নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু

হুমায়ুন আজাদের উপন্যাস

নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু বাংলাদেশী লেখক হুমায়ুন আজাদ রচিত একটি উপন্যাস। ২০০০ সালের ফেব্রুয়ারি (ফাল্গুন, ১৪০৬ বঙ্গাব্দ) মাসে একুশে গ্রন্থমেলায় ঢাকার আগামী প্রকাশনী থেকে এটি প্রকাশিত হয়।[২]

নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু
নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধু বইয়ের প্রচ্ছদ
প্রথম প্রকাশের প্রচ্ছদ
লেখকহুমায়ুন আজাদ
প্রচ্ছদ শিল্পীসমর মজুমদার
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
বিষয়পল্লীপ্রকৃতি, গ্রামীণ বাল্য-কৈশোর জীবন
ধরনউপন্যাস
পটভূমিপাকিস্তান আমলের গ্রামবাংলা
প্রকাশিতফেব্রুয়ারি, ২০০০
প্রকাশকআগামী প্রকাশনী
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)
পৃষ্ঠাসংখ্যা১৫২ (ষষ্ঠ মুদ্রণ; ২০২৩)[১]
আইএসবিএন৯৭৮৯৮৪৪০১৫০৬৭
ওসিএলসি৪৫৭৯০৭২৭
এলসি শ্রেণী00372823
পূর্ববর্তী বইকবি অথবা দণ্ডিত অপুরুষ (১৯৯৯) 
পরবর্তী বইফালি ফালি ক'রে কাটা চাঁদ (২০০১) 

সারাংশ

রাড়িখাল গ্রামে জলকদর নামের এক বালকের বাস; সে তার বাবা-মা, ভাই এবং বোনকে সঙ্গে নিয়ে থাকে। জলকদর কৃষক পরিবারের ছেলে এবং সে বিদ্যালয়ে যায়না। সে তাদের নিজস্ব গরু পালে এবং পুকুরে মাছ ধরে। স্থানীয় গ্রাম্য টানের কথা বলে জলকদর। জলকদরের ক্রমশ বয়স বাড়ে কিন্তু তার তখনো মুসলমানি হয়না। বর্ষাকালে জলকদরদের গ্রাম বন্যায় ডুবে যায়, তাদের নিজেদের বাড়িও বন্যার কবলে পড়ে।

জলকদর গ্রামে নৌকা বাইচ এবং হাডুডু খেলা দেখে, সে ধান কাটাও অবলোকন করে। জলকদরের বন্ধু মজিদ জলকদরকে বিড়ি খাওয়া শেখায় এবং তারা গোপনে একে অপরের লিঙ্গ দেখে (যদিও যৌন নজর দেয়না) এবং মুসলমানি নিয়ে আলোচনা করে। মজিদের কাছ থেকে জলকদর নারীপুরুষের যৌন সম্পর্ক বিষয়ক প্রাথমিক জ্ঞান প্রাপ্ত হয়। জলকদর নাচনেওয়ালী বেদেনী এবং গ্রামের অন্যান্য নারীদেরকে দেখে যৌন উত্তেজনা প্রাপ্ত হয়; তার স্বপ্নদোষ হয় এবং সে হস্তমৈথুন করা শেখে, এই সময়ে সে কিশোর বয়সী থাকে।

পটভূমি এবং বিষয়বস্তু

হুমায়ুন আজাদ তার এই উপন্যাসটি নিজের বাল্যকালের গ্রামীণ বন্ধুদের প্রতি উৎসর্গ করেছিলেন এবং তিনি তার দ্বিতীয় উপন্যাসসংকলনগ্রন্থে (উপন্যাসসমগ্র ২) বলেছিলেন (ভূমিকাতে),

নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধুতে ধরতে চেয়েছি আমার বাল্যকালের বিক্রমপুরের একটি এলাকাকে ও একটি বালককে; কোনো ভাবাবেগ ও ভাবাদর্শ নয়, বাল্যকাল ও চারপাশের প্রকৃতি ও জীবন।[৩]

হুমায়ুন আজাদের নিজের বিক্রমপুরের রাড়িখাল গ্রামে জলকদর নামের এক বালকের বেড়ে উঠাই এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু। উপন্যাসটি শুরু হয় যখন জলকদর বছর দশের বালক থাকে, শেষ হয় যখন তার বয়স পনেরো অর্থাৎ যখন সে কিশোর। লেখক হুমায়ুন আজাদ এই উপন্যাসকে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালীর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।[৪]

চরিত্রসমূহ

  • জলকদর - উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র এক গ্রামীণ বালক যে উপন্যাসটির শেষে কিশোর বয়সে পদার্পণ করে
  • আবজু - জলকদরের ছোটো ভাই
  • ময়না- জলকদরের ছোটো বোন
  • রকমান - জলকদরদের চাকর
  • মতলেব - জলকদরদের চাকর
  • জলিল খাঁ - গরুকে ফ্যান খাওয়ানোর জন্য ব্যবহৃত টাগারি বর্ষাকালের পানিতে বেয়ে নিয়ে যাওয়া পুরুষ
  • শিবামিত্রি - গ্রামের ইউনিয়ন বোর্ডের সদস্য
  • মজিদ - জলকদরের বন্ধু
  • ছলিম গাজি - হাডুডু খেলোয়াড়
  • দিলু খাঁ - হাডুডু খেলোয়াড়
  • জুলমইত্যা - পুবপাড়ার ছেলে যে হাডুডু খেলা দেখতে যায়
  • মালতি - গোয়ালিনী

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "নিজের সঙ্গে নিজের জীবনের মধুঃ হুমায়ুন আজাদ"রকমারি ডট কম 
  2. মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম (২০১২)। "আজাদ, হুমায়ুন"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  3. আজাদ, হুমায়ুন (২০০১)। উপন্যাসসমগ্র ২ঢাকা: আগামী প্রকাশনীওসিএলসি 261342894 
  4. "সাহস ও সৃষ্টির অদম্য লেখক হুমায়ুন আজাদ"arts.bdnews24.com। ৩১ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০২০ 


বহিঃসংযোগ