ঢাকা ডার্বি

ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বি দল

ঢাকা ডার্বি হলো ঢাকার আবাহনীমোহামেডান দলের মধ্যকার একটি ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বী। এটিকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের দৃশ্যে সবচেয়ে বড় খেলা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। যদিও অতীতে এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বড় ছিল।[][][][]

ঢাকা ডার্বি
খেলাফুটবল
শহরঢাকা
দলসমূহআবাহনী
মোহামেডান
প্রথম সাক্ষাৎআবাহনী ২–০ মোহামেডান
ঢাকা লিগ (১৯৭৩)
সর্বশেষ সাক্ষাৎআবাহনী ৩–৩ (২–৪) মোহামেডান
ফেডারেশন কাপ (৩০ মে ২০২৩)
মাঠবঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম
পরিসংখ্যান
মোট সাক্ষাৎ৩৫ (২০০৭ সাল পর্যন্ত)
সর্বাধিক জয়১৬ (আবাহনী)
সর্বোচ্চ গোলদাতাসুলেমান দিয়াবাত (৯ গোল)
বৃহত্তম জয়মোহামেডান ৪-০ আবাহনী (১৬ জুলাই ২০১৯)
আবাহনী ৪-০ মোহামেডান (৪ মার্চ ২০২০)
বৃহত্তম গোল স্কোরআবাহনী ৪-২ মোহামেডান
দীর্ঘতম অপরাজিতের ধারাআবাহনী (৭ ম্যাচ)
ঢাকা ডার্বি বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ঢাকা
ঢাকা

মোহামেডান ১৯৩৬ সালে[] এবং আবাহনী ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ঢাকার মোহামেডান ও আবাহনী এই দুই ক্লাবকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এই দুটি ক্লাবই দেশের ফুটবল সমর্থকদের দুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিভক্ত করেছে।[] ফেডারেশন কাপ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ, স্বাধীনতা কাপের মতো প্রতিযোগিতায় এই দুই ক্লাব এক বছরে বেশ কয়েকবার মুখোমুখি হয়।

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৭০-১৯৮০ এর দশক

সম্পাদনা

১৯৭৩ সালে ঢাকা লিগে প্রথম মুখোমুখি হয় এই দুই দল। সেই ম্যাচে ঢাকা ডার্বির ইতিহাসে প্রথম গোল করেন আবাহনীর খেলোয়াড় অমলেশ সেন। আবাহনীর হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন কাজী সালাউদ্দিন এবং আবাহনী সেই ম্যাচটিতে ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করে। আর শক্তিশালী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব মর্মাহত হয়ে পড়ে।[]

১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ করে। মনোয়ার হোসেন নান্নু স্কোয়াডের সবচেয়ে সিনিয়র খেলোয়াড় হওয়ায় ব্যাংকক ইভেন্টের জন্য মূলত তাকেই অধিনায়ক মনোনীত করা হয়। কিন্তু, পরে ফেডারেশন তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এবং এমএসসির গোলরক্ষক শহীদুর রহমান শান্তুকে নতুন অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ করা হয়। প্রতিবাদে নান্নুসহ আবাহনীর ৭ খেলোয়াড় দল থেকে সরে দাঁড়ায়। টুর্নামেন্টে মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ এবং ভারতের কাছে ৩-০ ব্যবধানে পরাজিত হয় বাংলাদেশ দল। এই ঘটনার পর, ফেডারেশন সাধারণত আগামী কয়েক বছরের জন্য ঢাকার বড় দুই দলের বাইরে জাতীয় দলের অধিনায়ক বাছাই করার চেষ্টা করে।[][]

১৯৮০ এর দশক ছিল ঢাকার ক্লাব ফুটবলের স্বর্ণালী যুগ। মোহামেডান বা আবাহনীর যে কোনো ম্যাচেই ঢাকা স্টেডিয়ামে ব্যাপক দর্শকের সমাগম হয়। সেই সময় দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে চরম দ্বন্দ্ব ছিল।[১০] আবাহনী যথাক্রমে ১৯৮৩, ১৯৮৪ এবং ১৯৮৫ সালে শিরোপা জয়ের হ্যাটট্রিক জিতে এবং মোহামেডান যথাক্রমে ১৯৮৬, ১৯৮৭ এবং ১৯৮৮-৮৯ সালে শিরোপাদের অপরাজিত হ্যাটট্রিক জয়ের রেকর্ড করে।[১১] প্রতিদ্বন্দ্বিতা তখন চরমে পৌঁছে যায়, কারণ ভক্তরা সর্বদা তাদের প্রিয় দলকেই জিততে দেখতে চায় এবং তারা সেরা দল হিসেবে বিদেশী টুর্নামেন্টেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।[১২][১৩]

২০০০-২০১০ এর দশক

সম্পাদনা

২০০৭ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ শুরু হওয়ার পর থেকে, প্রতিদ্বন্দ্বী তার অতীত খ্যাতির বেশিরভাগই হারিয়েছে।[১৪][১৫]

জার্সির রং

সম্পাদনা
 
 
 
 
 
 
 
 
ঢাকা আবাহনীর ঐতিহ্যবাহী কিট
 
 
 
 
 
 
 
 
ঢাকা মোহামেডানের ঐতিহ্যবাহী কিট

পরিসংখ্যান

সম্পাদনা

মোহামেডান এবং আবাহনী এর ট্রফির সংখ্যা

সম্পাদনা

প্রধান প্রাপ্তি (জাতীয়)

এই নিম্নলিখিত সারণীতে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন দ্বারা স্বীকৃত এবং সংগঠিত শিরোনামগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে৷[১৬][১৭]

প্রতিযোগিতা মোহামেডান আবাহনী
ঢাকা লিগ ১৯ ১১
ফেডারেশন কাপ ১১ ১২
সুপার কাপ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগ
স্বাধীনতা কাপ
জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ
মুক্তি কাপ
ডিএমএফএ কাপ
বিটিসি ক্লাব কাপ
মা-মনি গোল্ড কাপ
মোট ৩৯ ৩৬

আর দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Dhaka Derby today"The Daily Observer। ২০১৫-০৫-২০। ২০১৬-১০-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-২৬ 
  2. Shishir Hoque (২০১৬-০৯-২১)। "Season's first Dhaka Derby today"Dhaka Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-১০-২৬ 
  3. Towheed Feroze (২০১৯-০৬-০৩)। "Who remembers the Dhaka derby!"Bangla Tribune। ২০২০-০৮-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-২৮ 
  4. "New Charms in Dhaka Derby"দ্য ডেইলি স্টার। ২০২০-০৩-০৪। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-৩০ 
  5. Alam, Masud (২০২০-০১-১৪)। ঐতিহ্যের পথে ঘুরে দাঁড়াক মোহামেডানprothomalo.com। Prothom Alo। ২০২১-১২-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-১৪ 
  6. "A glorious past that mocks the present"দ্য ডেইলি স্টার। ২০১৬-১১-০৫। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-০৭-৩০ 
  7. Mahfuz Reza Chowdhury (৭ আগস্ট ২০১৭)। ফিরে দেখা মোহামেডান-আবাহনীর দ্বৈরথ -- ইউনিভার্সাল স্পোর্টসUniversal Sports। ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  8. "Asian Games 1978" 
  9. "The irreplaceable Nannu"। ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮। 
  10. "Looking back into Bangladesh football in the 80s"Weekly Blitz। ২৯ এপ্রিল ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  11. "How good were Mohammedan Sporting Club back in the 1980s?"The Business Standard। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  12. "Mohammedan Sporting Club: The fall that hurt the most"The Business Standard। ২ অক্টোবর ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  13. "Bangladesh Football Then and now"দ্য ডেইলি স্টার। ৬ জুলাই ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  14. "Abahani - Mohameddan derby ends in draw"New Age। ২৭ জুন ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  15. "Abahani crushes Mohameddan 4-0 in titans battoe"Daily Sun। ৪ মার্চ ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  16. "Bangladesh - List of Cup Winners"। RSSSF। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০২১ 
  17. "Dhaka League"। rsssf.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০২১