ফজলুর রহমান খান ফারুক
ফজলুর রহমান খান ফারুক (১২ অক্টোবর ১৯৪৪ - ১৯ অক্টোবর ২০২৪) ছিলেন একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পাকিস্তান গণপরিষদ সদস্য এবং টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০২১ সালে একুশে পদক প্রদান করেন।[১]
ফজলুর রহমান খান ফারুক | |
---|---|
টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৭ মার্চ ১৯৭৩ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৬ | |
পূর্বসূরী | আসন শুরু |
উত্তরসূরী | মোরশেদ আলী খান পন্নী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১২ অক্টোবর ১৯৪৪ মির্জাপুর, টাঙ্গাইল, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ১৯ অক্টোবর ২০২৪ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | সুরাইয়া বেগম |
সম্পর্ক | খান আহমেদ শুভ (ছেলে) |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পুরস্কার | একুশে পদক ২০২১ |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাফজলুর রহমান ফারুক ১২ অক্টোবর ১৯৪৪ সালে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ওয়ার্শী ইউনিয়নের কহেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ। তিনি আব্দুল হালিম খান ও মা ইয়াকুতুন্নেছা খানমের আট সন্তানের মধ্যে তিনি তৃতীয়। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগে মাষ্টার্স পাস করেন। তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম। তিনি এক পুত্র খান আহমেদ শুভ এবং এক কন্যা সন্তানের জনক।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাফারুক ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬২ সালে টাঙ্গাইল মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ৬৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
তিনি ১৯৭০ সালের গণ পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ দফা আন্দোলন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে টাঙ্গাইল-৭ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[২] ১৯৭৪ সালে বাকশাল গঠিত হলে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বাকশালের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৮৪ সাল থেকে ২০১৫ সালের ১৭ আক্টাবর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৩] ২০১৭ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।[৪] তিনি বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের প্রশাসক।[৫]
১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে টাঙ্গাইল-৭ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়ে ছিলেন।
সাংবাদিকতা
সম্পাদনাফজলুর রহমান ফারুক ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত দৈনিক ইত্তেফাকের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল মহকুমা প্রেসক্লাব এবং টাঙ্গাইল মহকুমা মফস্বল সংবাদদাতা সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
সম্মাননা
সম্পাদনাফজলুর রহমান ফারুক বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন:
- ২০২১ সালে মুক্তিযোদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য একুশে পদক লাভ[১]
মৃত্যু
সম্পাদনাফজলুর রহমান খান ফারুক দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৯ অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৬] মুক্তিযোদ্ধা হলেও আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ততা থাকায় দাফনের আগে তাকে কোনো প্রকার রাষ্ট্রীয় সম্মাননা না দেওয়ার দাবি জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন।[৭] পরে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ছাড়াই টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ নিজস্ব প্রতিবেদক (৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১)। "একুশে পদক পাচ্ছেন ২১ বিশিষ্টজন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১।
- ↑ "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "Nation wants return to democracy"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ এপ্রিল ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "SP Park opens in Tangail"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ৫ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "Five lions clubs of Tangail district jointly accorded a reception"। observerbd.com। ১২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "টাঙ্গাইল জেলা আ.লীগের সভাপতি ফারুক আর নেই"। banglanews24.com। ১৯ অক্টোবর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০২৪।
- ↑ "রাষ্ট্রীয় সম্মান ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধার দাফন"। একাত্তর টিভি। সংগ্রহের তারিখ ১৯ অক্টোবর ২০২৪।