ফকরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী

বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা

ফকরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে।[১][২]

ফকরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার ফুলবাড়ী গ্রামে ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম বুরহান উদ্দিন ও মাতা ছায়বা খাতুন চৌধুরী।

মুক্তিযুদ্ধে অবদান সম্পাদনা

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের ডাক আসলে জিএন ফখরুদ্দীন চৌধুরী (বীর প্রতীক) মার্চ মাসের শেষ দিকে কালের হাটের বন বিভাগে অস্ত্র নিয়ে ও তাদের সহযোগিতায় পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাড়ান। পরবর্তীতে নিজ বাড়ীতে ৩/৪দিন অবস্থান করে ট্রেনিং প্রশিক্ষণ নিতে ভারতের ডাউকি ও শিলং-এর মধ্যবর্তী ইকো-১ ট্রেনিং সেন্টারে ক্যাপ্টেন বিএন রাও-এর তত্ত্বাবধানে ১০২ জনের সাথে তিনি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তারা বালাটে অবস্থান গ্রহণ করে ৫নং সেক্টরের বিভিন্ন এলাকায় পাকবাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন।

১৯৭১ সালের জুন মাসের একদিন ফখরুদ্দীন ও একদল মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ শেষ করে নৌকা করে জলপথে তাদের প্রথম অপারেশনে রওনা হন। মাঝপথে রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটা নাগাদ হঠাৎ মাঝি ভয় পেয়ে নৌকা থেকে জলে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায়। তখন এসময় মাঝিবিহীন অবস্থায় নিজেরাই কোনোরকমে নৌকা বেয়ে পশ্চাদাপসরণ করেন। এভাবে তাদের প্রথম অপারেশন ব্যর্থ হয়ে যায়। প্রথম অরপারেশন ব্যর্থ হলেও পরে (জুন মাসের শেষ দিক থেকে সেপ্টেম্বর মাস) তারা বেশ কয়েকটি অপারশেন পরিচালনা করেন। এসব অপারেশনে ফখরুদ্দীন চৌধুরী যথেষ্ট দক্ষতা ও সাহসের পরিচয় দেন। একটি অপারেশনে তারা কিছুটা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েন। তেলিখাল অপারেশনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে তাদের দলের কয়েকজন শহীদ ও বেশ কজন আহত হন। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফখরুদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা অ্যামবুশ, ডিমোলিশন ও আকস্মিক আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তানিদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলেন। এরপর ফখরুদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন দলকে সংযুক্ত করা হয় নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল ডেল্টা কোম্পানির সঙ্গে। জিএম ফখরুদ্দীন চৌধুরী ১৯৭১ সালে সেনাবাহিনীর কমিশন লাভ করলেও স্বাধীনতা যুদ্ধে তার একটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারেননি।

মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকারের গ্রেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তাকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না" | তারিখ: ১৪-১১-২০১১[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 

পাদটীকা সম্পাদনা