পয়জন আইভি (১৯৯২-এর চলচ্চিত্র)
পয়জন আইভি ১৯৯২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মার্কিন নাট্য-থ্রিলার ধর্মী চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন ক্যাট শিয়া। মেলিসা গোডার্ডের কাহিনীতে ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন ছবিটির প্রযোজক অ্যান্ডি রুবেন ও পরিচালক ক্যাট শিয়া। এতে নাম চরিত্রে অভিনয় করেছেন ড্রিউ ব্যারিমোর,[২] এবং অন্যান্য প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সারা গিলবার্ট, টম স্কেরিট, চেরিল ল্যাড এবং একটি ছোট ভূমিকায় অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।
পয়জন আইভি | |
---|---|
পরিচালক | ক্যাট শিয়া |
প্রযোজক | অ্যান্ডি রুবেন |
রচয়িতা | মেলিসা গোডার্ড (কাহিনী) অ্যান্ডি রুবেন ও ক্যাট শিয়া (চিত্রনাট্য) |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | ডেভিড মাইকেল ফ্রাঙ্ক |
চিত্রগ্রাহক | ফেডন পাপমাইকেল |
সম্পাদক | জিনা মিটলম্যান |
পরিবেশক | নিউ লাইন সিনেমা |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ৮৮ মিনিট |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $৩ মিলিয়ন |
আয় | $১,৮২৯,৮০৪[১] |
চলচ্চিত্রটি ১৯৯২ সালে সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য গ্র্যান্ড জুরি প্রাইজের জন্য মনোনীত হয়। সারা গিলবার্ট ১৯৯৩ সালে ইনডিপেন্ডেন্ট স্পিরিট পুরস্কার-এ শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন। ২০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি $১,৮২৯,৮০৪ আয় করে।[১] বক্স অফিসে খুব বেশি আয় করতে না পারলেও ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝিতে ক্যাবল টেলিভিশন ও ভিডিওতে সফল হয়। ফলে পয়জন আইভি ২: লিলি, পয়জন আইভি: দ্য নিউ সিডাকশন, ও পয়জন আইভি: দ্য সিক্রেট সোসাইটি নামে ছবিটির আরও তিনটি সিক্যুয়েল বের হয়।
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাসিলভি কোপার একটি প্রাইভেট স্কুলে পড়ে। সেখানে তার গাছে রশিতে দোল খেতে থাকা আইভির সাথে পরিচয় হয়। আইভি গরীব ঘরের মেয়ে। কিন্তু বৃত্তি পেয়ে সে প্রাইভেট স্কুলে পরার সুযোগ পায়।
পরেরদিন সিলভির বাবা যে টেলিভিশন স্টেশনে কাজ করে সেখানে বোমা হামলা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে সে তার বাবাকে ফোন করে। এসময় আইভি তার কাছে এসে তার সাথে কথা বলে। সিলভির বাবা তাকে নিতে এলে আইভি তার গাড়িতে লিফট চায়। প্রথমে সিলভির বাবা ড্যারেল না চাইলেও পরে তাকে গাড়িতে তুলে। আইভি সিলভিকে বলে সে গাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়ছে এবং তার কাছে সামনের সিটে বসার অনুমতি চায়। কিন্তু তা ছিল ড্যারেলের নৈকট্য লাভের জন্য, কারণ আইভির বয়স্ক পুরুষের প্রতি আকর্ষণ রয়েছে। সে গাড়ির ড্যাশবোর্ডের উপর পা রাখলে মিনি স্কার্টের কারণে তার উরু দেখা যায় এবং ড্যারেল দেখে।
কয়েক সপ্তাহ পরে সিলভি আবার রশিতে দোল খেতে থাকা আইভির সাথে দেখা হয়। পথে কথা হতে থাকলে আইভি জানতে পারে ড্যারেল সিলভির পালক পিতা এবং তার আসল বাব একজন আফ্রো-অ্যামেরিকান। সিলভি বলে সে তার বাবাকে একবার মেরে ফেলতে চেয়েছিল। সিলভি আইভিকে তাদের বাড়িতে আসার আমন্ত্রণ জানায়। তারা থাকার ঘরে ঢুকে যেখান থেকে সান ফারনান্দু ভ্যালি দেখা যায়। সিলভি বলে সে যদি আত্মহত্যা করতে চায় তবে সে এখান থেকে লাফ দিতে প্রস্তুত। এসময় সিলভির অসুস্থ মা জর্জি ঘরে ঢুকে এবং সে জানায় সিলভির আত্মহত্যার এবং তার বাবার ব্যাপারে বলা কথাগুলো মিথ্যা।
আইভির মা অসুস্থ থাকার কারণে তার বাবাকে পরিপূর্ণ যৌন সুখ দিতে পারত না। আইভি সেই সুযোগ নিতে চাইল। একদিন একটি গানের রেকর্ড বাজাতে গিয়ে আইভি জর্জিকে বেলকনি থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিল। সবাই ধরে নিল এটা আত্মহত্যা, কারণ জর্জি প্রায়ই আত্মহত্যা করবে বলে সবাইকে শাসাত।
কয়েক সপ্তাহ পরে সিলভি জর্জির পুরনো স্পোর্টস কার ধুয়ে চালাতে বের হল। আইভিও তার সাথে গাড়িতে চড়ল। গাড়ি চালানোর সময় আইভি জর্জি মারা যাওয়ার আগে যে গান শুনছিল তা গুনগুন করছিল। সিলভি আইভির কাছে তার মা মারা যাওয়ার আগে কি বলেছিল জানতে চাইলে আইভি জবাব না দিয়ে জোরে গাড়ি চালানো শুরু করে এবং একটি গাছের সাথে ধাক্কা খায়। দোষের ভাগ কমানোর জন্য সে জ্ঞান ফিরে আসলে সিলভিকে চালকের সিটে নিয়ে যায়।
হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফিরলে সিলভি আইভির সাথে তার ঘরে দেখা করে। আইভি তাকে বলে সে তাকে কতটা ভালোবাসে এবং তাকে চুমু খায়। কিন্তু এক পর্যায়ে সে তার জিহ্বা ব্যবহার করলে সিলভি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতে গেলে সে ব্যালকনি থেকে পরে যায়। শেষ দৃশ্যে সিলভি বলে সে তাকে কতখানি ভালবাসত এবং তার মা ও আইভি দুজনের চেহার ভেসে উঠে।
অভিনয়শিল্পী
সম্পাদনা- সারা গিলবার্ট - সিলভি কোপার
- ড্রিউ ব্যারিমোর - আইভি
- টম স্কেরিট - ডেরিল কোপার
- চেরিল ল্যাড - জর্জি কোপার
- অ্যালান স্টক - বব
- জিনি সাকাটা - ইসাবেলা
- ই জে মোর - একটি শিশু
- জে বি কুউন - অপর শিশু
- লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও - একজন লোক
- মাইকেল গোল্ডনার - গাড়িতে লোক
- চার্লি হেওয়ার্ড - টিনি
- টাইম উইন্টারস - বৃদ্ধ লোক
- বিলি কেইন - জেমস
- টনি এরভলিনা - পর্দায় লোক
- মেরি গর্ডন মারি - এমডি
মূল্যায়ন
সম্পাদনাচলচ্চিত্রটি সানড্যান্স চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয় এবং নারী পরিচালক শিয়ার পরিচালনার জন্য বিতর্কিত হয়:
আমি সবসময় নিউ লাইনকে বলেছি ছবিটি তারা যা ভেবেছিল তার চেয়ে ভিন্ন হবে। আমি প্রমাণের ঊর্ধ্বে ছিলাম এমন একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ সম্ভব যা সত্যিই শিল্পগুণ সমৃদ্ধ হবে এবং তা বাণিজ্যিকভাবেও সফল হবে, এটি আমার নিকট থেকে তাদের জন্য সৎ অভিব্যক্তি। আমি তাদের বলেছিলাম আমি শুধু আমার নিজের জন্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারি। আমি শুধু জানি যে যদি আমি সত্যিই তা পছন্দ করি তবে এর বাজার তৈরি হবে।
চলচ্চিত্রটি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের সমালোচনা লাভ করে।[৩] রজার ইবার্ট চলচ্চিত্রটিকে ৪-এ ২.৫ দেয় এবং বলে গল্পে কিছু বিস্ময় ছিল যা আগে থেকে না উন্মোচন করলে ভালো হত।[৪] রটেন টম্যাটোস-এ চলচ্চিত্রটি রেটিং স্কোর ৩৭%।[৫]
আইভি চরিত্রটি এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি কর্তৃক প্রকাশিত সর্বকালের সেরা ২৬ খল নারী চরিত্রের তালিকায় ৬-এ স্থান পায়।[৬]
সিক্যুয়েল
সম্পাদনা- ১৯৯৬: নিউ লাইন সিনেমা মুক্তি দেয় ডিরেক্ট-টু-ভিডিও সিক্যুয়েল পয়জন আইভি ২: লিলি, প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন এলিসা মিলানো।
- ১৯৯৭: দ্বিতীয় ডিরেক্ট-টু-ভিডিও সিক্যুয়েল পয়জন আইভি: দ্য নিউ সিডাকশন মুক্তি পায়, প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন জেমি প্রেসলি।
- ২০০৮: এই সিরিজের চতুর্থ চলচ্চিত্র পয়জন আইভি: দ্য সিক্রেট সোসাইটি, লাইফটাইম মুভি নেটওয়ার্ক-এ প্রিমিয়ার হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "Poison Ivy"। বক্স অফিস মোজো। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "POISON IVY STARRING DREW BARRYMORE"। লফটসিনেমা। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "MOVIE REVIEW : 'Ivy': Family Itchin' for Trouble"। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Poison Ivy Movie Review and Summary"। রজারইবার্ট.কম। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ "Poison Ivy (1992)"। রটেন টম্যাটোস। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
- ↑ Bernardin, Marc (২৯ জুন ২০০৮)। "Lethal Ladies: 26 Best Big-Screen Bad Girls"। এন্টারটেইনমেন্ট উইকলি। ২১ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে পয়জন আইভি (ইংরেজি)
- অলমুভিতে পয়জন আইভি (ইংরেজি)
- টিসিএম চলচ্চিত্র ডেটাবেজে পয়জন আইভি
- আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট ক্যাটালগে আইভি পয়জন আইভি
- রটেন টম্যাটোসে পয়জন আইভি (ইংরেজি)
- বক্স অফিস মোজোতে পয়জন আইভি (ইংরেজি)