ডেভিড ডেন্টন

ইংরেজ ক্রিকেটার

ডেভিড ডেন্টন (ইংরেজি: David Denton; জন্ম: ৪ জুলাই, ১৮৭৪ - মৃত্যু: ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫০) ইয়র্কশায়ারের ওয়াকফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের অধিকারী ডেন্টন ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন। এছাড়াও, ডানহাতে ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন।

ডেভিড ডেন্টন
ডেভিড ডেন্টন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডেভিড ডেন্টন
জন্ম(১৮৭৪-০৭-০৪)৪ জুলাই ১৮৭৪
ওয়াকফিল্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০(1950-02-16) (বয়স ৭৫)
ওয়াকফিল্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১ ৭৪১
রানের সংখ্যা ৪২৪ ৩৬,৪৪০
ব্যাটিং গড় ২০.১৯ ৩৩.৪০
১০০/৫০ ১/১ ৬৯/১৮৭
সর্বোচ্চ রান ১০৪ ২২১
বল করেছে ১,১৬১
উইকেট - ৩৪
বোলিং গড় - ২৮.৯১
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং - ৫/৪২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/০ ৩৯৬/১
উৎস: ক্রিকইনফো, ৫ জানুয়ারি ২০১৮

অগণিত আউট থেকে রক্ষা পাবার প্রেক্ষিতে 'লাকি' ডাকনামে পরিচিতি পান। তার আক্রমণধর্মী ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়েরা অনেক সুযোগ দিয়েছিল। ডিপ অঞ্চলে ফিল্ডিং করতেন ও উঁচু ক্যাচগুলো বেশ দক্ষতার সাথে তালুবন্দী করতেন। তবে, বল হাতে খুব কমই সফলতা পেয়েছেন। কেবলমাত্র ১৮৯৬ সালেই বল হাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছিলেন। ইংল্যান্ড দক্ষিণের বিপক্ষে ৫/৪২ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করিয়েছিলেন। এছাড়াও, ১৯০৫ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম-শ্রেণীর খেলায় নিজ নামের পার্শ্বে একটি স্ট্যাম্পিং লিখিয়েছেন।

কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ

সম্পাদনা

কিশোর অবস্থাতেই প্রতিশ্রুতিশীলতার স্বাক্ষর রাখেন। ১৮৯২ সালে কোল্টসের খেলায় অর্ধ-শতক করেন। এরপর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটবিহীন তিনটি প্রীতি খেলায় অংশ নেন। ১৮৯৪ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় অভিষেক ঘটে তার। তবে, ইয়র্কশায়ারের মৌসুমের শেষ খেলাটিতে প্রতিপক্ষ সমারসেটের বিপক্ষে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। ব্যাট, বল কিংবা ক্যাচ তালুবন্দী করার সুযোগ হয়নি তার।

পরের বছর কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে মূল্যবান রান তোলার ফলে দলে নিজ স্থানকে স্থায়ী করে নেন। ঐ বছর প্রথমবারের মতো সহস্রাধিক রানের সন্ধান পান। এরপর কেবলমাত্র একবার ১৮৯৮ সালে এই মাইলফলক স্পর্শে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

১৯০৫ সালে স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত করেন। ঐ মৌসুমে ২,৪০৫ রান তোলার প্রেক্ষিতে উইজডেন কর্তৃক ১৯০৬ সালের বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন ডেভিড ডেন্টন।

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

আঘাতের কারণে দলের বাইরে থাকা আর্চি ম্যাকলারেনের স্থলাভিষিক্ত হয়ে জুলাই, ১৯০৫ সালে টেস্ট দলের সদস্য মনোনীত হন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। হেডিংলি ও লিডসে সফরকারী দলের বিপক্ষে খেললেও সুযোগ হাতছাড়া হয়। ও ১২ রান তোলার খেসারতস্বরূপ দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়েছিল তাকে। তবে, ঐ মৌসুমের শীতকালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য পুনরায় আমন্ত্রণ লাভ করেন। পাঁচ-টেস্টের গড়া সিরিজটিতে সবগুলো টেস্টেই তার অংশগ্রহণ ছিল। দশ ইনিংস খেলে মাত্র একটি অর্ধ-শতরান করতে পেরেছিলেন। ফলশ্রুতিতে তাকে আবারও দল থেকে বাদ দেয়া হয়। তবে, এরপর আরও পাঁচ টেস্ট খেলার সুযোগ পান। ১৯০৯-১০ মৌসুমে দ্বিতীয় ও চূড়ান্ত সফরকালীন স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অংশ নেন। জোহেন্সবার্গের তৃতীয় টেস্টে মিনিটপ্রতি রান তুলে ১০৪ রানের ইনিংস উপহার দেন। এরপরের ইনিংসগুলোর কোনটিতেই ৩০-এর অধিক রান তুলতে পারেননি। ফলে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলা স্থায়ীভাবে শেষ হয়ে যায়।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরও ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রভূতঃ সফলতার সাথে খেলতে থাকেন। ১৯১২ সালে কেন্টের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২২১ রান তুলেন। এরপর ১৯২০ সালের জুন মাসের শেষদিকে ৪৬তম জন্মদিনের এক মাস পূর্বে ওরচেস্টারে অপরাজিত ২০৯ রান তুলেন।

১৯২০ সাল শেষে খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেন। এক পর্যায়ে দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে বেশ ভেঙ্গে পড়েন। তবে আরোগ্যলাভের পর ১৯২৫ থেকে ১৯৩০ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নিয়মিতভাবে ও ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত অনিয়মিতভাবে আম্পায়ারিত্ব করেন।

১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫০ তারিখে ইয়র্কশায়ারের ওয়াকফিল্ড এলাকায় ৭৫ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে। তার বড় ভাই জো ডেন্টনও সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ১৮৮৭ ও ১৮৮৮ সালে ইয়র্কশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছিলেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Warner, David (২০১১)। The Yorkshire County Cricket Club: 2011 Yearbook (113th সংস্করণ)। Ilkley, Yorkshire: Great Northern Books। পৃষ্ঠা 367। আইএসবিএন 978-1-905080-85-4 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা