রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত একটি স্নাতক পর্যায়ের সরকারি প্রকৌশল কলেজ।[১] যা বাংলাদেশ বস্ত্র অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।[২][৩] প্রতিষ্ঠানটি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যক্রম শুরু করে।[৪]
![]() | |
প্রাক্তন নাম | ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ |
---|---|
ধরন | সরকারি কলেজ |
স্থাপিত | ২০১৮ |
প্রাতিষ্ঠানিক অধিভুক্তি | বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় |
বৃত্তিদান | বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় |
অধ্যক্ষ | মোঃ আব্দুর রাকিব |
শিক্ষার্থী | ২২০ জন |
ঠিকানা | টুকুরিয়া, পীরগঞ্জ , , |
শিক্ষাঙ্গন | শহরতলি |
ভাষা | বাংলা |
![]() |
ইতিহাস
সম্পাদনাবাংলাদেশের প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন সঙ্গী ডক্টর এম এ ওয়াজেদ মিয়া স্যার কে স্মরণ করে এ কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।২০১৮ সালে পহেলা নভেম্বর পীরগঞ্জের পুত্রবধূ সাবেক শেখ হাসিনা হাত ধরেই শুভ উদ্ধোধন এর মাধ্যমে পথচলা শুরু এই ক্যাম্পাসের। ১ম ব্যাচের শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল মাত্র ১২০ জন। ২০২৫ সালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠানটির নাম পরিবর্তন করে রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রাখেন।[৫]
প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গন
সম্পাদনারংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৯ কি.মি. পশ্চিমে এবং দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলা থেকে ১৮ কি.মি. পূর্বদিকে খরস্রোতা যমুনাশ্বেরী(করতোয়ার শাখা) নদীর কিনারা ঘেষে প্রাকৃতিক নিবিড় ও নির্জন পরিবেশে অবস্থিত রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। ক্যাম্পাসের সাথে সংলগ্ন রয়েছে ৩০৩ মিটার দৈর্ঘ্যের ওয়াজেদ মিয়া সেতু যা রংপুর ও দিনাজপুর জেলাকে সংযোগে করেছে।শিক্ষার্থীদের বিকেলে আড্ডা-বিনোদন এবং ক্যাম্পাসের পারিপার্শ্বিক সৌন্দর্য্যের এক অন্যতম পরিস্ফুটন এই ওয়াজেদ মিয়া সেতুটি।
একাডেমিক ভবনঃ ৬ তলা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন যার প্রতি তলায় রয়েছে প্রায় ৮ টি করে শ্রেণীকক্ষ।
আবাসিক ব্যবস্থাঃ
সম্পাদনাবর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র ছাত্রীদের[৬] জন্য পৃথক পৃথক ২ টি হল রয়েছে।শিক্ষকদের জন্য একটি অফিসার্স ডরমেটরি,টিচার্স কোয়ার্টার এবং একটি স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে।এছাড়া রয়েছে অধ্যক্ষের বাসভবন।
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাবাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কলেজটিতে যেসব বিষয়ে চার বছর মেয়াদী বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু রয়েছেঃ-
- ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (Yarn Engineering)
- ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Fabric Engineering)
- ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (Wet Process Engineering)
- অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং (Apparel Engineering)
কোর্সের মেয়াদ ও কাঠামো:
সম্পাদনাকোর্সের মেয়াদ: ৪ বছর।প্রতিটি বছর লেভেল হিসেবে গণ্য।প্রতিটি লেভেল ২টি টার্মে বিভক্ত।মোট টার্ম ৮ টি।প্রতি টার্মে নির্দিষ্ট সংখ্যক তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কোর্স অন্তর্ভুক্ত থাকে।এই কোর্সগুলো টেক্সটাইল শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কোর্সের ভাষা: ইংরেজি
ডিপার্টমেন্টের নাম | আসন সংখ্যা |
---|---|
ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং | ৩০ |
ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং | ৩০ |
ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং | ৩০ |
অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং | ৩০ |
মোট আসন সংখ্যা | ১২০ |
শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাশ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক। কোন ছাত্র ছাত্রী ক্লাসে উপস্থিত না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। শ্রেণীকক্ষে নিয়মিত ফলপ্রসূ পাঠদান, পড়া আদায় এবং নিয়মিত শ্রেণীকুইজ পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারাই এই কলেজের মূল লক্ষ্য। ছাত্র ছাত্রী শিক্ষাবোর্ডের বিধি মোতাবেক শ্রেণী কার্যক্রমে শতকরা ৮০ ভাগের বেশি উপস্থিত না হলে তাকে ডিসকলেজিয়েট ঘোষণা করা হয় এবং পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয় না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস নেওয়া হয়।আদর্শ পাঠদানে ব্যবহার করা হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম।
শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন
সম্পাদনাপ্রতি পর্ব এবং বর্ষোন্নয়ন পরীক্ষাতে ৪০ শতাংশ নম্বর পেলে ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী পর্বে বা বর্ষে উত্তীর্ণ হতে পারে। সকল পর্বে শ্রেণিকুইজ এবং বোর্ড নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী পর্বে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়।
নাম্বার শ্রেণী | গ্রেড লেটার | সিজিপিএ গ্রেড পয়েন্ট |
---|---|---|
৮০-১০০ | A+ | ৪.০০ |
৭৫-৭৯ | A | ৩.৭৫ |
৭০-৭৪ | A- | ৩.৫০ |
৬৫-৬৯ | B+ | ৩.২৫ |
৬০-৬৪ | B | ৩.০০ |
৫৫-৫৯ | B- | ২.৭৫ |
৫০-৫৪ | C+ | ২.৫০ |
৪৫-৪৯ | C | ২.২৫ |
৪০-৪৪ | D | ২.০০ |
০০-৩৯ | F | ০.০০ |
শিক্ষার্থী
সম্পাদনাঅ্যাকাডেমিক কার্যক্রম
সম্পাদনাপাঠ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে বোর্ড এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের মতামত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। এক্ষেত্রে সকলের মেধার যোগ্যতাকেই বিবেচনা করা হয়।কলেজটিতে বর্তমানে এখানে ৫ টি ব্যাচ(১০ম,১১তম,১২তম,১৩তম ও ১৪তম)অধ্যয়নরত রয়েছে এবং ৯টি ব্যাচ(১ম,২য়,৩য়,৪র্থ,৫ম,৬ষ্ঠ,৭ম,৮ম,৯ম) তাদের অধ্যয়ন সম্পন্ন করেছে।কলেজটিতে মোট ব্যাচ সংখ্যা ১৪।
অধ্যয়নরত ব্যাচ ও শিক্ষাবর্ষ:
সম্পাদনা- ২য় ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৯-২০
- ৩য় ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০২০-২১
- ৪র্থ ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০২১-২২
- ৫ম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০২২-২৩
- ৬ষ্ঠ ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০২৩-২৪
অধ্যয়ন সম্পন্নকৃত ব্যাচ ও শিক্ষাবর্ষ:
সম্পাদনা- ১ম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৮-১৯
ওয়ার্কশপ ও ল্যাবরেটরি:
সম্পাদনাল্যাবসুবিধাঃ আরটেক ল্যাবে বিভিন্ন যন্ত্র আছে যা অভিজ্ঞ শিক্ষক মণ্ডলী দ্বারা পরিচালিত করা হয়। কম্পিউটার ল্যাবে প্রায় ৬০টির মত কম্পিউটার আছে।
ল্যাবসমূহঃ
- কম্পিউটার ল্যাব
- কটন স্পিনিং ল্যাব
- উইভিং ল্যাব
- টেস্টিং ল্যাব
- প্রকৌশল ল্যাব
- মেকানিক্যাল ল্যাব
- ওয়েট প্রসেসিং ল্যাব
- নিটিং ল্যাব
- এ্যাপারেল ল্যাব
- পদার্থবিজ্ঞান ল্যাব
- রসায়ন ল্যাব
- গার্মেন্টস ল্যাব
কলেজের গ্রন্থাগার: আরটেক লাইব্রেরীতে রয়েছে বিশাল সংখ্যক বইয়ের সমাহার।
ক্যাম্পাস জীবন
সম্পাদনাক্যাম্পাসে একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনতা ও সামাজিক সহয়তামূলক সংগঠন রয়েছে ।
→সংগঠনগুলো হলোঃ
- স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন- “শীতলছায়া ক্লাব”
- সাংস্কৃতিক সংগঠন- “রংতুলি”
- আরটেক দ্বীনি সার্কেল
- আরটেক ডিবেটিং ক্লাব
- আরটেক ক্যারিয়ার ক্লাব
- আরটেক রিচার্স ক্লাব
- ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব
- ফটোগ্রাফি ক্লাব- “মূহুর্ত”
- আরটেক স্পোর্টস ক্লাব
- জিমনেশিয়াম ক্লাব ইভেন্ট
স্টুডেন্টদের খেলাধুলার জন্য কলেজটির রয়েছে নিজস্ব মাঠ।তাছাড়া ইনডোর গেমস এর রয়েছে পৃথক কমন রুম।
আরও দেখুন
সম্পাদনা- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, চট্টগ্রাম
- পাবনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নোয়াখালী
- বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- ঝিনাইদহ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ঝিনাইদহ
- গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- জামালপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
- বাংলাদেশের টেক্সটাইল প্রকৌশল কলেজ তালিকা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "রংপুর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পীরগঞ্জ উপজেলা, রংপুর"। dwmtec.pirgonj.rangpur.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০১-১২।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৩-০৬-১৯)। "৮ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি আবেদনের সময় ও পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৫-০১-১২।
- ↑ "টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সমূহ"। বস্ত্র অধিদপ্তর। ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২৫।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২১।
- ↑ "বস্ত্র অধিদপ্তরের ১১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বাদ শেখ পরিবারের নাম"। জাগো নিউজ ২৪.কম। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৮ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০২১।