নবাবগঞ্জ উপজেলা, দিনাজপুর
নবাবগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অন্তর্গত দিনাজপুর জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
নবাবগঞ্জ | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে নবাবগঞ্জ উপজেলা, দিনাজপুর | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°২৫′১৭″ উত্তর ৮৯°৫′৪″ পূর্ব / ২৫.৪২১৩৯° উত্তর ৮৯.০৮৪৪৪° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রংপুর বিভাগ |
জেলা | দিনাজপুর জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩১৭.৫৪ বর্গকিমি (১২২.৬০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০০১)[১] | |
• মোট | ২,৩৪,৪১১ |
• জনঘনত্ব | ৭৪০/বর্গকিমি (১,৯০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬১ % |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫৫ ২৭ ৬৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
নামকরন সম্পাদনা
মোগল রাজত্বের শেষের দিকে নবাবী আমলের সূচনা হয়। তখন রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার পশ্চিম দিকে ঘুলচৌইক নামে একটি বিখ্যাত নগর ছিল। সেখানে মোগল বংশের কিছু লোকের বাস ছিল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজ উদ-দৌলার বিপর্যয়ের পর মোগলদের উপর নেমে আসে চরম দূর্দিন। ১৭৬০ সালে মীর জাফরের রাজত্বকালে একটি ভয়াবহ যুদ্ধ হয় ফুলচৌকি নগরের পশ্চিমে মাসিমপুর নামক জায়গায়। ঐ সময়ে মীর কাসিম ও ইংরেজদের একটি দুর্গ ছিল নবাবগঞ্জের বামনগড় নামক মৌজায়। সেখান থেকে তারা মাসিমপুরের যুদ্ধে দেবী চৌধুরাণীর বিরুদ্ধে শক্তির মহড়া প্রদর্শন করছিলেন। যুদ্ধে ইংরেজ ও মীর জাফরের বাহিনী পরাজিত হয়ে পালিয়ে যায়।যে স্থানে দেবী চৌধুরাণীর বিজয় সূচিত হয়, তা জয়পুর নামে খ্যাত। ১৭৬০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির এই যুদ্ধ ইতিহাসে ‘ব্যাটল অব মাসিমপুর’ নামে অভিহীত। এই যুদ্ধে ফুলচৌকি নগরে মোগল বংশীয় লোকেরা ইংরেজদের বিরোধীতা করে দেবী চৌধুরাণীর পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। ১৭৭০ সালে মহা দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ইংরেজ মদদ পুষ্ট আমলারা রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য দিনাজপুরে একুশ প্রকার কর আরোপ করেন। প্রত্যক্ষ করভার সইতে না পেরে শুরু হয় প্রজা বিদ্রোহ। এই বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেন ফুলচৌকির মোগল বংশীয় সিংহ পুরুষ নূর উদ্দিন বাকের মোহাম্মদ জং। দিনাজপুর ও রংপুরের প্রজারা সম্মিলিত ভাবে তাকে নবাব হিসেবে বরণ করে নেয়।ঐ সময় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জসহ অনেক এলাকা নবাব নূর উদ্দিন বাকের মোহাম্মদ জং এর নিয়ন্ত্রণে ছিল।তিনি নবাবগঞ্জের তর্পনঘাট হিন্দু ধর্মের তীর্থ স্থান ও আশে পাশে ঘোড়ায় চড়ে নবাবগঞ্জ যাতায়াত করতেন।১৭৫৭ সালে ইংরেজদের সাথে যুদ্ধে নবাব নূর উদ্দিন বাকের মোহাম্মদ জং শহীদ হলে তার অনুসারীরা নবাবের স্মৃতিকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য তর্পনঘাটের পশ্চিমে পারাপারের স্থানের নাম রাখেন নবাবগঞ্জ।
দর্শনীয় স্থান সম্পাদনা
- ১। নবাবগঞ্জ জাতীয় উদ্যান (আশুরার বিল)
- ২। স্বপ্নপুরী
- ৩। সীতাকোট বৌদ্ধ বিহার
- ৪। ডঃ ওয়াজেদ মিঞা সেতু
- ৫। ভাদুরিয়া ফরেস্ট
- ৬। দারিয়া মসজিদ
- ৭। ভাদুরিয়া ডাকবাংলো
- ৮। শাল্টিমুরাদপুর শালবন
- ৯। চড়ারহাট বধ্যভূমি
অবস্থান ও আয়তন সম্পাদনা
নবাবগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৩১৪.৬৮ বর্গ কিলোমিটার। অবস্থান: ২৫°১৪´ থেকে ২৫°৩৪´ এবং উত্তর অক্ষাংশ ৮৮°৫৮´ থেকে ৮৯°১৩´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এ উপজেলার উত্তরে পার্বতীপুর উপজেলা, দক্ষিণে ঘোড়াঘাট উপজেলা ও হাকিমপুর উপজেলা, পূর্বে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা, মিঠাপুকুর উপজেলা ও বদরগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে বিরামপুর উপজেলা ও ফুলবাড়ী উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা সম্পাদনা
ইউনিয়ন - জয়পুর, বিনোদনগর, গোলাপগঞ্জ, শালখুরিয়া, পুটিমারা, ভাদুরিয়া, দাউদপুর, মাহামুদপুর ও কুশদহ
ইতিহাস সম্পাদনা
১৭৯৩ সালে নবাবগঞ্জ অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]
জনসংখ্যা সম্পাদনা
জনসংখ্যা ২০৪৩৫১; পুরুষ ১০৫২৫৯, মহিলা ৯৯০৯২। মুসলিম ১৭৯৯৭৩, হিন্দু ১৪৩৯৯, বৌদ্ধ ৩২০৮, খ্রিস্টান ৩১৫ এবং অন্যান্য ৬৪৫৬। এ উপজেলায় সাঁওতাল, ওরাওঁ, মুন্ডা প্রভৃতি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
শিক্ষা সম্পাদনা
অর্থনীতি সম্পাদনা
আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৭৫.২৮%, অকৃষি শ্রমিক ২.৯২%, শিল্প ০.৪৪%, ব্যবসা ৯.৫১%, পরিবহণ ও যোগাযোগ ২.১৫%, চাকরি ৪.০৩%, নির্মাণ ০.৫৩%, ধর্মীয় সেবা ০.১৫%, রেন্ট অ্যান্ড রেমিটেন্স ০.০৭% এবং অন্যান্য ৪.৯২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৫৯.৭৩%, ভূমিহীন ৪০.২৭%। শহরে ৪৯.০১% এবং গ্রামে ৬০.০৪% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
নদীসমূহ সম্পাদনা
নবাবগঞ্জ উপজেলায় ৩টি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে করতোয়া নদী, যমুনেশ্বরী নদী এবং তুলসী গঙ্গা নদী।[৩]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব সম্পাদনা
- শিবলী সাদিক - রাজনীতিবিদ।
গণমাধ্যম সম্পাদনা
- নবাবগঞ্জ বার্তা
- নোমান টিভি
- স্নেহা টিভি
- আর্মি ক্যাবল টিভি
বিবিধ সম্পাদনা
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে উপজেলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪।
- ↑ ধনঞ্জয় রায়, দিনাজপুর জেলার ইতিহাস, কে পি বাগচী অ্যান্ড কোম্পানি কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ২০০৬, পৃষ্ঠা ২১১
- ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৪০৫।
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |