ফকির মসজিদ

বাংলাদেশের মসজিদ

ফকির মসজিদ সুলতানী আমলে নির্মিত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। অষ্টাদশ শতাব্দীর চট্টগ্রামী ঐতিহাসিক মৌলবী হামিদ উল্লা খান তাঁর আহাদীস-উল-খাওয়ানীন গ্রন্থে মসজিদটির উল্লেখ করেছেন। ডক্টর আবদুল করিম মসজিদের বিবরণ ও শিলালিপির পাঠ প্রকাশ করেন।[১] এটিকে চট্টগ্রাম জেলার এখনও বর্তমান মসজিদগুলোর মাঝে সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।[২]

ফকির মসজিদ
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিইসলাম
শাখা/ঐতিহ্যসুন্নি
পবিত্রীকৃত বছর১৪৭৪-১৪৮১
অবস্থাসক্রিয়
অবস্থান
অবস্থানদেওয়াননগর, হাটহাজারী উপজেলা, চট্টগ্রাম জেলা, বাংলাদেশ
স্থাপত্য
ধরনমসজিদ
স্থাপত্য শৈলীইসলামী স্থাপত্য
প্রতিষ্ঠার তারিখ১৪৭৪-১৪৮১
সম্পূর্ণ হয়১৪৭৪-১৪৮১
বিনির্দেশ
ধারণক্ষমতা১০০
দৈর্ঘ্য৬.৫ মিটার
প্রস্থ৬.৫ মিটার
গম্বুজসমূহ
মিনার
উপাদানসমূহইট

অবস্থানসম্পাদনা

এই প্রাচীন মসজিদটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় অবস্থিত।[৩]

ইতিহাসসম্পাদনা

মসজিদ সংলগ্ন একটি ভাঙা শিলালিপি থেকে অনুমান করা হয় যে, মসজিদটি বারবক শাহ এর পুত্র সুলতান শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহ এর শাসনামলে (১৪৭৪-১৪৮১ খ্রি.) নির্মিত হয়েছে।[৪]

মসজিদটি কয়েক দশক ধরে পরিত্যক্ত ছিল, ঘন ঝোপঝাড় এবং জঙ্গল বনের আড়ালে লুকিয়ে ছিল।[৫] সুফি মুকিম শাহ নামের একজন ফকির এটি পুনরায় আবিষ্কার করেন এবং নামজের জন্য ব্যবহার করা শুরু করেন। মুকিম শাহের সমাধি মসজিদের পাশে অবস্থিত, এবং পরে মসজিদটি ফকির মসজিদ নামে পরিচিতি লাভ করে।[৪]

মৌলভী হামিদুল্লাহ খান তার আকীদাত আল-খাওয়ানিন-এ (১৮৫৩) এই মসজিদের কথা উল্লেখ করেছেন। ঐতিহাসিক ডক্টর আবদুল করিম মসজিদের বিবরণ ও শিলালিপির পাঠ প্রকাশ করেন। মসজিদটি ১৯৯৩-১৯৯৪ সালে সংস্কার করা হয়।

বিবরণসম্পাদনা

মসজিদটির বাইরের আয়তন ১৪.৬৩ মি × ১০.৬৬ মি এবং ভেতরের দিকে ১১.৬৫ মিটার × ৭.৫৪ মিটার। মসজিদের চারকোণে রয়েছে চারটি সংলগ্ন বুরুজ। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নির্মিত হয়েছে মসজিদের কেন্দ্রীয় মিহরাবটি। মিহরাবটিও নির্মিত হয়েছে একটি আধা উঁচু সংলগ্ন বুরুজবৎ প্রকোষ্ঠে। মসজিদের সকল বুরুজ বা মিনার অষ্টকোণাকৃতি, যা ঊর্ধমুখী ছাদ-পাঁচিল পেরিয়ে উপরে উঠে গেছে ও শীর্ষদেশ আবৃত করে আছে একটি করে ছোট গম্বুজ। পূর্ব দেওয়ালে খুব নিচু ও সূঁচালো বহির্মুখী তিনটি খিলান রয়েছে। নামাজের হলঘরটি দুটি স্তম্ভসারি দ্বারা তিনটি চত্বরে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় মিহরাবটি অন্য দুপার্শ্বর মিহরাব দুটির তুলনায় বড়। এর কুলুঙ্গিটি শিকল ও ঘণ্টার মোটিফ দ্বারা অলঙ্কৃত।

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. মসজিদের নগর চট্টগ্রাম, দৈনিক পূর্বকোণ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. "হাম্মাদিয়া মসজিদ : সুলতানী স্থাপত্য নিদর্শন এর সংস্কার ও সংরক্ষণ"দৈনিক আজাদী। ২০ এপ্রিল ২০১৩। ২০১৬-০৭-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. মসজিদ হাটহাজারী তথ্য বাতায়ন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "ফকির মসজিদ"বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  5. আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়াবাংলাদেশের প্রাচীন কীর্তি: মুসলিম যুগ। পৃষ্ঠা ১৯৮। 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা