পেলাগ্রা
পেলাগ্রা (ইংরেজি: Pellagra) বা পেলেগ্রা রোগটি নায়াসিন (ভিটামিন বি৩) এর অভাবজনিত একটি রোগ।[২] প্রধান উপসর্গগুলো হল ত্বকের প্রদাহ, ডায়রিয়া, ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশতা ও মুখে ঘা।[১] ত্বকের যে অংশে সূর্যের আলো পড়ে বা ঘর্ষণ বেশি লাগে সেটি সবার আগে আক্রান্ত হয়।[১] কিছু দিন পরে আক্রান্ত ত্বক কালো ও শক্ত হয়ে যায় এবং খসে পড়ে বা রক্ত বের হয়।[১][৩]
পেলাগ্রা | |
---|---|
![]() | |
পেলাগ্রায় আক্রান্ত রোগীর ত্বক। | |
বিশেষত্ব | ত্বকবিজ্ঞান |
লক্ষণ | ত্বকপ্রদাহ, ডায়রিয়া, ডিমেনশিয়া, মুখে ক্ষত।[১] |
প্রকারভেদ | প্রাথমিক, গৌণ [১] |
কারণ | নায়াসিন ঘাটতি। [২] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | উপসর্গের উপর ভিত্তি করে।[৩] |
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয় | কোয়াশিওর্কর, পেমফিগাস, ফটোডার্মাটাইটিস, পরফাইরিয়া[৩] |
প্রতিরোধ | দারিদ্র্য দূরীকরণ। [৩] |
চিকিৎসা | নায়াসিন অথবা নিকোটিনামাইড [১] |
আরোগ্যসম্ভাবনা | চিকিৎসায় ভালো হয়, বিনাচিকিৎসায় ~ ৫ বছরের মধ্যে মৃত্যু সম্ভাবনা।[৩] |
সংঘটনের হার | বিরল (উন্নত বিশ্বে), উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশে এই রোগ বিরাজমান। [৩] |
মূলত দুই ধরনের পেলাগ্রা রয়েছে, প্রাথমিক ও গৌণ।[১] খাদ্যে নায়াসিন ও ট্রিপটোফ্যান এর ঘাটতি হলে প্রাথমিক পেলাগ্রা হয়। [১] খাদ্যে বিদ্যমান নায়াসিন শোষণ বা ব্যবহারে সমস্যাজনিত কারণে গৌণ পেলাগ্রা হয়।[১] মদ্যাসক্তি, দীর্ঘদিনের ডায়রিয়া, কার্সিনয়েড সিনড্রোম, হার্টনাপ রোগ ও কিছু ওষুধ যেমন আইসোনায়াজিড গৌণ পেলাগ্রা করতে পারে।[১] উপসর্গের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা হয় এছাড়া মূত্র পরীক্ষাও করা যেতে পারে।[৩]
নায়াসিন অথবা নিকোটিনামাইড গ্রহণ এই রোগের প্রধান চিকিৎসা।[১] কয়েকদিনের মধ্যেই উন্নতি লক্ষ্য করা যায়। [১] সুষম খাদ্য গ্রহণ জরুরি।[৩] ত্বক আরোগ্য লাভের সময় যথাযথ কাপড় পরিধান করে ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করে সূর্যালোক থেকে ত্বককে রক্ষা করা প্রয়োজন।[১] চিকিৎসা না করালে মৃত্যু ঘটতে পারে। [৩] উন্নয়নশীল দেশ বিশেষত সাহারা-নিম্ন আফ্রিকায় এধরনের ঘটনা বেশি ঘটে।[৩]
নিদানিক বৈশিষ্ট্যসম্পাদনা
পেলাগ্রার উপসর্গগুলোকে তিনটি ড অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা যায় যথা ডায়রিয়া, ডার্মাটাইটিস ও ডিমেনশিয়া। [৪]
- ডার্মাটাইটিস
ডার্মাটাইটিস শব্দের অর্থ হলো ত্বকের প্রদাহ। দেহের যে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসে সেগুলো লোহিত বর্ণ ধারণ করে। হাত, পা, ঘাড়ে এই লক্ষণ প্রকাশ পেলেও মুখে এরূপ হয় না। পেলাগ্রা রোগে ঘাড়ের ত্বকে একটি বিশেষ ধরনের প্রদাহ হয় যা এর আবিষ্কারকের নামানুসারে ক্যাসালের কলার বা ক্যাসালের নেকলেস বলা হয়। ত্বকের ক্ষতগুলো জলপূর্ণ ফোসকায় পরিণত হয় অতঃপর সেখান থেকে রস চুয়ে পড়ে। এমনকি ক্ষতে জীবাণু সংক্রমণও ঘটতে পারে।
- ডায়রিয়া
ডায়রিয়ার সাথে ক্ষুধামান্দ্য, বমনেচ্ছা, গ্লোসাইটিস বা জিহ্বায় প্রদাহ ও গলাধঃকরণে সমস্যা থাকে। এতে বুঝা যায় যে এই রোগে পাকস্থলী ও অন্ত্রে সংক্রমণবিহীন প্রদাহ বিদ্যমান।
- ডিমেনশিয়া
নায়াসিনের তীব্র ঘাটতি হলে প্রথমে চিত্তবৈকল্য ও পরবর্তীতে স্মৃতিভ্রংশতা দেখা দেয়। উপর্যুক্ত উপসর্গ ছাড়াও আরও অনেক লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে যেমন শারীরিক দুর্বলতা, চুল পড়া, অনিদ্রা, স্নায়ুরোগ ও বিভিন্ন মনঃশারীরিক সমস্যা।[৫][৬]
রোগ নির্ণয়সম্পাদনা
উপসর্গের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করা যায়। এছাড়া রক্তে ট্রিপটোফ্যানের মাত্রা অথবা প্রস্রাবে প্রাপ্ত বিপাকীয় পদার্থ যেমন ২-পিরিডন/এন-মিথাইলনায়াসিনামাইড অনুপাত <২ অথবা লোহিত রক্তকণিকায় NAD/NADP অনুপাত বের করে পেলাগ্রা রোগ নিশ্চিত করা সম্ভব। অধিকন্তু নায়াসিন সেবনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগের লক্ষণ কমে গেলে পেলাগ্রা সম্বন্ধে নিশ্চিত হওয়া যায়।[৭]
নিদানতত্ত্বসম্পাদনা
পেলাগ্রা হওয়ার জন্য মূলত নায়াসিনের ঘাটতি দায়ী। নায়াসিনের অভাবে শরীরে নিকোটিনামাইড অ্যাডেনিন ডাইনিউক্লিওটাইড (NAD) এর পরিমাণ হ্রাস পায়। NAD ও NADP বহু দৈহিক প্রক্রিয়ায় কোফ্যাক্টর বা সহযোগী উপাদান হিসেবে কাজ করে। এজন্য নায়াসিন ঘাটতির নিদানিক প্রভাব অনেক বেশি সুদূরপ্রসারী ও চিকিৎসা না করালে মৃত্যু হতে পারে। খাদ্যে সরাসরি নায়াসিন না থাকলে অথবা ট্রিপটোফ্যানের অভাব থাকলেও পেলাগ্রা হতে পারে।[৩] ট্রিপটোফ্যান একটি অত্যাবশ্যক অ্যামিনো অ্যাসিড যা মাংস, মাছ, ডিম, চীনাবাদাম ও পোল্ট্রিতে পাওয়া যায়।[৮] ট্রিপটোফ্যান দেহে জৈবসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় নায়াসিনে রূপান্তরিত হয়। এছাড়া অতিরিক্ত লিউসিন পেলেগ্রা করতে পারে। কারণ এটা কুইনোলিনেট ফসফোরাইবোসিল ট্র্যান্সফারেজ (QPRT) নামক এক উৎসেচক কে নিবৃত্ত করে। ফলে নায়াসিন বা নিকোটিনিক অ্যাসিড থেকে নিকোটিনামাইড মনোনিউক্লিওটাইড গঠিত হতে পারে না ফলে পেলাগ্রা সদৃশ উপসর্গ দেখা দেয়।[৯] কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যস্থ নায়াসিন বা ট্রিপটোফ্যান পরিশোষণ বিঘ্নিত হয় এবং পেলাগ্রা হয়। জেজুনাম বা ইলিয়ামের প্রদাহ হলে পুষ্টি উপাদান শোষণ ব্যাহত হয়।[১০] গ্যাস্ট্রোএন্টারোস্টমি করলেও পেলাগ্রা হতে পারে। [১০] দীর্ঘদিনের মদ্যাসক্তি পুষ্টি পরিশোষণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করে। এর সাথে খাদ্যে নায়াসিন ও ট্রিপটোফ্যান অল্প থাকলে পেলাগ্রা হবে। [১০]হার্টনাপ রোগ হলো একটি জিনেটিক বা বংশানুক্রমিক রোগ। এতে ট্রিপটোফ্যান পরিশোষণ হ্রাস পায় ফলে পেলাগ্রা হয়। আইসোনায়াজিড নামক অ্যান্টিবায়োটিক ভিটামিন বি৬ এর সাথে বন্ধন তৈরি করে একে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে, ফলে এটি নায়াসিন সংশ্লেষে ব্যবহৃত হতে পারে না।[১১]
চিকিৎসাসম্পাদনা
চিকিৎসা না করলে চার থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে মৃত্যু ঘটতে পারে। নিকোটিনামাইড সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় যা গঠনগত ও কার্যগত দিক থেকে নায়াসিনের মতো তবে বিষক্রিয়া কম। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ত্বকের লালচে ভাব কমে আসে, ডায়রিয়া বন্ধ হয়ে যায় ও মানসিক অবস্থার দারুণ উন্নতি হয়। অতিরিক্ত নায়াসিন গ্রহণ করলে যকৃতে বিষক্রিয়া হতে পারে।[১২]
রোগের বিস্তৃতিসম্পাদনা
যে সকল অঞ্চলের লোকজন প্রধান খাদ্য হিসাবে ভুট্টা খায় সে সব অঞ্চলে পেলাগ্রার প্রাদুর্ভাব বেশি যেমন দক্ষিণ আমেরিকার গ্রামীণ অঞ্চলে পেলাগ্রা বেশি কারণ সেখানকার লোকজনের প্রধান খাদ্য ভুট্টা। ভুট্টায় নায়াসিটিন নামক যৌগ রয়েছে যা নায়াসিনের একটি রূপভেদ কিন্তু শরীরে ব্যবহৃত হতে পারে না। নায়াসিন ও ট্রিপটোফ্যানের ঘাটতি রয়েছে এমন খাবার টানা আট সপ্তাহ খেলেই পেলাগ্রা হতে পারে। পেলাগ্রা সাধারণত আফ্রিকা, ইন্দোনেশিয়া ও চীনে দেখা যায়। এছাড়া দরিদ্র জনগোষ্ঠী, গৃহহীন, মদ্যাসক্ত ও মানসিক রোগী যারা খাদ্য গ্রহণে অনীহা দেখায় তাদেরও হতে পারে।[১৩]
ভুট্টাতে নায়াসিন হেমিসেলুলোজের সাথে বন্ধন তৈরি করে নায়াসিটিন যৌগ হিসাবে বিদ্যমান থাকে। ভুট্টার মোট নায়াসিনের ৯০ শতাংশই নায়াসিটিন হিসাবে থাকে।[১৪]নিক্সটাম্যালাইজেশন প্রক্রিয়ায় ভুট্টা থেকে নায়াসিন পাওয়া সম্ভব।আমেরিকার আদিবাসী লোকদের মধ্যে নিক্সটাম্যালাইজেশন প্রক্রিয়ার প্রচলন ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণের এলাকা মিসিসিপি ও আলাবামায় এক সময় পেলাগ্রা মহামারী রূপ নিয়েছিল। সেখানে শীতকালে মাংস খাওয়া হতো প্রচুর কিন্তু বসন্তকালে প্রধান খাবার হিসাবে ভুট্টা খাওয়া হতো ফলে বসন্তকালে পেলাগ্রা রোগ দেখা দিত। গ্রীষ্মকালে সূর্যালোক বেশি থাকায় ত্বকের প্রদাহ বেশি হতো। প্রতিবছর বসন্তকালে এই রোগটি ফিরে আসত তাই ঐ অঞ্চলে এই রোগকে বসন্তকালীন রোগ ও বলা হতো।[১৫] ২০০০ সালের দিকে অ্যাঙ্গোলা, জিম্বাবুয়ে ও নেপালে পেলাগ্রার প্রাদুর্ভাব হয়েছিল।[১৬][১৭][১৮] বিশেষত অ্যাঙ্গোলায় সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ২০০২ সাল হতে সেখানে ০.৩% নারী ও ০.২% শিশু পেলাগ্রায় আক্রান্ত এবং ২৯.৪% নারী ও ৬% শিশু নায়াসিনের অভাবে ভুগছে।[১৮] অন্যান্য দেশ যেমন ডেনমার্ক ও নেদারল্যান্ডসে নায়াসিনের ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও পেলাগ্রা পাওয়া যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পেলাগ্রা শুধু পুষ্টির অভাবে হচ্ছে তা নয় বরং দীর্ঘদিনের মদ্যাসক্তি, বিভিন্ন ওষুধের মিথস্ক্রিয়া, এইডস, ভিটামিন বি২ ও বি৬ এর অভাব, হার্টনাপ রোগ, কার্সিনয়েড সিনড্রোম প্রভৃতি কারণেও হতে পারে। [১৮][১৯][২০][২১][২২][২৩]
ইতিহাসসম্পাদনা
আমেরিকার স্থানীয় চাষিরা ভুট্টার সাথে একটা ক্ষারীয় দ্রবণ যেমন ক্যালসিয়াম হাইড্রোক্সাইড বা চুন মেশাত যেটাকে নিক্সটাম্যালাইজেশন পদ্ধতি বলে। এই পদ্ধতির ফলে ভুট্টা থেকে নায়াসিন পাওয়া যেত এবং পেলাগ্রা প্রতিরোধ করা যেত।[২৪] যখন সারা পৃথিবীব্যাপী ভুট্টা চাষ হতো এবং নিক্সটাম্যালাইজেশন পদ্ধতি ছাড়াই প্রধান খাদ্য হিসাবে খাওয়া হতো তখন বহু লোক পেলাগ্রায় আক্রান্ত হতো। ১৭৩৫ সালে স্প্যানিশ বিজ্ঞানী গ্যাসপার ক্যাসাল সর্বপ্রথম পেলাগ্রার বর্ণনা দেন। তিনি এর ত্বকের সমস্যাগুলো প্রথম বর্ণনা করেন। তিনি ব্যাখ্যা দেন যে সূর্যালোকের সংস্পর্শে আসা ত্বকে (হাত, পা, গলা প্রভৃতি) প্রদাহ হয় এবং এর কারণ হলো অপর্যাপ্ত পুষ্টি গ্রহণ ও পরিবেশের প্রভাব। [২৫] তাঁর একাজটি ১৭৬২ সালে তাঁর বন্ধু জুয়ান সেভিলানো হিস্টোরিয়া ন্যাচারালি মেডিসিনা ডেল প্রিন্সিপাদো দা আস্তুরিয়াস শিরোনামে প্রকাশ করেন। তখন এটি আস্তুরিয়ান লেপ্রসি নামে পরিচিত হয়।[২৬] এক সময় উত্তর ইতালিতে এটি মহামারী রূপ ধারণ করেছিল যেখানে মিলানের ফ্রান্সেস্কো ফ্রাপল্লি নামক একজন লম্বার্ড ভাষায় এর নাম দিয়েছিলেন পেল আগ্রা (pell agra)। pell শব্দের অর্থ ত্বক আর agra শব্দের অর্থ হলি(holly) গুল্ম সদৃশ বা সিরাম-সদৃশ।[২৭][২৮] ১৮৮০ সালের মধ্যে ইতালিতে প্রায় এক লাখ লোক পেলাগ্রাতে আক্রান্ত হয়েছিল তখন এই রোগের কারণ ও এর শ্রেণিবিভাগ কী হবে তা নিয়ে বিতর্ক উঠেছিল। উনবিংশ শতাব্দীতে রুসেল ফ্রান্সে ভুট্টা ভক্ষণ কমানোর অভিযানে নেমে ফ্রান্স থেকে পেলাগ্রার মূলোৎপাটন করতে সমর্থ হয়েছিলেন, কিন্তু ইউরোপের পল্লি অঞ্চলে এটি তখনও মহামারী আকারে ছিল।[২৯] যেহেতু যে সব এলাকায় ভুট্টা প্রধান খাদ্যশস্য ছিল সে সব এলাকায় পেলাগ্রার প্রাদুর্ভাব বেশি ছিল তাই উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে সিজারে লমব্রোজো একটি তত্ত্ব দিয়েছিলেন যে হয় ভুট্টাতে বিষাক্ত পদার্থ বিদ্যমান নতুবা এটি নিজেই এই রোগের বাহক।[৩০] লুইস সাম্বন নামে একজন অ্যাংলো-ইতালীয় ডাক্তার যিনি লন্ডন স্কুল অব ট্রপিকাল মেডিসিনে কাজ করতেন, বিশ্বাস করতেন যে পেলাগ্রা ম্যালেরিয়ার মতো পতঙ্গবাহিত রোগ। পরবর্তীতে যখন দেখা গেল ভুট্টা প্রধান খাদ্য এমন এলাকা যেমন মেসোআমেরিকায় পেলাগ্রা হয় না তখন গবেষকগণ ঐ এলাকার ভুট্টা প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী হলেন।
উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে দক্ষিণ আমেরিকায় পেলাগ্রা মহামারী রূপ নেওয়ার আগ পর্যন্ত কেবল ইউরোপেই এই নিয়ে গবেষণা হতো।[৩১][৩২] বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আমেরিকার দক্ষিণে পেলাগ্রা মহামারী আকারে দেখা দেয়। [৩২] ১৯০৬ থেকে ১৯৪০ সালের মধ্যে ৩০ লাখেরও বেশি আমেরিকান পেলাগ্রায় আক্রান্ত হয় এবং ১ লাখেরও বেশি মানুষ মারা যায়। তবে খাবারের সাথে নায়াসিন মিশ্রিত করার পর মহামারী নিয়ন্ত্রণে আসে।[৩৩] ১৯১৫ সালের প্রথম দশ মাসে দক্ষিণ ক্যারোলাইনাতে পেলাগ্রায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১,৩০৬ জন মারা যায় এবং ১৯১৬ সালে ঐ এলাকায় প্রায় এক লাখ লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়। ঐ সময় বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল পেলাগ্রা কোনো জীবাণু দিয়ে অথবা খাদ্যশস্যে বিদ্যমান কোনো অজানা বিষ দিয়ে হয়।[৩৩] দক্ষিণ ক্যারোলাইনার স্পার্টানবার্গে অবস্থিত স্পার্টানবার্গ পেলাগ্রা হাসপাতাল ছিল আমেরিকার পেলাগ্রা গবেষণার জন্য প্রতিষ্ঠিত প্রথম হাসপাতাল। এটা ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জনস্বাস্থ্য সেবার বিশেষ তত্ত্বাবধানে পেলগ্রা গবেষণার নিমিত্তে স্থাপিত হয়। ১৯১৫ সালে সার্জন জেনারেল অব ইউনাইটেড স্টেটস জোসেফ গোল্ডবার্গারকে পেলাগ্রা গবেষণার জন্য মনোনীত করে। তিনি অনাথাশ্রম ও মানসিক হাসপাতালে এই রোগের প্রাদুর্ভাব পর্যবেক্ষণ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে পেলাগ্রা খাদ্যের সাথে সম্পর্কিত একটি রোগ। গোল্ডবার্গার লক্ষ্য করেন যে ৬ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুরা (তবে অনাথাশ্রমের এর চেয়ে কম বা বেশি বয়সী শিশুরা নয়) ও মানসিক হাসপাতালের রোগীরা (তবে ডাক্তার ও নার্স বাদে) বেশি পেলাগ্রায় আক্রান্ত। [৩৪] গোল্ডবার্গার মত দেন যে মাংস, দুধ, ডিম ও লিগিউম জাতীয় খাদ্যের অভাবে উপর্যুক্ত জনগোষ্ঠী পেলাগ্রায় আক্রান্ত। উপর্যুক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের খাদ্য তালিকায় প্রাণিজ ও লিগিউম জাতীয় আমিষ যোগ করে তিনি দেখাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে পেলাগ্রা প্রতিরোধযোগ্য।[৩৪] ১৯২৬ সালের মধ্যে গোল্ডবার্গার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন যে উপর্যুক্ত খাদ্যবস্তু সমৃদ্ধ পথ্য অথবা অল্প পরিমাণ মদ চোলাইয়ে ব্যবহৃত ইস্ট[৩৫] পেলাগ্রা প্রতিরোধ করতে সক্ষম ছিল। গোল্ডবার্গার ১১ জন (প্রস্টেটের প্রদাহের জন্য একজন বাদ পড়েছিল) কারাবন্দীর উপর পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। পরীক্ষার পূর্বে সকল কয়েদিকে মিসিসিপির র্যানকিন কারা খামারে উৎপাদিত খাবার সরবরাহ করা হতো। [৩৬] গোল্ডবার্গার তাদেরকে একটি নিয়ন্ত্রিত পথ্য ঠিক করে দিয়েছিলেন। এর মধ্যে যে সকল খাবার অন্তর্ভুক্ত ছিল তা হলো মোটা দানার জই এর তৈরি খাবার(grits), সিরাপ, ভুট্টার জাউ, বিস্কুট, বাঁধাকপি, মিষ্টি আলু, ভাত, সবুজ পাতা বিশিষ্ট বাঁধাকপি (collards) ও চিনিযুক্ত কফি (দুধ ছাড়া)। স্বাস্থ্যবান শ্বেতাঙ্গ পুরুষদেরকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাছাই করা হয়েছিল কারণ শ্বেতাঙ্গদের ত্বকে ক্ষতগুলো ভালো বুঝা যায় এবং মনে করা হতো এই লোকগুলোর পেলাগ্রা সম্ভাবনা সবচেয়ে কম, ফলে তারা পেলাগ্রায় আক্রান্ত হলে প্রমাণ হয়ে যাবে যে এটি পুষ্টির অভাবে হয়। তাদের অল্প বোধশক্তিসংক্রান্ত ও অন্ত্রীয় সমস্যা দেখা দিয়েছিল এবং প্রথম ৫ মাসেই ১১ জনের মধ্যে ৬ জনের ত্বকে পেলাগ্রা রোগের আদর্শ ক্ষত দেখা দিয়েছিল। ক্ষতগুলো প্রথমে অণ্ডকোষের ত্বকে হয়েছিল। [৩৭] কয়েদিদের পেলাগ্রা হয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের মুক্তি দেওয়া হয় এবং গোল্ডবার্গারকে পুনরায় পথ্য পরিবর্তন করে তাদের সুস্থ করার সুযোগ দেওয়া হয়নি।[৩৬] ১৯২০ সালের দিকে তিনি তখনকার প্রচলিত ধারণার বিপরীতে মত দেন যে, পেলাগ্রার সাথে সংক্রমণের কোনো সম্পর্ক নেই বরং এটি গ্রামীণ অঞ্চলের শস্যভিত্তিক খাদ্যাভ্যাসের সাথে সম্পর্কিত।[৩৮][৩৯] তাঁর এত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তখনকার সময়ের ভূমি ব্যবস্থায় সামাজিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কারণে খুব অল্প সংখ্যক চিকিৎসক তাঁর ধারণাকে গ্রহণ করেছিল। [৪০] গোল্ডবার্গারকে আমেরিকান ক্লিনিক্যাল এপিডেমিওলজির একজন অপরিকীর্তিত বীর বলে স্মরণ করা হয়।[৪১] তবে সুনির্দিষ্ট কোন উপাদানটি পেলাগ্রা ঘটাচ্ছে তা শনাক্ত করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে, উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়নের অধ্যাপক কনরাড এলভেহজেম দেখিয়েছিলেন যে ভিটামিন নায়াসিন কুকুরে পেলাগ্রা নিরাময় করতে সক্ষম। পরবর্তীতে ড. টম স্পাইজ, ম্যারিয়ন ব্ল্যাঙ্কেনহর্ন ও ক্লার্ক কুপার, এই তিনজন গবেষণা করে দেখান যে, নায়াসিন মানুষেও পেলাগ্রা সারাতে সক্ষম। এইজন্য ১৯৩৮ সালে বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন তাদেরকে মেন অব দা ইয়ার উপাধিতে ভূষিত করে।[৪২] ১৯০০ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত গবেষণায় দেখা গিয়েছে পেলাগ্রায় আক্রান্ত মোট রোগীর মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।[৪৩] এর কারণ হিসেবে অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রিপটোফ্যান থেকে নায়াসিন রূপান্তরের বিক্রিয়ায় এস্ট্রোজেন হরমোন বাধা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হয়। [৪৪] ঐ সময়ের গবেষকগণ এ ব্যাপারে অল্প কিছু ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন।[৪৫]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড Ngan, Vanessa (২০০৩)। "Pellagra"। DermNet New Zealand (ইংরেজি ভাষায়)। ৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৭।
- ↑ ক খ "Orphanet: Pellagra"। www.orpha.net (ইংরেজি ভাষায়)। ১৭ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৭।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট Pitche P (২০০৫)। "Pellagra"। Sante। 15 (3): 205–08। পিএমআইডি 16207585।
- ↑ Hegyi, J.; Schwartz, R. A.; Hegyi, V. (২০০৪)। "Pellagra: Dermatitis, dementia, and diarrhea"। International Journal of Dermatology। 43 (1): 1–5। ডিওআই:10.1111/j.1365-4632.2004.01959.x। পিএমআইডি 14693013।
- ↑ Cleary MJ, Cleary JP (১৯৮৯)। "Anorexia nervosa: a form of subclinical pellagra"। Int Clin Nutr Rev। 9 (3): 137–43। আইএসএসএন 0813-9008।
- ↑ Frostig J. P., Spies T. D.। "The initial syndrome of pellagra and associated deficiency diseases"। American Journal of the Medical Sciences। 199 (268): 1940।
- ↑ Gehring, W (২০০৪)। "Nicotinic acid/niacinamide and the skin"। Journal of Cosmetic Dermatology। 3 (2): 88–93। ডিওআই:10.1111/j.1473-2130.2004.00115.x। পিএমআইডি 17147561।
- ↑ Haas EM। "Vitamin B3 – Niacin"। Excepted from: Staying Healthy with Nutrition: The Complete Guide to Diet and Nutritional Medicine। ২০০৭-০৩-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-১৮।
- ↑ Bapurao S, Krishnaswamy K (১৯৭৮)। "Vitamin B6 nutritional status of pellagrins and their leucine tolerance"। Am J Clin Nutr। 31 (5): 819–24। পিএমআইডি 206127।
- ↑ ক খ গ Weise Prinzo, Z (২০০০)। "Pellagra and its prevention and control in major emergencies" (পিডিএফ)। World Health Organization। পৃষ্ঠা 24। WHO/NHD 00.10। ২০১৩-১০-০৪ তারিখে মূল (pdf) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৩-২২।
- ↑ "Archived copy"। ২০১৫-০৫-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৫-১৪।
- ↑ Walker, Brian R.; Colledge, Nicki R.; Relston, Stuart H.; Penman, Ian D.। Davidson's Principles and Practice of Medicine (২২ সংস্করণ)। Elsevier। পৃষ্ঠা ১২৮-১২৯। আইএসবিএন ৯৭৮-০-৭০২০-৫০৪৭-৩
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid character (সাহায্য)। - ↑ Jagielska G, Tomaszewicz-Libudzic EC, Brzozowska A (২০০৭)। "Pellagra: a rare complication of anorexia nervosa"। Eur Child Adolesc Psychiatry। 16 (7): 417–20। ডিওআই:10.1007/s00787-007-0613-4। পিএমআইডি 17712518।
- ↑ Ball, George F.M. (২০০৫)। Vitamins In Foods: Analysis, Bioavailability, and Stability; Food Science and Technology। CRC Press। পৃষ্ঠা 183। আইএসবিএন 978-1-4200-2697-9। ১৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১৪।
- ↑ Spark, Arlene (২০০৭)। Nutrition in Public Health: Principles, Policies, and Practice। CRC Press। পৃষ্ঠা 79। আইএসবিএন 978-0-203-50788-9। ২০১৭-০৪-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Baquet, S.; Wuillaume, F.; van Egmond, K.; Ibañez, F. (২০০০)। "Pellagra outbreak in Kuito, Angola"। The Lancet। 355 (9217): 1829–30। ডিওআই:10.1016/S0140-6736(05)73093-2।
- ↑ Dhakak, M; Limbu, B; Neopane, A; Karki, DB (২০০৩)। "A typical case of pellagra"। Kathmandu University Medical Journal। 1 (1): 36–37। পিএমআইডি 16340260।
- ↑ ক খ গ Seal, AJ; Creeke, PI; Dibari, F; Cheung, E; Kyroussis, E; Semedo, P; van den Briel, T (২০০৭)। "Low and deficient niacin status and pellagra are endemic in postwar Angola"। The American Journal of Clinical Nutrition। 85 (1): 218–24। পিএমআইডি 17209199।
- ↑ Hegyi, J; Schwartz, RA; Hegyi, V (২০০৪)। "Pellagra: Dermatitis, dementia, and diarrhea"। International Journal of Dermatology। 43 (1): 1–5। ডিওআই:10.1111/j.1365-4632.2004.01959.x। পিএমআইডি 14693013।
- ↑ Monteiro JP, da Cunha DF, Filho DC, Silva-Vergara ML, dos Santos VM, da Costa JC Jr., Etchebehere RM, Gonçalves J, de Carvalho da Cunha SF; ও অন্যান্য (২০০৪)। "Niacin metabolite excretion in alcoholic pellagra and AIDS patients with and without diarrhea"। Nutrition। 20 (9): 778–82। ডিওআই:10.1016/j.nut.2004.05.008। পিএমআইডি 15325687।
- ↑ Beretich, G.R. (২০০৫)। "Do high leucine/low tryptophan dieting foods (yogurt, gelatin) with niacin supplementation cause neuropsychiatric symptoms (depression) but not dermatological symptoms of pellagra?"। Medical Hypotheses। 65 (3): 628–29। ডিওআই:10.1016/j.mehy.2005.04.002। পিএমআইডি 15913906।
- ↑ Oliveira, A.; Sanches, M.; Selores, M. (২০১১)। "Azathioprine-induced pellagra"। The Journal of Dermatology। 38 (10): 1035–37। ডিওআই:10.1111/j.1346-8138.2010.01189.x। পিএমআইডি 21658113।
- ↑ Delgado-Sanchez, L.; Godkar, D.; Niranjan, S. (২০০৮)। "Pellagra: Rekindling of an Old Flame"। American Journal of Therapeutics। 15 (2): 173–75। ডিওআই:10.1097/MJT.0b013e31815ae309। পিএমআইডি 18356638।
- ↑ Rajakumar, K (২০০০)। "Pellagra in the United States: A Historical Perspective"। Southern Medical Journal। 93 (3): 272–77। আইএসএসএন 0038-4348। ডিওআই:10.1097/00007611-200093030-00005। পিএমআইডি 10728513।
- ↑ Casal, G. (১৯৪৫)। "The natural and medical history of the principality of the Asturias"। Major, RH। Classic Descriptions of Disease (3rd সংস্করণ)। Springfield: Charles C Thomas। পৃষ্ঠা 607–12।
- ↑ Stratigos, J.D.; Katsambas, A. (১৯৭৭)। "Pellagra: A still existing disease"। British Journal of Dermatology। 96 (1): 99–106। ডিওআই:10.1111/j.1365-2133.1977.tb05197.x। পিএমআইডি 843444।
- ↑ F. Cherubini, Vocabolario Milanese-Italiano, Imp. Regia Stamperia, 1840-43, vol. I, III.
- ↑ "Definition of Pellagra"। MedicineNet.com। ২০০৭-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৬-১৮।
- ↑ Semba, RD (২০০০)। "Théophile Roussel and the elimination of pellagra from 19th century France"। Nutrition। 16 (3): 231–33। ডিওআই:10.1016/S0899-9007(99)00273-7। পিএমআইডি 10705082।
- ↑ Cesare Lombroso, Studi clinici ed esperimentali sulla natura, causa e terapia delle pellagra (Bologna: Fava e Garagnani, 1869)
- ↑ Sydenstricker, VP (১৯৫৮)। "The history of pellagra, its recognition as a disorder of nutrition and its conquest"। The American Journal of Clinical Nutrition। 6 (4): 409–14। পিএমআইডি 13559167।
- ↑ ক খ Clay, Karen; Schmick, Ethan; Troesken, Werner (আগস্ট ২০১৭)। "The Rise and Fall of Pellagra in the American South"। NBER Working Paper No. 23730। ডিওআই:10.3386/w23730।
- ↑ ক খ Bollet, AJ (১৯৯২)। "Politics and pellagra: The epidemic of pellagra in the U.S. In the early twentieth century"। The Yale Journal of Biology and Medicine। 65 (3): 211–21। পিএমআইডি 1285449। পিএমসি 2589605 ।
- ↑ ক খ "The Prevention of Pellagra: A Test of Diet among Institutional Inmates"। জেস্টোর 4572932।
- ↑ Swan, P. (২০০৫)। "Goldberger's War: The Life and Work of a Public Health Crusader (review)"। Bulletin of the History of Medicine। 79 (1): 146–47। ডিওআই:10.1353/bhm.2005.0046।
- ↑ ক খ Harkness JM (১৯৯৬)। "Prisoners and Pellagra" (পিডিএফ)। Public Health Rep। 111 (5): 463–67। পিএমআইডি 8837636। পিএমসি 1381793 ।
- ↑ "Experimental Pellagra in the Human Subject Brought about by a Restricted Diet"। জেস্টোর 4572984।
- ↑ Goldberger, J; Wheeler, GA (নভে ১২, ১৯১৫)। "Experimental pellagra in the human subject brought about by a restricted diet."। Public Health Reports। 30 (46): 3336–39। জেস্টোর 4572984। ডিওআই:10.2307/4572984।
- ↑ Goldberger, J (২০০৬)। "The etiology of pellagra. 1914"। Public Health Reports। 121 (Suppl 1): 77–79; discussion 76। পিএমআইডি 16550768।
- ↑ Wolf, R; Orion, E; Matz, H; Tüzün, Y; Tüzün, B (২০০২)। "Miscellaneous treatments, II: Niacin and heparin: Unapproved uses, dosages, or indications"। Clinics in Dermatology। 20 (5): 547–57। ডিওআই:10.1016/S0738-081X(02)00268-7। পিএমআইডি 12435525।
- ↑ Elmore, JG; Feinstein, AR (১৯৯৪)। "Joseph Goldberger: An unsung hero of American clinical epidemiology"। Annals of Internal Medicine। 121 (5): 372–75। ডিওআই:10.7326/0003-4819-121-5-199409010-00010। পিএমআইডি 8042827।
- ↑ Ruth Hanna Sachs, White Rose History. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে Volume I. 2003. Appendix D, p. 2 আইএসবিএন ০-৯৭১০৫৪১-৯-৩ "Men of the Year, outstanding in comprehensive science were three medical researchers who discovered that nicotinic acid was a cure for human pellagra: Drs. Tom Douglas Spies of Cincinnati General Hospital, Marion Arthur Blankenhorn of the University of Cincinnati, Clark Niel Cooper of Waterloo, Iowa."
- ↑ Miller DF (১৯৭৮)। "Pellagra deaths in the United States"। Am. J. Clin. Nutr.। 31 (4): 558–59। পিএমআইডি 637029।
- ↑ Brenton, B. P. (২০০০)। "Pellagra, Sex and Gender: Biocultural Perspectives on Differential Diets and Health"। Nutritional Anthropology। 23 (1): 20–24। ডিওআই:10.1525/nua.2000.23.1.20।
- ↑ Carpenter, K. (১৯৮১)। Pellagra। Stroudsburg, PA: Hutchinson Ross Pub. Co। আইএসবিএন 0-87933-364-2।[পৃষ্ঠা নম্বর প্রয়োজন]
আরও পঠনসম্পাদনা
- Hampl JS, Hampl WS (১ নভেম্বর ১৯৯৭)। "Pellagra and the origin of a myth: evidence from European literature and folklore"। Journal of the Royal Society of Medicine। 90 (11): 636–39। পিএমআইডি 9496281। পিএমসি 1296679 ।
- "Reports and Resolutions of the General Assembly of the State of South Carolina, Regular Session Commencing January 11, 1916"। Annual Report of the State Board of Health (1915–1916)। Columbia, S.C.: Gonzales and Bryan, state printers। 4। ১৯১৬।
- Beardsley E (২০০৬)। The Spartanburg Pellagra Hospital. In: The South Carolina Encyclopedia। Columbia, S.C: University of South Carolina Press। আইএসবিএন 1-57003-598-9।
- Swain CP, Tavill AS, Neale G (সেপ্টেম্বর ১৯৭৬)। "Studies of tryptophan and albumin metabolism in a patient with carcinoid syndrome, pellagra, and hypoproteinemia"। Gastroenterology। 71 (3): 484–89। পিএমআইডি 133045।
- Hendrick, Burton J. (এপ্রিল ১৯১৬)। "The Mastery Of Pellagra: The Mysterious Disease, Almost Unknown In This Country Fifteen Years Ago, That Now Claims 7,500 Victims A Year And Is Spreading Rapidly"। The World's Work: A History of Our Time। XXXI: 633–39। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৮-০৪।
- Kraut, Alan. "Dr. Joseph Goldberger and the War on Pellagra, By Alan Kraut, Ph.D." Office of History, National Institutes of Health. 3 Sept. 2010.
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- "Pellagra (Ital. pelle agra, smarting skin)"। The Encyclopaedia Britannica; A Dictionary of Arts, Sciences, Literature and General Information। XXI (PAYN to POLKA) (11th সংস্করণ)। Cambridge, England and New York: At the University Press। ১৯১১। পৃষ্ঠা 69। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১৮ – Internet Archive-এর মাধ্যমে।
- Pellagra – Food and Agriculture Organization (FAO)
শ্রেণীবিন্যাস | |
---|---|
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান |