পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি
পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি ভারতীয় সংস্কৃতির একটি অঙ্গ। এই সংস্কৃতির শিকড় নিহিত রয়েছে বাংলা সাহিত্য, সংগীত, শিল্পকলা, নাটক ও চলচ্চিত্রে। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু মহাকাব্য ও পুরাণ-ভিত্তিক জনপ্রিয় সাহিত্য, সংগীত ও লোকনাট্যের ধারাটি প্রায় সাতশো বছরের পুরনো। উনিশ শতকে অধুনা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা ছিল বাংলার নবজাগরণ ও হিন্দু সমাজ-সংস্কার আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। বিশ শতকের প্রথমার্ধ্বে এশিয়ার প্রথম নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পশ্চিমবঙ্গ-সহ সমগ্র বাংলার প্রধান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। তার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিতে আজও অক্ষুণ্ণ। এই সময়েই চলচ্চিত্র পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে ওঠে। বর্তমান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর। এরপর ১৯৫০-এর দশক থেকে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্রে সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন ও ঋত্বিক ঘটকের মতো চিত্র পরিচালকদের আবির্ভাব হয় এবং পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশংসা লাভ করতে শুরু করে।



পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিতে ধর্মের প্রভাব ব্যাপক। হিন্দুধর্ম পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠের (৭২.৫%) ধর্ম হওয়ায়, এই ধর্মের প্রভাবই সর্বাধিক লক্ষিত হয়। শারদীয়া দুর্গাপুজো পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় উৎসব। কালীপুজোও মহাসমারোহে উদ্যাপিত হয়। অন্যান্য উৎসবের মধ্যে প্রধান সরস্বতী পুজো, দোলযাত্রা, রথযাত্রা, পয়লা বৈশাখ, বইমেলা, রবীন্দ্রজয়ন্তী, নেতাজি জয়ন্তী ইত্যাদি।
পশ্চিমবঙ্গে তিনটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান (সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, শান্তিনিকেতন ও দার্জিলিং হিমালয়ান রেল) রয়েছে।
ভাষা, সাহিত্য ও সঙ্গীত
সম্পাদনাবাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ঐতিহ্য হাজার বছরের বেশি পুরনো। ৭ম শতাব্দীতে লেখা বৌদ্ধ দোহার সঙ্কলন চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত। মধ্যযুগে বাংলা ভাষায় কাব্য, লোকগীতি, ও পালাগানের প্রচলন ঘটে। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে বাংলা কাব্য ও গদ্যসাহিত্যের ব্যাপক বিকাশ ঘটে। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রাঢ় বাংলার তথা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ বাংলা ভাষায় সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলার লোক সাহিত্যও সমৃদ্ধ; মৈমনসিংহ গীতিকায় এর পরিচয় পাওয়া যায়। ষাটের দশকে পশ্চিমবঙ্গের হাংরি আন্দোলন , শ্রুতি, শাস্ত্রবিরোধী ও নিমসাহিত্য আন্দোলনগুলি বাংলা সাহিত্যকে একটি নূতন বাঁকবদল এনে দিয়েছিল ।
বাংলার সঙ্গীত বাণীপ্রধান; এখানে যন্ত্রসঙ্গীতের ভূমিকা সামান্য। গ্রাম বাংলার লোক সঙ্গীতের মধ্যে বাউল গান, জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি, মুর্শিদী, গম্ভীরা, কবিগান ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। গ্রামাঞ্চলের এই লোকসঙ্গীতের সাথে বাদ্যযন্ত্র হিসাবে মূলত একতারা, দোতারা, ঢোল, বাঁশি ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
বাংলার ও বাঙালির শক্তিসাধনার ফলশ্রুতিতে জন্ম নেয় শাক্তসাহিত্য - শাক্ত পদাবলী। এই শাক্ত পদাবলীর দুই প্রাণপুরুষ হলেন রামপ্রসাদ সেন এবং কমলাকান্ত ভট্টাচার্য। এছাড়াও এই ধারার বিশিষ্ট রচয়িতাদের মধ্যে রয়েছেন কৃষ্ণচন্দ্র রায়, শম্ভুচন্দ্র রায়, নরচন্দ্র রায়, অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি, রামনিধি গুপ্ত, দাশরথি রায় প্রমুখ ব্যক্তিত্ব। শাক্ত পদাবলী এবং শ্যামা সঙ্গীত বাঙালির সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় যাপনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সাধারণভাবে, দেবী কালী বিষয়ক সমস্ত সঙ্গীতই শ্যামা সঙ্গীত হিসেবে পরিচিত। এই ধারাতে কাজী নজরুল ইসলাম-এর সৃজনও উজ্জ্বল। জনপ্রিয় শ্যামা সঙ্গীত গায়কদের অন্যতম হলেন সাধক শিল্পী পান্নালাল ভট্টাচার্য, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, নির্মল মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। এই ধারার সঙ্গীতের অন্যতম খ্যাতনামা সুরকার প্রফুল্ল ভট্টাচার্য, চিত্ত রায়, ভোলানাথ বিশ্বাস, রবিন চট্টোপাধ্যায়, বিশু মুখোপাধ্যায়, নিখিল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
রবীন্দ্রনাথ-এর রবীন্দ্র সংগীত বাংলা সাহিত্যে ও সংগীতের অমূল্য সম্পদ। এই সংগীত ধারার সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে আছেন দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহানা দেবী, ইন্দিরা দেবী চৌধুরাণী, শান্তিদেব ঘোষ, পঙ্কজকুমার মল্লিক, কুন্দনলাল সায়গল, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুচিত্রা মিত্র, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, দেবব্রত বিশ্বাস, সুবিনয় রায়, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, সাগর সেন প্রমুখ ব্যক্তিত্ব।
রবীন্দ্র সংগীত-এর মতোই বাংলা সঙ্গীতের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধারা কবি কাজী নজরুল ইসলাম সৃষ্ট নজরুলগীতি। মোহাম্মদ রফি, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, সুপ্রভা সরকার, ফিরোজা বেগম, পূরবী দত্ত, অনুপ ঘোষাল প্রমুখ এই ধারার বিশিষ্ট গায়ক।
রবীন্দ্রনাথ বা কাজী নজরুল ইসলাম ছাড়াও রামনিধি গুপ্ত, অতুলপ্রসাদ সেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, রজনীকান্ত সেন-এর গানও বাঙালি-র হৃদয়ের ধন। ১৩২৫ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত ভাদুড়ী মহাশয় অর্থাৎ মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ-এর রচিত সাধন সঙ্গীত 'পরমার্থ-সঙ্গীতাবলী'ও বাংলা সাহিত্য ও বাংলা সঙ্গীত-এর ধারায় রত্ন বিশেষ।[৩][৪] 'COMPANIONS AND FOLLOWERS OF RAMAKRISHNA' গ্রন্থটির সূত্রে জানা যায় বালি ইংলিশ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন ১৮৮১ সালে দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ পরমহংসের সঙ্গে মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ-এর সাক্ষাৎ হয়।[৫] [৬] মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণ পরমহংসের উপস্থিতিতে যে তিনটি গান পরিবেশন করেন এই গ্রন্থে সেই গানগুলিও সংযোজিত হয়েছে।[৭] মা কালীর মহান সাধক ভবা পাগলা রচিত আধ্যাত্মিক ব্যঞ্জনাময় সংগীতগুলিও বাংলা সংগীত-এর অমূল্য সম্পদ।
বাংলা আধুনিক গান-ও বাঙালির সংগীত ধারার একটি বিশিষ্ট শাখা। যাঁদের কণ্ঠের বাংলা আধুনিক গান আজও মুগ্ধতা ছড়ায় - তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কন্ঠ শিল্পীরা হলেন: হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, কিশোর কুমার, শ্যামল মিত্র, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, শচীন দেব বর্মন, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, লতা মঙ্গেশকর, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, সুধীরলাল চক্রবর্তী, জগন্ময় মিত্র, দিলীপকুমার রায়, প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়, নির্মলা মিশ্র প্রমুখ। ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, রাধারাণী দেবী, ছবি বন্দ্যোপাধ্যায় ভক্তিগীতির ধারায়, বাংলা পুরাতনী গানে রামকুমার চট্টোপাধ্যায়, রাগাশ্রয়ী সংগীতে শিপ্রা বসু, লোকসঙ্গীতে নির্মলেন্দু চৌধুরী, অমর পাল, বাংলা ছড়ার গানে সনৎ সিংহ, জপমালা ঘোষ চিরস্মরণীয়।
বাংলা গীতিকার-দের মধ্যে চিরস্মরণীয় - হিমাংশু দত্ত, গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার,পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরী, প্রণব রায়, শ্যামল গুপ্ত, মুকুল দত্ত প্রমুখ। সুরকার-দের মধ্যে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন - রবি শংকর, হিমাংশু দত্ত, সলিল চৌধুরী, কমল দাশগুপ্ত, রাইচাঁদ বড়াল, নচিকেতা ঘোষ, রবিন চট্টোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সুধীন দাশগুপ্ত, শচীন দেব বর্মন, রাহুল দেব বর্মন, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
নৃত্য বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনানৃত্যশিল্পের নানা ধরন বাংলায় প্রচলিত। এর মধ্যে রয়েছে উপজাতীয় নৃত্য, লোক নৃত্য, শাস্ত্রীয় নৃত্য ইত্যাদি। দেশের গ্রামাঞ্চলে যাত্রা পালার প্রচলন রয়েছে। কলকাতা-কেন্দ্রিক চলচ্চিত্র শিল্প থেকে প্রতি বছর প্রায় ৮০ হতে ১০০টি বাংলা চলচ্চিত্র তৈরি করা হয়।
রন্ধন
সম্পাদনাবাংলার রান্না-বান্নার ঐতিহ্যের সাথে ভারতীয় ও মধ্যপ্রাচ্যের রান্নার প্রভাব রয়েছে। ভাত, ডাল ও মাছ বাঙালিদের প্রধান খাবার, যেজন্য বলা হয়ে থাকে মাছে ভাতে বাঙালি। দেশে ছানা ও অন্যান্য প্রকারের মিষ্টান্ন , যেমন রসগোল্লা, চমচম বেশ জনপ্রিয়।
পোশাক
সম্পাদনাপশ্চিম বাংলার নারীর প্রধান পোশাক শাড়ি। যদিও বর্তমানে নারীদের পোশাকে অনেকটাই পাশ্চাত্য প্রভাব আছে। জিন্স প্যান্ট আর কুর্তা খুবই জনপ্রিয়। পুরুষদের প্রধান পোশাক ধুতি এবং পাঞ্জাবি, তবে বর্তমানে পাশ্চাত্যের পোশাক শার্ট-প্যান্ট প্রচলিত। বিশেষ অনুষ্ঠানে এখনও পুরুষেরা ঐতিহ্যবাহী ধুতি-পাঞ্জাবি আর নারীরা শাড়ি পরিধান করে থাকেন।
সামাজিক অনুষ্ঠান
সম্পাদনাএখানকার প্রধান সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব দুর্গাপুজো এবং কালীপূজা, এছাড়া নবদ্বীপের শাক্তরাস এবং কৃষ্ণনগর ,চন্দননগর এর জগদ্ধাত্রী পূজা একটি বাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যশালী জনপ্রিয় উৎসব।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেবী কালীর যে যে বিশেষ পূজাগুলি বিশেষ প্রচলিত - তার মধ্যে জ্যৈষ্ঠ মাসের অমাবস্যা তিথিতে ফলহারিণী কালীপূজা- যথেষ্ট জনপ্রিয়।[৮] জ্যৈষ্ঠের অমাবস্যা তিথিতে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেব মা সারদাদেবীকে দেবী ষোড়শী রূপে পূজা করেছিলেন।[৯] দিনটি ছিল ১২৮০ বঙ্গাব্দের ১৩ই জ্যৈষ্ঠে ফলহারিণী কালীপুজো।[১০] এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য , আজও রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে এই পুজো ‘ষোড়শী’ পুজো নামে পরিচিত। এখনও বেলুড়মঠে ঠাকুরের গর্ভগৃহে ঠাকুরের বাম পাশে মায়ের প্রতিকৃতি রেখে পুজো করা হয়। অমাবস্যা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় যে নিশি পুজো, তা চলে ভোর পর্যন্ত।[১১] মহাপীঠ তারাপীঠে এই অমাবস্যার দিন মা তারাকে দু’বার অন্নের ভোগ নিবেদন করা হয়।[১২] রাতে খিচুড়ি,বলির পাঁঠার মাংসের ভোগ নিবেদন করা হয়।[১৩] ১৮৮১ খ্ৰী. দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের সান্নিধ্য লাভে ধন্য হয়েছিলেন যোগ-ভক্তি মার্গের সিদ্ধ সাধক ভাদুড়ী মহাশয় অর্থাৎ মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ।[১৪] তাই মহর্ষি নগেন্দ্রনাথের শেষ জীবনের সাধন ভূমি - কলকাতা-র রাজা রামমোহন রায় রোডের শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন-এও গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে নিয়ম নিষ্ঠা মেনে এই ফলহারিণী কালীপূজা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও এর সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে আছে এই পূজার যৌগিক তাৎপর্যও।
অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে অন্নকূট মহোৎসব একটি অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। রানি রাসমণির কনিষ্ঠা কন্যা জগদম্বা ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে ব্যারাকপুরে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের আদলে অন্নপূর্ণা মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এই মন্দিরে অন্নপূর্ণা পুজোর দিন হয় অন্নকূট মহোৎসব।[১৫] উত্তর কলকাতার শ্যামপুকুরের বলরাম ঘোষ স্ট্রিটের ভট্টাচার্য বাড়িতেও দেবী অন্নপূর্ণার অন্নকূট মহাসমারোহে উদযাপিত হয়।[১৬] লঘিমা সিদ্ধ মহাযোগী ভাদুড়ী মহাশয় - মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ- এর শেষ সাধনভূমি কলকাতা-র রামমোহন রায় রোডের শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশনেও অন্নপূর্ণা পূজা উপলক্ষে আয়োজিত হয় অন্নকূট উৎসব।[১৭]
পুরুলিয়ার ছৌ নাচ ও আদিবাসীদের টুসু পরব, করম পরব, বাঁদনা পরব আঞ্চলিক ভাবে জনপ্রিয়। সর্বজনীন উৎসবের মধ্যে পয়লা বৈশাখ প্রধান। গ্রামাঞ্চলে নবান্ন, পৌষ পার্বণ ইত্যাদি লোকজ উৎসবের প্রচলন রয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস এবং ভাষা আন্দোলনের স্মরণে একুশে ফেব্রুয়ারি পালিত হয়। এছাড়াও ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ইদ্-উল-ফিতর বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা, এবং খ্রিস্টানদের বড়দিন এর প্রচলন আছে। কলকাতার দুর্গা পুজার উদ্দীপনা এদেশের সব উৎসবের আড়ম্ভরকে ছাড়িয়ে যায়।
ক্রীড়া
সম্পাদনাক্রিকেট ও ফুটবল বাংলার জনপ্রিয়তম খেলা। হকি বাংলার(ভারতের) জাতীয় খেলা। অন্যান্য খেলার মধ্যে কাবাডি, হ্যান্ডবল, সাঁতার এবং দাবা উল্লেখযোগ্য। এ যাবৎ ২ জন বাঙালি - দিব্যেন্দু বড়ুয়া এবং সূর্যশেখর গাঙ্গুলি - দাবার আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাব অর্জন করেছেন। সৌরভ গাঙ্গুলি বাংলার ক্রিকেটের অন্যতম মুখ। একইসঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটের সেরা অধিনায়াক।
আরো দেখুন
সম্পাদনা- কলকাতা
- কলকাতার ইতিহাস
- কলকাতার দুর্গাপূজা
- কলকাতার ব্যক্তিবর্গের তালিকা
- কলকাতার সংস্কৃতি
- বাংলা সাহিত্য
- বাংলার স্থাপত্য
- পশ্চিমবঙ্গের সংগীত
- বাংলা সঙ্গীত
পাদটীকা
সম্পাদনা- ↑ Georg, Feuerstein (২০০২)। The Yoga Tradition। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 600। আইএসবিএন 3935001061।
- ↑ Clarke, Peter Bernard (২০০৬)। New Religions in Global Perspective। Routledge। পৃষ্ঠা 209। আইএসবিএন 0700711856।
- ↑ শ্রীশ্রীনগেন্দ্রনাথ, যুগাচার্য মহর্ষি (১৩৮৫)। পরমার্থ-সঙ্গীতাবলী। ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৭০০০০৯: শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ।
- ↑ Sen Shastri, Prof. Tripurasankar (ডিসেম্বর ২০২০)। The Levitating Saint। Nagendra Mission, 2B Rammohan Roy Road, Kolkata-7000009। পৃষ্ঠা 27।
- ↑ Nagendranath Bhaduri, Maharshi (1846 - 1926), COMPANIONS AND FOLLOWERS OF RAMAKRISHNA। Advaita Ashrama, 5 DEHI ENTALLY ROAD. KOLKATA 700 014: Swami Bodhasarananda। পৃষ্ঠা 381। আইএসবিএন 978-81-7505-360-1।
- ↑ শ্রীশ্রীনগেন্দ্রনাথ, যুগাচার্য মহর্ষি (১৩৮৫)। পরমার্থ-সঙ্গীতাবলী। ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা - ৭০০০০৯: শ্রীশ্রীনগেন্দ্র মঠ।
- ↑ Nagendranath Bhaduri, Maharshi (1846 - 1926), COMPANIONS AND FOLLOWERS OF RAMAKRISHNA। Advaita Ashrama, 5 DEHI ENTALLY ROAD. KOLKATA 700 014: Swami Bodhasarananda। পৃষ্ঠা 381। আইএসবিএন 978-81-7505-360-1।
- ↑ শক্তিরঙ্গ বঙ্গভূমি, সুরেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাঃ লিঃ, কলকাতা, ১৯৯১, পৃ. ১১৪-১৫
- ↑ মিত্র, সুপ্রিয়। "অশুভ ফলের বিনাশ ঘটান দেবী ফলহারিণী! জ্যৈষ্ঠের অমাবস্যায় হয় দেবীর পূজা, তিথি কখন শুরু, কখন শেষ?"।
- ↑ "ফলহারিণী কালীপুজোর বেলুড় মঠে শ্রীমা সারদাদেবীর বিশেষ পুজো, দেখে নিন ছবি"।
- ↑ "ফলহারিণী কালীপুজোর বেলুড় মঠে শ্রীমা সারদাদেবীর বিশেষ পুজো, দেখে নিন ছবি"।
- ↑ "Phalharini Kali Puja: ভক্তিভরে মা তারাকে পুজো করুন, ফলহারিণী অমাবস্যায় তারাপীঠে নামবে ভক্তের ঢল, রীতি মানলে জীবনে থাকবে না কোনও দুঃখ"।
- ↑ "Phalharini Kali Puja: ভক্তিভরে মা তারাকে পুজো করুন, ফলহারিণী অমাবস্যায় তারাপীঠে নামবে ভক্তের ঢল, রীতি মানলে জীবনে থাকবে না কোনও দুঃখ"।
- ↑ মুখোপাধ্যায়, রঘুপতি (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। যুগাচার্য্য মহর্ষি নগেন্দ্রনাথ। সনাতন ধর্ম প্রচারিণী সভা ও শ্রীশ্রী নগেন্দ্র মঠ এবং নগেন্দ্র মিশন, ২বি, রামমোহন রায় রোড, কলকাতা- ৯। পৃষ্ঠা ১৬-১৭।
- ↑ "অন্নের পর্বতে শাক ভাজা লুচি সন্দেশের অলঙ্করণ"।
- ↑ "অন্নের পর্বতে শাক ভাজা লুচি সন্দেশের অলঙ্করণ"।
- ↑ "অন্নপূর্ণা পূজায় বাংলায় অন্নকূট, Annapurna Puja 2025 Date Time Fixture: ভক্তি মনে দেবীর পুজো করলে বাড়িতে অন্নের অভাব হয় না, জানুন অন্নপূর্ণা পুজোর মন্ত্র- নির্ঘণ্ট"।