তেরি ইয়াদ
তেরি ইয়াদ (উর্দু: تیری یاد; তোমার স্মরণে) ভারত বিভাজনের পর স্বাধীন পাকিস্তানের সর্বপ্রথম চলচ্চিত্র যা ১৯৪৮ সালের ৭ই আগস্ট তারিখে[২] ঈদে মুক্তি পায়। এটি একইসাথে পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র যা স্বাধীন পাকিস্তানের ভূখন্ডে নির্মিত হয়।[১][২]
তেরি ইয়াদ تیری یاد | |
---|---|
পরিচালক | দায়ূদ চাঁদ ও রাম লাল[১] |
প্রযোজক | সরদারী লাল ডি.পি. সিংহা (সহ-প্রযোজক) |
রচয়িতা | সরদারী লাল (গল্প) খাদিম মহিউদ্দিন (চিত্রনাট্য) |
শ্রেষ্ঠাংশে | জাহাঙ্গীর সরদার মুহাম্মদ গোলাম মুহাম্মদ নাজমা নাজার আশা পোসলে[১] নাসির খান[১] গোলাম কাদির রাগনি শাকির শোলা |
চিত্রগ্রাহক | রাজা মীর |
সম্পাদক | রশিদ লতিফ (পাপ্পু) |
মুক্তি |
|
দেশ | পাকিস্তান |
ভাষা | উর্দু |
কাহিনি
সম্পাদনাএক ধনী ব্যক্তি তার নিজের সদ্য জন্মানো মেয়েকে সব সম্পত্তি দিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে সেই মেয়েকে লোকটির শত্রু সম্পত্তির লোভে হত্যা করে সব সম্পত্তি আত্মসাৎ করে। সেই ধনী ব্যক্তির বিধবা স্ত্রী একটি অনাথ মেয়ে শিশুকে খুঁজে পায় এবং তাকে নিজের সন্তানের মত বড় করে তুলে। সেই শিশুটি বড় হয়ে সেই সম্পদ আত্মসাৎকারীর ছেলের প্রেমে পড়ে। কাহিনীর শেষে লোভী ব্যক্তিটি আত্মহত্যা করে যার ফলে বিধবা নারী তার প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয় এবং মেয়ে ও ছেলে দুজনের মিলন হয়।[৩][৪]
কুশীলব
সম্পাদনানির্মাণ ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের পর ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্প পাকিস্তান থেকে পৃথক হয়ে পড়ে। নব্য স্বাধীন পাকিস্তানের লাহোরে একটি চলচ্চিত্র স্টুডিও রয়ে যায়। বিভাজনের পূর্বে লাহোরের কেন্দ্রটির গুরুত্ব কম থাকায় সেখানে চলচ্চিত্র নির্মাণ কষ্টসাধ্য ছিল। বিভাজনের পর যেসব চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনয়শিল্পী লাহোরের কেন্দ্রে কাজ করতেন তারা পরবর্তীতে ভারতে থেকে গিয়েছিলেন।
অনেক কষ্টের পর লাহোরের ছোট চলচ্চিত্র শিল্পটি তাদের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র তেরি ইয়াদ ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের পশ্চিম পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরের পারভাত থিয়েটারে (বর্তমান নাম এম্পায়ার সিনেমা হল) মুক্তি দিতে সক্ষম হয়।[২] এই চলচ্চিত্র আশা পোসলে এবং ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের জনপ্রিয় অভিনেতা দিলীপ কুমারের ভাই নাসির খান অভিনয় করেন যিনি পাকিস্তানে থেকে যান। প্রযোজনা করেন দেওয়ান সরদারী লালের দেওয়ান পিকচার এবং পরিচালনা করেন দায়ূদ চাঁদ।[২]
সঙ্গীত
সম্পাদনাতেরি ইয়াদ | |
---|---|
কর্তৃক চলচ্চিত্র সঙ্গীত | |
মুক্তির তারিখ | ১৯৪৮ |
ঘরানা | চলচ্চিত্র সঙ্গীত |
ভাষা | উর্দু |
এই চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা ও সুর করেন ইনায়াত আলি নাথ। তেরি ইয়াদের জন্য ১৩টি গান রেকর্ড করা হলেও মুক্তির সময় ১০টি গান চলচ্চিত্রে রাখা হয়।[৫]
তেরি ইয়াদ চলচ্চিত্রের গানের তালিকা | ||||
---|---|---|---|---|
নং. | শিরোনাম | রচয়িতা | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
১. | "এ দিল ওয়ালো, সাজান গায়ে, হাম উজার গায়ে" | তোফায়েল হুশিয়ারপুরী | মনোয়ার সুলতানা | |
২. | "বল বল ভাইরনিয়া, ম্যাঁয় গেই থি কাহা" | তোফায়েল হুশিয়ারপুরী | মনোয়ার সুলতানা ও আলি বকশ যোহর | |
৩. | "চালকি জাওয়ানি, হে জিয়া মরা দোলায়" | সাইফউদ্দিন সাইফ | মনোয়ার সুলতানা | |
৪. | "দুখ কি মারি, বারশন আপনে ভাগ কো রয়ে" | কাতিল শাফাই | আশা পোসলে | |
৫. | "হামে ছোড় না জানা যে, মুনহ মর না জানা যে" | সাইফউদ্দিন সাইফ | মনোয়ার সুলতানা | |
৬. | "হামে তো ইন্তেজার থা, সারা চামান বল রাহা হ্যাঁয় পাপিহা" | সাইফউদ্দিন সাইফ | আশা পোসলে | |
৭. | "কিয়া ইয়াদ সুহানি আয়ি, ও মাঞ্চলে, ইয়াহ হ্যাঁয় মান মানি" | তানভীর নাকভি | আশা পোসলে | |
৮. | "ম্যাঁয় তিতলি বান কে আয়ি, জবান নে লি আনগ্রাই" | সাইফউদ্দিন সাইফ | আশা পোসলে | |
৯. | "মহাব্বাত কা মারা চালা জা রাহা হু" | কাতিল শাফাই | আলি বকশ যোহর | |
১০. | "তেরি ইয়াদ আয়ে, ও পিয়া বুলায়ে" | তানভীর নাকভি | আশা পোসলে |
মুক্তি
সম্পাদনাতেরি ইয়াদ পাকিস্তানের পাঞ্জাবের লাহোর, বেলুচিস্তানের কোয়েটা ও পূর্ববঙ্গের ঢাকার প্রেক্ষাগৃহে বেশ কিছুদিন ধরে দেখানো হয়েছিলো।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Teri Yaad (film) on Complete Index To World Film (CITWF) website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে Retrieved 18 April 2018
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ "Pakistani films in 1948"। Pakistan Film Database (magazine)। ২০০৮-০৪-১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৮।
- ↑ "Teri Yaad (Urdu-1948) on Pakistan Film Magazine"। Pakistan Film Magazine।
- ↑ করণ বলি (৭ আগস্ট ২০১৫)। "'Teri Yaad' heralded the birth of a new film industry: Lollywood."।
- ↑ "Teri Yaad: First Pakistani Movie"। আবতক টিভি। ২৮ জুন ২০১৮।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে তেরি ইয়াদ (১৯৪৮) (ইংরেজি)