ফিদা

২০০৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্র

ফিদা (হিন্দি: फ़िदा; জাপানি: মোহগ্রস্ত) হল ২০০৪ সালের ২০ অগস্ট মুক্তিপ্রাপ্ত একটি ভারতীয় হিন্দি রোম্যান্টিক থ্রিলার চলচ্চিত্রকেন ঘোষ পরিচালিত এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন শাহিদ কপূর, ফারদিন খানকারীনা কাপুর

ফিদা
থিয়েট্রিক্যাল রিলিজ পোস্টার
Fida
পরিচালককেন ঘোষ
প্রযোজকরমেশ তৌরানি
কুমার তৌরানি
রচয়িতাকিরণ কোটরিয়াল (সংলাপ)
চিত্রনাট্যকারললিত মহাজন
সানি মহাজন
কাহিনিকারললিত মহাজন
সানি মহাজন
শ্রেষ্ঠাংশেফারদিন খান
শাহিদ কপূর
কারীনা কাপুর
সুরকারগান:
অনু মালিক
নেপথ্য সংগীত:
রাজু সিং
চিত্রগ্রাহকঅমিত রায়
সম্পাদকভি. এন. মায়েকর
পরিবেশকটিপস মিউজিক ফিল্মস
মুক্তি
  • ২০ আগস্ট ২০০৪ (2004-08-20)
স্থিতিকাল১২০ মিনিট
দেশভারত
ভাষাহিন্দি
নির্মাণব্যয়১০ কোটি টাকা[১]
আয়১৬.৯ কোটি টাকা[১]

কাহিনি-সারাংশ সম্পাদনা

কেউ একজন এক ইন্টারনেট চোরের সাহায্যে বাবু আন্না (অখিলেন্দ্র মিশ্র) নামে এক আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন সহ অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে দেয়। পুলিশ চোরের কোনও হদিস পায় না। এদিকে আন্নাও প্রতিশোধ নিতে বদ্ধপরিকর হয়। অন্য একটি গল্পে দেখা যায়, জয় মালহোত্রা (শাহিদ কপূর) তার ঘনিষ্ঠতম বন্ধু সোনিয়ার (কিম শর্মা) সঙ্গে বাস করে। নেহা মেহরার (করিনা কপূর) সঙ্গে দেখা হওয়ার পরই জয় তার প্রেমে পড়ে যায়। প্রথমে সে জয়কে প্রত্যাখ্যান করে। তাতে জয় আত্মহত্যার চেষ্টা করে। কিন্তু নেহা জয়ের এই কাজের জন্য সোনিয়াকে কঠোর শাস্তি দেয়। তখন নেহাও জয়ের প্রেমে পড়ে যায়।

একদিন একটি ফোন কল পাওয়ার পর নেহা গলায় দড়ি দিতে যায়। সেই সময় জয় তাকে দেখে ফেলে। নেহা তাকে বলে যে, তার বাবা মৃত্যুর আগে বাবু আন্নার অন্ধকার জগৎ থেকে প্রচুর টাকা ধার করেছিলেন। সেই টাকা শোধ করার জন্য তিনি হ্যাকারদের সেই দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন, যে দলটি সেই ইন্টারনেটে চুরির জন্য দায়ী। তার মৃত্যুর পর বাবু আন্নার দলবল টাকা আদায়ের জন্য নেহার পিছু ধাওয়া করে। যথেষ্ট অর্থ জোগাড়ের জন্য জয় ও নেহা তাদের অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রির চেষ্টা করে। কিন্তু কোনও ফল হয় না। এক মক্কেলের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর জয়ের মনে হয় যে, ব্যাংক ডাকাতি করতে প্রয়োজনীয় টাকা উঠে আসতে পারে। ব্যাংকে বিক্রম সিং (ফারদিন খান) নামে এক ধনী ব্যক্তিকে প্রচুর টাকা তুলতে দেখে সে ঠিক করে ব্যাংক ডাকাতির বদলে সে তার বাড়িতে চুরি করবে। কিন্তু জয় তার বাড়িতে ঢুকলে সে জয়কে হাতেনাতে ধরে ফেলে।

জয়কে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে বিক্রম তার কাছে তার কাজের ব্যাখ্যা দাবি করে। সব কিছু শুনে বিক্রম বলে যে, আসলে ইন্টারনেটে চুরির হ্যাকার সে নিজেই। কিন্তু সে জয়কে সাহায্য করতে রাজি হয়। বিনিময়ে চুরির দায় জয়কে নিজের ঘাড়ে নিতে হবে। জয় রাজি হয়ে যায়। তারপর নেহাকে টাকা এনে দিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। পুলিশ যখন তাকে আদালতে নিয়ে যাচ্ছিল, সেই সময় আন্নার দলবল জয়কে অপহরণ করতে তাদের উপর হামলা চালায়। এর ফলে পুলিশ ও দুর্বৃত্তের দলের মধ্যে গোলাগুলি চলে। সেই সুযোগে জয় পালিয়ে নেহার অ্যাপার্টমেন্টে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়ে সে দেখে নেহা ও বিক্রম তার জন্য অপেক্ষা করছে। তারা যে সব টাকা চুরির জন্য জয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে এবং নেহার ভালোবাসা ছিল তাকে কারারুদ্ধ করার একটা ছল মাত্র, সে কথা জানতে পেরে জয় ভয় পেয়ে যায়।

জয় অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে পালায়। কিন্তু এক পুলিশ অফিসারের গুলি খেয়ে সে ট্রেন থেকে পড়ে যায়। তার দেহ পাওয়া না গেলেও, তাকে মৃত বলেই ধরে নেওয়া হয়। দুই মাস পরে নেহা ও বিক্রম এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির ফোন পেতে শুরু করে। নেহার স্থির বিশ্বাস হয় যে, জয়ই ফোন করছে এবং সে এখনও জীবিত আছে। জয় সত্যিই জীবিত। সে নেহা ও বিক্রমের উপর প্রতিশোধ নিতে চাইছিল।

জয় বিক্রম ও নেহার জীবন বিষময় করে তোলে। একদিন নেহা ও বিক্রম সিনেমা দেখতে গিয়েছিল। সেখানে টয়লেটে বিক্রম নেহাকে গলায় ফাঁস জড়িত অবস্থায় দেখতে পায়। নেহা জানায় যে জয় জীবিত। বিক্রম রেগে জয়কে খুঁজে বের করে এবং মারধর করে ভয় দেখায় যে তাদের জীবনে আবার ফিরে এলে সে জয়কে খুন করে ফেলবে। বিক্রম বাবু আন্নাকেও জয়ের কথা জানিয়ে দেয়। কিন্তু তাতে জয়কে দমানো যায় না। পরে সে নেহাকে অপহরণ করে বিক্রমকে ব্ল্যাকমেইল করতে শুরু করে। এর মাধ্যমে সে বিক্রমকে পুলিশের কাছে ধরা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। বিক্রম রাজি হয় এবং তাকে নিয়ে আসা হয় নেহার কাছে। যদিও মাঝপথে তাদের তিন জনকেই বাবু আন্না ও তার দলবল বন্দী করে সব টাকা দাবি করে। জয় চালাকি করে আন্নাকে বিভ্রান্ত করার জন্য বিক্রমের উপর জোর খাটিয়ে সব টাকা আন্নার অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিতে বাদ্য করে। তারপর আন্না ও তার দলবলকে অরক্ষিত অবস্থায় আক্রমণ করে তাদের শেষ করে দেয় দু’জনে।

মারামারির সময় জয় বিক্রমকে কোণঠাসা করে ফেলে। কিন্তু জয় শেষ পর্যন্ত তাকে কাবু করতে সক্ষম হয়। যদিও নেহা পিছন থেকে জয়কে প্রচণ্ড জোরে আঘাত করে। সেই সুযোগে বিক্রম জয়কে গুলি করে। জয় যখন মারাত্মক জখম হয়ে কাতরাচ্ছিল, তখন বিক্রম ও নেহা তাকে ব্যঙ্গ করতে থাকে। কিন্তু দু’জনকে হতবুদ্ধি করে দিয়ে জয় বাবু আন্নার বন্দুকটি নিয়ে উঠে দাঁড়ায় এবং নেহার কপালে গুলি করে। তৎক্ষণাৎ নেহার মৃত্যু ঘটে। বিক্রম ভয় পেয়ে যায়। জয়ে পড়ে যায় এবং সব ঠিক করে দিয়েছে বলে দম্ভোক্তি করে। শেষে তার মৃত্যু ঘটে। বিক্রম একা নেহার মৃতদেহের উপর পড়ে বিলাপ করতে থাকে। পরে একটি সংবাদ প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় যে কেউ মিশনারি অফ চ্যারিটি তহবিলে প্রচুর টাকা দান করেছে। তারপরই বিক্রমকে একটি নৌকায় করে চলে যেতে দেখা যায়। এইভাবে বোঝানো হয় যে, বাবু আন্নার সব টাকা বিক্রম দান করেছে।

কলাকুশলী সম্পাদনা

সংগীত সম্পাদনা

এই ছবির সাউন্ডট্র্যাক, বিশেষত "নজর নজর" গানটি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়। ভারতীয় বাণিজ্যিক ওয়েবসাইট বক্স অফিস ইন্ডিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই ছবির সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবামের বিক্রি প্রায় ১৪,০০,০০০ এবং এটি ছিল সেই বছর দশম সর্বাধিক বিক্রীত অ্যালবাম।[২]

# শিরোনাম শিল্পী(বৃন্দ)
"ম্যায়নে জিসকো চাহা মিল গয়া" সোনু নিগম, আলিশা চিনাই
"আজা বে মাহি" উদিত নারায়ণ, অলকা যাজ্ঞিক
"নজর নজর" উদিত নারায়ণ, স্বপ্না মুখোপাধ্যায়
"দিল মেরে না আউর ইন্তেজার কর" উদিত নারায়ণ, অলকা যাজ্ঞিক
"এক তু হ্যায়" অলকা যাজ্ঞিক, উদিত নারায়ণ
"ইয়ে দিল জিগর ঝুকি নজর" কবিতা কৃষ্ণমূর্তি, উদিত নারায়ণ
"আজ কহো সনম জিতনা প্যার করু তুমহে উৎনা" কুমার শানু, অলকা যাজ্ঞিক

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. https://boxofficeindia.com/movie.php?movieid=466
  2. "Music Hits 2000–2009 (Figures in Units)"Box Office India। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা