নূর জাহান (সঙ্গীতশিল্পী)
নূর জাহান[২][৩] (উর্দু: نور جہاں, জন্মনাম: আল্লাহ রাখি ওসাই; ২১ সেপ্টেম্বর ১৯২৫ – ২৩ ডিসেম্বর ২০০০), এছাড়াও তার সম্মানিত খেতাব মালিকা-ই-তারান্নুম নামে পরিচিত (উর্দু: ملکہ ترنّم, সুরের রানী), ছিলেন একজন পাকিস্তানি গায়িকা এবং অভিনেত্রী, যিনি প্রাথমিকভাবে ব্রিটিশ ভারতের হয়ে এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানের হয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। প্রায় ৬ দশকের অধিক সময় ধরে তার কর্মজীবন পার করেন। তিনি বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী হিসাবে বিখ্যাত ছিলেন। যার স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি পাকিস্তানের অন্যতম সম্মানসূচক মালিকা-ই-তারান্নুম বা সুরের রানী খেতাব লাভ করেছিলেন।[৩] তিনি হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের পাশাপাশি সংগীতের অন্যান্য ধারার প্রতিও দূরদর্শী ছিলেন।
মালিকা-ই-তারান্নুম ملکہ ترنم নূর জাহান نور جہاں | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | رَکھی وسائی আল্লাহ রাখী ওয়াসাই |
উপনাম | সুরের রানী |
জন্ম | কসুর, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত | ২১ সেপ্টেম্বর ১৯২৫
মৃত্যু | ২৩ ডিসেম্বর ২০০০ করাচি, সিন্ধু, পাকিস্তান | (বয়স ৭৫)
ধরন | |
পেশা |
|
কার্যকাল | ১৯৩৫–১৯৯৭ |
প্রাইড অফ পারফরম্যান্স | |
---|---|
তারিখ | ১৯৬৫ |
দেশ | পাকিস্তান |
পুরস্কারদাতা | আইয়ুব খান |
সঙ্গীত অনুরাগী একটি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং পিতা মাতার বাদ্যযন্ত্রের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনি একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেন। যদিও তিনি বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। তিনি ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন ভাষায় প্রায় ১৮ হাজার এর উপরে গান রেকর্ড করেছেন, যার মধ্যে যেমন: উর্দু, পাঞ্জাবী, পশতু, সিন্ধী এবং ফার্সি ভাষা রয়েছে। সঙ্গীতশিল্পী আহমেদ রুশদির সাথে দ্বৈতকণ্ঠ দিয়ে তিনি পাকিস্তানি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক চলচ্চিত্রের গানের কণ্ঠস্বর রেকর্ড করার কীর্তি গড়েন। তাকে সর্বকালের সেরা একজন সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে মনে করা হয়। এছাড়াও তাকে প্রথম মহিলা পাকিস্তানি চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৬৫ সালে রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান নূর জাহানকে অভিনয় এবং সঙ্গীতে অসাধারণ অবদানের জন্য স্বীকৃতিস্বরুপ পাকিস্তানের অন্যতম সম্মানীয় পুরস্কার প্রাইড অব পারফরমেন্স প্রদান করেন। বিশেষ করে ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময়কার দেশাত্মবোধক গান গাওয়ার জন্য। এছাড়াও তিনি পাকিস্তানি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার তামা-ই-ইমতিয়াজ এবং সিতারা-ই-ইমতিয়াজ পুরস্কার জিতে নেন।
নূর জাহান আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন ২ বার। এরমধ্যে ১৯৮৭ সালে একবার এবং ২০০২ সালে মৃত্যু পরবর্তী সময়ে আরো একবার পান।
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনানূর জাহান ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের কাসুরের একটি পাঞ্জাবী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[৪] তিনি ইমদাদ আলী এবং ফতেহ বিবি দম্পতির ঘরে এগারো ভাই বোনের মধ্যে অন্যতম একজন হিসেবে পৃথিবীতে আগমন করেন।[৫][৬]
চলচ্চিত্রের তালিকা
সম্পাদনাবছর | চলচ্চিত্র |
---|---|
১৯৩৫ | শীলা |
১৯৩৯ | গুল বাকাওলি |
১৯৩৯ | ইমানদার |
১৯৩৯ | পিয়াম-ই-হক |
১৯৪০ | সজনি |
১৯৪০ | যমলা জাত |
১৯৪১ | চৌধুরী |
১৯৪১ | রেড সিগনাল |
১৯৪১ | উমরিদ |
১৯৪১ | সাসরাল |
১৯৪২ | চন্দনি |
১৯৪২ | ধীরাজ |
১৯৪২ | ফরিয়াদ |
১৯৪২ | খান্দান - ১৯৪২ সালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল চলচ্চিত্র |
১৯৪৩ | নাদান |
১৯৪৩ | দুহাই |
১৯৪৩ | নকার - ১৯৪৩ সালে ৫ম সর্বোচ্চ ব্যাবসাসফল ভারতীয় চলচ্চিত্র |
১৯৪৪ | লাল হাবেলী |
১৯৪৪ | দোস্ত |
১৯৪৭ | জুগনু |
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনানূর জাহান ১৯৪২ সালে শওকত হোসেন রিজভীকে বিয়ে করেন। এরপর ১৯৫৩ সালে তাকে তালাক দেন। এই দম্পতির ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়, যেখানে জিল-ই-হুমা নামে একজন কন্যা সন্তান সঙ্গীতশিল্পী হন। এছাড়া ১৯৫৯ সালে তিনি পুনরায় এজাজ দারানিকে বিবাহ করেন। এই দম্পতির ঘরেও তিন সন্তানের জন্ম হয় কিন্তু পরিশেষে আগের মতই ১৯৭০ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Pride of Performance Awards (1960–1969)#1965
- ↑ Firoze Rangoonwalla, Indian Filmography, publisher: J. Udeshi, Bombay, August 1970, passim.
- ↑ ক খ Ashish Rajadhyaksha and Paul Willemen, Encyclopaedia of Indian Cinema, British Film Institute, Oxford University Press, New Delhi, 2002, pp. 166.
- ↑ Internet Archive Wayback Machine, Noor Jehan Biography, [১], Retrieved 7 July 2015
- ↑ "Noor Jahan Biography"। ৪ জুন ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মে ২০০৮।, Retrieved 7 July 2015
- ↑ http://www.hamaraforums.com/index.php?showtopic=33048
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে Noor Jehan Biography (ইংরেজি), Retrieved 16 November 2017
- "ISLAMABAD: Rich tributes paid to Noor Jehan"। Dawn। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০১৭।
- Ramzi, Shanaz (১০ ফেব্রুয়ারি ২০০২)। "The Melody Queen lives on"। Dawn। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০১৫।