ফণী বড়ুয়া

বাঙালি সঙ্গীতজ্ঞ

ফণী বড়ুয়া (১৯১৫ - ২২শে জুন, ২০০১) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ। তিনি ছিলেন লোকসংস্কৃতি ও আধুনিক কবিগানের স্রষ্টা।[১] সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০০ সালে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

ফণী বড়ুয়া
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম১৯১৫
চট্টগ্রাম, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২২ জুন ২০০১(2001-06-22) (বয়স ৮৫–৮৬)
চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
ধরনকবিগান, লোকগান
পেশাসঙ্গীতজ্ঞ
কার্যকাল১৯৩০-এর দশক-২০০০

জীবনী সম্পাদনা

ফণী বড়ুয়া ১৯১৫ সালে (১৭ শ্রাবণ, ১৩২২ বঙ্গাব্দ) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) চট্টগ্রামের রাউজানের পাঁচখাইন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নন্দকুমার বড়ুয়া এবং মাতা শ্যামা বড়ুয়া। তিনি তার পিতামাতার তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয়। তার শৈশবেই তিনি তার মাকে হারান। গ্রামের বিদ্যালয়ে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেন।[২]

নিজের ভরণপোষণের জন্য তিনি শ্রমণ জীবন বেঁচে নেন, কিন্তু কিছুদিন পর তিনি এই জীবন ছেড়ে বার্মা চলে যান। সেখানে তিনি ট্রাংকে রং লাগানো, ফুলতোলা অর্থাৎ রং মিস্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করেন। রেঙ্গুনে তিনি মতিলাল বড়ুয়ার কবিগান শুনে তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তিন বছর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং জীবিকার জন্য বৌদ্ধ কীর্তন গাওয়া ও রং লাগানো কাজ করতেন। তার রং লাগানোর দোকানে তিনি টর্চ মেরামত, ঘড়ি সারানোর কাজ, ঝালাইসহ বিভিন্ন ধরনের কাজ করতেন।[২]

স্মারক ও শ্রদ্ধাঞ্জলি সম্পাদনা

২০০১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত কবিয়াল ফণী বড়ুয়া নাগরিক স্মরণসভা কমিটি, চট্টগ্রাম-এর "স্মরণিক" স্মরণপত্রে কল্পতরু সেনগুপ্ত রচিত "দেশব্রতী কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মরণে" নিবন্ধ, সুচরিত চৌধুরী রচিত "কুসুম বালিকা" স্মৃতিনিবন্ধ, আবুল মোমেন রচিত "বর্ষীয়ান কবিগায়ককে শ্রদ্ধাঞ্জলি" নিবন্ধ, মৃণাল চৌধুরী রচিত "কবিয়াল ফণী বড়ুয়া এবং লোকসংস্কৃতির শ্রেণি সচেতনতা" নিবন্ধ, বাদল বরণ বড়ুয়া রচিত "কবিয়াল ফণী বড়ুয়া: সংক্ষিপ্ত জীবনকথা ও তাঁর কবিগানের বিষয় সমীক্ষা" নিবন্ধ এবং শিমুল বড়ুয়া রচিত "যিনি ছিলেন মাটি ও মানুষের কাছাকাছি" নিবন্ধে কবিগানে ফণী বড়ুয়ার অবদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।[৩] এছাড়া তার স্মরণে ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে চট্টগ্রামে শিমুল বড়ুয়া সম্পাদিত কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মারকগ্রন্থ-এর প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।[৪]

সম্মাননা সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. শাহীন, আবু হাসান (২৬ জুন ২০১২)। ""ফণী বড়ুয়া ছিলেন লোকসংস্কৃতি ও আধুনিক কবিগানের স্রষ্টা""বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮ 
  2. শ্যামল, নাজিমুদ্দীন (১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬)। "কবিয়াল ফণী বড়–য়া আধুনিক কবিগানের অন্যতম পথিকৃৎ"দৈনিক পূর্বকোণ। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. বড়ুয়া, বাদল বরণ (২২ জুন ২০১৪)। "ত্রয়োদশ মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা-স্মরণ ।। গণকবিয়াল ফণী বড়ুয়া"নির্ভানা পিস। ১৪ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮ 
  4. "আজ কবিয়াল ফণী বড়ুয়া স্মারকগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব"দৈনিক প্রথম আলো। ২৫ এপ্রিল ২০১০। ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০১৮