নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন

নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন

নিঝুমদ্বীপ বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন

নিঝুমদ্বীপ
ইউনিয়ন
১১নং নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ
নিঝুমদ্বীপ চট্টগ্রাম বিভাগ-এ অবস্থিত
নিঝুমদ্বীপ
নিঝুমদ্বীপ
নিঝুমদ্বীপ বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
নিঝুমদ্বীপ
নিঝুমদ্বীপ
বাংলাদেশে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২২°৪′১৭″ উত্তর ৯১°১′৯″ পূর্ব / ২২.০৭১৩৯° উত্তর ৯১.০১৯১৭° পূর্ব / 22.07139; 91.01917 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগচট্টগ্রাম বিভাগ
জেলানোয়াখালী জেলা
উপজেলাহাতিয়া উপজেলা উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
সরকার
 • চেয়ারম্যানমোঃ দিনাজ উদ্দীন (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট১৬২.৪৪ বর্গকিমি (৬২.৭২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • মোট১২,৭৯৬
 • জনঘনত্ব৭৯/বর্গকিমি (২০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট১৪.১%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৩৮৯২ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
মানচিত্র
মানচিত্র

আয়তন সম্পাদনা

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের আয়তন ১৬২.৪৪ বর্গ কিলোমিটার।

জনসংখ্যা সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের জনসংখ্যা ১২,৭৯৬ জন।

অবস্থান ও সীমানা সম্পাদনা

হাতিয়া উপজেলার মূল দ্বীপের দক্ষিণের উপদ্বীপে নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের উত্তরে হাতিয়া চ্যানেল ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন, পশ্চিমে হাতিয়া চ্যানেলভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া দক্ষিণ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে ও পূর্বে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।

প্রশাসনিক কাঠামো সম্পাদনা

নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন হাতিয়া উপজেলার আওতাধীন ১১নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম হাতিয়া থানার আওতাধীন। এটি জাতীয় সংসদের ২৭৩নং নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৬ এর অংশ। এ ইউনিয়নের গ্রামগুলো হল:

  • চর ওসমান (নিঝুম আইল্যান্ড)
  • সাগর টিলা (দমার চর)

প্রতিষ্ঠাকাল সম্পাদনা

নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট্ট দ্বীপ। এটি নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৩ সালে দ্বীপটি নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন হতে পৃথক হয়ে স্বতন্ত্র ইউনিয়নের মর্যাদা লাভ করে।[১]

নামকরণ সম্পাদনা

নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর ওসমান, আবার কেউ কেউ একে ইছামতীর চরও বলত। এ চরে প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ীর স্থানীয় নাম) পাওয়া যেত বলে একে ইছামতির চরও বলা হত। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো। পরে হাতিয়ার সাংসদ আমিরুল ইসলাম কালাম এই নাম বদলে নিঝুম দ্বীপ নামকরণ করেন। মূলত বাল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর এবং মৌলভির চর-এই চারটি চর মিলিয়ে নিঝুম দ্বীপ। প্রায় ১৪,০৫০ একরের দ্বীপটি ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জেগে ওঠে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জন বসতি গড়ে উঠে। ১৯৭০ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটিতে কোন প্রাণের অস্তিত্ব ছিলনা। ঘূর্ণিঝড়ের পরে তৎকালীন হাতিয়ার জননন্দিত নেতা আমিরুল ইসলাম কালাম সাহেব দ্বীপটিতে পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন যে কোন প্রাণের অস্তিত্ব নাই, তাই তিনি আক্ষেপের সুরে বলে ছিলেন হায় নিঝুম! সেখান থেকে দ্বীপটির নতুন নাম নিঝুম দ্বীপ। এ দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময়, তাই জেলেরা নিজ থেকে নামকরণ করে বালুর চর। এই দ্বীপটিতে মাঝে মাঝে বালুর ঢিবি বা টিলার মতো ছিল বিধায় স্থানীয় লোকজন এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেও ডাকত। বর্তমানে নিঝুমদ্বীপ নাম হলেও স্থানীয় লোকেরা এখনো এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধন করে।নোনা পানিতে বেষ্টিত নিঝুম দ্বীপ কেওড়া গাছের অভয়ারণ্য। ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে সুন্দরবনের পরে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন বলে অনেকে দাবি করেন।[১]

শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের স্বাক্ষরতার হার ১৪.১%।[২] এ ইউনিয়নে ১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থিত।[৩]

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি সম্পাদনা

যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পাদনা

অন্যান্য অঞ্চলের সাথে যোগাযোগের জন্য জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করতে হয় নিঝুম দ্বীপের মানুষদের। হাতিয়া, ভোলা কিংবা ঢাকার সাথে যোগাযোগ করতে হলে তাদেরকে পুরোপুরি জোয়ার ভাটা মেনে চলতে হয়। ঢাকায় যেতে হলে তাদেরকে সকাল ৯টার (জোয়ার আসার) পর হাতিয়ার উদ্দেশ্য যাত্রা করতে হয়। প্রায় ২-৩ ঘণ্টা সময় পর ট্রলার হাতিয়া পৌঁছায়। অতঃপর পাওয়া যায় ঢাকাগামী লঞ্চ, যেটি প্রতিদিন একবেলা ঢাকার উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করে। এই লঞ্চটি বরিশাল এবং ভোলা হয়ে ঢাকায় পৌঁছায় বিধায় নিঝুম দ্বীপের মানুষজন ভোলা কিংবা বরিশালে যেতে পারেন এই লঞ্চে করেই। এছাড়া হাতিয়া কিংবা ঢাকায় আসার জন্য রয়েছে বিকল্প পথ। বন্দরটিলা থেকে নদী পার হয়ে হাতিয়ায় পৌঁছতে হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন যানবাহন পার করে প্রথমে হাতিয়া শহরে তারপর লঞ্চে পার হয়ে মাইজদী অতঃপর ঢাকায় পৌঁছতে হয়।[১]

খাল ও নদী সম্পাদনা

নিঝুম দ্বীপের এক দিকে মেঘনা নদী আর তিন দিকে বঙ্গোপসাগর ঘিরে রেখেছে। খালগুলোর মধ্যে চৌধুরীর খাল, পটকাখালী খাল, সোয়ানখালী খাল, ডুবাই খাল, ধামসাখালী খাল, ভট্রোখালী খাল, কাউনিয়া খাল, লেংটা খাল উল্লেখযোগ্য।[৩]

হাট-বাজার সম্পাদনা

দর্শনীয় স্থান সম্পাদনা

[৩]

  • কমলার দ্বীপ
  • চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর
  • চোয়াখালি ও চোয়াখালি সমুদ্র সৈকত
  • ম্যানগ্রোভ বন
  • নামার বাজার সমুদ্র সৈকত
  • দমার চর

জনপ্রতিনিধি সম্পাদনা

বর্তমান পরিষদ[৪]

নাম পদবি নির্বাচিত এলাকা
মোঃ দিনাজ উদ্দীন[৫] চেয়ারম্যান
মোঃ খবির উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০১নং ওয়ার্ড
মোঃ কেফায়েত হোসেন সাধারণ সদস্য ০২নং ওয়ার্ড
মোঃ আফছার উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০৩নং ওয়ার্ড
মোঃ নিজাম উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০৪নং ওয়ার্ড
মোঃ ছালে উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০৫নং ওয়ার্ড
সেলিম উদ্দীন সাধারণ সদস্য ০৬নং ওয়ার্ড
মোঃ আলা উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০৭নং ওয়ার্ড
মোঃ কামাল উদ্দিন সাধারণ সদস্য ০৮নং ওয়ার্ড
সান মিয়া সাধারণ সদস্য ০৯নং ওয়ার্ড
লাভলী বেগম সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ০১, ০২ ও ০৩নং ওয়ার্ড
বিলকিছ বেগম সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ০৪, ০৫ ও ০৬নং ওয়ার্ড
বিপুল আকতার সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ০৭, ০৮ ও ০৯নং ওয়ার্ড

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১২৫। 
  2. "কমিউনিটি সিরিজ (নোয়াখালী), বিবিএস" (পিডিএফ)bbs.gov.bd। ২০২২-০৯-২৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-০১ 
  3. মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১২৬। 
  4. "বর্তমান পরিষদ, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন" (পিডিএফ)ecs.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-০১ 
  5. "চেয়ারম্যান, নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন"nijhumdwipup.noakhali.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১০-০১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা