দেশী ধান বলতে একান্তভাবে একটি বিশেষ জলবায়ু এলাকায় উপলব্ধ ধানকে বোঝায়।[১] এই প্রকার ধান মানুষ নিজের প্রয়োজনেই প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে নিজের কাছে রেখেছিল। ধানের এই বিবিধ প্রজাতি প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে তৈরী হওয়া যা নির্দিষ্ট জলবায়ু এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ও চাষযোগ্য বলে বিবেচিত হ'ত। কিন্তু সারা পৃথিবীজুড়েই চাষব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের ফলে কোন দেশই আর নিজের দেশের ধানের সব জাতকে নিজের কাছে সংরক্ষণ করে রাখতে পারছে না। চাষীদের কাছ থেকে গবেষণা প্রতিষ্টান ঘুরে তা অন্য জল্বায়ু অঞ্চলে চলে যাচ্ছে। উপরন্তু গবেষণা প্রতিষ্টান এই ধানগুলির চারিত্রিক বৈশিষ্টকে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী রূপান্তরিত করে দিচ্ছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এখন আর দেশী ধানের প্রজাতির নির্দিষ্ট বিশুদ্ধ গুণাবলীও আর অবশিষ্ট থাকছে না[২]। তদুপরি তথ্যনির্ভর হয়ে একথা বলা যায় যে দুই বাংলার অবস্থা বরং তুলনামূলকভাবে ভালো। যদিও সর্বমোট ৫০০০ প্রজাতির মধ্যে বর্তমানে দুই বাংলা মিলিয়ে ৩০০-র বেশি প্রজাতি আর অবশিষ্ট নেই [৩]। বর্তমান চাষ ব্যবস্থায় উচ্চ ফলনশীল ধান চাষকেই যেখানে প্রাধান্য দেওয়া হয় সেখানে দেশী ধানের প্রতি সরকার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান বা কৃষকদের অনাগ্রহ খুব স্বাভাবিক ঘটনা [৪]

ভারতে ধানের প্রজাতি সম্পাদনা

সবুজ বিপ্লবের ঠিক আগে ১৯৬০ সালে ভারতে যেখানে ১,০০,০০০- র বেশি দেশীধানের প্রজাতির উল্লেখ পাওয়া যায় সেখানে বর্তমানের চিত্র খুব করুণ [৫]। আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে ভারতে এই ধানের বীজ সংরক্ষণ করে থাকে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা। কিন্তু সরকারী ঔদাসিন্য এবং বাজারের চাহিদার সাথে তাল মেলাতে গিয়ে তারাও আর দেশী ধান সংরক্ষণ করে রাখতে পারছে না। যদিও এখন অনেক জায়গাতেই স্থানীয়ভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন আবার নতুন করে দেশী ধানের প্রয়োজন দেখা যাচ্ছে।

ধানের প্রকারভেদ সম্পাদনা

মূলত চার ধরনের ধান প্রকৃতিতে পাওয়া যায় যেমন- ইণ্ডিয়ানা, জাপানিকা, আ্যারোম্যাটিক, গ্লুটিনিয়াস [৬]। এরমধ্যে সারা পৃথিবীতে ইণ্ডিয়ানা, ও আ্যারোম্যাটিক ধানের চাহিদাই সব থেকে বেশি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Stroud, J. L., Norton, G. J., Islam, M. R., Dasgupta, T., White, R. P., Price, A. H., ... & Zhao, F. J. (2011). The dynamics of arsenic in four paddy fields in the Bengal delta. Environmental Pollution, 159(4), 947-953. Chicago
  2. Singh, R. K., Dwivedi, B. S., & Tiwari, R. (2010). Learning and testing the farmers’ knowledge: conservation of location specific indigenous paddy varieties. Indian Journal of Traditional Knowledge, 9(2), 361-365.
  3. Deb, D. Folk Rice Varieties, Traditional Agricultural Knowledge and Food Security.
  4. Sinha, S. K., & Talati, J. (2007). Productivity impacts of the system of rice intensification (SRI): A case study in West Bengal, India. Agricultural water management, 87(1), 55-60.
  5. Deb, Debal 2000. Loot Hoye Jay Swadeshbhumi [“Our Land is Being Plundered” in Bengali]. Utsa Manush. Kolkata.
  6. "The U.S. Rice Export Market" (PDF). USDA. Nov 2000.