'ব্রাস-স্পুংস বৌদ্ধবিহার
'ব্রাস-স্পুংস বৌদ্ধবিহার (তিব্বতি: འབྲས་སྤུངས་, ওয়াইলি: ’bras spungs)[১][২] মধ্য তিব্বতের লাসা বিভাগে অবস্থিত দ্গে-লুগ্স ধর্মসম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান বৌদ্ধবিহার। ফ্রেডি স্পেন্সার চ্যাপম্যানের মতে ১৯৩৬ খ্রিষ্টাব্দে তার তিব্বত ভ্রমণকালে এই বিহার ছিল বিশ্বের বৃহত্তম বৌদ্ধবিহার, যেখানে প্রায় ৭৭০০ থেকে ১০,০০০ ভিক্ষু বসবাস করতেন।[৩]
'ব্রাস-স্পুংস বৌদ্ধবিহার | |
---|---|
স্থানাঙ্ক: | ২৯°৪০′৩৫″ উত্তর ৯১°২′৫১″ পূর্ব / ২৯.৬৭৬৩৯° উত্তর ৯১.০৪৭৫০° পূর্ব |
মঠের তথ্য | |
অবস্থান | তিব্বত, চীন |
প্রতিষ্ঠাতা | 'জাম-দ্ব্যাংস-ছোস-র্জে-ব্ক্রা-শিস-দ্পাল-ল্দান |
স্থাপিত | ১৪১৬ খ্রিষ্টাব্দ |
ধরন | তিব্বতি বৌদ্ধধর্ম |
ধর্মীয় গোষ্ঠী | দ্গে-লুগ্স বৌদ্ধ ধর্মসম্প্রদায় |
মহাবিদ্যালয় | স্গো-মাং মহাবিদ্যালয় ব্লো-গ্সাল-গ্লিং মহাবিদ্যালয় ব্দে-দ্ব্যাংস মহাবিদ্যালয় শাগ-স্কোর মহাবিদ্যালয় থোস-ব্সাম-গ্লিং মহাবিদ্যালয় 'দুল-বা মহাবিদ্যালয় স্ঙ্গাগ্স-পা মহাবিদ্যালয় |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৪১৬ খ্রিষ্টাব্দে ত্সোং-খা-পা-ব্লো-ব্জাং-গ্রাগ্স-পা নামক দ্গে-লুগ্স বৌদ্ধ ধর্মসম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতার শিষ্য 'জাম-দ্ব্যাংস-ছোস-র্জে-ব্ক্রা-শিস-দ্পাল-ল্দান (ওয়াইলি: 'jam dbyangs chos rje bkra shis ldan) 'ব্রাস-স্পুংস বৌদ্ধবিহার স্থাপন করেন। প্রথমে এই বিহারে একটি মাত্র ভবন ছিল, যেখানে একাধারে শিক্ষাদান ও বসবাস করা হত। পরবর্তীকালে ত্সোং-খা-পা-ব্লো-ব্জাং-গ্রাগ্স-পার অণুরোধে স্নে'উ-দ্পোন-নাম-ম্খা'-ব্জাং-পো (ওয়াইলি: 'sne’u-dpon nam-mkha’ bzang-po) নামক মধ্য তিব্বতের একজন রাজনৈতিক নেতার পৃষ্ঠপোষকতায় উপাসনা ভবন, তন্ত্র সাধনা ভবন, ভিক্ষুদের বসবাসস্থল প্রভৃতি নির্মিত হয়। ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই বৌদ্ধবিহার সমৃদ্ধির দিকে চললেও এই সময় চীন সরকারের তিব্বত আক্রমণের কারণে এই বিহার অনেকাংশে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অধিকাংশ ভিক্ষু ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে কর্ণাটক রাজ্যের মুন্ডগোদ অঞ্চলে এই বৌদ্ধবিহারের অণুকরণে নতুন করে বিহার স্থাপন করেন।[৪]
মহাবিদ্যালয়
সম্পাদনা'জাম-দ্ব্যাংস-ছোস-র্জে-ব্ক্রা-শিস-দ্পাল-ল্দানের ভাষণ শুনতে যে বিশাল সংখ্যক ভিক্ষু এই বিহারে আসেন, তারা এই সময় এই বৌদ্ধবিহারে স্গো-মাং (ওয়াইলি: sgo mang), ব্লো-গ্সাল-গ্লিং (ওয়াইলি: blo gsal gling), ব্দে-দ্ব্যাংস (ওয়াইলি: bde dbyangs), শাগ-স্কোর (ওয়াইলি: shag skor), থোস-ব্সাম-গ্লিং (ওয়াইলি: thos bsam gling), 'দুল-বা (ওয়াইলি: 'dul ba) এবং স্ঙ্গাগ্স-পা (ওয়াইলি: sngags pa) নামক এই সাতটি বিখ্যাত মহাবিদ্যালয় স্থাপন করেন। কিছু সময় পরে 'দুল-বা, শাগ-স্কোর এবং থোস-ব্সাম-গ্লিং এই তিনটি মহাবিদ্যালয়কে একত্রীভূত করা হয় ও তাদের স্বাধীন অস্তিত্বের অবসান ঘটে। বাকি চারটি মাহাবিদ্যালয়ের মধ্যে স্গো-মাং এবং ব্লো-গ্সাল-গ্লিং মহাবিদ্যালয়ে সূত্র সম্বন্ধে, স্ঙ্গাগ্স-পা মহাবিদ্যালয়ে তন্ত্র সম্বন্ধে এবং ব্দে-দ্ব্যাংস মহাবিদ্যালয়ে সূত্র ও তন্ত্র উভয় সম্বন্ধে শিক্ষা প্রদান করা হত। প্রত্যেক মহাবিদ্যালয়ের একজন করে প্রধানের পদ থাকলেও সমগ্র বৌদ্ধবিহারের একজন প্রধান হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। সাধারণতঃ যে কোন মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রবীনতম প্রধানকে সমগ্র বৌদ্ধবিহারের দায়িত্ব দেওয়া হয়ে থাকে।[৪]
দলাই লামার সঙ্গে সম্পর্ক
সম্পাদনাদ্বিতীয় থেকে শুরু করে পঞ্চম দলাই লামা প্রত্যেকেই এই বৌদ্ধবিহারের প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এমনকি এই বিহারের দ্গা'-ল্দান-ফো-ব্রাং (ওয়াইলি: dga’-ldan pho-brang) নামক ভবন দলাই লামা উপাধিধারী ভিক্ষুদের স্থায়ী বাসস্থান ছিল। এই ভবন তৃতীয় দলাই লামা প্রতিষ্ঠা করেন। পঞ্চম দলাই লামা তিব্বতের রাজনৈতিক শাসনকর্তা হিসেবে উদিত হওয়ার পর থেকে দলাই লামারা এই ভবনে বসবাস করা বন্ধ করেন।[৪]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Tibet, Tibet: A Personal History of a Lost Land. Patrick French. (2003) Alfred A. Knopf. New York City, p.240 (in quote from 13th Dalai Lama).
- ↑ Dialogues Tibetan Dialogues Han. Hannue. Quoting a monk at Drepung.
- ↑ Chapman F. Spencer. Lhasa the Holy City, p. 195. Readers Union Ltd., London.
- ↑ ক খ গ L. T. Doboom Tulku: "A Brief History of Drepung Monastery, translated by Alexander Berzin and Khamlung Rinpoche, 1974"
আরো পড়ুন
সম্পাদনা- Dorje, Gyurme. (1999). Footprint Tibet Handbook with Bhutan. 2nd Edition. Footprint Handbooks. Bath, England. আইএসবিএন ০-৮৪৪২-২১৯০-২.
- Dowman, Keith. (1988). The Power-places of Central Tibet: The Pilgrim's Guide. Routledge & Kegan Paul, London and New York. আইএসবিএন ০-৭১০২-১৩৭০-০
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Google Map of Drepung
- Bras-spungs monastery, Tibet, China Encyclopædia Britannica
- A multimedia guide to Drepung
- Drepung Loseling Institute in North America
- Drepung: An Introduction by Georges Dreyfus (April 10, 2006)