের দক্ষিণ দিকে ১.৫ একর জায়গায় স্মৃতিসৌধটি অবস্থিত।[] স্মৃতিসৌধের দুই পাশে গোলপোস্টের মতো দুইটি উঁচু দেওয়াল রয়েছে, যা “নিরব বেষ্টনী” হিসেবে প্রতীকায়ন করে। যুদ্ধকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনী কলেজ মাঠের গোলপোস্টে ঝুলিয়ে নির্যাতন ও হত্যা করত, এই দেওয়ালটি তার প্রতীকায়ন।[] স্মৃতিসৌধের পেছনের দেওয়ালটি বন্দুকের গুলিতে ঝাঁঝরা হওয়াকে নির্দেশ করে। উপর থেকে ঝুলন্ত ছয়টি সিলিন্ডার আকৃতির কাঠামো অমর শহীদের চেতনা, জাগরণ, সংগ্রাম, বেদনা, জয়, স্বাধীনতা গৌরবকে নির্দেশ করে। নিচ দিয়ে প্রবাহিত লালরঙের ধারা স্বাধীনতা যুদ্ধের রক্তপ্রবাহকে ইঙ্গিত করে।[][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ফেনী কলেজ বধ্যভূমিতে নির্মিতব্য স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শনে জনপ্রশাসন সচিব"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৩ জানুয়ারি ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৪ 
  2. "ফেনীতে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ"সময় টিভি। ১৫ নভেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৪ 
  3. "ফেনী কলেজ বধ্যভূমি"সংগ্রামের নোটবুক। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুন ২০২৪ 
  4. বিশ্বাস, সুকুমার (২০০০)। "নোয়াখালী"। একাত্তরের বধ্যভূমি ও গণকবর (৪র্থ সংস্করণ)। ঢাকা: অনুপম প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ১৪৪। 
  5. "ফেনী সরকারি কলেজ বধ্যভূমিতে নির্মিত হচ্ছে স্মৃতিস্তম্ভ"বাসস। ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০২৪ 
  6. "A memorial to the Bangladeshi Liberation War subverts the monumental"স্টির ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০২৪