প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ
খ্রিস্টানদের মধ্যে যে প্রধান তিনটি ভিন্নমতাবলম্বী গোষ্ঠী রয়েছে, তাদের একটি গোষ্ঠীর বিশ্বাসকে বলা হয় প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ, যা আসলে কোনো বিশেষ বা নির্দিষ্ট বিশ্বাস নয়, বরং বিভিন্ন ছোট গোষ্ঠী বা ব্যাক্তিবর্গের সমষ্টি। অনেকক্ষেত্রে ক্যাথলিক বা অর্থোডক্স খ্রিস্টান (গোঁড়াবাদী খ্রিস্টান ধর্ম) ছাড়া বাকী খ্রিস্টানদের প্রোটেস্ট্যান্ট বলা হয়। ইউরোপে ১৬ শতকে সংঘটিত প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কার-আন্দোলন থেকে এর গোড়াপত্তন।
রোমান ক্যাথলিক ও প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে পার্থক্যসম্পাদনা
এই দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রযেছে। প্রোটেস্ট্যান্টগন মনে করেন ঈশ্বর কর্তৃক প্রদত্ত পবিত্র বাইবেল হল একটি সম্পূর্ণ বিধান এবং একমাত্র বাইবেলের শিক্ষাই জগতের পাপীগণের মুক্তিলাভ করার জন্য যথেষ্ট। তাদের মতে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস ও নৈতিকতার চূড়ান্ত কর্তৃপক্ষ হল বাইবেল। প্রোটেস্ট্যান্টদের এই ধারনার উৎস হল ‘Five Scriptura’ বা পাঁচ প্রত্যাদেশ। এই পাঁচ প্রত্যাদেশের একটি হল ‘Sola Scriptura’। এছাড়া পাবিত্র বাইবেলের বিভিন্ন জায়গায়ও একাধিকবার তাদের মতবাদের পক্ষে যুক্তি আছে বলে প্রোটেস্ট্যানগন মনে করেন। কিন্তু ক্যাথলিকগণ এই ধারণা সঠিক মনে করেন না। তাদের মতে পবিত্র বাইবেলের পাশাপাশি রোমান ঐতিহ্যগত অনুশাসনও একজন খ্রীস্টানের জন্য সমান ভাবে প্রযোজ্য।[১] আর একটি পার্থক্য হলো খ্রীষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান হিসাবে পোপের কর্তৃত্ব স্বীকার। ক্যাথলিকগণ মনে করেন পোপ সকল চার্চের প্রধান এবং যীশু খ্রীষ্টের বিকল্প Vicar of Christ। তারা মনে করেন পোপ শিক্ষা ও বচন হল অভ্রান্ত এবং খ্রীস্ট বিশ্বাস ও ধর্ম জ্ঞান চর্চায় তিনি কোন ভুল করতে পারেন না। অন্যদিকে প্রোটেস্ট্যান্টগন মনে করেন যে কোন মানুষ ভুলের উর্ধে নন। আর একমাত্র যীশুই হল সকল চার্চের প্রধান। প্রোটেস্টানরা ক্যাথলিকদের মতো পৌরহিত্য করেন না। যাজকদের বিয়ের প্রথা প্রটেস্টান্টদের মধ্যে দেখা যায়। যাজক হিসাবে তারা সর্বজন বিশ্বাসভাজন কারও উপর তার দায়িত্ব অর্পন করেন। ক্যাথলিকরা ঈশ্বর-যীশু ছাড়াও অনেক সাধু সন্তদের উদ্দেশ্য প্রার্থনা করেন। প্রোটেস্ট্যান্টরা সাধু সন্তদের উপর বিশ্বাস রাখলেও তাদের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করেন না। এছাড়া হলিওয়াটার, সেলিবাচি, যন্ত্রনাভোগ ও নানে শুধুমাত্র ক্যাথলিকরা বিশ্বাস করেন। [২] গট কোশ্চেনস্
ইতিহাসসম্পাদনা
প্রোটেস্ট্যান্ট আন্দোলন প্রথম শুরু হয় জার্মানিতে। ১৫২৭ সালে মার্টিন লুথার প্রনিত গ্রন্থ ‘দ্য নাইন্টি ফাইভ থিসিস’ গ্রন্থে তিনি রোমন যাজকীয় নীতি, তাদের প্রচলিত খ্রীস্ট বিশ্বাস নিয়ে অনেক ভিন্ন মতামত প্রকাশ করেন। ষোলশ শতকে তার অনুসারীরা জার্মান স্ক্যান্ডিনেভিয়ার প্রতিষ্ঠা করে লুথিয়ান চার্চ। হাঙ্গেরী, স্কটল্যান্ড, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশেও একই আদলে চার্চের সংস্কার করা হয়। ১৫৫৩ সালে চার্চ অব ইংল্যান্ড পোপের কর্তৃত্ব থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়। [৩] রিফর্মেশন অব চার্চ অব ইংল্যান্ড।
তথ্য উৎসসম্পাদনা
<ref>https://books.google.pl/books?id=gswCAAAAQAAJ&pg=PA400&dq=church+of+england+1529&hl=pl&sa=X&ei=HGiXU5SvG8rnygPLuoAY#v=onepage&q=church%20of%20england%201529&f=false<r/ef>রিফর্মেশন অব চার্চ অব ইংল্যান্ড।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
উইকিঅভিধানে প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ, Protestantism, বা evangelical শব্দটি খুঁজুন। |
উইকিমিডিয়া কমন্সে প্রোটেস্ট্যান্ট মতবাদ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- "Protestantism" from the 1917 Catholic Encyclopedia
- World Council of Churches World body for mainline Protestant churches