চিকিৎসা বিজ্ঞানে, নাড়ির স্পন্দন বলতে প্রশিক্ষিত আঙ্গুল দ্বারা হৃৎচক্রের সময় অনুভূত ধমনীগাত্রের চাপের তারতম্যকে বুঝায়। শরীরপৃষ্ঠে যেসব স্থানে ধমনীর সংকোচনকে অনুভব করা যায় সেখানেই নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যায়। যেমন ঘাড়ে (ক্যারোটিড ধমনী ), কব্জি (রেডিয়াল ধমনী ), কুঁচকিতে (ফিমোরাল ধমনী ), হাঁটুর পিছনে (পপলিটিয়াল ধমনী ), গোড়ালি সন্ধির কাছে (পোস্টেরিয়র টিবিয়াল ধমনী ), এবং পায়ে (ডর্সালিস পেডিস ধমনী )। নাড়ির স্পন্দন,(বা প্রতি মিনিটে ধমনী নাড়ির গণনা) হৃদস্পন্দন পরিমাপের সমতুল্য। হৃদস্পন্দন শ্রবণের জন্য স্টেথোস্কোপ ব্যবহার করা হয়। তাই এক মিনিটের জন্য গণনাকৃত হৃদস্পন্দনকে সার্বিকভাবে নাড়ির স্পন্দন বলা যায়। রেডিয়াল ধমনির নাড়ির স্পন্দন সাধারণত তিনটি আঙুল ব্যবহার করে পরিমাপ করা হয়। আঙুলগুলো হলো :তর্জনী, মধ্যমা এবং অনামিকা আঙুৃল। নাড়ির স্পন্দনের অধ্যয়ন স্ফিগমোলজি নামে পরিচিত।

নাড়ির স্পন্দন
রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি এবং হ্রাস পাওয়াকে একটি নাড়ির স্পন্দনের ডায়াগ্রামে দেখানো হয়েছে
অবয়বঅ্যানিমালিয়া*
জৈব পদ্ধতিসংবহন তন্ত্র
স্বাস্থ্যপ্রভাবিত নয়[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
ক্রিয়াঅনৈচ্ছিক
পদ্ধতিহৃৎপিণ্ড সারাদেহে রক্ত সরবরাহ করে। সংবহনতন্ত্রের মধ্য দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হবার সময় ধমনীগাত্রে যে চাপ সৃষ্টি হয় তা স্পর্শ্যগ্রাহ্য এবং হাত দ্বারা অনুভব করা যায়।
পুনরাবৃত্তিপ্রতি মিনিটে ৬০-১০০ বার (মানুষ)
ব্যাপ্তি০.৬-১ সেকেন্ড (মানুষ)
পরিফেরা, নিডারিয়া, টিনোফোরা, প্লাটিহেলমিনথেস, ব্রায়োজোয়ান, অ্যামফিওয়াস ব্যতীত সকল অ্যানিমালিয়া

শারীরতত্ত্ব সম্পাদনা

 
রেডিয়াল ধমনীতে নাড়ির স্পন্দন দেখা হচ্ছে
 
নাড়ির স্পন্দনের জন্য প্রস্তাবিত পয়েন্ট

ক্লডিয়াস গ্যালেন হলো সর্বপ্রথম শারীরতত্ত্ববিদ যিনি নাড়ির স্পন্দন বর্ণনা করেছিলেন। [১] নাড়ি হল প্রশিক্ষিত পর্যবেক্ষকের কাছে সিস্টোলিক রক্তচাপ নির্ধারণের সমীচীন একটি স্পর্শগ্রাহ্য পদ্ধতি। ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ স্পন্দনযোগ্য নয় এবং হৃদস্পন্দনের মধ্যে ঘটে যাওয়া স্পর্শগ্রাহ্য পদ্ধতির দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা যায় না।

বৈশিষ্ট্য সম্পাদনা

হার সম্পাদনা

বিশ্রামের সময় প্রতি মিনিটে স্বাভাবিক নাড়ির স্পন্দনের হার দেখানো হলো (বিপিএম): [২]

নবজাতক
(০-৩ মাস বয়সী)
শিশু
(৩ - ৬ মাস)
শিশু
(৬ - ১২ মাস)
শিশু
(১ - ১০ বছর)
১০ বছরের বেশি বয়সী
শিশু এবং বয়স্ক
ভাল-প্রশিক্ষিত
প্রাপ্তবয়স্ক ক্রীড়াবিদ
৯৯-১৪৯ ৮৯-১১৯ ৭৯-১১৯ ৬৯-১২৯ ৫৯-৯৯ ৩৯-৫৯

হৃৎপিণ্ডের সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে নাড়ির স্পন্দন ব্যবহার করা যেতে পারে। নাড়ির স্পন্দন কমে যাওয়া বা ব্র্যাডিকার্ডিয়া বিপজ্জনক হতে পারে। বিপজ্জনক ধীর হৃদস্পন্দনের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে দুর্বলতা, শক্তি হ্রাস এবং অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। [৩]

ছন্দ সম্পাদনা

৭০ সম্পাদনা

নিদর্শন সম্পাদনা

সাধারণ স্থান সম্পাদনা

নাড়ির স্পন্দন পরীক্ষা করার স্থানগুলোকে কেন্দ্রীয় এবং প্রান্তীয় এই দুই ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় নাড়ির স্পন্দনের মধ্যে রয়েছে ক্যারোটিড, ফিমোরাল এবং ব্র্যাকিয়াল নাড়ির স্পন্দন। [৪]

ঊর্দ্ধবাহুতে সম্পাদনা

 
ঊর্ধ্ববাহুতে নাড়ির স্পন্দনের জন্য ধমনী

ইতিহাস সম্পাদনা

নাড়ির স্পন্দন নির্ভুলভাবে পরিমাপ করা প্রথম ব্যক্তি ছিলেন সান্তোরিও। যিনিপালসিলোজিয়ামআবিষ্কার করেছিলেন। পালসিলোজিয়াম হলো সরল দোলকের একটি রূপ। পরবর্তীতে গ্যালিলিও গ্যালিলেই এর বিকাশ সাধন করেছিলেন। [৫] এক শতাব্দী পরে অন্য একজন চিকিৎসক, ডি ল্যাক্রোইক্স, কার্ডিয়াক ফাংশন পরীক্ষা করার জন্য পালসিলোজিয়াম ব্যবহার করেন।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Temkin 165;BBC[a]
  2. U.S. Department of Health and Human Services - National Ites of Health Pulse
  3. "Pulse Rate Measurement"Healthwise। WebMD। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১১ 
  4. Berg, Dale; Worzala, Katherine (২০০৬)। Atlas of Adult Physical Diagnosis (ইংরেজি ভাষায়)। Lippincott Williams & Wilkins। পৃষ্ঠা 80। আইএসবিএন 9780781741903 
  5. Bigotti, Fabrizio; Taylor, David (২০১৭)। "The Pulsilogium of Santorio: New Light on Technology and Measurement in Early Modern Medicine": 53–113। আইএসএসএন 1843-1348পিএমআইডি 30854144পিএমসি 6407692  

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

  • আপনার নাড়ির স্পন্দনের সাথে সাথে অনলাইনে পালস পরিমাপ করুন