উপাদানের সহতামাত্রা

(পদার্থের শক্তি থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কোনও উপাদানের সহতামাত্রা (ইংরেজিতে Strength of a material) বলতে কোনও প্রযুক্তির উপাদান পদার্থের একটি যান্ত্রিক ধর্মকে বোঝায়, যা সেই উপাদানটির উপরে প্রযুক্ত বিভিন্ন ধরনের ভার বা বহিস্থ যান্ত্রিক বলের (পীড়ন) কারণে উপাদানটির রূপবিকার বা ভাঙন (যা উপাদানটির ব্যর্থতা বা বৈকল্য হিসেবে পরিগণিত) সহ্য ও প্রতিরোধ করার সামর্থ্যকে নির্দেশ করে। উপাদানের সহতামাত্রার তিনটি মূল দিক আছে: টানজ সহতামাত্রা, সংকোচক সহতামাত্রাকৃন্তন সহতামাত্রা। এছাড়া পরম সহতামাত্রা ও টান বলের ক্ষেত্রে নতি সহতামাত্রা আরও দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। যেসব প্রযুক্তির স্থায়ীভাবে বেঁকে বা ভেঙে না গিয়ে অনেক উচ্চ ভার বহন করার ক্ষমতা থাকতে হয়, সেগুলিতে উচ্চ সহতামাত্রার উপাদান ব্যবহার করা হয়। প্রকৌশলবিদ্যায় যখন কোনও কাঠামো (যেমন সেতু) বা যন্ত্র নকশা করা হয়, তখন কাঠামো বা যন্ত্রটি যেন প্রযুক্ত ভার বা বল প্রতিরোধ করে তার আদি আকার-আকৃতি ধরে রাখার উপযুক্ত সামর্থ্য রাখে, সেজন্য উপাদানের সহতামাত্রা গণনা করে একটি সঠিক ও উপযুক্ত উপাদান নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

প্রকৌশলবিদ্যার যে শাখায় উপাদানসমূহের সহতামাত্রা নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়, তাকে উপাদানসমূহের সহতামাত্রা বিদ্যা (Strength of Materials) বা উপাদানসমূহের বলবিজ্ঞান (Mechanics of materials) বলে। এই শাস্ত্রে বাইরে থেকে প্রযুক্ত ভার এবং উপাদানের উপরে তার ফলে সৃষ্ট আকার-আকৃতিগত পরিবর্তন বা রূপবিকার গবেষণা করা হয়। সাধারণত এ শাস্ত্রে বিভিন্ন গাঠনিক উপাংশ (Structural component), যেমন আড়া (Beam বিম), স্তম্ভ (Column কলাম), সংযোগদণ্ড (Shaft শ্যাফট), ইত্যাদিতে পীড়ন (Stress স্ট্রেস) এবং রূপবিকার ও বিকৃতি (Deformation and Strain) গণনা করার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোনও উপাদানের সহতামাত্রা একটি জটিল ও বহুমুখী ধর্ম যেটি একাধিক নিয়ামক দ্বারা তাৎপর্যপূর্ণরূপে প্রভাবিত হতে পারে। এই সব নিয়ামকের মধ্যে উপাদানের গঠন, অণুকাঠামো, তাপমাত্রা, ভার বোঝাইয়ের হার, চাপ, বিকৃতির হার, উপাদানের অবস্থা, কেলাস কাঠামো, বয়স, পরিবেশের প্রভাব, উপাদান প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিশেষ পরিবর্তন সাধন (ট্রিটমেন্ট), বস্তুর আকার ও আকৃতি, ভার বোঝাইয়ের দিক, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

পীড়নের অধীনে কোনও উপাদানের আচরণ বোঝার জন্য পীড়ন-বিকৃতি বক্ররেখা ব্যবহার করা হয় এবং এই বক্ররেখাটি উপাদানটির বেশ কিছু অতীব গুরুত্বপূর্ণ প্রচল বা চরিত্রনির্ধারক বৈশিষ্ট্য উন্মোচন করে, যার মধ্যে আছে স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক (বা ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক), নতি বিন্দু, নতি সহতামাত্রা, পরম সহতামাত্রা ও প্রসার্য নমনীয়তা (প্রসার্যতা), ভঙ্গুরতাবিষমদেশিকতা। টান পরীক্ষাতে কোনও উপাদান সর্বোচ্চ যে টানজ পীড়ন সহ্য করতে পারে তাকে সেটির পরম সহতামাত্রা বলে। টানজ পীড়নের যে মানটিতে উপাদানটি প্রত্যাবর্তনযোগ্য স্থিতিস্থাপক বিকৃতির পরিবর্তে স্থায়ী অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি প্রদর্শন করতে শুরু করে, তাকে নতি সহতামাত্রা বলে। এক্ষেত্রে উপাদানটিকে নমনীয় বা প্রসার্য উপাদান বলে। যেসব প্রযুক্তিতে কেবলমাত্র উপাদানের স্থিতিস্থাপক বিকৃতি অনুমোদনযোগ্য এবং অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি ব্যর্থতা হিসেবে পরিগণিত, সেসব ক্ষেত্রে নতি সহতামাত্রা নির্ণয় গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে যে উপাদান অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি প্রদর্শন না করেই হঠাৎ ভেঙে যায়, তাকে ভঙ্গুর উপাদান বলে; এক্ষেত্রে নতি সহতামাত্রার কোনও গুরুত্ব নেই। কিছু কিছু উপাদানে স্থিতিস্থাপক থেকে অস্থিতিস্থাপক বিকৃতিতে রূপান্তরের ঘটনাটিকে স্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায় না, এবং এক্ষেত্রে উপাদানের উপর পীড়নকে ০.২% বেশি গণ্য করে নতি সহতামাত্রা নির্ণয় করা হয়। নমনীয় উপাদানগুলির জন্য টানজ সহতামাত্রা ও সংকোচক সহতামাত্রা মোটামুটি একই হয়ে থাকে। অন্যদিকে ভঙ্গুর উপাদানগুলির (যেমন কাচ, কংক্রিট বা দগ্ধমাটি/সিরামিক) জন্য টানজ সহতামাত্রা অপেক্ষা সংকোচক সহতামাত্রা অনেক বেশি হয়ে থাকে। কিছু উপাদান কেলাসের কাঠামোর কারণে ভিন্ন ভিন্ন দিকে ভিন্ন ভিন্ন সহতামাত্রা প্রদর্শন করে, যে ব্যাপারটিকে বিষমদৈশিকতা বলে।

বিশেষ কিছু প্রয়োগক্ষেত্রে অবসাদ সহতামাত্রা, ক্রমবিকৃতিভঙ্গুর ভাঙন ধারণাগুলিও গুরুত্বপূর্ণ। চক্রাকার ভার বোঝাই (বা পরিবর্তনশীল ভার বোঝাই) পরিস্থিতিতে নতি সহতামাত্রার চেয়ে অনেক কম পীড়নেই অবসাদজনিত ব্যর্থতা/বৈকল্য ঘটে থাকে। অন্যদিকে দীর্ঘ সময় ধরে অপরিবর্তনীয় ভারের অধীনে উপাদানের ধীরগতিতে রূপবিকার ঘটলে তাকে ক্রমবিকৃতি বলে, যা মূলত উচ্চ তাপমাত্রার প্রযুক্তি যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ও বিমান-মহাকাশযানের উপাংশগুলিতে ঘটে থাকে। ভঙ্গুর ভাঙন হল উপাদানের হঠাৎ ভাঙন, যেটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ভাঙন দৃঢ়তা বলে। অধিকন্তু অনেক উপাদান উচ্চ তাপমাত্রায় নমনীয় বা প্রসার্য এবং অপেক্ষাকৃত নিম্ন তাপমাত্রায় ভঙ্গুর হয়ে থাকে, এবং সেগুলির ভঙ্গুর ভাঙন গ্রহণযোগ্য নয়, তাই সেগুলির নমনীয়-থেকে-ভঙ্গুর রূপান্তর তাপমাত্রা নির্ণয় করা জরুরি।

যখন বাস্তব বিশ্বে কোনও উপাদান বিকল বা ব্যর্থ হয়, অর্থাৎ সেটিকে যে উদ্দেশ্যে নকশাতে নির্বাচন করা হয়েছে, সেই নকশাকৃত ভার বহনে সেটি যখন অসমর্থ হয়, তখন সেই ব্যর্থতার মূল কারণ শনাক্ত করার উদ্দেশ্যে একটি আনুপুঙ্খিক ব্যর্থতা বিশ্লেষণ সম্পাদন করা হয়। কারণগুলির মধ্যে আছে বিকৃতির ঘন-সমাবেশ, ত্রুটি ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি। উদীয়মান উচ্চ-নৈপুণ্যের উপাদানসমূহ যেমন সংযুতি, দগ্ধমৃত্তিকা (সিরামিক) ও উন্নত ধাতুসংকর কিছু অনন্য সহতামাত্রা বৈশিষ্ট্য প্রদর্শন করে এবং এগুলিকে বিশেষায়িত ও দুরূহ কিছু কাজে প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত মনে করা হয়।

উপাদানসমূহের সহতামাত্রা বহু বিভিন্ন প্রকৌশলীয় ও বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলির অখণ্ডতা, নিরাপত্তানির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় বিষয়। এটি বিভিন্ন শিল্পখাতে উপাদানের নকশা ও নির্বাচনের কাজটিকে প্রভাবিত করে। প্রকৌশলীরা পরীক্ষাগারে টান পরীক্ষা, সংকোচন পরীক্ষাকৃন্তন পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা সম্পাদন করে কোনও উপাদানের সহতামাত্রার বিভিন্ন দিক নির্ণয় করেন। কোন্‌ উপাদানটিকে নির্বাচন করা হবে, সেটি উপাদানের সহতামাত্রার বিভিন্ন দিকের উপর নির্ভর করে। উপাদানগুলির পরম সহতামাত্রার কাছাকাছি পরিচালিত হওয়া ঠেকানোর জন্য প্রযুক্তির নকশায় বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক উপাদান যোগ করা হয়, যাতে বিপর্যয়মূলক ব্যর্থতা এড়ানো যায়। উপাদানের সহতামাত্রা সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে প্রকৌশলীরা ব্যর্থতা বা বৈকল্যের ধরনও পূর্বাভাস করতে সমর্থ হন, যাদের মধ্যে আছে ভঙ্গুর ভাঙন, অস্থিতিস্থাপক নমনীয় বিকৃতি বা অবসাদ। ফলে বিমান-মহাকাশযান নির্মাণ, মোটরযান নির্মাণ, ভবন ও স্থাপনা নির্মাণ এবং শিল্পোৎপাদন খাতগুলিতে কাঠামো ও উৎপন্ন দ্রব্যসমূহের নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত হয়।

এ পর্যন্ত পরীক্ষাগারে পরীক্ষাকৃত উপাদানগুলির মধ্যে অতিক্ষুদ্র মাপনীতে সবচেয়ে বেশি সহতামাত্রার অধিকারী উপাদানটি হল গ্রাফিন, যার টানজ সহতামাত্রা ১৩০ গিগাপ্যাসকাল বা প্রতি বর্গইঞ্চিতে ১ কোটি ৯০ লক্ষ পাউন্ড (পিএসআই), যা ইস্পাতের সহতামাত্রার ১০০ গুণ। তবে এটিকে বড় মাপে উৎপাদন করা কঠিন এবং এর কৃন্তন সহতামাত্রা অনেক কম। এর বিপরীতে হীরা হল প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন সর্বাধিক সংকোচক সহতামাত্রা প্রদর্শনকারী উপাদান, যার মান প্রায় ৪৭০ গিগাপ্যাসকাল, বা প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৬ কোটি ৮১ লক্ষ পাউন্ড ভার বহনের ক্ষমতা, কিন্তু হীরার অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি হয় না ও এটি বেশ ভঙ্গুর।

সম্পর্কিত ধর্ম সম্পাদনা

সহতামাত্রার সাথে সম্পর্কিত বা এর অনুরূপ আরও কয়েকটি ধর্ম হল উপাদানের দৃঢ়তা (Toughness), প্রতিরোধ ক্ষমতা (Resilience), কাঠিন্য (Hardness) ও অনমনীয়তা (Stiffness)। এগুলি প্রতিটিই উপাদানের পৃথক ও স্বতন্ত্র ধর্ম।

দৃঢ়তা সম্পাদনা

কোনও উপাদান স্থায়ীভাবে বেঁকে (অস্থিতিস্থাপক রূপবিকার) বা ভেঙে পড়ার আগ পর্যন্ত শক্তি শোষণ করার সামগ্রিক ক্ষমতাকে সেটির দৃঢ়তা বলে। এটিকে পীড়ন-বিকৃতি বক্ররেখার নিচে অবস্থিত ক্ষেত্রফলটি দিয়ে নির্দেশ করা হয়। যদি কোনও উপাদানের দৃঢ়তা কম হয়, তাহলে সেটি সর্বোচ্চ সহতামাত্রাতে পৌঁছানোর পরে আরও শক্তি শোষণে অপারগ হয়ে হঠাৎ করে ভেঙে পড়তে পারে। অন্যদিকে উপাদানের দৃঢ়তা বেশি হলে সেটি অনেক বেশি শক্তি শোষণ করে, এবং তাৎপর্যপূর্ণ অস্থিতিস্থাপক বিকৃতির শিকার হয়ে তবেই ভেঙে পড়ে। যেমন ভূমিকম্পসহ ভবন, সেতু ও স্থাপনাগুলির উচ্চ সহনক্ষমতার পাশাপাশি দৃঢ়তাও উচ্চ হতে হয়, যাতে এগুলি অনেক শক্তি শোষণ করে তবেই ভেঙে পড়ে। তবে দৃঢ়তা বেশি হলেও কোনও উপাদানের সহতামাত্রা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম হতে পারে, যার ফলে সেটিকে কোনও বিশেষ কাজের জন্য (যেখানে অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি বা স্থায়ীভাবে বেঁকে যাওয়া গ্রহণযোগ্য নয়) অনুপযুক্ত গণ্য করা হতে পারে। প্রকৌশলীরা সহতামাত্রা ও দৃঢ়তা --- এই দুইটি ধর্মকেই মাথায় রেখে উপাদান নির্বাচন করেন।

প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পাদনা

প্রতিরোধ ক্ষমতা বলতে কোনও স্থিতিস্থাপক উপাদানের ভারের অধীনে স্থিতিস্থাপক শক্তি শোষণ করে ধরে রাখা, ও ভারমুক্ত হলে সেই স্থিতিস্থাপক শক্তি সম্পূর্ণ ফেরত দিয়ে আদি আকৃতিতে প্রত্যাবর্তন করার ধর্মকে বোঝায়। যে উপাদানের প্রতিরোধক্ষমতা বেশি, সেটি অপেক্ষাকৃত অধিক পরিমাণ স্থিতিস্থাপক শক্তি শোষণ করে ধরে রেখে পরে ফেরত দিয়ে আদি আকৃতিতে ফিরতে পারে। যেসব প্রযুক্তিতে উপাদানের উপর বারংবার ভার বোঝাই করা হয় এবং সেটিকে শক্তি শোষণ করে নিয়ে পরে ফেরত দিয়ে আদিরূপে ফেরত যেতে হয়, সেগুলির উপাদানের প্রতিরোধক্ষমতা উচ্চ হওয়া জরুরি।

কাঠিন্য সম্পাদনা

কাঠিন্য বলতে কোনও উপাদানের পৃষ্ঠতলে ক্ষুদ্র মাপনীতে স্থানীয় বিকৃতি যেমন আঁচড় লাগা, ঘষা লাগা, দাগ পড়া বা খাঁজ পড়া, অথবা দীর্ঘকালীন ক্ষয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বোঝায়। এটি উপাদানের একটি পৃষ্ঠতলীয় ধর্ম এবং এর সাথে উপাদানের সহনমাত্রার কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই। কাঠিন্যকে বিভিন্ন প্রমিত পরীক্ষা যেমন রকওয়েল, ব্রিনেল, ভিকার্স বা মোহস মাপনী, ইত্যাদির মাধ্যমে পরিমাপ করা হয় এবং ফলাফলগুলিকে কাঠিন্য মান হিসেবে উপস্থাপন করা হয়।

অনমনীয়তা সম্পাদনা

অনমনীয়তা বলতে প্রযুক্ত বলের প্রতিক্রিয়ায় কোনও উপাদানের অস্থায়ী স্থিতিস্থাপক বিকৃতি প্রতিরোধ ক্ষমতাকে নির্দেশ করা হয়। এটিকে প্রায়শই উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক দ্বারা প্রকাশ করা হয়। কোনও উপাদানের স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক (ইয়ংয়ের গুণাঙ্ক) তথা অনমনীয়তা যত বেশি হবে, ভার বা বল প্রয়োগে সেটির অস্থায়ী স্থিতিস্থাপক বিকৃতি তত কম হবে (অর্থাৎ এটি অপেক্ষাকৃত কম স্থিতিস্থাপকতা প্রদর্শন করবে) ও ভারমুক্ত হলে এটি অপেক্ষাকৃত বেশি দ্রুততার সাথে তার আদি রূপে ফেরত আসবে।

সংজ্ঞা সম্পাদনা

বলবিজ্ঞানে উপাদানের সহতামাত্রা হল এর উপরে ভার দিলে তা বৈকল্য (Failure) এবং অস্থিতিস্থাপক নমনীয় বিকৃতি (Plastic deformation) ছাড়া কতটুকু ভার প্রতিরোধ করতে পারে, সেই সামর্থ্য। বস্তুর উপর বলের ক্রিয়ার ফলে যে লদ্ধি বল এবং বিকৃতির উদ্ভব হয় বলবিজ্ঞানে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। যান্ত্রিক কাঠামোর একটি গাঠনিক উপাংশের উপর (Structural member) কোনও একটি ভার প্রয়োগ করলে তা ঐ গাঠনিক উপাংশের অভ্যন্তরে একটি বলের উদ্ভব ঘটায়। যখন ঐ বলকে একক ক্ষেত্রফলের ভিত্তিতে প্রকাশ করা হয়, তখন সেটিকে পীড়ন (Stress) বলে। পদার্থের উপরে যে পীড়ন কাজ করে তা পদার্থের সম্পূর্ণভাবে ভেঙে যাওয়াসহ বিভিন্নভাবে এর আকার বা রূপের পরিবর্তন ঘটায়। যখন এই আকৃতি বা রূপের পরিবর্তনকে একক ভিত্তিতে হিসাব করা হয় তখন তাকে বিকৃতি (Deformation) বলা হয়। কোন যান্ত্রিক কাঠামোর গাঠনিক উপাংশের ভার বহনের সামর্থ্য কতটুকু, তা জানার জন্য এর মধ্যে যে পীড়ন এবং বিকৃতির উদ্ভব ঘটে, তা অবশ্যই হিসাব করতে হয়। এর জন্য গাঠনিক উপাংশটির জ্যামিতিক গঠন, এর প্রতিরোধ, প্রযুক্ত ভার এবং যে উপাদান পদার্থ দিয়ে গাঠনিক উপাংশটি গঠিত, তার সম্পূর্ণ বর্ণনা জানা প্রয়োজন। প্রযুক্ত ভার অক্ষীয় (টানজনিত বা সংকোচক) অথবা আবর্তনশীল (সহতামাত্রা কৃন্তন) হতে পারে। গাঠনিক উপাংশটির ভার এবং জ্যামিতির সম্পূর্ণ বর্ণনা জানা গেলে এর যেকোন বিন্দুতে পীড়ন ও বিকৃতির বিভিন্ন অবস্থা হিসাব করা যেতে পারে। গাঠনিক উপাংশের অভ্যন্তরীণ পীড়ন এবং বিকৃতির অবস্থা জানা গেলে এর সহতামাত্রা (ভার বহনের সামর্থ্য), বিকৃতি (সহতামাত্রার একটি বৈশিষ্ট্য) এবং স্থিতিশীলতা (গঠন ধরে রাখার সামর্থ্য) হিসাব করা যেতে পারে।


হিসাব করা পীড়নগুলি তখন কাঠামোর গাঠনিক উপাংশটির অন্য কিছু সহতামাত্রার সাথে, যেমন নতি সহতামাত্রা (Yield strength) বা চরম সহতামাত্রার (Ultimate strength) সাথে তুলনা করা যেতে পারে। গাঠনিক উপাংশটির হিসাব করা বিক্ষেপটিকে (Deflection) এর ব্যবহারের ভিত্তিতে থাকা বিক্ষেপ মানদণ্ডের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। উপাংশটির হিসাব করা কুঞ্চক ভারকে (Buckling load) প্রযুক্ত ভারের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। হিসাবকৃত অনমনীয়তা (Stiffness) এবং ভরের বণ্টন উপাংশটির গতীয় প্রতিক্রিয়া গণনা করতে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং তারপরে এটি ব্যবহৃত হবে এমন শাব্দিক পরিবেশের সাথে তুলনা করা যেতে পারে।

ম্যাটারিয়েল স্ট্রেংথ ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রেস-স্ট্রেন কার্ভ (ইল্ড স্ট্রেস ) এর সেই বিন্দুটিকে বোঝায় যা কে অতিক্রম করলে , পদার্থ বিকৃতি অনুভব করে ,যা লোড অপসারণের পরে পুরোপুরি আগের মত হবে না এবং ফলস্বরূপ, মেম্বারটির স্থায়ী বিকৃতি থাকবে । উপাদানের সর্বোচ্চ শক্তি বলতে এর সর্বোচ্চ চাপ বা পীড়ন কে বোঝায়। ভংগুর শক্তি হ'ল ভেঙে যাওয়া অবস্থায় পীড়নের মান (রেকর্ড করা সর্বশেষ চাপের মান)।

ভারপ্রয়োগের প্রকারভেদ সম্পাদনা

  • তির্যক ভারপ্রয়োগ (ট্রান্সভার্স লোডিং) - ফোর্স অনুদৈর্ঘ্য অক্ষের উপর লম্ব ভাবে প্রয়োগ করা হয় । ট্রান্সভার্স লোডিং বাঁক পরিবর্তনের সাথে সাথে অভ্যন্তরীণ প্রসারণ এবং সংকোচনশীল বিকৃতির মাধ্যমে মেম্বার কে তার মূল অবস্থান থেকে বাঁকায় এবং বিচ্যুতি ঘটায়। [১] এছাড়া ট্রান্সভার্স লোডিং শিয়ার ফোর্স এর উদ্ভব ঘটায় যা উপাদানগুলোর শিয়ার বিকৃতি ঘটায় এবং মেম্বার টির অনুপ্রস্থ বরাবর ডিফ্লেশন বাড়ায়।
  • অক্ষীয় ভারপ্রয়োগ (অ্যাক্সিয়াল লোডিং) - প্রয়োগকৃত বল মেম্বারের দৈর্ঘ্য বরাবর যে অক্ষ তার সাথে একই রেখায় থাকে। বল মেম্বার কে হয় প্রসারিত বা সংক্ষিপ্ত করে তোলে। [২]
  • ব্যবর্তক/মোচড় ভারপ্রয়োগ (টরসোনাল লোডিং) - বহির্মুখী সমান এবং বিপরীত দিকে নির্দেশিত একজোড়া বল যুগল (কাপল) সমান্তরাল তলে ক্রিয়া করে বা মেম্বারের উপর প্রয়োগকৃত কোনও একক বহিরাগত কাপল ,ঘূর্ণনের বিপরীতে যার এক প্রান্ত স্থির ,এদের দ্বারা সৃষ্ট মোচড় ক্রিয়াশীল হয় ।

পীড়ন শর্তাবলী সম্পাদনা

 
উপাদানের ভারপ্রয়োগ ক) সংকোচন , খ) টান , গ) কৃন্তন।

এক-অক্ষীয় পীড়ন (ইউনিএক্সিয়াল স্ট্রেস) প্রকাশ করা হয় এভাবে,

 

এখানে F হল বল (নিউটন এককে), যা একটি ক্ষেত্রফল A তে ক্রিয়াশীল (মি 2 এককে) । [৩] ইঞ্জিনিয়ারিং স্ট্রেস বা প্রকৃত স্ট্রেস কিনা তার উপর নির্ভর করে ক্ষেত্রফল টি অপরিবর্তিত বা বিকৃত হতে পারে।

  • সংকোচক পীড়ন (কম্প্রেসিভ স্ট্রেস) হল পীড়নের এমন অবস্থা যা প্রয়োগ করা লোডের ফলস্বরুপ সৃষ্ট হয়ে ( কম্প্রেসন মেম্বার ) এর দৈর্ঘ্য হ্রাস করতে কাজ করে, বা এভাবে বলা যায় ,পীড়নের এমন একটি অবস্থা যা একটি পদার্থের সঙ্কুচিত হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কম্প্রেসনের একটি সহজ উদাহরণ হতে পারে বিপরীতভাবে ক্রিয়াশীল কম্প্রেসন বল দ্বারা সৃষ্ট একটি ইউনিএক্সিয়াল কম্প্রেসন । পদার্থের কম্প্রেসিভ স্ট্রেংথ সাধারণত তাদের টেনসাইল স্ট্রেংথ থেকে বেশি ।তবে, সংকোচন লোডে স্ট্রাকচারগুলোতে ফেইলার মোড যেমন বাকলিং ঘটে , যা মেম্বারের জ্যামিতির উপর নির্ভরশীল।
  • টানজ পীড়ন (টেনসাইল স্ট্রেস) হল স্ট্রেসের এমন একটি অবস্থা যেখানে প্রয়োগকৃত লোডের ফলে লোডের অক্ষ বরাবর পদার্থটি দীর্ঘায়িত হয় , অন্য কথায়, পদার্থকে টানার ফলে তৈরি হয় এই স্ট্রেস। সমপ্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলবিশিষ্ট স্ট্রাকচার গুলো টেনসাইল লোডে থাকাবস্থায় তাদের স্ট্রেংথ,প্রস্থচ্ছেদের আকৃতি নিরপেক্ষ হয়ে থাকে। টেনসন লোডে থাকা অবস্থায় পদার্থ স্ট্রেস কনসেন্ট্রেশন এর প্রতি সংবেদন্শীল যেমন বিচ্যুতি বা জ্যামিতিক গঠনে আকস্মিক পরিবর্তন। যাইহোক, নমনীয় আচরণ প্রদর্শনকারী ম্যাটেরিয়াল গুলো (উদাহরণস্বরূপ বেশিরভাগ ধাতু) কিছু বিচ্যুতি সহ্য করতে পারে অন্যদিকে ভঙ্গুর ম্যাটেরিয়ালগুলো (যেমন সিরামিক) তাদের আল্টিমেট স্ট্রেংথ এর নিচে সহজেই ফেইল করতে পারে।
  • কৃন্তন পীড়ন (শিয়ার স্ট্রেস) হলো স্ট্রেস বা পীড়নের এমন অবস্থা যা সম্মিলিত শক্তির এক জোড়া বিপরীত বলের ,সমান্তরাল ভাবে ক্রিয়াশীল হয়ার ফলে পদার্থের মধ্যে উদ্ভব ঘটে, অন্য কথায়, পদার্থের ফেইস গুলোর একে অপরের উপর স্লাইডিংয়ের কারণে সৃষ্ট স্ট্রেস। একটি উদাহরণ হ'ল কাঁচি দিয়ে কাগজ কাটা [৪] বা ব্যাবর্তন লোডের কারণে সৃষ্ট পীড়ন ।

প্রতিরোধের ক্ষেত্রে পীড়ন প্রচল সম্পাদনা

উপাদানের প্রতিরোধ বিভিন্ন যান্ত্রিক পীড়ন-সম্পর্কিত প্রচল (প্যারামিটার) হিসাবে প্রকাশ করা যেতে পারে। যান্ত্রিক পীড়ন প্রচলগুলিকে নির্দেশ করতে যান্ত্রিক সহতামাত্রা (মেকানিক্যাল স্ট্রেংথ) পরিভাষাটি ব্যবহার করা হয়। এগুলো চাপ এবং একক ক্ষেত্রফলে বলের পরিমাণের সাথে সদৃশ। তাই সহতামাত্রা পরিমাপের প্রচলিত আন্তর্জাতিক একক হল মেগাপ্যাসকেল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথাগত এককগুলির অন্যতম হল প্রতি বর্গইঞ্চিতে পাউণ্ড (পিএসআই)। সহতামাত্রার প্রচলগুলির মধ্যে রয়েছে: নতি সহতামাত্রা, টানজ সহতামাত্রা, অবসাদ সহতামাত্রা, ফাটল প্রতিরোধ এবং অন্যান্য প্রচল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

  • নতি সহতামাত্রা হল সর্বনিম্ন চাপ যা কোনও পদার্থে স্থায়ীভাবে বিকৃতি তৈরি করে। কিছু পদার্থে, যেমন অ্যালুমিনিয়াম মিশ্রণে নতি বিন্দুটি সনাক্ত করা কঠিন, সুতরাং এটি সাধারণত ০.২% অস্থিতিস্থাপক বিকৃতি তৈরি করতে প্রয়োজনীয় চাপ হিসাবে সংজ্ঞায়িত হয়। একে ০.২% প্রুফ বিকৃতি বলা হয়।[৫]
  • সংকোচক সহতামাত্রা হলো সংকোচক পীড়নের একটি সীমাবদ্ধ অবস্থা যা উপাদানের বিভিন্ন ব্যর্থতা যেমন প্রসার্য নমনীয় ব্যর্থতা (অসীম তাত্ত্বিক নতি) বা ভঙ্গুর ভাঙন (ফাটলের কারণে সৃষ্ট ভাঙন; একটি দুর্বল তলের সাথে বিসর্পণ-কৃন্তন সহতামাত্রা দেখুন) পদ্ধতিতে কোনও পদার্থে ব্যর্থতা তৈরি করে।
  • টানজ সহতামাত্রা বা পরম টানজ সহতামাত্রা হলো টানজ পীড়নের একটি একটি সীমাবদ্ধ অবস্থা যা প্রসার্য ব্যর্থতা (ব্যর্থতার প্রথম স্তর হিসাবে নতি, দ্বিতীয় পর্যায়ে কিছু অংশ শক্ত হয়ে যাওয়া এবং প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল কমে যাওয়া বা গ্রীবাগঠন তথা নেকিংয়ের পরে ভাঙন) বা ভঙ্গুর ভাঙন (নিম্ন চাপে থাকা অবস্থায় দুটি বা আরও বেশি ভাগে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়া)। টানজ সহতামাত্রাকে প্রকৃত পীড়ন বা প্রকৌশলীয় পীড়নের সাপেক্ষে উদ্ধৃত করা যেতে পারে, তবে প্রকৌশলীয় পীড়নই সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়।
  • অবসাদ সহতামাত্রা হলো সহতামাত্রার অপেক্ষাকৃত জটিল পরিমাপ যা কোনও বস্তুর সেবা প্রদানকালীন অবস্থায় বিভিন্ন ভার বোঝাইকরণ পর্বগুলিকে (লোডিং এপিসোড) বিবেচনা করে।[৬] স্থিতিশীল সহতামাত্রার পরিমাপের চেয়ে এটি মূল্যায়ন করা সাধারণত বেশি কঠিন। অবসাদ সহতামাত্রাকে একটি সরল পরিসর হিসাবে উদ্ধৃত করা হয় (   )। চক্রাকার ভার বোঝাইয়ের ক্ষেত্রে এটি সাধারণত চাপের সেই অবস্থার অধীনে ব্যর্থতার জন্য যে চক্র সংখ্যা থাকে, তার সাথে শূন্য গড় পীড়নের মান (অ্যামপ্লিচিউড) হিসাবে প্রকাশ করা যেতে পারে ।
  • অভিঘাত সহতামাত্রা হল পদার্থের উপর হঠাৎ প্রয়োগ করা ভার সহ্য করার ক্ষমতা; এটিকে শক্তির মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। প্রায়শই আইজড অভিঘাত সহতামাত্রা পরীক্ষা বা চার্পি অভিঘাত পরীক্ষা দিয়ে এটি পরিমাপ করা হয়। উভয়ই একটি নমুনাকে ভাঙতে প্রয়োজনীয় অভিঘাত সহতামাত্রা পরিমাপ করে। আয়তন, স্থিতিস্থাপকতার গুণাঙ্ক, বলের বন্টন এবং নতি সহতামত্রা কোন বস্তুর অভিঘাত শক্তিকেকে প্রভাবিত করে। কোনও পদার্থ বা বস্তুর উচ্চ অভিঘাত শক্তি অর্জনের জন্য, চাপকে অবশ্যই পুরো বস্তু জুড়ে সমানভাবে বন্টিত হতে হয়। এটির নিম্ন স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক এবং উচ্চ নতি সহতামাত্রাসহ একটি বৃহৎ আয়তনও থাকতে হয়। [৭]

প্রতিরোধের জন্য স্ট্রেইন প্যারামিটার সম্পাদনা

  • বস্তুর বিকৃতি হল চাপ প্রয়োগ করা হলে তার যে জ্যামিতিক পরিবর্তন হয় ( বল প্রয়োগের ফলে, মহাকর্ষ ক্ষেত্র, ত্বরণ, তাপ সম্প্রসারণ ইত্যাদির ফলে)। বিকৃতি উপাদানটির স্থানচ্যুতি দ্বারা প্রকাশ করা হয়। [৮]
  • স্ট্রেইন বা হ্রাসযুক্ত বিকৃতি একটি গাণিতিক শব্দ যা পদার্থের ক্ষেত্রে বিকৃতি পরিবর্তনের প্রবণতা প্রকাশ করে । স্ট্রেন প্রতি ইউনিট দৈর্ঘ্যের বিকৃতি। [৯] ইউনিএক্সিয়াল লোডের ক্ষেত্রে কোনও নমুনার বিচ্যুতি (উদাহরণস্বরূপ একটি বার ) বিকৃতি হিসাবের দিকে নিয়ে যায় এবং স্থানচ্যুত অংশ এবং নমুনার মূল দৈর্ঘ্য এর ভাগফল হিসাবে প্রকাশ করা হয়। 3D বিচ্যুতির ক্ষেত্রে একে ডিসপ্লেসমেন্ট ফাঙ্গশনের সেকেন্ড অর্ডার ডেরিভেটিভ হিসাবে একটি সেকেন্ড অর্ডার টেনসরের (৬ টি স্বতন্ত্র উপাদান সহ) টার্মে প্রকাশ করা হয়।
  • ডিফ্লেকশন এমন একটি শব্দ যা লোড দিলে কোনও কাঠামোগত উপাদান কতটুকু স্থানচ্যুত হয় সেই মানের বর্ণনা দেয়। [১০]

স্ট্রেস-স্ট্রেইন সম্পর্ক সম্পাদনা

 
টান বলের অধীনে একটি নমুনার প্রাথমিক স্থিতিশীল প্রতিক্রিয়া।
  • স্থিতিস্থাপকতা স্ট্রেস প্রকাশের পরে কোনও বস্তুর তার আগের আকারে ফিরে আসার ক্ষমতা। অনেক পদার্থে, প্রয়োগিত চাপের সম্পর্কটি বিকৃতির সাথে সরাসরি সমানুপাতিক (নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত), এবং এই দুটি পরিমাণের প্রতিনিধিত্বকারী গ্রাফ একটি সরলরেখা।

এই লাইনের ঢাল ইয়াংয়ের মডুলাস বা "স্থিতিস্থাপকের মডুলাস" নামে পরিচিত। স্থিতিস্থাপক মডুলাস স্ট্রেস-স্ট্রেইন কার্ভে - রৈখিক স্থিতিস্থাপক অংশে স্ট্রেস স্ট্রেইন এর সম্পর্ক নির্ধারণ করতে ব্যবহার করা যেতে পারে। লিনিয়ার-ইলাস্টিক অঞ্চল হয় ইয়েল্ড পয়েন্টের নীচে, বা যদি কোনও ইয়েল্ড পয়েন্ট সহজেই স্ট্রেস-স্ট্রেইন প্লটে চিহ্নিত না হয় তবে এটি 0 থেকে 0.2% স্ট্রেইনের মধ্যে সংজ্ঞায়িত করা হয়, এবং স্ট্রেনের সেই অঞ্চল হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় যেখানে কোন ইয়েল্ডিং বা (স্থায়ী বিকৃতি) ঘটেনা। [১১]

  • প্লাস্টিসিটি বা প্লাস্টিক বিকৃতি স্থিতিস্থাপক বিকৃতির বিপরীত এবং অপরিবর্তনযোগ্য স্ট্রেইন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। প্রয়োগকৃত চাপ সরিয়ে নেয়ার পরেও প্লাস্টিক বিকৃতি থাকে। লিনিয়ার -ইলাস্টিক প্রকৃতির বেশিরভাগ ম্যাটেরিয়াল সাধারণত প্লাস্টিক বিকৃতি নিতে সক্ষম। সিরামিকের মতো ভঙ্গুর উপকরণগুলি কোনও প্লাস্টিক বিকৃতি অনুভব করে না এবং তুলনামূলকভাবে কম স্ট্রেনের অধীনে ফ্র্যাকচার হয়ে যায়, যখন ধাতব পদার্থ, সীসা বা পলিমার মতো নমনীয় উপকরণগুলিতে একটি ফ্র্যাকচার শুরুর আগে আরো বেশি প্লাস্টিক বিকৃতি ঘটে।

একটি গাজর এবং চুইংগামের মধ্যে পার্থক্য বিবেচনা করুন। গাজর ভাঙ্গার আগে খুব সামান্য পরিমাণে প্রসারিত হবে। অন্যদিকে,সেই তুলনায় চুইংগামে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টিক বিকৃতি ঘটবে।

ডিজাইন শর্তাবলী সম্পাদনা

আল্টিমেট স্ট্রেংথ বিশেষ কোন নমুনা নয় বরং এটি যে উপাদান দিয়ে ম্যাটেরিয়াল গঠিত তার সাথে সম্পর্কিত একটি বৈশিষ্ট্য এবং এটিকে একক ক্ষেত্রফলের বল দ্বারা উদ্ধৃত করা হয় (N/m2)। আল্টিমেট স্ট্রেংথ হল কোনও বস্তু ভাঙ্গা বা দুর্বল হওয়ার আগে যে চাপটি সহ্য করতে পারে। [১২] উদাহরণস্বরূপ, এআইএসআই 1018 স্টিলের আল্টিমেট টেনসাইল স্ট্রেংথ (ইউটিএস) 440 এমপিএ । ইম্পেরিয়াল ইউনিটগুলিতে স্ট্রেসের ইউনিট প্রতি বর্গ ইঞ্চি পাউন্ড / ইঞ্চি² বা পাউন্ড-ফোর্স প্রতি বর্গ ইঞ্চি। এই ইউনিটটি প্রায়শই পিএসআই হিসাবে সংক্ষেপিত হয়। এক হাজার পিএসআই সংক্ষেপে কেএসআই হয়

ফ্যাক্টর অব সেফটি হল ডিজাইনের এমন মানদণ্ড যা ইঞ্জিনিয়ারড উপাদান বা কাঠামোর অবশ্যই অর্জন করা উচিত।  , যেখানে এফএস: ফ্যাক্টর অব সেফটি , আর : প্রয়োগকৃত চাপ এবং ইউটিএস: আলটিমেট স্ট্রেস (পিএসআই বা এন / এম 2 ) [১৩]

মার্জিন অফ সেফটি কখনও কখনও ডিজাইনের মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটি , এমএস = ফেইলার লোড / (ফ্যাক্টর অব সেফটি × অনুমানকৃত লোড) − 1 দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, ফ্যাক্টর অব সেফটি অর্জনের জন্য, একটি এআইএসআই 1018 ইস্পাত এ এলায়েবল স্ট্রেস গণনা করা যেতে পারে এভাবে   = 440/4 = 110 এমপিএ, বা   = 110 × 10 6 নিউটন / মিটার 2 । এই ধরনের এলায়েবল স্ট্রেসগুলি "ডিজাইন স্ট্রেস" বা "ওয়ার্কিং স্ট্রেস" নামেও পরিচিত।

ডিজাইন স্ট্রেসগুলি যা পদার্থের আল্টিমেট বা ইয়েল্ড পয়েন্টের মানগুলি থেকে নির্ধারিত হয়েছে তা কেবল স্থির লোডিংয়ের ক্ষেত্রে নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য ফলাফল দেয়। চাপ ইয়েল্ড পয়েন্টের নীচে থাকা সত্ত্বেও অনেকগুলো মেশিন পার্টস নন স্ট্যাটিক এবং ক্রমাগত পরিবর্তিত লোডের কারণে ফেইল করে । এই ধরনের ফেইলার কে ফ্যাটিগ ফেইলার বলা হয়।ফেইলার ফ্র্যাকচার দ্বারা ঘটে যা কম বা কোন ইয়েল্ডিং এর প্রমাণ না থাকার পরেও ভঙ্গুর বলে মনে হয়। যাইহোক, যখন চাপকে "ফ্যাটিগ স্ট্রেস" বা "এন্ডুরেন্স লিমিট স্ট্রেস " এর নীচে রাখা হয়, তখন অংশটি অনির্দিষ্টকাল চাপ সহ্য করবে। একটি সম্পূর্ণরূপে বিপরীত বা চক্রীয় চাপ হ'ল, অপারেশনের প্রতিটি চক্র চলাকালে সমান ইতিবাচক এবং নেতিবাচক পিক স্ট্রেস এর মধ্যে যা পরিবর্তিত হয়। চক্রীয় চাপে গড় চাপ শূন্য। যখন কোন অংশ চক্রীয়(সাইক্লিক স্ট্রেস) চাপের শিকার হয়, এটি স্ট্রেস রেঞ্জ (এসআর) হিসাবেও পরিচিত হয়, দেখা গেছে যে ঐ অংশটির ফেইলার কয়েকটি স্ট্রেস রিভার্সাল (এন) এর পরে ঘটে ,যদিও স্ট্রেস রেঞ্জ ইয়েল্ড স্ট্রেসের নীচে থাকে। সাধারণত, স্ট্রেস রেঞ্জ যত বেশি, ফেইলারের জন্য প্রয়োজনীয় রিভার্সালের সংখ্যা তত কম।

ফেইলার থিওরি সম্পাদনা

চারটি থিওরি রয়েছে: ম্যাক্সিমাম শিয়ার স্ট্রেস থিওরি, ম্যাক্সিমাম নরমাল স্ট্রেস থিওরি, ম্যাক্সিমাম স্ট্রেইন থিওরি, ম্যাক্সিমাম স্ট্রেইন এনার্জি থিওরি এবং ম্যাক্সিমাম ডিসটর্সন এনার্জি থিওরি। ফেইলারের চারটি তত্ত্বের মধ্যে ম্যাক্সিমাম নরমাল স্ট্রেস থিওরি স্ট্রেস কেবল ভঙ্গুর পদার্থের জন্যই প্রযোজ্য এবং বাকী তিনটি তত্ত্ব নমনীয় পদার্থের জন্য প্রযোজ্য। পরবর্তী তিনটির মধ্যে, ডিসটর্সন এনার্জি থিওরি টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে চাপের অবস্থার মধ্যে সবচেয়ে সঠিক ফলাফল সরবরাহ করে। স্ট্রেন এনার্জি তত্ত্বের জন্য পয়সনের অনুপাতের মান জানা প্রয়োজন যা প্রায়শই সহজেই পাওয়া যায় না। ম্যাক্সিমাম শিয়ার স্ট্রেস তত্ত্বটি রক্ষণশীল। সাধারণ একমুখী নরমাল স্ট্রেসের জন্য সমস্ত তত্ত্ব একই , যার অর্থ সমস্ত তত্ত্ব একই ফলাফল দেয়।

  • ম্যাক্সিমাম শিয়ার স্ট্রেস থিওরি - এই তত্ত্বটির স্বীকার্য হল ফেইলার ঘটবে , যদি বস্তুর কোন অংশে সর্বাধিক শিয়ার স্ট্রেসের মান ইউনিএক্সিয়াল টেস্টের মাধ্যমে পাওয়া পদার্থের উপাদানের শিয়ার স্ট্রেংথ ছাড়িয়ে যায়।
  • ম্যাক্সিমাম নরমাল স্ট্রেস থিওরি - এই তত্ত্বটির স্বীকার্য হল যদি বস্তুর কোন অংশে সর্বাধিক নরমাল স্ট্রেস মান ইউনিএক্সিয়াল টেস্টের মাধ্যমে পাওয়া আলটিমেট স্ট্রেস কে ছাড়িয়ে যায় তখন ফেইলার ঘটবে । এই তত্ত্বটি কেবল ভঙ্গুর পদার্থের সাথে কাজ করে। আল্টিমেট টেনসাইল স্ট্রেস কে ফ্যাক্টর অব সেফটি দ্বারা ভাগ করে যা হয় ম্যাটেরিয়ালের ম্যাক্সিমাম স্ট্রেস তার চেয়ে কম বা সমান হওয়া উচিত । আল্টিমেট কম্প্রেসিভ স্ট্রেস কে ফ্যাক্টর অব সেফটি দ্বারা ভাগ করে যে মান পাওয়া যায় ম্যাক্সিমাম কম্প্রেসিভ স্ট্রেসের মান তার চেয়ে কম হওয়া উচিত।
  • ম্যাক্সিমাম স্ট্রেন এনার্জি থিওরি - এই তত্ত্বটি হল যখন কোনও অংশে প্রয়োগকৃত চাপের কারণে প্রতি ইউনিট ভলিউম এ স্ট্রেন এনার্জি ইউনিএক্সিয়াল টেস্টে পাওয়া ইয়েল্ড পয়েন্টে প্রতি ইউনিট ভলিউম প্রতি যে স্ট্রেইন এনার্জি পাওয়া যায় তার সমান হয় ।
  • ম্যাক্সিমাম ডিসটর্সন এনার্জি থিওরি - এই তত্ত্বটি শিয়ার এনার্জি তত্ত্ব বা ভন মাইজেস-হেনকি তত্ত্ব হিসাবেও পরিচিত। এই তত্ত্বটির স্বীকার্য হল ফেইলার ঘটবে যখন কোনও অংশে প্রয়োগকৃত চাপের কারণে ইউনিট ভলিউম প্রতি স্ট্রেইন এনার্জি ইউনিএক্সিয়াল টেস্টের ইয়েল্ড পয়েন্টে পাওয়া ইউনিট ভলিউম প্রতি স্ট্রেইন এনার্জির সমান হয়। স্ট্রেইনের কারণে মোট স্থিতিস্থাপক শক্তি দুটি ভাগে বিভক্ত হতে পারে: একটি অংশ ভলিউমের পরিবর্তনের কারণ এবং অন্য অংশটি আকারে পরিবর্তনের কারণ হয়ে থাকে। স্ট্রেইন এনার্জি হল আকারটি পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির পরিমাণ।
  • ফ্র্যাকচার মেকানিক্স অ্যালান আর্নল্ড গ্রিফিথ এবং জর্জ র্যাঙ্কাইন ইরউইন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । এই গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বটি ফাটলের ক্ষেত্রে পদার্থের সহতামাত্রার সংখ্যাসূচক রূপান্তর হিসাবেও পরিচিত।

একটি পদার্থের শক্তি তার মাইক্রো স্ট্রাকচারের উপর নির্ভরশীল। ইঞ্জিনিয়ারিং প্রক্রিয়াগুলো যে কোনও পদার্থের এই মাইক্রোস্ট্রাকচারকে পরিবর্তন করতে পারে। শক্তিশালীকরণের বিভিন্ন প্রক্রিয়া যা কোনও উপাদানের শক্তিকে পরিবর্তিত করে তার মধ্যে রয়েছে ওয়ার্ক হার্ডেনিং , সলিড সল্যুশন স্ট্রেন্থেনিং, প্রিসিপিটেশন হার্ডেনিং এবং গ্রেইন বাউন্ডারি স্ট্রেন্থেনিং এবং এদের পরিমাণগত এবং গুণগতভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। স্ট্রেংথেনিং মেকানিজমের সতর্কতায় এটি ও রয়েছে যে উপাদানটির কিছু যান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য ,উপাদানটিকে আরও শক্তিশালী করার পরিবর্তে এর অবক্ষয় করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, গ্রেইন বাউন্ডারি স্ট্রেংথেনিং এর সময় , যদিও গ্রেইনের আকার হ্রাসের সাথে ইয়েল্ড স্ট্রেংথ সর্বাধিক করা হয়, শেষ পর্যন্ত খুব ছোট আকারের গ্রেইন উপাদানটিকে ভঙ্গুর করে তোলে। সাধারণভাবে, কোনও পদার্থের ইয়েল্ড স্ট্রেংথ তার মেকানিক্যাল স্ট্রেংথের পরিমাপের একটি সূচক। ইয়েল্ড স্ট্রেংথ উপাদানটিতে প্লাস্টিকের বিকৃতির পূর্বাভাস দেয় এমন একটি প্যারামিটার ; যে কোনও বস্তুর মাইক্রোস্ট্রাকচারাল বৈশিষ্ট্য এবং কাঙ্ক্ষিত এন্ড এফেক্ট এর উপর নির্ভর করে তার শক্তি কীভাবে বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে একজন তথ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। স্ট্রেংথ কমপ্রেসিভ স্ট্রেস, টেনসাইল স্ট্রেস এবং শিয়ার স্ট্রেসের লিমিটিং ভ্যালু হিসাবে প্রকাশ করা হয় যা ফেইলারের কারণ হতে পারে। গতিশীল লোডিং এর প্রভাব ম্যাটারিয়েল স্ট্রেংথে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত ফ্যাটিগ সমস্যায়। বারবার লোড দেয়ার জন্য প্রায়শই ব্রিটল ক্র্যাক শুরু করে, যা ফেইলার হওয়ার আগ পর্যন্ত বাড়ে । ফাটলগুলি সর্বদা স্ট্রেস কনসেন্ট্রেশনে শুরু হয়, বিশেষত নমিনাল স্ট্রেস লেভেলে পণ্যটির প্রস্থচ্ছেদে গর্ত ও কোনার দিকে পরিবর্তন হয় , নমিনাল স্ট্রেস লেভেল ম্যাটেরিয়ালের স্ট্রেংথ হিসাবে উদ্ধৃত হওয়া স্ট্রেস গুলোর চেয়ে অনেক কম হয়ে থাকে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 210। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  2. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 7। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  3. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 5। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  4. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 9–10। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  5. Beer, Ferdinand Pierre; Johnston, Elwood Russell (২০০৯)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। পৃষ্ঠা 52। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  6. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 60। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  7. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 693–696। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  8. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 47। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  9. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 49। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  10. R. C. Hibbeler (২০০৯)। Structural Analysis (7 সংস্করণ)। Pearson Prentice Hall। পৃষ্ঠা 305। আইএসবিএন 978-0-13-602060-8 
  11. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 53–56। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  12. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5thv সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 27–28। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 
  13. Beer & Johnston (২০০৬)। Mechanics of Materials (5th সংস্করণ)। McGraw Hill। পৃষ্ঠা 28। আইএসবিএন 978-0-07-352938-7 

পরিভাষা (বাংলা থেকে ইংরেজি; বাংলা বর্ণানুক্রমে) সম্পাদনা

  • ০.২% মাত্রার পীড়ন - 0.2% proof stress
  • অক্ষীয় ভার - axial load
  • অক্ষীয় ভার বোঝাই - axial loading
  • অণুকাঠামো, অণুনির্মিতি - microstructure
  • অধক্ষেপণমূলক দৃঢ়ীকরণ - precipitation hardening
  • অনমনীয়তা - stiffness
  • অনুদৈর্ঘ্য অক্ষ - longitudinal axis
  • অবসাদ - fatigue
  • অবসাদ সহতামাত্রা - fatigue strength
  • অবসাদজনিত ব্যর্থতা/বৈকল্য - fatigue failure
  • অভিঘাত সহতামাত্রা - impact strength
  • অভ্যন্তরীণ বল - internal force
  • অস্থিতিস্থাপকতা - plasticity
  • আকস্মিক ব্যর্থতা/বৈকল্য - abrupt failure
  • আকৃতিবিকার শক্তি - distortion energy
  • আণবিক ব্যাপন - molecular diffusion
  • আদি গঠনবিন্যাস - original configuration
  • আপেক্ষিক সহতামাত্রা - specific strength
  • উপাদান নির্বাচন - material selection
  • উপাদান বিজ্ঞান - materials science
  • উপাদানের নতি - material yield
  • উপাদানের বলবিজ্ঞান - mechanics of materials
  • উপাদানের ব্যর্থতা/বৈকল্য - material failure
  • উপাদানের ব্যর্থতা/বৈকল্য তত্ত্ব - material failure theory
  • উপাদানের সহতামাত্রা - strength of a material
  • উল্লম্ব পীড়ন - normal stress
  • একাক্ষিক পীড়ন - uniaxial stress
  • কঠিন দ্রবণ সহতামাত্রা বৃদ্ধি - solid solution strengthening
  • কর্মভিত্তিক সহতামাত্রা বৃদ্ধি - work hardening
  • কাঠিন্য - hardness
  • কৃন্তন পরীক্ষা - shear tests
  • কৃন্তন পীড়ন - shear stress
  • কৃন্তন বল - shear force
  • কৃন্তন রূপবিকার - shear deformation
  • কৃন্তন শক্তি - shear energy
  • কৃন্তন সহতামাত্রা - shear strength
  • ক্রমবিকৃতি/ক্রমবিকার - creep
  • গঠন - composition
  • গ্রীবা গঠন - neck formation
  • ঘূর্ণ- - rotational
  • চক্রাকার ভার বোঝাই - cyclic loading
  • চাপ - pressure
  • ছেদন - rupture
  • টান পরীক্ষা - tensile tests
  • টান সহতামাত্রা - Tensile strength
  • টানজ পীড়ন - tensile stress
  • টানজনিত বিকৃতি - tensile strain
  • টানজনিত, টানজ - tensile
  • ঠেলা বল, চাপ বল - pushing force
  • তাপীয় প্রসারণ - thermal expansion
  • তির্যক বিচ্যুতি - transverse deflection
  • তির্যক ভার বোঝাই - transeverse loading
  • ত্রুটি - defect
  • দশান্তর - phase transitions
  • দানা সীমার সহতামাত্রা বৃদ্ধি - grain boundary strengthening
  • দানার আকার - grain size
  • দ্রুত ভার বোঝাই - rapid loading
  • ধীর ভার বোঝাই - slow loading
  • নকশাকৃত পীড়ন - design stress
  • নতি বিন্দু - yield point
  • নতি সহতামাত্রা - yield strength
  • নমনীয়তা (প্রসার্যতা) - ductility
  • নিরাপত্তার উপাদান - factor of safety
  • নিরাপত্তার মাত্রা - margin of safety
  • পরম সহতামাত্রা - ultimate strength
  • পরিবর্তনশীল প্রতিক্রিয়া - dynamic response
  • পরিবর্তনশীল ভার বোঝাই - dynamic loading
  • পীড়ন - stress
  • পীড়ন অবস্থা - stress state
  • পীড়ন সমাবেশ - stress concentrations
  • পীড়ন-বিকৃতি বক্ররেখা - stress-strain curve
  • পুনরাবৃত্ত ভার বোঝাই - repeated loading
  • পুনরুদ্ধারের অযোগ্য বিকৃতি - unrecoverable strain
  • পেষণ - squeezing
  • পোয়াসোঁ-র অনুপাত - poisson's ratio
  • প্রকৃত পীড়ন - true stress
  • প্রকৌশলীয় পীড়ন - engineering stress
  • প্রতিরোধ ক্ষমতা - resistance
  • প্রযুক্ত ভার - applied load
  • প্রলম্বন, টানটান করা - stretch
  • প্রসার্য আচরণ - ductile behaviour
  • প্রসার্য ব্যর্থতা/বৈকল্য - ductile failure
  • প্রসার্য রূপবিকার - ductile deformation
  • ফাটল - crack
  • ফাটলের বিস্তার - crack propagation
  • বক্রতা - curvature
  • বলযুগল, যুগলবল - force couple
  • বাহ্যিক বল - external forces
  • বাহ্যিকভাবে প্রযুক্ত - externally applied
  • বিকৃতি - strain
  • বিকৃতি শক্তি - strain energy
  • বিচ্যুতি - deflection
  • বিচ্যুতি মানদণ্ড - deflection criteria
  • বিষমদৈশিক উপাদান - Anisotropic material
  • বিসর্পণ - sliding
  • বেঁকে যাওয়া - buckling
  • ব্যর্থ অবস্থা - failure mode
  • ব্যর্থতা, বৈকল্য - failure
  • ব্যর্থতা/বৈকল্য বিশ্লেষণ - failure analysis
  • ব্যাবর্ত ক্রিয়া, মোচড়ানো ক্রিয়া - twisting action
  • ব্যাবর্ত ভার বোঝাই - torsional loading
  • ভঙ্গুর উপাদান - brittle material
  • ভঙ্গুর ব্যর্থতা/বৈকল্য - brittle failure
  • ভঙ্গুর ভাঙন - brittle fracture
  • ভঙ্গুরতা - brittleness
  • ভর বিতরণ - mass distribution
  • ভাঙন - fracture
  • ভাঙন দৃঢ়তা - fracture toughness
  • ভাঙন বলবিজ্ঞান - fracture mechanics
  • ভার বোঝাই হার - loading rate
  • ভারবহন ক্ষমতা - load carrying capacity
  • ভৌত রাশি - physical quantity
  • যান্ত্রিক উপাংশ - mechanical member
  • যান্ত্রিক পীড়ন - mechanical stress
  • রূপবিকার কর্মপদ্ধতি মানচিত্র - deformation mechanism map
  • রূপবিকার/বিরূপণ - deformation
  • রূপবিকারহীন এলাকা - undeformed area
  • রূপবিকৃত এলাকা - deformed area
  • সংকোচক - compressive
  • সংকোচক পীড়ন - compressive stress
  • সংকোচক বল - compression forces
  • সংকোচক বিকৃতি - compressive strain
  • সংকোচক সহতামাত্রা - compressive strength
  • সংকোচন - compression
  • সংকোচন উপাংশ - compression member
  • সংকোচন পরীক্ষা - compression tests
  • সংক্ষেপন - shorten
  • সমান্তরাল তল - parallel plane
  • সর্বজনীন পরীক্ষা যন্ত্র - universal testing machine
  • সহতামাত্রা বিবরণী - strength profile
  • সহতামাত্রা বৃদ্ধি কর্মপদ্ধতি - strengthening mechanism
  • সহতামাত্রার পরিমাপ - strength measure
  • সহতামাত্রার প্রতিক্রিয়া - strength response
  • সহতামাত্রার বৈশিষ্ট্যাবলী - strength characteristics
  • সহিষ্ণুতা সীমাস্থ পীড়ন - endurance limit stress
  • সহ্য করা - withstand
  • সীমাস্থ অবস্থা - limit state
  • স্থায়ী বিচ্যুতি - permanent deflection
  • স্থায়ী রূপবিকার - permanent deformation
  • স্থিতিশীল ভার বোঝাই - static loading
  • স্থিতিশীলতা - stability
  • স্থিতিস্থাপক গুণাঙ্ক - elastic modulus

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা