সরোজ ঘোষ

(ড.সরোজ ঘোষ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ড. সরোজ ঘোষ (ইংরেজি: Dr.Saroj Ghose) ( ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৩৫) বিজ্ঞানকে জনসাধারণ্যে জনপ্রিয় করণের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ও সংগ্রহালয় সংস্থাপক। তিনি ভারতের সায়েন্স সেন্টার মুভমেন্ট এর পথিকৃৎ। [৩] তিনি বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের প্রাক্তন অধিকর্তা ও জাতীয় বিজ্ঞান সংগ্রহালয় পরিষদের প্রথম মহাঅধিকর্তা ছিলেন। বিজ্ঞানকে জনসাধারণের মধ্যে লোকায়িত তথা জনপ্রিয় করার অন্যতম ভূমিকা পালন করেন। তিনি ১৯৯২ - ৯৮ খ্রিস্টাব্দ সময়ে প্যারিসের আন্তর্জাতিক সংগ্রহালয় পরিষদের তথা 'ইন্টারনেশন্যাল কাউন্সিল অব মিউজিয়ামস'র সভাপতি ছিলেন। জনসাধারণের মধ্যে,বিশেষ করে ছোটদের মাঝে বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বিষয় বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্য 'পদ্মশ্রী' ও 'পদ্মভূষণ' সম্মানে ভূষিত হন। [৪]

সরোজ ঘোষ
জন্ম (1935-09-01) ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৫ (বয়স ৮৮)[১]
জাতীয়তাভারতীয়
নিয়োগকারীজাতীয় বিজ্ঞান সংগ্রহালয় পরিষদ
পরিচিতির কারণবিজ্ঞানকে জনসাধারণ্যে জনপ্রিয় করণ, সংগ্রহালয় সংস্থাপক
উল্লেখযোগ্য কর্ম
সায়েন্স সিটি,কলকাতা . সংসদীয় সংগ্রহালয়,সংসদীয় সংগ্রহালয় নতুন দিল্লি[২] রাষ্ট্রপতি ভবন সংগ্রহালয় ,নতুন দিল্লি, ভারত
উপাধিপিএইচডি
দাম্পত্য সঙ্গীকৃষ্ণারতি ঘোষ
পিতা-মাতাসুশীলকুমার ঘোষ (পিতা)
পুরস্কারপদ্মশ্রী , পদ্মভূষণ

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

ড. সরোজ ঘোষের জন্ম ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ১লা সেপ্টেম্বর বৃটিশ ভারতের কলকাতায়। পিতার নাম সুশীলকুমার ঘোষ। তিনি কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্নাতক হন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশন থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কল্যাণকামী বিজ্ঞানীরা সাধারণত মানুষের কুসংস্কারাচ্ছন্ন অজ্ঞতা দূর করে তাদের বিজ্ঞানমনস্ক হিসাবে গড়ে তুলতে চান। ড.ঘোষও সেইরূপ স্বপ্ন ফেরী করতেন ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দ হতে নিজের শিক্ষালাভান্তে।

কর্মজীবন সম্পাদনা

তিনি ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার বিড়লা ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে অধিকর্তার দায়িত্ব নেন। সেই বৎসরেরই তিনি নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ আশ্রম বিদ্যালয়ে ‘Mobile Science Museum’ বর্তমানে 'Mobile Science Exhibition' শুরু করেন। বর্তমানে এইরকম ৪৮ টি প্রদর্শনী সারা দেশে প্রদর্শিত হয়। লিমকা বুক অফ রেকর্ডস থেকে এই প্রদর্শনীতে ভারতের বৃহত্তম এবং দীর্ঘতম সময় ধরে চলা non-formal Science Education Programme হিসাবে অভিহিত করেছে। তিনি ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ন্যাশানাল কাউন্সিল অব সায়েন্স মিউজিয়াম তথা জাতীয় বিজ্ঞান সংগ্রহালয় পরিষদ প্রতিষ্ঠার পিছনে বৃহত্তর অবদান রাখেন। মূলত তারই উদ্যোগে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে ৫০ একর জায়গাজুড়ে কলকাতায় তৈরি হয় ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ সায়েন্স সিটিবা "বিজ্ঞাননগরী"। [৩] বিজ্ঞাননগরী নামকরণে তার অভিমত ছিল -

"একটি শহরের যা যা থাকে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, রেলগাড়ি, রেস্তরাঁ,অডিটোরিয়াম ইত্যাদি সবই থাকবে,কেবল থাকবে না মানুষের বসবাস। থাকবে বিজ্ঞানের নানা শাখার বিভিন্নগ্যালারি সমন্বিত বিজ্ঞানের এক বিশাল জগৎ। সব কিছু মিলে দর্শকের মনে হবে সে যেন বিজ্ঞানশহরে ঘুরে বেড়াচ্ছে"

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সাধারণ মানুষের কাছে বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা চির প্রশংসনীয়। পরবর্তীতে সারা দেশের বহু স্থানে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে বিজ্ঞান কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

অবদান সম্পাদনা

কলকাতার বিজ্ঞাননগরী ছাড়াও যে যে উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞান কেন্দ্র ও সংগ্রহালয় ড.ঘোষের পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে গঠিত হয় সেগুলি হল -

সম্মাননা সম্পাদনা

ড.ঘোষ ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার অ্যাসোসিয়েশন অব সায়েন্স এণ্ড টেকনোলজি কেন্দ্রের ফেলো নির্বাচিত হন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত সরকারের পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন। ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে কবিগুরুর জীবন ও সাহিত্যকর্মের উপর নির্মিত সর্বাধুনিক সংগ্রহালয়ের জন্য পদ্মভূষণ লাভ করেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Padmabhusan Dr Saroj Ghose, Former President of ICOM Paris (1992-98)." Web. <http://www.inc-icom.org/saroj_ghose.html>.
  2. "সংসদীয় সংগ্রহালয়,নতুন দিল্লি,ভারত - Official Website - About Us." Parliament Museum. Web. 31 Oct. 2010. <http://www.parliamentmuseum.org/about_us.html>.
  3. ""বিজ্ঞানকে করতে চেয়েছেন জনপ্রিয়, আজ সায়েন্স সিটির প্রতিষ্ঠাতা ডঃ সরোজ ঘোষের জন্মদিন""। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৯-০৩ 
  4. "National Awards for Popularisation of Science" Indian Science Communication Society (ISCOS). Retrieved 31 October 2010.