নাজির আহমেদ (চলচ্চিত্র নির্মাতা)
নাজির আহমেদ (১৯২৫ – ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০) ছিলেন একজন বাঙালি চলচ্চিত্রনির্মাতা ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব।[১] তিনি ১৯৫২ থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থার (পরবর্তীতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন) প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
নাজির আহমেদ | |
---|---|
জন্ম | আনু. ১৯২৫ |
মৃত্যু | ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স ৬৪–৬৫)
মাতৃশিক্ষায়তন | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | চলচ্চিত্রনির্মাতা |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাআহমেদ পুরান ঢাকার নিকটবর্তী ইসলামপুরের ১৭ আশিক লেনে ঢাকার বিখ্যাত মির্জা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।[১] তার দাদা মির্জা হায়াৎ নবাবদের জন্য অভিনেতা হিসাবে কাজ করতেন।[১] সেইসাথে তার বাবা মির্জা ফকির এবং চাচা মির্জা কাদেরও ছিলেন অভিনেতা। আহমেদের বড় ভাই আবু নাসের আহমেদ, ছিলেন ১৯৫২ সালে পূর্ব বাংলা চলচ্চিত্র সংস্থার একজন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।[৩] তার ছোট ভাই হামিদুর রহমান, একজন চিত্রশিল্পী, যিনি পরবর্তীতে শহীদ মিনার নির্মাণ করেন[১] এবং সর্বকনিষ্ঠ সাঈদ আহমদ ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ও লেখক।[৪]
আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪২ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনানাজির আহমেদ স্নাতক হওয়ার পর ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে অল ইন্ডিয়া রেডিও-এর কলকাতা কেন্দ্রে প্রথম মুসলিম ঘোষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ আগস্ট রাত বারোটায় তার কন্ঠেই প্রথম ঘোষিত হয় পাকিস্তান ব্রডকাস্টিং সার্ভিস,ঢাকা। সবসময়ে তিনিই গীতিনকশা, নাটক ইত্যাদি রচনা করে ঢাকা বেতারকে উজ্জীবিত করেন।[৫] পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মুহম্মদ আলী জিন্নার ভ্রমণের উপর ঢাকায় নির্মিত প্রথম প্রামাণ্যচিত্র ইন আওয়ার মিডস্ট(১৯৪৭) এর স্রষ্টা ছিলেন।[১] প্রামাণ্যচিত্রটি পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর-জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর দশ দিনের ঢাকা সফরকে কেন্দ্র করে ছিল।[১] আহমেদ ১৯৪৮–১৯৫২ পর্যন্ত লন্ডনে বিবিসির হয়ে কাজ করেছিলেন।[১] বিবিসির বাংলা অনুষ্ঠান আঞ্জুমান চালু করেন।[৫] তিনি সালামাত, চাকা এবং ১৯৫৫ সহ অন্যান্য প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করেছিলেন।[১] ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আসিয়া চলচ্চিত্রের কাহিনী ও সংলাপ রচয়িতা ছিলেন তিনি।[৬]
আহমেদ ১৯৬৮ সালে নতুন দিগন্ত নামে একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন এবং ১৯৭০ সালে বিন্দু থেকে বৃত্ত চলচ্চিত্রে চিত্রগ্রাহক হিসাবে কাজ করেছিলেন।[৭]
পুরস্কার
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ "নাজির আহমেদ পূর্ববঙ্গের চলচ্চিত্র বিকাশের উদ্যোক্তা"। দৈনিক ইত্তেফাক। ২০১৭-০৪-০১। ২০১৮-০২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-২৩।
- ↑ অনুপম হায়াৎ (২০১২)। "চলচ্চিত্র স্টুডিও"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ অনুপম হায়াৎ (২০১২)। "চলচ্চিত্র সংগঠন"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ নাজির আহমেদ পূর্ববঙ্গের চলচ্চিত্র বিকাশের উদ্যোক্তা, ইত্তেফাক, ১ এপ্রিল ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, দ্বিতীয় খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, জানুয়ারি ২০১৯ পৃষ্ঠা ১৮৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-২৯২-৬
- ↑ "আসিয়া, বাংলা মুভি ডাটাবেইজ"। ৩১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ নভেরা দীপিতা (২০০৪-১২-৩০)। "Rebecca, the filmmaker" [চলচ্চিত্র নির্মাতা রেবেকা]। দ্য ডেইলি স্টার। ২০১৮-০৯-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৯-২৩।
- ↑ আহমদ, নাজীর, বাংলাপিডিয়া
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে নাজির আহমেদ (ইংরেজি)