তাকরিরে তিরমিযী
তাকরিরে তিরমিযী (উর্দু: تقریر ترمذی) পাকিস্তানি মুহাদ্দিস তাকি উসমানির উর্দু ভাষায় রচিত সুনান আত-তিরমিজীর একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এটি দরসে তিরমিযীর সম্পূরক গ্রন্থ। এটি মূলত দারুল উলুম করাচিতে সুনান আত তিরমিযীর শিক্ষক হিসেবে তার দেওয়া বক্তৃতা সমূহের সংকলন, যা ১৯৯৯ সালে ২ খণ্ডে প্রকাশিত হয়। প্রথম খণ্ডে ক্রয়-বিক্রয়ের আধুনিক সমস্যাগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এর পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩৭২। দ্বিতীয় খণ্ডে কিতাব আল-দিয়াত, আল-হুদূদ, আল-সাইদ এবং আল-আদাহী, আল-নাজার এবং আল-ইমান, আল-সির, ফাযায়েল আল-জিহাদ এবং পোশাক সম্পর্কিত অধ্যায়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। এই খণ্ডের পৃষ্ঠাসংখ্যা ৪০২।[১]
![]() উর্দু সংস্করণের প্রচ্ছদ | |
লেখক | তাকি উসমানি |
---|---|
মূল শিরোনাম | আরবি: تقریر ترمذی |
অনুবাদক | মুহসিন আল জাবির |
দেশ | পাকিস্তান |
ভাষা | উর্দু |
বিষয় | সুনান আত-তিরমিজী |
ধরন | ব্যাখ্যাগ্রন্থ |
প্রকাশিত | ১৯৯৯ |
মিডিয়া ধরন | শক্তমলাট |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৩৭২+৪০২ |
আইএসবিএন | ৯৭৮-৯৮৪-৩৩-৩১৫৯-৫ (বাংলা সংস্করণ) |
ওয়েবসাইট | muftitaqiusmani.com |
ইতিহাস
সম্পাদনাতাকি উসমানি দারুল উলুম করাচিতে সুনান আত তিরমিযীর শিক্ষক থাকাকালীন এই গ্রন্থের উপর দেওয়া বক্তৃতাসমূহ সংকলন করে তার ভাগিনা রশীদ আশরাফের সম্পাদনায় দরসে তিরমিযী প্রকাশিত হয়। তিনি ‘তালাক’ অধ্যায় পর্যন্ত সম্পাদনা করতে পেরেছিলেন, যা তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয়। ছাত্রদের পীড়াপীড়ির কারণে মাওলানা আব্দুল্লাহ মায়মান অন্যান্য অধ্যায়ের আলোচনা টেপ রেকর্ডারের সাহায্যে সংকলন করেন। তিনি অভিমত প্রকাশ করেন যে, "অতিরিক্ত নিরীক্ষণ ও সূত্রসন্ধান ছাড়া এ আলোচনা হুবহু প্রকাশ করা হোক। মাওলানা রশীদ আশরাফ ছাহেব যখন সুযোগ পাবেন, এসব অধ্যায়ের উপরও নিজ তাহকীকী কাজ সম্পাদন করবেন।" তাকি উসমানি এ প্রস্তাবে রাজি হন এবং এ গ্রন্থের নাম তাকরিরে তিরমিযী ঠিক করে দেন।[২]
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ মেমন টেপ রেকর্ডার থেকে এটিকে গ্রন্থে রূপ দেন। সম্পাদনায় হাদিস ও মাসায়িলের পূর্ণাঙ্গ কাজ আঞ্জাম দেন মাওলানা সাজ্জাদ আহমদ ফয়সালাবাদী ও মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল্লাহ ফয়সালাবাদি। এই দুই খণ্ডের বইটি ১৯৯৯ সালে মেমন পাবলিশার্স, করাচি দ্বারা প্রকাশিত হয়।[১]
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনাএই গ্রন্থের প্রথম বৈশিষ্ট্য এটি হাদিস হতে উৎসারিত বর্তমান যুগের আধুনিক বিষয়াবলি সম্বলিত। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য, তাকি উসমানির ইলহামি শব্দগুলো হুবহু বর্ণনা করা হয়েছে। তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হলো, যেখানে কোরআনের আয়াত এসেছে সেগুলোর সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। চতুর্থ বৈশিষ্ট্য হলো, তিরমিযীর হাদিসগুলোর সূত্র দেওয়া হয়েছে। পঞ্চম বৈশিষ্ট্য হলো, যে হাদিসের অধীনে কোনো ফিকহি আলোচনা করা হয়েছে সেসব ফিকহি আলোচনা ইসলামি আইনের অনেক বিখ্যাত এবং কোথায় কোথায় রয়েছে তার সূত্র দেওয়া হয়েছে। যাতে কোনো ছাত্র ইচ্ছা করলেই বিস্তারিত সেসব বরাতের সাহায্যে নিতে পারে। এ কিতাবে আরেকটি নতুন পন্থা অবলম্বন করা হয়েছে, হাদিস ও মাসায়িল তাখরিজ পৃষ্ঠার নিচে না লিখে প্রতিটি হাদিস ও মাসআলার শেষে শুধু নম্বর লেখা হয়েছে। কিতাবের শেষে হাদিস ও মাসায়িল তাখরিজ নামে আলাদা পৃষ্ঠায় সেসব সূত্র ক্রমানুসারে লিখে দেওয়া হয়েছে। যাতে কিতাবের বর্ণনাধারা অটুট থাকে।[৩]
অনুবাদ
সম্পাদনাগ্রন্থটির বঙ্গানুবাদ করেছেন মুহসিন আল জাবির এবং সম্পাদনা করেছেন আব্দুল কুদ্দুস। যা আনোয়ার লাইব্রেরি থেকে দরসে তিরমিযী শিরোনামের বঙ্গানুবাদে ৪র্থ ও ৫ম খণ্ডে মুদ্রিত হয়েছে।[৩]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ ক খ জিল হুমা, ডক্টর (৩০ জুন ২০১৯)। "مفتی محمد تقی عثمانی کی معروف تصنیفات و تالیفات کا تعارفی جائزہ:" [মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানির বিখ্যাত লেখাগুলির একটি পরিচিতিমূলক পর্যালোচনা]। রাহাতুল কুলুব (ইংরেজি ভাষায়): ২০০–২০১। আইএসএসএন 2521-2869। ডিওআই:10.51411/rahat.3.1.2019.66।
- ↑ উসমানি, মুহাম্মদ তাকি (২০২১)। আমার জীবনকথা। ২। মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আবুল বাশার কর্তৃক অনূদিত। বাংলাবাজার, ঢাকা: মাকতাবাতুল আশরাফ। পৃষ্ঠা ১৯৫। আইএসবিএন 9789849173038। ২২ নভেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ নভেম্বর ২০২২।
- ↑ ক খ উসমানি, তাকি (২০১১)। (কিছু কথা) । দরসে তিরমিযী। বাংলাদেশ: আনোয়ার লাইব্রেরি। পৃষ্ঠা ৮–৯। আইএসবিএন 978-984-33-3159-5।
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- পেম্বারটন, কেলি (২০০৯)। "An Islamic Discursive Tradition on Reform as Seen in the Writing of Deoband's Mufti Muḥammad Taqi Usmani" [দেওবন্দের মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানির লেখায় সংস্কারের উপর একটি ইসলামি আলোচনামূলক ঐতিহ্য]। দ্য মুসলিম ওয়ার্ল্ড (ইংরেজি ভাষায়)। ৯৯ (৩): ৪৫২–৪৭৭। আইএসএসএন 1478-1913। ডিওআই:10.1111/j.1478-1913.2009.01280.x।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- পূর্ণাঙ্গ তাকরিরে তিরমিযী
- তাকরিরে তিরমিযী–এর বাংলা সংস্করণ, ৪ ও ৫