পাইক নৃত্য হল পশ্চিমবঙ্গের একটি লোকনৃত্য।

পাইক নাচের উৎপত্তি হয়েছে পাইক বিদ্রোহের জন্য খ্যাত ধলভূমগড়ে । ধলভূমের রাজা জগন্নাথ ধল শিলদার রাণী কিশোরমণির কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি চিল্কিগড়ে চুয়াড় বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। উনিশ ও বিশ শতাব্দীতে ধলভূম ও চিল্কিগড়ের ধবল রাজবংশের পৃষ্ঠপোষকতাতে বীরধর্মী পাইক নাচের সৃষ্টি হয়। পাইক নাচের দল ঝাড়গ্রাম জেলার দুবড়া, বালিডিহা, কুড়ারিয়া, বেলপাহাড়ির কাঁটিশোল, বেলপাহাড়ি , সাঁকরাইলের ডাহি, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ধেরুয়া, গড়বেতার গনগনিতে দেখতে পাওয়া যায়।

পাইক বিদ্রোহের প্রভাব ঝুমুর গানতেও দেখা যায়। পাইক নাচ বর্তমানে অস্ত্রসহ নাচ থেকে সরে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলাকে কেন্দ্র করে হচ্ছে। এই নাচের নান্দনিক সৌন্দর্য রয়েছে। হালের দু’টি পাইক নাচ যার উদাহরণ।এতে বলা হয়েছে-

‘ধারে ধারে চলরে রাই/কাঙ্গালিনীর মাঠে।/চলিতে চলিতে কোকিলা ডাকে রে ভাই/পাহাড় পর্বত কাটে’।

শেষ দৃশ্যে বলা হয়েছে-

‘রাধাকৃষ্ণের মিলন হল শ্যাম দরশনে,/ভ্রমরা–ভ্রমরি বলে আমরা দু’জনে/যাকে শ্যাম দরশনে যুগলমিলনে/রাধাকৃষ্ণের মিলন হলো শ্যাম দরশনে’।

পাইক নৃত্যের এই পরিবর্তনে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাব দেখা যায় ।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাহাজ্যে পাইক নাচের পূর্বের রূপ বা রণনৃত্যকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "পাইক নাচের রণবাদ্যে এখন রাধাকৃষ্ণের মিলনের সুর"www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-২৫