ফজলুল হক (সঙ্গীতজ্ঞ)
ওস্তাদ ফজলুল হক (২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২- ২৫ মে ১৯৯৩) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুরু এবং নজরুল সঙ্গীত শিল্পী। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৩ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।
ওস্তাদ ফজলুল হক | |
---|---|
জন্ম | ১৯৩২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি[১] |
মৃত্যু | ১৯৯৩ সালের ২৫ মে |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশ |
পরিচিতির কারণ | শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুরু, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনা১৯৩২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত চর ভবসুর সরকার পাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন[২]। তার পিতার নাম ফসিউদ্দিন আহমেদ যিনি পেশায় ছিলেন আইনজীবী, মাতার নাম আবেদা খাতুন। ফজলুল হক জামালপুর সিংহজানী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক পাশ করেন।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিক্ষা
সম্পাদনাসঙ্গীতে হাতেখড়ি স্থানীয় শিক্ষক ও সঙ্গীতজ্ঞ প্রাণেশ চন্দ্র মজুমদারের হাতে। এরপর জামালপুরের প্রবীণ শিল্পী ধীরু সেন এবং ময়মনসিংহের প্রখ্যাত ওস্তাদ বিজয়কৃষ্ণ ভট্টাচার্যের নিকট উচ্চাঙ্গসঙ্গীতে তালিম নেন। এরপর ভারতের বিহারে দীর্ঘদিন ধরে তালিম নেন ওস্তাদ নিহার হোসেন খান ও ওস্তাদ নূর মোহাম্মদ খানের নিকট। এছাড়াও কলকাতায় ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলী, ওস্তাদ গুল মুহম্মদ সহ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বহু মহারথীর কাছে থেকে নিরন্তর সঙ্গীত সাধনা করেছেন[৩]।
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনাফজলুল হক বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সঙ্গীত শিক্ষা দিয়েছেন। তার হাতে তৈরি হয়েছে দেশের অনেক প্রথিতযশা শিল্পী। ‘ওস্তাদ ফজলুল হক সঙ্গীত একাডেমি’ গঠনের মধ্য দিয়ে তিনি সঙ্গীতকে সকলের মাঝে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাছাড়া ১৯৬২ সালে বাংলাদেশ বেতারের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে যোগদেন তিনি। আমজাদ হোসেনের ‘ধারাপাত, পিচ ঢালা পথ’ সহ বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন।
তার কাছে তালিম নিয়েছেন এমন শিল্পীদের মধ্যে অগ্রগণ্য;
- আব্দুল জব্বার [৪]
- নীলুফার ইয়াসমিন [৫]
- ফৌজিয়া ইয়াসমিন
- শাহনাজ রহমতুল্লাহ
- সাবিনা ইয়াসমিন
- আঞ্জুমান আরা বেগম
- জিনাত রেহানা
- মুজিব পরদেশী
- শাহীন সামাদ
- ফেরদৌস ওয়াহিদ
- শবনম মুশতারী
- লোকসঙ্গীত শিল্পী আরিফ দেওয়ান [৬]
- শামা রহমান (রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী)
- শাহনাজ বুলবুল (প্রবাসী লোকশিল্পী)
- চঞ্চল মণ্ডল (অস্ট্রেলীয় বাংলাদেশি শিল্পী)
- টিটু আলী
এছাড়াও ওস্তাদ ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসেছেন ফকির আলমগীর[৭] সহ অসংখ্য শিল্পী।
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯৯৩ সালের ২৫ মে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে মৃত্যুবরণ করেন এই শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গুরু।
সম্মাননা
সম্পাদনাতিনি বহুবিধ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন যদিও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে সম্পূর্ণ প্রচার বিমুখ ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য সম্মাননা সমূহ,
- একুশে পদক সঙ্গীতে ১৯৯৩ সালে
তাকে উৎসর্গ করে গঠিত হয় ওস্তাদ ফজলুল হক শিল্পীগোষ্ঠী[৮]।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "গানের যুগ সারথী- বেঙ্গল মিউজিক ফেস্ট"।
- ↑ "ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক জনপদ জামালপুর-দৈনিক সংগ্রাম"। ১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৯।
- ↑ "দিন যায় কথা থাকে-হামিদ কায়সার"। ১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ গেজেট" (পিডিএফ)।
- ↑ "নীলুফার ইয়াসমিন-বাংলাপিডিয়া"।
- ↑ "গান মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে-পরিবর্তন"। ১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৯।
- ↑ "বাংলাদেশ বেতারের সেইসব দিনগুলো: ফকির আলমগীর"। ১ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৯।
- ↑ "আজ সারাদিন: ঢাকা ও চট্টগ্রাম-বাংলা নিউজ টুয়েন্টি ফোর"।