পাকুন্দিয়া উপজেলা
পাকুন্দিয়া বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। এর আয়তন ১৮০.৫২ বর্গকিলোমিটার (৬৯.৭০ বর্গমাইল) এবং মোট জনসংখ্যা ২,৩৭,২১৮। এটি ১৯২২ সালে একটি থানা হিসেবে গঠিত হয়। এটি ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ তারিখে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।[১]
পাকুন্দিয়া | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে পাকুন্দিয়া উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°১৯′৪৪″ উত্তর ৯০°৪০′৫৪″ পূর্ব / ২৪.৩২৮৮৯° উত্তর ৯০.৬৮১৬৭° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | কিশোরগঞ্জ জেলা |
উপজেলায় রূপান্তরিত | ১৯৮৩ |
আয়তন | |
• মোট | ১৮০.৫২ বর্গকিমি (৬৯.৭০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১) | |
• মোট | ২,৩৭,২১৮ |
• জনঘনত্ব | ১,৩০০/বর্গকিমি (৩,৪০০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ২৩২৬ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৪৮ ৭৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাপাকুন্দিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। এর আয়তন ১৮০.৫২ বর্গ-কিলোমিটার। পাকুন্দিয়াকে ঘিরে, উত্তরে হোসেনপুর উপজেলা ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা, দক্ষিণে গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলা ও নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলা, পূর্বে কটিয়াদি উপজেলা, পশ্চিমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলা। প্রধান নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী। উপজেলার অভ্যন্তরে সিংগুয়া নামে আর একটি নদী বিল মইসবের থেকে কালিয়াচাপড়া হয়ে জেলার ভাটি এলাকা নিকলীর সাথে ঘোড়াউত্রা নদীতে মিশেছে।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনা৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এই উপজেলা কিশোরগঞ্জ শহর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থেকে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার।
একটি পৌরসভা হচ্ছে:
ইউনিয়নগুলো হচ্ছে:[২]
যোগাযোগ
সম্পাদনাসড়কপথই যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। এ উপজেলায় কোন রেল যোগাযোগ নেই।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাপাকুন্দিয়া উপজেলার মোট জনসংখ্যা ২,৩৭,২১৮ (প্রায়)। এর মধ্যে পুরুষ ৫১.২৬ শতাংশ এবং মহিলা ৪৮.৭৪ শতাংশ (ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ৯৫.৭৫ শতাংশ মুসলমান ও ৪.২৫ শতাংশ হিন্দু)।
শিক্ষা
সম্পাদনামাধ্যমিক বিদ্যালয়
সম্পাদনাপাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট স্কুলের সংখ্যা ১২টি, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -
- চরকাওনা জনকল্যাণ উচ্চ বিদ্যালয় (ইন:১১০৫৬৪)
- চরকাওনা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (ইন:১১০৫৫৫)
- চরকাওনা উচ্চ বিদ্যালয় (ইন:১১০৫৭১)
- চরকাওনা কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ
- জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- কালিয়াচাপড়া চিনিকল উচ্চ বিদ্যালয় (ইন:১১০৪৬৭)
- শহীদ আলাউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়
- বুরুদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
- এম এ মান্নান মানিক উচ্চ বিদ্যালয
- কোদালিয়া সহরুল্লাহ ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়
এই উপজেলার অন্তর্গত মাধ্যমিক পর্যায়ের মাদ্রাসাসমূহ হল -
- চরকাওনা মধ্যপাড়া আলিম মাদ্রাসা
- চরকাওনা মুনিয়ারীকান্দা দাখিল মাদ্রাসা
- নূর হোসাইনি আলিম মাদ্রাসা
- আজাহারুল উলূম দাখিল মাদ্রাসা
- চরদিগা ইসলামিক দাখিল মাদ্রাসা
- মীরদি ফাজিল মাদ্রাসা
- সালোয়াদি দাখিল মাদ্রাসা
- পাটুয়াভাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসা
- কাঘাচার মহিলা মাদ্রাসা
- হোসেন্দী আদর্শ দাখিল মাদ্রাসা
- পোড়াবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসা
- চিলাহারা দাখিল মাদ্রাসা।
মাদরাসা
সম্পাদনা- মাদরাসা আশরাফীয়া আনওয়ারুল উলুম
উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক
সম্পাদনাপাকুন্দিয়া উপজেলায় মোট কলেজের সংখ্যা ৮টি। সেগুলো হলো – পাকুন্দিয়া আদর্শ মহিলা কলেজ,[৩] পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ, হোসেন্দী আদর্শ কলেজ, হাজী জাফর আলী কলেজ, শিমুলিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, চর আদর্শ কলেজ ও চরটেকী গার্লস কলেজ। উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের মাদ্রাসাসমূহ হলো – পাঁচলগোটা সিনিয়র আলিম মাদ্রাসা, শৈলজানী আলিম মাদ্রাসা ও মঙ্গলবাড়িয়া কামিল মাদ্রাসা। এগারসিন্দুর ঈসা খান আলিম মাদরাসা, মির্জাপুর আলিম মাদরাসা, বরাটিয়া আলিম মাদরাসা, তারাকান্দি ফাজিল মাদরাসা, কাগারচর দাখিল মাদরাসা, মিরদী বালিকা দাখিল মাদরাসা, খামা বালিকা দাখিল মাদরাসা, বারাবর আলিম মাদরাসা, মজিতপুর দাখিল মাদরাসা, বাহাদিয়া দাখিল মাদরাসা, হোসেন্দী দাখিল মাদরাসা, বালুয়াকান্দা দাখিল মাদরাসা।
শিল্প প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনাকালিয়া চাপড়া চিনিকল (বিলুপ্ত) বর্তমানে নিটল-নিলয় চিনিকল হিসেবে বেসরকারী পর্যায়ে চালু আছে। পাকুন্দিয়ায় একটি ঔষধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান আছে যার নাম ডেল্টা ফার্মাসিটিক্যাল। দুইটি কোল্ড স্টোরেজ আছে যেগুলোর নাম এগারসিন্দুর কোল্ডস্টোরেজ, পূর্বাচল হিমাগার। এছাড়া সরকারি বিএডিসি স্টোরেজ, একটি ময়দা ফ্যাক্টরি, এবং অটোরাইসমিল আছে।
অর্থনীতি
সম্পাদনাএ উপজেলা সবজির জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর এখানে অনেক সবজি ও ফল উৎপাদিত হয়। এখানের সবজি ও ফল বিশেষ করে সিলেট, ঢাকা সহ সারা দেশে সারা বছর সরবরাহ করা হয়। মঙ্গলবাড়িয়ার লিচুর ঐতিহাসিক খ্যাতি এ উপজেলাতেই। তাছাড়া এখানে প্রচুর ধানও উৎপাদিত হয়, যা এখানের খাবারের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- মুহিউদ্দীন খান — বাংলা সীরাত সাহিত্যের জনক, খ্যাতনামা সাংবাদিক এবং আল–কুরআনের বাংলা অনুবাদক।
- আবুল কাসেম ফজলুল হক — বাংলাদেশের প্রাবন্ধিক ও ঢাবির প্রাক্তন অধ্যাপক।
- ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ — ইসলামি ব্যক্তিত্ব।
- এবিএম জাহিদুল হক — সাবেক নৌপরিবহন উপমন্ত্রী।
- জীবন রহমান — চলচ্চিত্র পরিচালক।
নদ-নদী
সম্পাদনাপাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪টি নদী রয়েছে। এগুলো হচ্ছে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদী, বানার লোয়ার নদী, ঘোড়াউত্রা নদী, এবং নরসুন্দা নদী।[৪][৫]
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাবারো ভূইয়াঁদের অন্যতম সোনারগাঁর শাসক ঈসা খাঁর দুর্গ হিসাবে পরিচিত এগারসিন্দুর এবং শালংকার আওরঙ্গজেব মসজিদ পাকুন্দিয়ার ঐতিহাসিক স্থান। এছাড়া রয়েছে বেবুধ রাজার পুকুর, রাজবাড়ী (র্মিজাপুর)।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "পাকুন্দিয়া উপজেলা"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৮-০৭।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মে ২০১৭।
- ↑ "Institute Basic Information" [প্রতিষ্ঠানের মৌলিক তথ্য]। বাংলাদেশ ওপেন ডাটা (ইংরেজি ভাষায়)। ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল (XLS) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০১, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। "উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদী"। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি (প্রথম সংস্করণ)। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৮। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- উইকিমিডিয়া কমন্সে পাকুন্দিয়া উপজেলা সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- বাংলাপিডিয়ায় পাকুন্দিয়া উপজেলা