দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা

কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা দক্ষিণ কোরিয়ার জুংগুর জাংছুং-দোংয়ের উপকণ্ঠে অবস্থিত।[১] এটি এশিয়ার প্রথম জাতীয় নাট্যশালা।[২]

দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা
হাঙ্গুল국립극장
হাঞ্জা
সংশোধিত রোমানীকরণগুকরিপ গুকজাং
ম্যাক্কিউন-রাইশাওয়াখুকরিপ খুকচাং

প্রতিষ্ঠাসম্পাদনা

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ১৯৫০ সালে কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা প্রতিষ্ঠা করে। কোরিয়ার জাতীয় নাট্যসংস্থা (যারা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নাটক মঞ্চস্থ করে থাকে), জাতীয় ছাংগুক সংস্থা (যারা কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী ছাংগুক নাট্য মঞ্চস্থ করে থাকে), কোরিয়ার জাতীয় নৃত্যসংস্থা এবং জাতীয় অর্কেস্ট্রা সংস্থা এখানে নিজেদের আয়োজন মঞ্চায়নের সুযোগ পেয়ে থাকে।[৩]

সুযোগ-সুবিধাসম্পাদনা

  • প্রধান হল 'হ্যা' ("হ্যা" অর্থ "সূর্য, কোরীয়: ")
  • ছোট হল 'থাল' ("থাল" অর্থ "চাঁদ, কোরীয়: ")
  • স্টুডিও 'বিয়ল' ("বিয়ল" অর্থ "তারা, কোরীয়: ")
  • কেবি হানূল ইয়ুথ থিয়েটার ("হানূল" অর্থ "আকাশ, কোরীয়: 하늘")
  • কালচার স্কয়ার

আয়োজনসম্পাদনা

তারুণ্যের শিল্প উৎসবসম্পাদনা

জাতীয় নাট্যশালার "তারুণ্যের শিল্প উৎসব" প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। তরুণদের অংশগ্রহণে উদযাপিত এ উৎসবের বিষয়বস্তু থাকে আকাশছোঁয়া তারুণ্য। তরুণরা এখানে ঐতিহ্যবাহী নৃত্যগীতি, গীতিনাট্য, মূকাভিনয়, কোরিয় ও আন্তর্জাতিক ঘরানার নাটক ও নৃত্য মঞ্চায়নের মাধ্যমে নিজেদের ইতিবাচক অনুভূতি ও তারুণ্যের উদ্দীপনা প্রকাশের সুযোগ পান। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সেবার সাংস্কৃতিকভাবে অবহেলিত এলাকার তরুণদের জন্য "আন সুকসুনের সাথে লোকগীতির পথে যাত্রা" শীর্ষক গীতিনাট্যটি মঞ্চস্থ করা হয়। তারুণ্যের এ শিল্প উৎসব কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালার অন্যতম প্রধান আয়োজন, যার লক্ষ্য ভবিষ্যৎ সমাজের নেতৃত্বদানকারী ও শিল্পচর্চায় সংশ্লিষ্ট তরুণদের উৎসাহিত করা।

জাতীয় নাট্যশালার বিশ্ব উৎসবসম্পাদনা

২০০৭ সাল থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত "জাতীয় নাট্যশালার বিশ্ব উৎসব" আয়োজিত হয়ে আসছে। এই উৎসবের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মাঝে পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বোঝাপড়াকে প্রণোদিত করা হয়। পাশাপাশি কোরিয়ার দর্শকরা মনোজ্ঞ দেশীয় ও ভিনদেশী পরিবেশনা উপভোগ করতে পারেন। একই সাথে কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালাও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করতে পারে। এ উৎসবে বিভিন্ন দেশের জাতীয় নাট্যশালা থেকে আগত প্রতিনিধিরা যেমন নিজেদের পরিবেশনা মঞ্চস্থ করেন, পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। প্রতিটি দেশের জাতীয় নাট্যশালা, দূতাবাস ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এখানে সাংস্কৃতিক যোগাযোগের জন্য মিলিত হয়। এ বিশ্ব উৎসব কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা কর্তৃক আয়োজিত সবচেয়ে বড় উৎসব, অনেকে একে কোরিয়ার অন্যতম সর্ববৃহৎ উৎসব বলেও গণ্য করে থাকেন।

শনিবারের সাংস্কৃতিক চত্বরসম্পাদনা

১৯৯৩ সাল থেকে জাতীয় নাট্যশালা খোলা মঞ্চে "শনিবারের সাংস্কৃতিক চত্বর" শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে। প্রতি বছর মে থেকে সেপ্টেম্বর মাসে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে বিবিধ সঙ্গীতানুষ্ঠান যেমন, ব্যালেট, সমকালীন সঙ্গীত ও অর্কেস্ট্রা পরিবেশিত হয়ে থাকে। এযাবৎ প্রায় সাড়ে তিনলক্ষ মানুষ শনিবারের সাংস্কৃতিক চত্বরের এসকল পরিবেশনা উপভোগ করেছেন। ২০০২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত এ আয়োজনের স্পন্সর ছিল রেনালট-স্যামসাং মোটরস। ২০০৮ সাল থেকে মেসিনাট পুরস্কারপ্রাপ্ত কেবি কুমিন ব্যাংক আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষকতা করে আসছে। এ ধরনের কর্মযজ্ঞ শিল্প ও বাণিজ্যের মধ্যে সেতুবন্ধনের চমৎকার উদাহরণ হয়ে থাকবে।

মধ্যাহ্নের সঙ্গীতানুষ্ঠানসম্পাদনা

ঐতিহ্যবাহী উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের শক্তি ও সম্ভাবনা প্রদর্শনের লক্ষ্য নিয়ে মধ্যাহ্নের সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে জনসাধারণ কোরিয়ার অতীত ও বর্তমান সংগীত জগৎ সম্পর্কে সহজেই ধারণা পেতে পারেন। লোকসঙ্গীত, সমকালীন সঙ্গীত, অপেরা ও চলচ্চিত্রের সঙ্গীত জাতীয় অর্কেস্ট্রা সংস্থা কর্তৃক আধুনিক আয়োজনে পরিবেশিত হয়। প্রতিটি পরিবেশনার সাথে শৈল্পিক ঘরানার পরিচালক বিয়ংকি হোয়াংয়ের ধারাভাষ্য এ সঙ্গীতায়োজনের গুণগত মানকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।

মৌসুমি উৎসবসম্পাদনা

কোরিয়ার জাতীয় নাট্যশালা প্রতি গ্রীষ্ম, শরত, শীত ও বসন্তে বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন করে থাকে।[৪]

নাট্য প্রদর্শনীসম্পাদনা

  • ২০১০ সালের আগস্ট: কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও কোরিয়ার গীতিনাট্য সমিতির যৌথ প্রযোজনায় কোরীয় যুদ্ধের ৬০তম বার্ষিকী উপলক্ষে মঞ্চস্থ হয় "জীবনযাত্রা"। এই সামরিক গীতিনাটকে অভিনয় করেন অভিনেতা লি জুন-গিজু জি-হুন। ২১ আগস্ট থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত নাটকটি থিয়েটারে মঞ্চায়িত হয়।[৫][৬]
  • ২০১৩ সালের জানুয়ারি: কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও কোরিয়ার গীতিনাট্য সমিতির যৌথ প্রযোজনায় আরেকটি গীতিনাট্য মঞ্চায়িত হয়, একটি যুদ্ধবিরতিতে স্বাক্ষরের ৬০তম বার্ষিকী উদ্‌যাপন উপলক্ষে মঞ্চস্থ গীতিনাট্যটির নাম ছিল "প্রতিজ্ঞা"। ৯ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মঞ্চায়িত এ নাটকটিতে অভিনয় করেন জি হিয়ন-উ, কিম মু-ইয়ল, জং থ্যা-উ, সুপার জুনিয়র ব্যান্ডের গায়ক লি থুক, সুপারনোভা ব্যান্ডের গায়ক ইয়ুন হাক, এইট ব্যান্ডের লি হিয়ন। কোরীয় যুদ্ধের সময় একদল যোদ্ধার প্রতিজ্ঞাকে কেন্দ্র করে নাটকটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছিল।[৭][৮]

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. National Theater of Korea ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০১৫ তারিখে Seoul Tourism Organization
  2. [১]
  3. the-national-theater-of-korea-ntok
  4. Events website in Korean
  5. Jang, Kyung-Jin (৩ আগস্ট ২০১০)। "Lee Jun-ki says "depressed about Joo Ji-hoon turning first private today" (2)"10 Asia। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১২ 
  6. Lee, Jin-hyuk (৩ আগস্ট ২০১০)। "Lee Jun-ki attends musical "Voyage of Life" press conf"10 Asia। সংগ্রহের তারিখ ১০ ডিসেম্বর ২০১২ 
  7. "Star-Studded Army Musical to Open in January"Chosun Ilbo। ২৮ ডিসেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৩ 
  8. Hong, Grace Danbi (১২ ডিসেম্বর ২০১২)। "Super Junior's Leeteuk and Ji Hyun Woo Participate in Army Musical"enewsWorld। CJ E&M। সংগ্রহের তারিখ ৪ এপ্রিল ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগসম্পাদনা