তাঁতি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল জুড়ে পাওয়া যায়। সর্বাধিক কেন্দ্রীকরণ বিহার, উত্তরপ্রদেশ, কলকাতা এর পাশাপাশি ওড়িশার রাজ্যেও রয়েছে বলে মনে করা হয়। এগুলি কিছু গোষ্ঠীর তুলনায় কিছুটা কম কারণ তাদের উপাধিটি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর চেয়ে তাদের পেশা দিয়ে শুরু হয়েছিল।

একজন মহিলা উল্লম্ব তাঁতে কাজ করছেন
তাঁতি
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল
ভারত
ভাষা
হিন্দী , ওড়িয়া , ভোজপুরি, বাংলা
ধর্ম
হিন্দুধর্ম

উদ্ভব ও ইতিহাস সম্পাদনা

চর্যাপদে তাঁতিদের জীবননযাপন, কাজের ধরনের বর্ণনা আছে। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রে স্নিগ্ধা, দুকুল, পাত্রনন্দা ইত্যাদি নামের কিছু মিহি সুতার উল্লেখ আছে। তান্তি শব্দটি হিন্দি শব্দ তন্ত থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ তাঁত। তারা ঐতিহ্যগতভাবে তাঁতি ছিল, এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রাপ্ত বহু সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি, ঐতিহ্যগতভাবে এই নৈপুণ্যের সাথে যুক্ত। তাদের ঐতিহ্য অনুসারে, হিন্দু দেবতা শিব তাঁর অশ্রু থেকে এগুলি তৈরি করেছিলেন। এই সম্প্রদায়টি দক্ষিণ বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের রাঁচি জেলার মধ্যে পাওয়া যায়। বস্ত্রশিল্পের সস্তা উপকরণ তুলা প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হতো। বিভিন্ন ধরনের মসলিন তৈরি হতো, যথা তানজেব, সারবন্দ, বাদান, খোশ, এলেবেলে, শর্বতি, তারাঙ্গম, কুমিশ, তূর্য, নয়নসুখ, চারখানা, মলমল, জামদানি এবং আদ্দি। মসলিন ইত্যাদি। তাঁতিরা উত্তরাধিকারসূত্রে পেশা প্রাপ্ত হয়। বাংলাদেশে তারা বিভিন্ন উপাধি যথা বারাশ, বসাক, বেদিয়া, নন্দী, পাল, চাঁদ, প্রামাণিক, সাধু, দত্ত, কর, মন্ডল, যোগি, মুখিম, সরকার, শীল ইত্যাদি নামে সুপরিচিত। ইংরেজের ঔপনিবেশিক শাসন এবং কর্তৃত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ দেশিয়ভাবে উৎপাদিত কাপড়ের উন্নয়ন ও রপ্তানিকরণের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক হস্তক্ষেপ ঘটায়। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের শেষদিকে ভারতে তাঁতশিল্পে ঝলমলে ফ্যাশনের পুনর্বিকাশ ঘটতে শুরু করে। দেশের কিছু অঞ্চল যেমন নরসিংদী, রায়পুরা, ডেমরা, টাঙ্গাইল, শাহজাদপুর, বেড়া, কুমারখালী, রুহিতপুর, বাবুরহাট, গৌরনদী এবং নাসিরনগর বয়নকার্যের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। কাপড়ের গুণগত বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ দেখা যায় অঞ্চলভিত্তিক কাপড় উৎপাদনে। রাজশাহীর সিল্ক, টাঙ্গাইল এবং পাবনার সুতি শাড়ি, মিরপুরের কাতান এবং জামদানি, ডেমরার বেনারসি এবং নরসিংদীর লুঙ্গি, গামছার খ্যাতি আছে সারাদেশব্যাপী। এসব স্থান এখনও ব্যাপক পরিমাণে কাপড় রপ্তানি করছে। [১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. People of India Bihar Volume XVI, Part Two, edited by S Gopal & Hetukar Jha, pp. 914-916, Seagull Books