তুলিকা বসু

মার্কিন বিজ্ঞানী

তুলিকা বসু একজন উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক, যিনি উচ্চ-শক্তি পদার্থবিজ্ঞানে নতুন ঘটনাগুলির পরীক্ষামূলক অনুসন্ধানের জন্য “ট্রিগার পদ্ধতির” ওপর গবেষণা করছেন। ডাঃ বসু সার্ন কণা পদার্থবিজ্ঞান গবেষণাগারের তত্ত্বাবধানে হওয়া কম্প্যাক্ট মিউওন সলিনয়েড পরীক্ষণের নেতৃত্বে রয়েছেন। সার্ন ২০১২ খ্রিস্টাব্দে হিগস বোসন আবিষ্কারের জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত।

তুলিকা বসু
মাতৃশিক্ষায়তনকলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
পরিচিতির কারণসার্ন-এর কম্প্যাক্ট মিউওন সলিনয়েড (সিএমএস) কণা পদার্থবিদ্যা পরীক্ষায় অবদান
পুরস্কারআমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির নির্বাচিত সদস্য (২০১৯)
আলফ্রেড পি. স্লোন রিসার্চ ফেলোশিপ (২০১২)

প্রাথমিক এবং শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

ডাঃ বসু ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রী এবং ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ট্রাইপস নিয়ে বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন।[১] পরবর্তীতে তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেন এবং ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে কণা পদার্থবিজ্ঞানে পি.এইচডি. ডিগ্রী লাভ করেন।[২] তাঁর গবেষণার বিষয়টি ছিল- Search for Bs0 oscillations at DØ, যা তিনি ২০০২ থেকে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফার্মিলাবে করা পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর বিশ্লেষণ করে ব্যাখ্যা দেন।[৩] ডাঃ তুলিকা বসু ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পোস্ট-ডক্টরাল প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেন।[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

ডাঃ বসু ২০০৮-১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী অধ্যাপক ছিলেন এবং পরবর্তীতে ২০১৫-১৮ পর্যন্ত সেখানকার পদার্থবিদ্যা বিভাগের একজন সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে ছিলেন।[২] এরপর তিনি ২০১৮ খ্রিস্টাব্দেই উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন।[১] তিনি ২০১৪-১৬ পর্যন্ত কম্প্যাক্ট মিউওন সলিনয়েড পরীক্ষার ট্রিগার সমন্বয়কারী ছিলেন[১] এবং সার্নে প্রোটন-প্রোটন সংঘর্ষের পরীক্ষাগুলির ট্রিগারিং এবং ডেটা অধিগ্রহণের তত্ত্বাবধান করেন।[৪] ২০১৭ থেকে ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত, তিনি সিএমএস পদার্থবিদ্যার সহ-সমন্বয়কারী ছিলেন[১][৫] সিএমএস ফিজিক্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে কাজ করার সময় প্রোফেসর বসুর গবেষণার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল অনুসন্ধানের মাধ্যমে পরীক্ষার সর্বোচ্চ সম্ভাবনাকে উপলব্ধ করা। লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার (এলএইচসি) প্রথম রানে খুবই ভালোভাবে সঞ্চালিত হয় এবং ফলস্বরূপ হিগস বোসনের মতো আদর্শ মডেলের আবিষ্কারে সিএমএস পরীক্ষাটি দুর্দান্ত সাফল্য পায়। এরপর, ২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ১৩ টেরাইলেকট্রনভোল্ট (TeV) ("রান 2")[৬] ভর শক্তির একটি অভূতপূর্ব কেন্দ্রে এলএইচসি পুনরায় চালনা করা হয়, যার থেকে সিএমএস প্রায় ১৪০ fb−1 তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। ডাঃ বসু দ্বিতীয় রানের এই বৃহৎ ডেটাসেটের বিশ্লেষণ করেন। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে তথ্য নেওয়া শেষ হলে একটি দীর্ঘ শাটডাউন (LS2) শুরু হয়। এই সময়ের মধ্যে, ডাঃ বসু তৃতীয় রানের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন, যা ২০২১ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়ে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে শেষ হওয়ার কথা। তৃতীয় রানের পরে আরেকটি দীর্ঘ শাটডাউন এবং পরবর্তীতে ২০২৬-এর পর 'হাই লু-মাইনোসিটি এলএইচসি' (HL-LHC) শুরু হবে। প্রধান তদন্তকারী হিসেবে অধ্যাপিকা বসু HL-LHC রানের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন উন্নতির জন্য বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত নকশা তৈরি করেছেন।[৭] দুইজন প্রধান বিজ্ঞানীর একজন হিসেবে তিনি সিএমএস পরীক্ষণের প্রায় ১০০টি বার্ষিক গবেষণা প্রকাশনা পর্যালোচনা করেছেন।[৮]

ডাঃ তুলিকা বসু এপিএস ডিভিশন অফ পার্টিকেলস অ্যান্ড ফিল্ড (ডিপিএফ) এক্সিকিউটিভ কমিটির[১] একজন নির্বাচিত সদস্য এবং ফার্মিল্যাব এলএইচসি ফিজিক্স সেন্টার ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের সদস্য সহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় কমিটিতে কাজ করেছেন।[৯]

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

  • আলফ্রেড পি. স্লোন রিসার্চ ফেলোশিপ (২০১২)[১০]
  • এলএইচসি পদার্থবিদ্যা কেন্দ্রের বিশিষ্ট গবেষক পুরস্কার (২০১৪)[১১]
  • আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির নির্বাচিত সদস্য (২০১৯): "সিএমএস ফিজিক্স প্রোগ্রাম, ট্রিগার সিস্টেমের সমন্বয়ের নেতৃত্বদান এবং উচ্চ স্তরের ট্রিগারগুলির বিকাশ, ভারী ভেক্টর বোসন ও ভেক্টর-সদৃশ কোয়ার্কগুলির অনুসন্ধানের জন্য।"[১২]

নির্বাচিত প্রকাশনা সম্পাদনা

  • “Observation of a new boson at a mass of 125 GeV with the CMS experiment at the LHC”, CMS Collaboration, Phys. Lett. B 716 (2012) 30.
  • “Combined results of searches for the standard model Higgs boson in pp collisions at √ s = 7 TeV”, CMS Collaboration, Phys. Lett. B 710 (2012) 26.
  • “Search for a W′ or Techni-rho decaying into WZ in pp Collisions at sqrt(s) = 7 TeV”, CMS Collaboration, Phys. Rev. Lett. 109 (2012) 071803.
  • “Search for top-quark partners with charge 5/3 in the same-sign dilepton final state”, CMS Collaboration, Phys. Rev. Lett. 112 112 171801 (2014).
  • "Search for W' to tb in proton-proton collisions at sqrt(s) = 8 TeV", CMS Collaboration, JHEP 02 (2016) 122.
  • “The CMS Trigger system”, CMS Collaboration, JINST 12 (2017) no.01, P01020, arXiv:1609.02366 [physics.ins-det].

বিভিন্ন মাধ্যমে সম্পাদনা

ডাঃ বসু বিভিন্ন জনপ্রিয় মাধ্যমে বিশেষ ভাবে উল্লিখিত হয়েছেন। যথা-

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Tulika Bose"Department of Physics, University of Wisconsin-Madison (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  2. "Tulika Bose | Boston University Physics"physics.bu.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  3. Bose, Tulika (২০০৬)। "Search for B0s oscillations at DØ"Columbia University Libraries 
  4. "Triggering and Data Acquisition | CMS Experiment"cms.cern। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  5. Castelvecchi, Davide (আগস্ট ১৪, ২০১৮)। "LHC physicists embrace brute-force approach to particle hunt"Nature (ইংরেজি ভাষায়)। 560 (7718): 293–294। ডিওআই:10.1038/d41586-018-05972-7। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৮, ২০২১ 
  6. magazine, Davide Castelvecchi,Nature (আগস্ট ১৫, ২০১৮)। "LHC Physicists Embrace Brute-Force Approach to Particle Hunt"Scientific American (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১০-২৮ 
  7. Bose, Tulika (ডিসেম্বর ১, ২০১৯)। "CMS Physics Co-coordinator Teaching Buyout"U.S. Department of Energy (ইংরাজি ভাষায়)। ডিওআই:10.2172/1576709। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৮, ২০২১ 
  8. "CMS Publications"cms-results.web.cern.ch। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  9. "LHC Physics Center | LPC Organization"lpc.fnal.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  10. "Prof. Tulika Bose awarded Sloan Research Foundation Fellowship | Boston University Physics"physics.bu.edu। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  11. "LHC Physics Center | LPC Fellows | Gena Kukartsev"lpc.fnal.gov। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  12. "APS Fellow Archive"www.aps.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯ 
  13. "Film series brings CERN people to the world"CERN (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৫-২৯