দুশারা, এছাড়াও যাকে দুসারেস হিসাবে প্রতিবর্ণীকৃত হয়ে থাকে, হল প্রাক-ইসলামি আরবের একটি দেবতার নাম যার পূজা পেট্রামাদা’য়েন সালেহ (যে শহরে এই দেবতা পৃষ্ঠপোষক ছিলো) শহরে নাবাতীয়রা ইসলাম আসার আগ পর্যন্ত করত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সাফাইতীয় ফলকে লেখা রয়েছে যে সে ছিল আরেক প্রাক-ইসলামি আরবীয় দেবী আল-লাতের পুত্র এবং সে নশ্বর জগত থেকে দূরে স্বর্গে অন্যান্য দেব-দেবীদের সাথে বসবাস করে। তাকে একটি ফলকে "পেট্রার দুশারা" বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ন্যায়বিচার পাওয়ার উদ্দেশ্যে আরবীয়রা মধ্যযুগে দুশারার উদ্দেশ্যে যজ্ঞের আয়োজন করত।[১]

দুশারা

ব্যুৎপত্তি সম্পাদনা

আরবের ঈশ্বর দুশারার নাম প্রথম জানা যায় একটি এপিগ্রাফিক নাবাতীয় সূত্র থেকে যেখানে তার নাম অপরিবর্তিতভাবে দৌসর' হিসেবে লেখা হয়েছে, নাবাতীয় লিপি শুধু ব্যাঞ্জনবর্ণ ব্যবহার করে এবং স্বরবর্ণ এড়িয়ে চলে। দুশারার নাম গ্রিক সূত্রে Δουσάρης (দোসারেস) ও লাতিনে দুসারেস হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। দুশারা নামের আসল অর্থ বিতর্কিত, তবে প্রাথমিককালের মুসলিম ঐতিহাসিক হিশাম ইবনে আল কালবি তার "কিতাব আল আশনাম" বইটিতে এর নাম জু ল-সারা (আরবি: ذو الشرى) লিখেছেন যার অর্থ "শারা থেকে আগত"। শারা হল একটি পর্বতমালা যা মৃত সাগরের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। যদি এই ব্যাখ্যা সঠিক হয় তবে দুশারা বিশেষ্যটি কোন নাম নয় বরং একটি উপাধি। কিন্তু এই নাম বা ব্যাখ্যা দুটির ব্যাপারেই বিতর্ক বিদ্যমান।[২][৩]

উপাসনা সম্পাদনা

গ্রিক আমলে, তাকে জিউসের সাথে তুলনা করা হত কারণ সে ছিল নাবাতীয় সর্বদেবতার মন্দিরের প্রধান, তবে জিউসের সাথে দিয়োনুসোসও প্রধান ছিলো।

দুশারার একটি পুরনো মন্দির ইতালির প্রাচীন পোজুওলির বন্দরে পাওয়া যায়। এই শহরটি ছিল মধ্যপ্রাচ্যে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গা এবং খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময় থেকে এখানে নাবাতীয়দের উপস্থিতি ছিল।[৪] দুশারার ধর্মের অস্তিত্ব রোমান যুগ থেকে ইসলামি আমলের পরেও ছিল।[৫]

এই দেবতার সম্পর্কে নবম শতাব্দীর মুসলিম ঐতিহাসিক হিশাম লিখেছেন: "আজদের বনু আল-হারিস ইবনে ইয়াশকুর ইবনে মুবাশ্বিরের দু শারা নামে একটি মূর্তি ছিল।"

সাফাইতীয় ফলকে দুশারার নিকট পশু বলি দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে যা বিভিন্ন ধরনের সেবার জন্য করা হত।[১]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Discussion: The Religion and Rituals of the Nomads of Pre-Islamic Arabia: A Reconstruction based on the Safaitic Inscriptions - Academia.edu"www.academia.edu (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৩-১৪ 
  2. F., Healey, John (১০ মে ২০০১)। The religion of the Nabataeans : a conspectus। Leiden। পৃষ্ঠা 85–97। আইএসবিএন 9789004301481ওসিএলসি 944920100 
  3. Lewis, B. (১৯৯১)। The Encyclopaedia of Islam. Vol. II: C–G (New সংস্করণ)। Leiden: Brill। পৃষ্ঠা 246–247। আইএসবিএন 9004070265ওসিএলসি 399624 
  4. AA.VV. Museo archeologico dei Campi Flegrei - Catalogo generale (vol. 2) - Pozzuoli, Electa Napoli 2008, pag. 60-63
  5. Peterson, Stephanie Bowers, "The Cult of Dushara and the Roman Annexation of Nabataea" (2006). Open Access Dissertations and Theses. Paper 5352.

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা

  • Ibn al-Kalbī, The Book of Idols, Being a Translation from the Arabic of the Kitāb al-Asnām. Tr. and comm. Nabih Amin Faris (Princeton, Princeton University Press, 1952).
  • Healey, John F., The Religion of the Nabataeans: A Conspectus (Leiden, Brill, 2001) (Religions in the Graeco-Roman World, 136).
  • el-Khouri, Lamia; Johnson, David, "A New Nabataean Inscription from Wadi Mataha, Petra," Palestine Exploration Quarterly, 137,2 (2005), 169–174.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা