তেমার ভূমি, তে'-বা বা তেমা (হিব্রু ভাষায়: תֵּמָא‎, গ্রিক: Θαιμάν, আরবি: تيماء এবং থাইমান) হচ্ছে ইহুদিদের হিব্রু বাইবেল তথা খ্রিস্টানদের পুরাতন নিয়মে বর্ণিত একটি ঐতিহাসিক স্থানের নাম।[১][২] এই স্থানে নবী আব্রাহামের বড় পুত্র ইশ্মায়েলের ছেলেদের একজন তেমার বংশধরেরা বসতি স্থাপন করেছিলো।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] হিব্রু ভাষায়, এই নামের অর্থ হচ্ছে "দক্ষিণী দেশ"।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এটি খুব সম্ভবত সৌদি আরবের উত্তর দিকে অবস্থিত এবং এর সাথে সৌদি আরবে আধুনিক জায়গা তায়মাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।[৩][১][২][৪] এটি একটি মরুদ্যান (যিরমিয়ের বর্ণনার সাথে মিলে যায়) এবং এই জায়গাটি মদিনা শহর থেকে ২০০ মাইল (৩২০ কিমি) উত্তরে, এবং দুমাত (দূমা) শহর থেকে ৪০ মাইল (৬৪ কিমি) দক্ষিণে অবস্থিত। উল্লেখ্য যে বর্তমানে দুমাত জায়গাটি এল-জাউফ নামে পরিচিত। তায়মা তথা তেমা প্রাচীন কাফেলা সড়ক পথের পাশে অবস্থিত যা পারস্য উপসাগরকে আকাবার উপসাগরে সংযুক্ত করে থাকে। এই পথটি অনাদিকালে শহরটিতে প্রচুর অর্থ ও ধনসম্পত্তি নিয়ে এসেছিল।[৫][৬] আর.পি. ডাউটি তায়মা শহরকে একটি পুরনো প্রাচীর ঘেরা শহরের ধ্বংসাবশেষের সাথে চিহ্নিত করেছেন যার আয়তনের পরিধি আনুমানিক ৩ মাইল (৪.৮ কিমি)।[৭] সম্প্রতি এক আরামীয় ভাষা ফলক আবিষ্কৃত হয় যা তারিখ খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ফলকের লেখা থেকে শহরটিতে অ্যাসিরীয়দের আনাগোনার প্রমাণ মিলেছে। জায়গাটির নাম কিউনিফর্মে উল্লেখ করা হয়েছে।[৮][৯] বাণিজ্যিক পথে এর থাকার সম্ভাবনার নমুনা ইয়োব ৬:১৯ শ্লোকে পাওয়া যায়।[১০] তবে প্রায়শই এই জায়গাটিকে দুমাহ ভূমির সাথে চিহ্নিত করা হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

তায়মা
তেমার নিকট দৃশ্য
তেমার নিকট দৃশ্য
তায়মা সৌদি আরব-এ অবস্থিত
তায়মা
তায়মা
সৌদি আরবে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৭°৩৭′৪৭″ উত্তর ৩৮°৩২′৩৮″ পূর্ব / ২৭.৬২৯৭২° উত্তর ৩৮.৫৪৩৮৯° পূর্ব / 27.62972; 38.54389

বাইবেল বহুবার তেমার নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন যিশাইয় ২১:১৪; যিরমিয় ২৫:২৩, ৪৯:৭, ৪৯:২প; ওবদিয় ১:৯; এবং আমোস ১:১২। ইয়োবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র তেমানীয় এলিফাস, এবং বংশাবলির প্রথম খণ্ডে উল্লেখিত হুশামকে তেমানীয়দের ভূমির অধিবাসী হিসেবে নির্দেশ করা হয়েছে।

বাইবেলের বর্ণনার বাইরে, টলেমি,[১১] প্লাইনি,[১২] আগাথারচাইডস,[১৩][১৪] এবং জোসেফাস এর নাম উল্লেখ করে।[১৫] এর অবস্থান হিসেবে দামেস্কমক্কার মাঝপথে, এবং ব্যাবিলনিয়া ও মিশরের মধ্যবর্তী স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে।[১৬] ইয়াকুত তার বইতে লিখেছেন যে মধ্যযুগে, এটি একটি ইহুদি সম্প্রদায় দ্বারা অধ্যুষিত ছিল।[১৭] ব্যাবিলন সাম্রাজ্যের নাবুনাইদ এই শহরটি দখল করে।[১৮][৩] পরবর্তীতে পারস্যের সম্রাট মহান কুরুশ শহরটি জয় তাকে কারমানিয়ায় পাঠানোর আগ পর্যন্ত নাবুনাইদ এখানেই ছিলো।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. S. Smith, Babylonian Historical Texts (1924), 98-123
  2. Arnulf Hausleitner, "Tayma - eine frühe Oasensiedlung", in: Archäologie in Deutschland, 3/213, pp. 14–19
  3. R. P. Dougherty, Nabonidus and Belshazzar. (1929) p 1-5-200
  4. Rev Charles Foster, The historical geography of Arabia; or, The patriarchal evidences of revealed religion. With an appendix containing translations of the Hamyaritic inscriptions recently discovered in Hadramaut, Volume 1 (1844) p 294.
  5. See Job 6:19
  6. See:Isaiah 21:14
  7. R. P. Dougherty, Arabia Deserta, I, p285
  8. Schrader, KAT2, 149
  9. Tema at BibleAtlas.com.
  10. Alter, Robert (২০১৯)। The Hebrew Bible: The Writings। Norton। 
  11. Ptolemy 5:19, section 6
  12. Pliny, Geogr. 5, 19 and Hist. Nat. 6:32
  13. Rev Charles Foster, The historical geography of Arabia; or, The patriarchal evidences of revealed religion. With an appendix containing translations of the Hamyaritic inscriptions recently discovered in Hadramaut, Volume 1 (Duncan and Malcom, 1844) p294.
  14. Agatharchides LXX
  15. Josephus Antiquities X.xi.2
  16. Rodolfo C. Estimo Jr. (7 November 2010). "Pharaonic inscription found in Saudi Arabia". ArabNews.
  17. Yaqut, Šihāb al-Dīn ibn ‘Abd Allah al-Ḥamawī. "Mu’jam al-Buldān". Dār Ṣādir, Beirut 1995, p. 67
  18. Jack Finegan, Light from the Ancient Past, Vol. 1: The Archaeological Background of the Hebrew-Christian Religion (Princeton University Press, 8 Dec. 2015) p190.