তাতার খাঁন নাগের (পশতু: تاتار خان ناغر) মুঘল বাদশাহ জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে পূবালী পাঠান জোটের একজন সৈনিক ছিলেন। যদিও তিনি মোগল সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন, বহারিস্তান-ই-গায়েবীর মতো মুঘল গ্রন্থে তাকে "জঙ্গলের সিংহের বাহাদুরী" থাকার বর্ণনা করা হয়েছে।[১]

তাতার খাঁন

নাগের
স্থানীয় নাম
تاتار خان ناغر
জন্মষোড়শ শতাব্দী
মৃত্যু১৬১১
হাসানপুর, সুবাহ বাংলা, মুঘল সাম্রাজ্য (বর্তমান হয়বতনগর, কিশোরগঞ্জ জেলা, বাংলাদেশ)
আনুগত্যপূবালী পাঠান জোট
নেতাখাজা উসমান
পদমর্যাদাসৈনিক
যুদ্ধ/সংগ্রাম১১তম কেল্লা আপত্তি

জীবনী সম্পাদনা

তিনি পাঠান মুসলিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নাগের গোত্রের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন যারা নাগেরের বংশধর। নাগের ছিলেন দানী সাহেবের ছেলে, যিনি গরগশ্ত সাহেবের ছেলে, যিনি পাঠান জাতির প্রতিষ্ঠাতা কায়েস আব্দুর রশীদের ছেলে।[২] তাতার খাঁন নাগের পূবালী পাঠান জোটের নেতা খাজা উসমানের সেবায় নিয়োজিত হয়ে মুঘলদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন।

উসমান এবং তার ফৌজ, যার মধ্যে তাতার খাঁন নাগের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন, প্রায়ই হাসানপুরের (কিশোরগঞ্জের হয়বতনগর) কাছে মুঘল কেল্লা-নির্মাতাদের উপর আকস্মিক আক্রমণ চালাতেন। মুঘল এখানে প্রতি পাঁচ দিন পর পর একটি কেল্লা তৈরি করতেন। মুঘল শিবির যখন ১১তম কেল্লায় অবস্থান নেয়, তখন উসমান ও তার ফৌজ মুঘল বিরোধিতা করতে আসে। এই সুযোগে তাতার খাঁন নাগের সরাসরি কেল্লা আক্রমণ করেন। মুঘল সৈন্যদ্ব​য় খাজা খান এবং মীর্জা ইসফন্দিয়ার তাতার খাঁন নাগেরের বিরুদ্ধে একটি আপত্তি চালান। মুঘল গোলন্দাজের ভয়ে অন্যান্য পাঠানরা পালিয়ে যাওয়ার কারণে তাতার খাঁন নাগের তখন একা ছিলেন। খাজা খান ও মীর্জা ইসফন্দিয়ার নাগেরের দিকে তাদের তলোয়ার চালান এবং বল্লম ও গুলি ছুঁড়ে মারেন। উভয় পক্ষ আহত হলেও শুধুমাত্র নাগের নিহত হন।[৩]

মুঘলদের রেওয়াজ ছিল আনুগত্য নির্বিশেষে মৃতদের সম্মান করা। তাতার খাঁন নাগেরের শরীরে প্রচুর পরিমাণে জাফরান সুগন্ধি ছিটিয়ে দিয়ে মুঘলরা নাগেরের লাশ পালকিতে নিয়ে তার নেতা খাজা উসমানের কাছে ফিরিয়ে দেন। যদিও দুই পক্ষ তাদের লড়াই চালিয়ে নিয়েছিলেন, এই উপলক্ষ উভয় পক্ষের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছিল এবং মানবতা, মরদামি ও ইসলামি নীতি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল।[৪]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. M. I. Borah (১৯৩৬)। Baharistan-I-Ghaybi – Volume II 
  2. Ansari, Sheikh Sadik Ali Sher Ali (১৯০১)। The Musalman Races found in Sind, Baluchistan and Afghanistan (পিডিএফ)। পৃষ্ঠা 24। 
  3. Abdul Karim (১৯৯২)। History of Bengal: From the fall of Daud Karrani, 1576 to the death of Jahangir, 1627Institute of Bangladesh Studies। পৃষ্ঠা 291। 
  4. M. I. Borah (১৯৩৬)। Baharistan-I-Ghaybi – Volume 1। পৃষ্ঠা 106।