প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত
প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত (১৯০৭ ― ১৯৭৪) একজন ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী ও প্রাগ্রসর বামপন্থী চিন্তাবিদ। তার পিতা ডাক্তার হর্ষনাথ সেনগুপ্ত, ছোটবেলা কেটেছে সাঁওতাল পরগনার দুমকায় (বর্তমান ঝাড়খণ্ড রাজ্যে)। কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজে পড়াকালীন বিপ্লবী শহীদ অনন্তহরি মিত্র, হেমন্তকুমার সরকার প্রমুখ বিপ্লবীর সাহচর্যে সশস্ত্র বিপ্লববাদে হাতেখড়ি হয়।
প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত | |
---|---|
জন্ম | ১৯০৭ দুমকা জেলা, সাঁওতাল পরগণা (বর্তমান ভারত) |
মৃত্যু | ১৯৭৪ (বর্তমান ভারত) |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) ভারত |
শিক্ষা | লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্স, কৃষ্ণনগর সরকারী কলেজ |
পেশা | বামপন্থী চিন্তাবিদ, রাজনৈতিক কর্মী, লেখক |
কর্মজীবন | ১৯৬৭ সালের ১৪ই জুন নকশালবাড়ি আন্দোলনের প্রথম দিকে 'কৃষক সংগ্রাম সহায়ক কমিটি'র সভাপতি |
পরিচিতির কারণ | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মী |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | প্রকাশিত বই নীলবিদ্রোহ ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ, কালান্তরের পথিক রঁম্যা রঁলা, ভারতীয় মহাবিদ্রোহ |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি |
আন্দোলন | বামপন্থী আন্দোলন |
পিতা-মাতা |
|
বিপ্লবী আন্দোলনে যোগ
সম্পাদনাদক্ষিণেশ্বর বোমা মামলায় প্রথম গ্রেপ্তার হন তিনি। মুক্তি পেয়ে বিদেশ যাত্রা ১৯২৭ সালে। লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিকস এর ছাত্র ছিলেন, ইংল্যান্ডের বন্দর শ্রমিকদের মধ্যে ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন গড়ে তোলার কাজে বিশেষ ভূমিকা ছিলো। ১৯২৮ সালে বিপ্লবী সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুরের আহবানে বার্লিনে গিয়ে ফেরার পথে ফরাসি পুলিশের হাতে অস্ত্রসহ ধরা পড়েন। সাপুরজি সাকলাওয়াত, রজনীপাম দত্ত, হ্যারি পোলিট প্রমুখ মার্কসবাদী নেতৃবৃন্দর সাথে সখ্যতা ছিলো তার। ইংল্যান্ডে হিন্দুস্থান স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার সাংবাদিকতা করেছেন ১৯৩৩ সালে। লন্ডনে অবস্থানকালে অন্যান্য ভারতীয় ছাত্রদের সাথে কমিউনিস্ট স্টাডি সার্কেল তৈরি করেন যা পরে প্রগ্রেসিভ রাউটার্স এসোসিয়েশন নামে পরিচিত হয়। 'ভারতে কৃষি সংশ্লিষ্ট অবস্থার বিকাশ' বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছিলেন। স্পেনের ডিক্টেটর ফ্রাংকোর ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে অভিযানে আন্তর্জাতিক ব্রিগেডে যোগ দিতে স্পেনে গিয়েছিলেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও আজাদ হিন্দ ফৌজে
সম্পাদনানেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দ ফৌজের প্রচার অধিকর্তা হিসেবেও কাজ করেছেন প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত। আজাদ হিন্দ পত্রিকার সম্পাদনাও করেছেন অল্প কিছুদিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ব্রিটিশ মিলিটারি মিশনের হাতে বন্দী হয়ে জেলে যান। স্বাধীনতার পরেও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে সামিল থাকায় প্রেসিডেন্সি জেলে কারারুদ্ধ ছিলেন ১৯৫০ এ। পুরোপুরি মুক্তি পেয়ে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগদান।[১] স্বাধীন ভারতে জরুরী অবস্থার বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা নেন।
নকশালবাড়ী আন্দোলনে
সম্পাদনা১৯৬৭ সালের ১৪ই জুন নকশালবাড়ি আন্দোলনের প্রথম দিকে 'কৃষক সংগ্রাম সহায়ক কমিটি'র সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে মতানৈক্যের কারণে নকশাল আন্দোলন থেকে দূরে সরে আসেন।[২]
প্রকাশিত রচনাবলী
সম্পাদনাদেশী বিদেশি বহু পত্র পত্রিকায় তার অসংখ্য প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নীলবিদ্রোহ ও তৎকালীন বঙ্গসমাজ, কালান্তরের পথিক রঁম্যা রঁলা, ভারতীয় মহাবিদ্রোহ তার রচিত বই।[১][৩]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ সংসদ বাংগালী চরিতাভিধান, প্রথম খন্ড। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা 311। আইএসবিএন 81-85626-65-0।
- ↑ সিংহ, তাপস। "স্মৃতি খুঁড়ে তুলে আনা সত্তরের যাদবপুর - Anandabazar"। anandabazar.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০১-২৩।
- ↑ প্রমোদরঞ্জন সেনগুপ্ত (১৯৭৮)। নীলবিদ্রোহ ও বাঙালি সমাজ। কলকাতা: র্যাডিকাল।