ফাতহুল মুলহিম

শাব্বির আহমদ উসমানির বই

ফাতহুল মুলহিম বিশারহি সহীহিল ইমাম মুসলিম (আরবি: فتح الملهم بشرح صحيح الإمام مسلم) শাব্বির আহমদ উসমানির আরবি ভাষায় রচিত সহীহ মুসলিমের একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এটি সহীহ মুসলিমের সেরা ব্যাখ্যাগ্রন্থের অন্যতম।[] তিনি ১৯১৪ সাল থেকে গ্রন্থটি রচনার কাজ শুরু করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি গ্রন্থটির ৩ খণ্ড রচনা করতে পেরেছিলেন। ১৯৩৩ ও ১৯৩৫ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় এবং ১৯৩৮ সালে গ্রন্থটির তৃতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয়। তারপর তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে যান এবং ১৯৪৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এটি হানাফি মাযহাবের আলেম দ্বারা লিখিত সহীহ মুসলিমের সর্বোচ্চ মর্যাদার ব্যাখ্যাগ্রন্থ এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বইগুলোর মধ্যে অন্যতম বিবেচিত হয়।[] শাব্বির আহমদ উসমানির মৃত্যুর পর মুহাম্মদ তাকি উসমানি গ্রন্থটির বাকি অংশ সমাপ্ত করেন এবং তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম নামে প্রকাশ করেন।[]

ফাতহুল মুলহিম বিশারহি সহীহিল ইমাম মুসলিম
দারুল কলম দামেস্ক, ২০০৬ সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকশাব্বির আহমদ উসমানি
মূল শিরোনামআরবি: فتح الملهم بشرح صحيح الإمام مسلم
দেশব্রিটিশ ভারত
ভাষাআরবি
বিষয়হাদিস
প্রকাশিত১৯৩৩ — ১৯৩৮
প্রকাশকমদিনা প্রেস, বিজনোর, বুলন্দ প্রেস, জলন্ধর
মিডিয়া ধরনশক্তমলাট
ওসিএলসি৫২৮৩১২৫০
এলসি শ্রেণীবিপি১৩৫.এ১৪৮ ইউ৮২ ১৯৮৯

বর্ণনা

সম্পাদনা

হানাফি ফকিহ বদরুদ্দিন আইনি সহীহ বুখারীর ব্যাখ্যা লিখলেও হানাফি মাযহাবের আলেমদের মধ্যে কেউ সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যা রচনা করে নি। এই শূণ্যস্থানটি পূরণার্থে শাব্বির আহমদ উসমানি ফাতহুল মুলহিম রচনায় হাত দেন।[] গবেষণায় জানা যায়, তিনি ১৯১৬ সালের পূর্বেই গ্রন্থটি রচনার কাজ শুরু করেন। তার লেখা থেকে বুঝা যায়, তিনি ১৯১৪ থেকে গ্রন্থটি রচনা শুরু করেন।[] ৫ খণ্ডে লেখার ইচ্ছা থাকলেও তিনি ৩ খণ্ড রচনা করতে পেরেছিলেন। ১৯৩৩ ও ১৯৩৫ সালে বিজনোরের মদিনা প্রেস থেকে গ্রন্থটির প্রথম ও দ্বিতীয় এবং ১৯৩৮ সালে জলন্ধরের বুলন্দ প্রেস থেকে এর তৃতীয় খণ্ড প্রকাশিত হয়।[] প্রকাশের পর গ্রন্থটি বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে, অল্প সময়ে এর ৩টি সংস্করণ বের হয়।[] গ্রন্থটির শুরুতে তিনি ১০৮ পৃষ্ঠার একটি দীর্ঘ ভূমিকা রচনা করেন যেখানে তিনি হাদিস ও তার বইয়ের বিশেষত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি প্রতিটি সমস্যার মধ্যে চার ইমামের বক্তব্য উল্লেখ সহ বিশেষজ্ঞদের সেরা ও নির্বাচিত মন্তব্যটি উল্লেখ করেছেন এবং বিভিন্ন প্রমাণের সাথে তার মতামত প্রকাশ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি একটি বিষয় সম্পর্কিত সমস্ত হাদিসকে এক জায়গায় একত্রিত করে তার মধ্যে সমতাবিধানের চেষ্টা করেছেন।[]

বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা

গ্রন্থটির প্রধান বৈশিষ্ট্য:[]

  1. আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদার সাথে বিতর্কিত সমস্যাগুলো এর মধ্যে সাবধানে বর্ণনা করা হয়েছে।
  2. এতে বর্ণনাকারীদের বিখ্যাত এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, বর্ণনাকারীদের অজানা নাম এবং প্রয়োজনীয় বিচ্যুতি উল্লেখ করা হয়েছে।
  3. বিশেষ স্থানে তিনি হাদিসের সনদ তথা বর্ণনাকারীদের থেকে সন্দেহগুলি সরিয়ে দেন।
  4. তিনি হাদিসের কঠিন শব্দের ব্যাখ্যা ও সমাধান করেছেন।
  5. বিভিন্ন সমস্যা হানাফি মাযহাবের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্ধৃতি উল্লেখ করেছেন।

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

গ্রন্থটি সম্পর্কে আনোয়ার শাহ কাশ্মীরি বলেন,

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার আরবি বিভাগের প্রধান ডক্টর জুবায়ের আহমদ ফারুকী বলেন,

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

উদ্ধৃতি

সম্পাদনা
  1. গৌরী, সৈয়দ আব্দুল মাজিদ (৩০ জুন ২০১৭)। ""فتح الْمُلْهِم بشرح صحيح مسلم" للشيخ شَبِّيْر أحمد العثماني : دراسة حديثية" [শাব্বির আহমদ উসমানির রচিত ফাতহুল মুলহিম বি শারহি সহীহ মুসলিম : ভবিষ্যদ্বাণীমূলক হাদিসের একটি অধ্যয়ন]। হাদিস (আরবি ভাষায়)। মালয়েশিয়া: সেলাঙ্গর আন্তর্জাতিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ (১৩): ১৪০–১৬১। আইএসএসএন 2550-1585ডিওআই:10.53840/hadis.v7i13.39 
  2. লস্কর, ফজলুর রহমান (১৯৯৮)। আল্লামা শাব্বির আহমদ উসমানির জীবন ও কর্ম (গবেষণাপত্র) (ইংরেজি ভাষায়)। ভারত: গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ১৫৩–১৭৫। hdl:10603/67545 
  3. জিল হুমা, ডক্টর (৩০ জুন ২০১৯)। "মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানির বিখ্যাত রচনাগুলোর একটি পরিচিতিমূলক পর্যালোচনা"রাহাতুল কুলুব (উর্দু ভাষায়): ২০১–২০২। আইএসএসএন 2521-2869ডিওআই:10.51411/rahat.3.1.2019.66 
  4. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৫৭।
  5. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৫৬–১৫৭।
  6. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৭৫।
  7. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৫০।
  8. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৫৮।
  9. লস্কর ১৯৯৮, পৃ. ১৫৮–১৫৯।

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা