তাজুল ইসলাম (বীরপ্রতীক)

বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা

তাজুল ইসলাম (জন্ম: অজানা) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [১][২]

তাজুল ইসলাম
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

তাজুল ইসলামের জন্ম চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার বাগানবাজার ইউনিয়নের গার্ডপাড়া গ্রামে। তিনি অবিবাহিত ছিলেন। তার বাবার নাম নাদেরুজ্জামান।

কর্মজীবন সম্পাদনা

তাজুল ইসলাম চাকরি করতেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। তখন তার পদবি ছিল নায়েক। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে পুনর্গঠিত হয়ে প্রথমে ৩ নম্বর সেক্টরে, পরে এস ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে আখাউড়ার ওপর দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেটের রেল যোগাযোগ। খুব কাছেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলা। ১৯৭১ সালে সামরিক দিক থেকে আখাউড়া ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দুর্ভেদ্য এক ঘাঁটি। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে আখাউড়ায় ৩০ নভেম্বর থেকে ৫ ডিসেম্বর ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর একটি দলে ছিলেন তাজুল ইসলাম। ৩ ডিসেম্বর তারা আক্রমণ চালান আখাউড়ার পার্শ্ববর্তী আজমপুর রেলস্টেশনে। তখন সেখানে রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে তাজুল ইসলাম ও তার সহযোদ্ধারা যথেষ্ট সাহস ও বীরত্ব প্রদর্শন করেন। তাঁদের সাহসিকতায় মুক্ত হয় আজমপুর রেলস্টেশন। পাকিস্তানি সেনারা পালিয়ে যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। সেদিন রক্তক্ষয়ী ওই যুদ্ধে তাঁদের বি কোম্পানির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট ইবনে ফজল বদিউজ্জামানসহ আট-নয়জন সহযোদ্ধা শহীদ এবং ২০ জন আহত হন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ২২ জন হতাহত হয়। আখাউড়ার পতনের পর তাজুল ইসলাম তার দলের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যান। সেখানে কয়েক দিন অবস্থানের পর নরসিংদী হয়ে ঢাকা অভিমুখে রওনা হন। পথে বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে তাঁদের ছোটখাটো সংঘর্ষ হয়। ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় তারা মেজর মইনুল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে ঢাকায় পৌঁছান। ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে তাজুল ইসলামের দলের অবস্থান ছিল ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে । সেখানে অবস্থানকালে তাঁদের দলের ওপর ২৯ জানুয়ারি নির্দেশ আসে মিরপুরে অভিযান চালানোর। মিরপুর তখনো বিহারিদের দখলে ছিল। এই অভিযানে গিয়ে তাজুল ইসলামসহ তার সহযোদ্ধা অনেকে বিহারিদের পাল্টা আক্রমণে শহীদ হন।

পুরস্কার ও সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ০১-০৭-২০১২"। ২০১৪-০৮-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-০৩ 
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ১৪০। আইএসবিএন 9789843351449 

পাদটীকা সম্পাদনা

বহি:সংযোগ সম্পাদনা