তারিক জামিল

পাকিস্তানি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী, তাবলিগ জামাতের সদস্য

তারিক জামিল (যিনি মাওলানা তারিক জামিল নামে অধিক পরিচিত, জন্ম: ১ অক্টোবর ১৯৫৩) একজন প্রভাবশালী পাকিস্তানি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত, দায়ী এবং তাবলিগ জামাতের সদস্য। ইসলাম প্রচারক হিসেবে তার সাধারণ জীবনযাত্রা এবং পাশাপাশি উর্দুআরবিতে সাবলীল বক্তৃতা তাকে মুসলিম বিশ্বজুড়ে খ্যাতি এনে দিয়েছে। মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, খেলোয়াড় থেকে শুরু করে সকল স্তরের মানুষকে তিনি প্রভাবিত করতে সক্ষম হয়েছেন।[১] শিক্ষাজীবনে তিনি তাবলিগ জামাত দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ডাক্তারি পড়াশোনা ছেড়ে নিজেকে ইসলাম শিক্ষায় নিয়োজিত করেছিলেন। ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি সমাজসেবা ও শিক্ষায় অবদানের অংশ হিসেবে তিনি মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন, জামিয়া আল হুসায়নিয়া মাদ্রাসা ও মিম একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালে তিনি এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে তিনি সবসময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিম জরিপে শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন। তিনি দুইবার প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার জিতেছেন।


তারিক জামিল
طارق جمیل
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম (1953-10-01) ১ অক্টোবর ১৯৫৩ (বয়স ৭০)
ধর্মইসলাম
জাতীয়তাপাকিস্তানি
পিতামাতা
  • মিয়া আল্লাহ বখশ ছাহু (পিতা)
জাতিসত্তারাজপুত
যুগআধুনিক
আখ্যাসুন্নি
ব্যবহারশাস্ত্রহানাফি
আন্দোলন
প্রধান আগ্রহইসলাম প্রচার
উল্লেখযোগ্য কাজ
  • মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন
  • জামিয়া আল হুসায়নিয়া
  • মিম একাডেমি
  • এমটিজে ব্র্যান্ড
যেখানের শিক্ষার্থী
  • জামিয়া আরাবিয়া, রায়উইন্ড
মুসলিম নেতা
যার দ্বারা প্রভাবিত
যাদের প্রভাবিত করেন
পুরস্কার প্রাইড অব পারফরম্যান্স (২০২০, ২০২১)
ওয়েবসাইটtariqjamilofficial.com

প্রারম্ভিক জীবন

তিনি ১৯৫৩ সালের ১ অক্টোবর পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের টুলাম্বায় জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনের শুরুতে তিনি ডাক্তারি পড়াশোনা শুরু করেন। ১৯৭১ সালে তাবলিগ জামাতে চার মাস সময় লাগানোর পর তিনি ইসলাম নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। প্রথমদিকে তিনি লাহোরের জামিয়া আরাবিয়া, রায়উইন্ডে পড়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। পিতার বিরোধিতার কারণে তিনি জামিয়া রশিদিয়া শাহীওয়ালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার পিতা রাজি হয়ে তাকে রায়উইন্ড মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেন। এখানেই তিনি কুরআন, হাদিস, সুফিবাদ, যুক্তিবিদ্যা এবং ইসলামি আইনশাস্ত্র নিয়ে অধ্যয়ন করেন।[২][৩]

কর্মজীবন

 
২০১৯ সালে কানাডায় একটি সম্মেলনে বক্তৃতারত তারিক জামিল
 
মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশনের লোগো

শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর থেকে তিনি তাবলিগ জামাতের সাথে জড়িয়ে পড়েন। তিনি জাতিগত এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমর্থন করে বক্তৃতা প্রদান করেন। তিনি জামিয়া আল হুসায়নিয়া এবং মিম একাডেমি নামে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছেন। ২০২১ সালের মার্চ মাসে এমটিজে ব্র্যান্ড নামে একটি কাপড়ের ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। তার নামে রয়েছে মাওলানা তারিক জামিল ফাউন্ডেশন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সমাজসেবা এই তিনটা ক্ষেত্রে এটি কাজ করে থাকে।

পুরস্কার

তিনি দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার প্রকাশিত বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ৫০০ জন মুসলিমের তালিকায় সবসময় শীর্ষ ৫০-এ অন্তর্ভুক্ত হন।[১] ২০২০ ও ২০২১ সালে ধর্মীয় ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি পাকিস্তানের প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার পেয়েছেন।[৪][৫]

সমালোচনা

হত্যাচেষ্টা

তার বক্তৃতায় প্রভাবিত হয়ে পাকিস্তানের চকওয়াল এবং তার আশেপাশের এলাকায় বহু মানুষ কাদিয়ানি মতবাদ ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করলে তিনি কাদিয়ানিদের বিরাগভাজনে পরিণত হন। এই কারণে পাকিস্তানের তিলাবিজের এক যুবককে কাদিয়ানি সম্প্রদায় তাকে হত্যা করার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন। কিন্তু যুবকটি তার বক্তৃতা শ্রবণ করে ইসলাম গ্রহণ করে।[৬]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

উদ্ধৃতি

  1. স্কালভার, আবদুল্লাহ (২০২০)। দ্যা মুসলিম ৫০০ (পিডিএফ)। জর্ডান: দ্য রয়েল ইসলামিক স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ সেন্টার। পৃষ্ঠা ৯৭। আইএসবিএন 978-9957-635-45-9 
  2. "তারিক জামিলের পরিচয়"তারিক জামিল অফিসিয়াল.কম (ইংরেজি ভাষায়)। ১৬ জুলাই ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২১ 
  3. চুগতাঈ ২০০৬, পৃ. ২২, ১২, ১৩।
  4. "রাষ্ট্রপতি ১৪৮ জনকে সিভিল পুরস্কার প্রদান করেছেন"এসোসিয়েটেড প্রেস অব পাকিস্তান (ইংরেজি ভাষায়)। ১৪ আগস্ট ২০২০। 
  5. "পাকিস্তান দিবস : মাওলানা তারিক জামিল প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার পেয়েছেন"ডেইলি টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ২৩ মার্চ ২০২১। 
  6. চুগতাঈ ২০০৬, পৃ. ১৫, ১৬।

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ