ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামি শিক্ষা অনুষদ
ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামি শিক্ষা অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া (ইংরেজি: Theology and Islamic Studies Faculty) বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে একমাত্র পুর্নাঙ্গ ইসলামি ধর্মতাত্ত্বিক অনুষদ।[১][২] এটি কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিষ্ঠাকালীন একটি অনুষদ।[৩][৪] ১৯৮৬ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ার সাথে সাথে অনুষদটিও চালু হয়।[৫] বর্তমানে অনুষদের ডিনের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপক মোহাম্মদ সোলায়মান।[৬][৭]
![]() বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন ও ধর্মতত্ত্ব অনুষদ | |
ধরন | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৮৬ |
মূল প্রতিষ্ঠান | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ |
ডিন | মোহাম্মদ সোলায়মান |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ৫৫+ |
শিক্ষার্থী | ১২০০+ |
স্নাতক | ১০০০+ |
স্নাতকোত্তর | ২০০+ |
৩০+ | |
ঠিকানা | ইবি ক্যাম্পাস , |
ইতিহাসসম্পাদনা
প্রাতিষ্ঠানিক ইতিহাসসম্পাদনা
অনুষদটি সমগ্র উপমহাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে (তথা পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়) ইসলামি শিক্ষায় অন্যতম ভূমিকা রেখেছে। ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়ায় ইসলামি শিক্ষার প্রসারের জন্য ধর্মতত্ত্ব অনুষদ সৃষ্টি করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। ১৯৮৬ সালে গাজীপুরের বোর্ড বাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালু হয়, প্রতিষ্ঠার শুরু ১৯৮৫-৮৬ সেশনে অনুষদে আল কুরআন ওয়া উলুমুল কুরআন এবং উলুমুত তাওহিদ ওয়াদ দা’ওয়াহ নামে দুটি বিভাগ চালু করা হয়। বিভাগ দুইটিতে ১৫০ জন ছাত্র ভর্তি হয়। পরবর্তীতে ১৯৯২ সালে আল হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ নামে আরেকটি চালু করা হয়।[৮]
তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা পরিচালক এম. এ. বারী নেতৃত্ব টিম এই অনুষদে ৫টি বিভাগ সুপারিশ করে সেগুলো হল:
- আল কোরআন ওয়া উলুমুল কোরআন
- উলুমুত তাওহীদ ওয়াদ দাওয়াহ
- আল হাদিস ওয়া উলুমুল হাদিস
- আশ-শারিয়াহ ওয়া উসুলুশ শারিয়াহ
- আল-ফালসাফা ওয়াত তাসাউফ ওয়াল আখলাক।[৮]
১৯৯০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুর থেকে পুনরায় কুষ্টিয়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কুষ্টিয়া শহরের পি.টি.আই ভবনে এই অনুষদের কার্যক্রম চলতে থাকে।[৯] অবশেষে ১ নভেম্বর ১৯৯২ সালে বর্তমান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মূল ক্যাম্পাস শান্তিডাঙ্গা-দুলালপুরে স্থানান্তর করা হয়।[১০][১১]
পূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী ভর্তি ও নিয়োগ ছিলো না এবং ১৯৮৫-৮৬ থেকে ১৯৮৭-৮৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রত্যেক বিভাগে মোট ছাত্রের ৫০% মাদ্রাসা ছাত্র ভর্তি করা হয়েছিলো। ১৯৯০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম মহিলা শিক্ষক নিয়োগ ও ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম ছাত্রী ভর্তি করা হয়।[১০]
মাদ্রাসা অধিভুক্তিসম্পাদনা
বিশ্ববিদ্যালয় ২০০৬ সালের এ্যাক্ট অনুসারে আলিয়া মাদ্রাসার অধিভুক্তি লাভ করে এবং ১০৮৭ টি ফাজিল মাদ্রাসা ও ১৯৪টি কামিল মাদ্রাসার অধিভুক্তি লাভ করে।[৫] এই মাদ্রাসাগুলো মূলত এই অনুষদের তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হতো। ২০০৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মাদ্রাসাগুলো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিলো। বর্তমানে এগুলো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে।
শিক্ষা কার্যক্রমসম্পাদনা
এই অনুষদে বর্তমানে তিনটি বিভাগ রয়েছে। বিভাগগুলোতে ব্যাচেলর অব ইসলামিক স্টাডিজ (বিটিআইএস) অনার্স ডিগ্রি, মাস্টার্স অব ইসলামিক স্টাডিজ (এমটিআইএস) ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এছাড়াও এমফিল ও পিএইচডি প্রদান করা হয়। বিভাগ তিনটিতে কোর্স অনুযায়ী আরবি, ইংরেজি ও বাংলা মাধ্যমে পাঠদান করা হয়। তিনটি বিভাগে ২৪০টি আসন রয়েছে।
নং | বিভাগের নাম | শিক্ষা ও পরীক্ষার মাধ্যম | প্রতিষ্ঠার বছর | পূর্বতন নাম | আসন | সভাপতি |
---|---|---|---|---|---|---|
০১ | আল কুরআন ও ইসলামি শিক্ষা | আরবি, ইংরেজি, বাংলা | ১৯৮৬ | আল কোরআন ওয়া উলুমুল কোরআন | ৮০ | |
০২ | দাওয়াহ ও ইসলামি শিক্ষা | আরবি, ইংরেজি, বাংলা | ১৯৮৬ | উলুমুত তাওহীদ ওয়াদ দাওয়াহ | ৮০ | |
০৩ | আল হাদিস ও ইসলামী শিক্ষা | আরবি, ইংরেজি, বাংলা | ১৯৯২ | আল হাদিস ওয়া উলুমুল হাদিস | ৮০ |
ভর্তি নির্দেশিকাসম্পাদনা
প্রতিবছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অনুষদটির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর এই ইউনিটে আনু. ২০০০ ভর্তিচ্ছু পরিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে থাকে।[১২][১৩] অনুষদ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটির ভর্তি পরীক্ষা হতো এ ইউনিটের অধীনে। তবে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে এই অনুষদ স্বতন্ত্রভাবে পরীক্ষা নেয়।[১৪]
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিসম্পাদনা
এই অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনঃ
- খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর
- আব্দুর রহমান আনওয়ারী
- আব্দুল হাই মুহাম্মাদ সাইফুল্লাহ
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ সংবাদদাতা, ইবি। "গুচ্ছ পদ্ধতিতে থাকছে না ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদ"। DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ মোঃ কামরুজ্জামান, ড. (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১)। "গুচ্ছ পদ্ধতি ও ধর্মতত্ত্ব"। দৈনিক মানবকন্ঠ।
- ↑ "ইসলামী জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদ"। The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "লক্ষ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়"। The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ ক খ "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৮০ এর অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত আইন" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ | জাতীয় গেজেট। ৩১ মার্চ ২০১০।
- ↑ "গুচ্ছতে পড়েনি ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদ, পরীক্ষা ২ নভেম্বর | বাংলাদেশ"। Somoy News। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদের নতুন ডিন ড. সোলায়মান"। Daily Nayadiganta। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ ক খ কামরুজ্জামান, ড মো। "ইবির ধর্মতত্ত্ব ও ইসলামী শিক্ষা অনুষদ এত অবহেলিত কেন?"। DailyInqilabOnline। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৪।
- ↑ "কুষ্টিয়া সদর উপজেলা"। kushtiasadar.kushtia.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-১৪।
- ↑ ক খ "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৮০"। bdlaws.minlaw.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "রোববার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা"। চ্যানেল আই অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "ইবির ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় উপস্থিতি ৮৬ শতাংশ"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১২-০৯।
- ↑ "২০২০-২১ সেশনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সহায়িকা" (পিডিএফ)। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। ১০ অক্টোবর ২০২১।