ডিমলা উপজেলা

নীলফামারী জেলার একটি উপজেলা
(ডিমলা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ডিমলা উপজেলা বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা, যা ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এটি রংপুর বিভাগের আওতাধীন নীলফামারী জেলার ৬টি উপজেলার একটি এবং জেলার সীমান্তবর্তী দুটি উপজেলার একটি উপজেলা। ডিমলা উপজেলার উত্তরে ভারতের কুচবিহার জেলা, পূর্বে হাতিবান্ধা উপজেলা, দক্ষিণে জলঢাকা উপজেলা ও পশ্চিমে ডোমার উপজেলা অবস্থিত। এ উপজেলার পূর্ব দিক দিকে তিস্তা নদী এবং পশ্চিম দিক দিয়ে বুড়ি তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়েছে।

ডিমলা
উপজেলা
Map
বাংলাদেশে ডিমলা উপজেলার অবস্থান
ডিমলা রংপুর বিভাগ-এ অবস্থিত
ডিমলা
ডিমলা
ডিমলা বাংলাদেশ-এ অবস্থিত
ডিমলা
ডিমলা
বাংলাদেশে ডিমলা উপজেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৬°৭′২৮″ উত্তর ৮৮°৫৫′৪৭″ পূর্ব / ২৬.১২৪৪৪° উত্তর ৮৮.৯২৯৭২° পূর্ব / 26.12444; 88.92972 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
জেলানীলফামারী জেলা
সদরদপ্তরডিমলা
সংসদীয় আসননীলফামারী-১
সরকার
 • ধরনউপজেলা পরিষদ
 • শাসকডিমলা উপজেলা পরিষদ
 • চেয়ারম্যানমোঃ তবিবুল ইসলাম (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট৩২৬.৮০ বর্গকিমি (১২৬.১৮ বর্গমাইল)
উচ্চতা[১]৫৫ মিটার (১৮০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)[২]
 • মোট২,৮৩,৪৩৮
 • জনঘনত্ব৮৬৭/বর্গকিমি (২,২৫০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৪২.৮৬%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
পোস্ট কোড৫৩৫০ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৭৩ ১২
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

ডিমলা উপজেলার আয়তন ৩২৬.৮০ বর্গকিলোমিটার। ২০১১ আদমশুমারি অনুযায়ী উপজেলার জনসংখ্যা ২,৮৩,৪৩৮ জন এবং শিক্ষার হার ৪২.৮৬%।

ব্রিটিশ শাসনামলে ১৮৫৭ সালে ডিমলা থানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮৪ সালে ডিমলা থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিমলার সংসদীয় আসন নীলফামারী-১। ডিমলা ও ডোমার উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১২ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত।

নামকরণসম্পাদনা

১৬শ শতাব্দীতে এ এলাকায় মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ নামে এক প্রভাবশালী জমিদারের জমিদারি ছিল, তখন এ এলাকার নাম ছিল মোহাম্মদগঞ্জ।[৩] পরবর্তীত ব্রিটিশ শাসনের শুরুতে, ১৭৭০ সালে বাবু হররাম সেন ইজারা সূত্রে জমিদার হন[৪] এবং তিনি এখানে একটি ডিম্বাকৃতি প্রসাদ নির্মাণ করেছিলেন। তার এই ডিম্বাকৃতি প্রাসাদ থেকে ডিমলা নামকরণ হয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে।[৩][৫] এছাড়া আরও জনশ্রুতি রয়েছে, বর্তমান ডিমলার দক্ষিণ পূর্ব দিকে তেল্লাই নামে একটি বিল ছিল। তখন এই বিলে অনেক অতিথি পাখি আসতো এবং প্রচুর ডিম দিত। ডিমগুলো দেখতে অাকর্ষণীয় ছিল বলে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসতো ডিমের ব্যবসা করতে। এসব অাকর্ষনীয় ডিমের প্রতুলতার কারণে এলাকার নাম হয় ডিমলা। ধারণা করা হয়, পাখির ডিম ও তেল্লাই বিল লোকমুখে> ডিম তেল্লাই> ডিমলাই> ডিমলা নামকরণ হয়েছে।[৫]

ইতিহাসসম্পাদনা

ঐতিহাসিকদের মতে, প্রাচীনকালে ডিমলাসহ এ অঞ্চল কামরূপ রাজ্যের অংশ ছিল। এ অঞ্চলটি পাল, খেনবংশ, কোচবংশ প্রভৃতি রাজবংশ দীর্ঘ সময় ধরে শাসন করেছে। ডিমলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে জলঢাকা উপজেলার খেরকাটি নামক গ্রামে পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন, পরবর্তীতে তার নামে এ এলাকার নাম হয় ধর্মপাল।[৬] ১৪শ শতাব্দির শেষদিকে অঞ্চলটি খেন রাজবংশের অন্তর্গত ছিল। আলাউদ্দিন হোসেন শাহ কামতা রাজ্য জয় করলেও এ অঞ্চল মুসলমানদের দখলে আসেনি। বরং কোচ রাজ্যের অন্তর্গত হয়। আইন-ই-আকবরীর তথ্য মতে এ অঞ্চল কাছওয়ারা বা কোচবিহার নামে অবহিত হত। মোঘল আমলে রংপুর অঞ্চলে যে ছয়টি পরগনা ছিল, ডিমলা ছিল কাজিরহাট পরগনার অধীন। ১৬৮৭ সালে সুবেদার শায়েস্তা খাঁর পুত্র ইবাদত খাঁ কোচ মহারাজা মহিন্দ্র নারায়নের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং কাজিরহাট, কাকিনা ও ফতেহপুর চাকলা দখল করে নেয়।[৭] সেই সময় এ এলাকার জমিদার হন মোহাম্মদ কলিমুল্লাহ।

১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভ করলে এ অঞ্চলেও ব্যাপক পরিবর্তন। জমি বন্দোবস্ত ও পাঁচশালা ইজারা ব্যস্থার কারনে বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের মত এখানেও অনেক ভূস্বামীর জন্ম হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ১৭৭০ সালে ইজারা নিয়ে ডিমলার জমিদার হন বাবু হররাম সেন।[৪][৮] ১৭৬৯ সালে কালেক্টর গঠিত হলে ডিমলা রংপুর জেলার অধীন হয়। ১৮৫৭ সালে ডিমলা থানা সদর প্রতিষ্ঠিত হয়। যদিও ১৭৯৩ সালে ১২ নং রেজুলেশন অনুযায়ী তৎকালীন রংপুর জেলায় যে ২১টি থানা গঠিত হয়েছিল, ডিমলা ছিল তার একটি, যা বর্তমানকার কিশোরগঞ্জ, জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলা নিয়ে গঠিত ছিল।[৯] ১৮৭৫ সালে নীলফামারী মহকুমা সৃষ্টির হলে ডিমলা এর অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৭৮৩ সালে কোম্পানি কর্তৃক আরোপিত দুরিভিলা ট্যাক্সের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলের মানুষ বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে ফকির সন্যাসি বিদ্রোহের সময় মজনু শাহের ভাই মুসা শাহ বর্তমান কিশোরগঞ্জে আস্তানা গেড়েছিলেন।[১০] সিপাহীদের হাতে ভবানী পাঠকের মৃত্যু হলে বিদ্রোহ দমে যায়। ১৮৫৯-৬০ সালে এ অঞ্চলে নীল বিদ্রোহ ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। ফকির সন্যাসি বিদ্রোহীরা নীল বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিলে নীলকরদের সঙ্গে বেশ কিছু সংঘর্ষ হয়। ১৮৭২ সালে সরকার নীককরদের দমনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ আন্দোলন প্রশমিত হয়।

তেভাগা আন্দোলন ডিমলায় পুরুদমে সংঘটিত হয়েছিল। আন্দোলন চলাকালে কৃষকরা ব্যাপকহারে জোতদারদের ধান কেটে নেয়। ১৯৪৬ সাল ১ জানুয়ারি মশিউর রহমান যাদুমিয়ার খগাখড়িবাড়ী খামারবাড়িতে সংঘর্ষ হলে যাদু মিয়ার বন্দুকের গুলিতে কৃষক নেতা তন্নারায়ণ ঘটনা স্থলেই নিহত হয়।[১০][১১] উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর ১৯৫০ সালে জমিদারি উচ্ছেদ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হয়। এ আইন অনুসারে ১৯৫১ সালে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ হওয়ার পর ডিমলা স্থানীয় সরকারের অধীনস্থ হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ৮ এপ্রিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলাকাটি দখল করে এবং ৬টি ক্যাম্প স্থাপন করে। ডিমলা সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা সুবিধাজনক স্থানে ক্যাম্প করতে পেরেছিলেন। মুক্তিবাহিনী ডিমলাকে ৬টি কোম্পানিতে ভাগ করেছিল। ১০ অক্টোবরের রাজাকার ধরার ঘটনার জেরে ১৮ অক্টোবর প্রথম সংঘর্ষ হয়। এতে মোহাম্মদ আলী নামে এক মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয় এবং পাকিস্তানি বাহিনী পিছু হটার সময় ১০-১৫ নিরীহ বাঙ্গালীকে ধরে নিয়ে যায়। যাদেরকে পরের দিন ১৯ অক্টোবর ডাঙ্গারহাট গোমনাতি সড়কের পাশে নির্বিচারে হত্যা করে। এরপর আরও কয়েকটি সংঘর্ষ হয়। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর ডিমলাকে মুক্তাঞ্চল ঘোষণা করা হয়।[১২] বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ডিমলা থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।

ভূগোলসম্পাদনা

ডিমলা উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান ২৬°০৮′ উত্তর ৮৮°৫৬′ পূর্ব / ২৬.১৩° উত্তর ৮৮.৯৩° পূর্ব / 26.13; 88.93 বা ২৬°০৫´ থেকে ২৬°১৭´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫২´ থেকে ৮৯°০৬´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত। নীলফামারী জেলাধীন উত্তর সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। এর মোট আয়তন ৩২৬.৮০ বর্গ কিলোমিটিার।[১৩] উপজেলাটি পূর্বাংশ তিস্তা অববাহিকায় অবস্থিত বালুকাময় অনুর্বর ভূমি দ্বারা গঠিত। এই উপজেলার পশ্চিমাংশ বুড়িতিস্তা নদী বৌধিত যার ভূমি অত্যন্ত উর্বর। ডিমলা উপজেলার কেন্দ্র হতে দক্ষিণে ডোমার উপজেলার সদর, দক্ষিণ-পশ্চিমে নীলফামারী জেলার সদর এবং দক্ষিণ-পূর্বে জলঢাকা উপজেলার সদর অবস্থিত। উপজেলার উত্তরে ভারতের কুচবিহার জেলা, পূর্বে লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলা, দক্ষিণে জলঢাকা উপজেলা ও পশ্চিমে ডোমার উপজেলা

ডিমলা উপজেলার পূর্ব দিক দিয়ে তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়েছে। এটি উপজেলার কালীগঞ্জ মৌজা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, ডিমলা উপজেলার ৫ টি ইউনিয়নের আংশিক এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে নাউতারা নদী, পশ্চিমে ডোমার ডিমলা উপজেলা সীমানা বরাবর বুড়ি তিস্তা নদী প্রবাহিত হয়েছে। এছাড়াও ধুম, সিংগাহারা নামে আরও কিছু ছোট ও মৌসুমি নদী রয়েছে। দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা সেচ প্রকল্প এ উপজেলায় বিদ্যমান। এছাড়া জলঢাকা উপজেলায় অবস্থিত বুড়ীতিস্তা ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের একটি খাল ডিমলা উপজেলার রয়েছে।

বাংলাদেশের ভূপ্রকৃতি অনুসারে ডিমলা উপজেলা সহ এ অঞ্চল তিস্তা প্লাবন ভূমিতে অবস্থিত। এর ভূমি প্রধানত তিস্তা নদী বাহিত পলি, মোটা দানাবিশিষ্ট বালুস্তর, তির্যক স্তরায়িত বেলেপাথর এবং নুড়িবাহী আন্তঃস্তর ও কর্দম শিলাস্তরসহ মাঝে মধ্যে কোয়াটারনারী থেকে সাম্প্রতিককালের নুড়িপাথর দ্বারা গঠিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এ অঞ্চলের গড় উচ্চতা ৫৫ মিটারেরও অধিক।[১] ডিমলা উপজেলার তাপমাত্র গ্রীষ্মকালে ২৮ °সে থেকে ৩২ °সে-এর মধ্যে এবং শীতকালে ২০ °সে-এর মধ্যে থাকে। তবে, অনেক সময় শীতের প্রকোপ বেশি হলে ৩ °সে হতে পারে।[১৪] এ অঞ্চলে মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাব থাকায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। এখানকার গড় বৃষ্টিপাত ১৯০০ মিলিমিটার বা তারও বেশি। তবে শুষ্ক মৌসুমে পানির ঘাটতি দেখা দেয়। অপর্যাপ্ত মৌসুমি বৃষ্টিপাত, উচ্চ তাপমাত্রা ও এইসাথে ভূগর্ভস্থ পানির অত্যধিক ব্যবহার এবং জলাশয় ভড়াটের ফলে খরার সূত্রপাতও ঘটে।

প্রশাসনসম্পাদনা

ডিমলা উপজেলা ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।[১৫] ইউনিয়ন সমূহহলো; পশ্চিম ছাতনাই, বালাপাড়া, ডিমলা, খগাখড়িবাড়ী, গয়াবাড়ী, নাউতারা, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, টেপাখড়িবাড়ীপূর্ব ছাতনাই। ১৮৫৭ সালে ডিমলা থানা স্থাপনের পর ১৯৮৪ সালে এটিকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অধীনে উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। তিনিই উপজেলার প্রশাসনিক প্রধান। এছাড়া, জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত একজন উপজেলা চেয়ারম্যান জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে মোঃ তবিবুল ইসলাম ডিমলা উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ডিমলা উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি থানা বা পুলিশ স্টেশন রয়েছে। এছাড়া একটি করে আনসার ও ভিডিপি এবং ফায়ার সার্ভিসের কার্যালয় রয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিমলার সংসদীয় আসন নীলফামারী-১। ডিমলা ও ডোমার উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটি জাতীয় সংসদে ১২ নং আসন হিসেবে চিহ্নিত।[১৬] নীলফামারী-১ আসনটি ১৯৮৪ সালে রংপুর-১ আসন থেকে সৃষ্টি করা হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-১ আসনটি তৈরি করা হয়েছিল।

অর্থনীতিসম্পাদনা

ডিমলা উপজেলা মূলত কৃষি প্রধান উপজেলা। এ উপজেলার ৭৫.৩৬% জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি।[১৭] প্রধান কৃষি ফসলের মধ্যে রয়েছে ধান, ভূট্টা, আলু, মরিচ, তামাক, পিঁয়াজ, আদা, হলুদ। এ অঞ্চলে ভূট্টা ও মরিচের প্রচুর ফলন হয়। এছাড়াও বাঁশ উৎপাদনের আদর্শ একটি অঞ্চল এটি। পূর্বে এ অঞ্চলে কাউন, তিল, তিসি, পাট ও গমের আবাদ করা হত। এছাড়াও এখানে কলা, লিচু, কাঁঠাল, আম, তরমুজ, পেঁপে ও খিরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। ২০০১ সালের ভূমিজরিপ অনুসারে উপজেলার ৫৭.৩৭% পরিবার কৃষিজমির মালিক। উপজেলায় মোট ২২৯৮৮ হেক্টর আবাদি জমি রয়েছে।

 
ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীতে পাথর সংগ্রহ করে বিক্রয়ের জন্য একত্রিত হয়েছে নদীরপাড়ে

কৃষি নির্ভর অর্থনীতির বাইরে মৎস্য, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগির খামার, আসবাবপত্রের কারখানা, কুটিরশিল্প, মৃৎশিল্প, লৌহশিল্প এবং প্রাকৃতিক সম্পদ প্রভৃতি এ উপজেলার অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি। ডিমলা উপজেলার উল্লেখযোগ্য প্রাকৃতিক সম্পদ হল নুড়ি পাথর।[১৮] এ উপজেলার তিস্তা নদীর পানির তলদেশে এবং কালিগঞ্জ, ছাতনাই কলোনি, ঝাড়সিংহেরশ্বর, কিসামত ছাতনাই, পশ্চিম খড়িবাড়ী, ডালিয়া মৌজার ১৫ - ২০ ফুট মাটির নিচে প্রচুর পরিমাণে নুরি পাথর মজুদ আছে। এছাড়া উপজেলার অন্য প্রাকৃতিক সম্পদ হল বালু।

জনসংখ্যার উপাত্তসম্পাদনা

ডিমলায় ধর্ম বিশ্বাস (২০১১)

  মুসলমান (৮৮.৪৬%)
  হিন্দু (১১.০৮%)
  অন্যান্য (০.০৮%)

১৯৮১ সালে ডিমলা উপজেলার জনসংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৬৫ হাজার।[১৯] ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২,৮৩,৪৩৮ জনে,[২] যার মধ্যে পুরুষ ১৪২৪১২ জন এবং নারী ১৪১০২৬ জন। এর মধ্যে ৫-৯ বছর বয়সী হল ৪০৬৮৮ জন, ১০-১৪ বছর বয়সী ৩৪৫৮৭ জন ও ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে ১৬০৭৮৩ জন। বিবাহিত নারীর সংখ্যা ৬৬০৫০ জন, যাদের বয়স ১৫-৫৯ এর মধ্যে। নারী পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত ১০১। ডিমলা উপজেলায় মোট ৬৩৫৩৫টি পরিবার বসবাস করে। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৮৬৭ জন। উপজেলায় মোট ভোটার ১,৬৫,০৮৫ জন, পুরুষ ভোটার ৮২,৫৪৪ জন এবং মহিলা ভোটার ৮২,৫৪১জন।

জনসংখ্যার ৮৮.৪৬% মুসলমান, ১১.০৮% হিন্দু এবং ০.০৮% অন্যান্য ধর্মাবলম্বী।[১৯]

শিক্ষাসম্পাদনা

২০১১ সালের তথ্য অনুযায়ী ডিমলা উপজেলার স্বাক্ষরতার হার ৪২.২%,[২] যার মধ্যে পুরুষ ৪৪.৭% এবং নারী ৩৯.৭%। যেখানে জাতীয় স্বাক্ষরতার হার ৪৩.৭% ও জেলার স্বাক্ষতার হার ৪৪.৪%। ২০০১ সালে এ স্বাক্ষরতার হার ছিল ৩৬.২%, পুরুষ ৪১.৭%, মহিলা ৩০.৬%।[১৭] উপজেলার ইউনিয়নগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার ডিমলা সদর ইউনিয়নে ৪৯.০% এবং সবচেয়ে কম নাউতারা ইউনিয়নে ৩৬.৭%।

উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৫টি, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৪টি, উচ্চ মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ১৯টি, মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠান ৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৫২টি, দাখিল মাদ্রাসা ১৬টি, আলিম মাদ্রাসা ২টি, ফাজিল মাদ্রাসা ৪টি। উপজেলার প্রথম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০৬ সালে খগাখড়িবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়। [উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিষ্ঠানের তালিকা নিম্নরুপঃ

সাধারন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

কলেজসম্পাদনা

ক্রম প্রতিষ্ঠানের ধরণ প্রতিষ্ঠানের নাম EIIN মন্তব্য
স্কুল ও কলেজ আদাবাড়ী স্কুল ও কলেজ 124778 বেসরকারি
কলেজ ছাতনাই মহাবিদ্যালয় 134357 বেসরকারি
কলেজ ডিমলা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয় 124827 সরকারি[২০][২১]
কলেজ ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ 124824 বেসরকারি
স্কুল ও কলেজ দোহল পাড়া আদর্শ স্কুল ও কলেজ 124792 বেসরকারি
কলেজ গয়া খড়িবাড়ী মহিলা কলেজ 137737 বেসরকারি
স্কুল ও কলেজ গয়াবাড়ী হাই স্কুল ও কলেজ 124828 বেসরকারি
কলেজ জনতা ডিগ্রি কলেজ 124825 বেসরকারি
স্কুল ও কলেজ নাউতারা গার্লস স্কুল ও কলেজ 124770 বেসরকারি
১০ কলেজ পশ্চিম ছাতনাই মহিলা মহাবিদ্যালয় 135251 বেসরকারি
১১ কলেজ শহিদ জিয়াউর রহমান কলেজ 133764 বেসরকারি
১২ কলেজ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজ 134508 সরকারি[২২][২৩]
১৩ স্কুল ও কলেজ সুন্দরখাতা স্কুল ও কলেজ 124771 বেসরকারি
১৪ কলেজ তিস্তা ডিগ্রি কলেজ 124826 বেসরকারি
১৫ স্কুল ও কলেজ জেলা পরিষদ স্কুল ও কলেজ 136507 বেসরকারি

কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

১। ডিমলা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ (এসএসসি ও এইচএসসি ভোকেশনাল শিক্ষা)

২। ডিমলা কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড পলিটেকনিক কলেজ (ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা)

৩। ডিমলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট (ডিপ্লোমা-ইন-টেক্সটাইল শিক্ষা)

৪। ডিমলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএমআই (এসএসসি ভোকেশনাল ও এইচএসসি বিএম)

৫। খগাখড়িবাড়ী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউট (এসএসসি ভোকেশনাল ও এইচএসসি বিএম)

মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

১। খগাখড়িবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়

২। নাউতারা আবেউননেছা উচ্চ বিদ্যালয়

৩। ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

৪। ডিমলা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়

৫। ডিমলা উচ্চ বিদ্যালয়

৬। ডিমলা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

৭। ছাতনাই উচ্চ বিদ্যালয়

৮। ছাতনাই কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়

৯। ঝুনাগাছ চাপানী উচ্চ বিদ্যালয়

১০। ডালিয়া শিশু নিকেতন উচ্চ বিদ্যালয়

মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

১। ডিমলা আলিম মাদ্রাসা

২। সুন্দরখাতা শফিকুল গনি স্বপন ফাযিল মাদ্রাসা

৩। দোহলপাড়া জনতা দাখিল মাদ্রাসা

কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র)সম্পাদনা

১। ল্যান কম্পিউটার্স অ্যান্ড টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট

২। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ট্রেনিং ইন্সটিটিউট

৩। ডিমলা টেকনিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট

৪। ডিমলা কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার

ডিমলা উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশের অন্য সব শহরের মতই। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রধানত পাঁচটি ধাপ রয়েছে: প্রাথমিক (১ থেকে ৫), নিম্ন মাধ্যমিক (৬ থেকে ৮), মাধ্যমিক (৯ থেকে ১০), উচ্চ মাধ্যমিক (১১ থেকে ১২) এবং উচ্চ শিক্ষা এছাড়াও রয়েছে কারিগরি শিক্ষা। প্রাথমিক শিক্ষা সাধারণত ৫ বছর মেয়াদী হয় এবং প্রাথমিক বিদ্যালয় সমাপনী পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়, ৩ বছর মেয়াদী নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), ২ বছর মেয়াদী মাধ্যমিক শিক্ষা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি), ২ বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষার মাধ্যমে শেষ হয়, ৩ বছর মেয়াদী স্নাতক (পাস কোর্স) ৪ বছর মেয়াদী স্নাতক সম্মান কোর্স। এছাড়াও কারিগরি শিক্ষার আওতায় কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণের ৬ মাস মেয়াদী কোর্স, ২ বছর মেয়াদী এসএসসি ভোকেশনাল, ২ বছর মেয়াদী এইচএসসি ভোকেশনাল কোর্স, ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স এবং ৪ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা-ইন- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স।

মূলত বাংলা ভাষায় পাঠদান করা হয় তবে ইংরেজি ব্যাপকভাবে পাঠদান ও ব্যবহৃত হয়। অনেক মুসলমান পরিবার তাদের সন্তানদের বিশেষায়িত ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন মাদ্রাসাতে প্রেরণ করেন। মাদ্রাসাগুলোতেও প্রায় একই ধরনের ধাপ উত্তীর্ণ হতে হয়। উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হওয়ার পর কোন শিক্ষার্থী সাধারণত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারে। ডিমলায় উচ্চ মাধ্যমিকের পর উচ্চ শিক্ষার জন্য ডিমলা ইসলামিয়া ডিগ্রি কলেজ, ডিমলা মহিলা সরকারি কলেজ, তিস্তা ডিগ্রি কলেজ ও জনতা কলেজ রয়েছে যা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক পাস ও সম্মান কোর্সের ডিগ্রি প্রদান করে।

এছাড়াও আধুনিক সচেতন অভিভাবকগণ মাধ্যমিক পাসের পরপরই তাদের সন্তানদের কারিগরি শিক্ষা গ্রহনের জন্য ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কিংবা ডিপ্লোমা-ইন- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার জন্য কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করেন। ডিমলা উপজেলায় ডিমলা কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড পলিটেকনিক কলেজে ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা এবং ডিমলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউটে ডিপ্লোমা-ইন- টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি প্রদান করে।

যোগাযোগসম্পাদনা

 
জেড৫০৫৪ ডোমার-ডিমলা সড়ক

ডিমলা উপজেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম সড়কপথ। জেড৫০৫৪ (ডিমলা-বোড়াগাড়ী), জেড৫৭০৪ (বোড়াগাড়ী-ডোমার) ও জেড৫৭০৭ (ডোমার-নীলফামারী) ডিমলাকে নীলফামারী জেলা সদরের সাথে যুক্ত করেছে। জেড৫৭০৩ (ডিমলা-বাহাদুর দরগা) ও জেড৫৭০৪ (বাহাদুর দরগা-জলঢাকা) সড়ক পথে জলঢাকা হয়ে আর ৫৬০ দিয়ে রংপুর এবং সেখান থেকে এন৫ হয়ে ঢাকার সাথে সংযোগ স্থাপন করেছে। সড়ক পথে ডিমলা থেকে ঢাকার দুরত্ব ৩৬৬ কিলোমিটার, রংপুরের দুরত্ব ৬৫ কিলোমিটার, নীলফামারীর দুরত্ব ৪৪ কিলোমিটার। সমগ্র উপজেলায় ১০১ কিলোমিটার পাকা সড়ক আছে।

এ উপজেলায় কোন রেলপথ ও আকাশপথ নেই। এর নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন ২০ কিলোমিটার দূরে ডোমার রেলওয়ে স্টেশন। নিকটবর্তী বিমানবন্দর হল সৈয়দপুর বিমানবন্দর, যার দুরত্ব ৬৪ কিলোমিটার। উপজেলার বাইরে যোগাযোগ করার মত কোন নৌপথ না থাকলেও তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম বা নদী পাড়াপাড়ের জন্য নৌকা ব্যবহৃত হয়।

স্বাস্থ্যসম্পাদনা

সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য হার তুলনামূলক কম হলেও এটি মূলত দারিদ্র্যতার সাথে সম্পর্কিত হওয়ায়, এর উন্নতির সাথে সাথে বর্তমানে স্বাস্থ্য সেবাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিমলা উপজেলায় অপুষ্টি, পরিবেশগত স্যানিটেশন সমস্যা, ডায়াবেটিস, সংক্রামক রোগ প্রভৃতি বেশি দেখা যায়। উপজেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি সরকারি হাসপাতালের সাথে সাথে ২টি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ৩৫টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ১০টি পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে।

ভাষা ও সংস্কৃতিসম্পাদনা

ডিমলা উপজেলার মানুষের প্রধান ভাষা বাংলা। এখানকার অধিকাংশ মানুষ বাংলা ভাষার উপভাষা রংপুরী ভাষায় কথা বলে, তবে সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইলসহ প্রভৃতি জেলা থেকে আগত (বর্তমানে স্থায়ী বাসিন্দা) মানুষেরা তাদের স্থানীয় উপভাষা ও রংপুরী উভয় ভাষায় কথা বলে।

ভাওয়াইয়া ও সত্যপীরের গান ডিমলার লোকসংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখানে বেশ কিছু মেলা ও উরশ পালিত হয়। কালীগঞ্জের উরশ ও মেলা উপজেলার সর্ববৃহৎ উৎসব। কবি শেখর উপাধি প্রাপ্ত কবি মহম্মদ মহসীন ডিমলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ডিমলায় ৪টি সিনেমা হল (বর্তমানে বিলুপ্ত), ৩টি নাট্যদল, ৬টি সংগীত একাডেমি রয়েছে।[১৭]

হাডুডু, ডাংগুলি ও মার্বেল খেলা ডিমলার সাধারণ মানুষের মধ্যে এক সময় খুব জনপ্রিয় ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ক্রিকেট এই দুই খেলার জনপ্রিয়তা অনেক কমিয়ে দিয়েছে। এছাড়া ফুটবল, কাবাডি ও ভলিবলও এই উপজেলায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

উল্লেখযোগ্য স্থানসম্পাদনা

ডিমলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে তিস্তা নদী,ডিমলা ফরেস্ট, বুড়ি তিস্তা সেচ প্রকল্প, কালীগঞ্জের যৌথবাধ, তিস্তা ব্যারেজ ও অবসর, বালাপাড়া গণকবর, ডিমলা জমিদার বাড়ি,[৮] বালাপাড়া বুরুজ প্রভৃতি। এই উপজেলার ভূপ্রকৃতি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিসম্পাদনা

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "Geographic coordinates of Dimla, Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। DATEANDTIME.INFO। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ 
  2. Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ২: ইউনিয়ন পরিসংখ্যান। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৪৪৯। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৯ 
  3. বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা - নীলফামারী। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। ২০১৪। পৃষ্ঠা ২৫। আইএসবিএন 984-07-5356-8 
  4. "রংপুরের উল্লেখযোগ্য জমিদার বংশসমূহ"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। রংপুর জেলা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০হররাম সেন এ জমিদার বংশের প্রতিষ্ঠাতা। কোম্পানি শাসনের সূচনালগ্নে তিনি উত্তরবঙ্গের রাজস্ব ইজারাদার (১৭৭০-১৭৮৩ খ্রি.) হিসেবে রামজীবন ডিমলা জমিদার বংশের প্রথম মালিক হন 
  5. "উপজেলার ঐতিহ্য"ডিমলা উপজেলা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  6. "নীলফামারীতে পাল আমলের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সন্ধান"বাংলাট্রিবিউন। ২০ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  7. "বিলাসী মহেন্দ্রের সাক্ষী হাওয়াখানা"বাংলা নিউজ। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুলাই ২০২০ 
  8. রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (সপ্তম ভাগ)। কলকাতা। পৃষ্ঠা ৪৫। 
  9. "সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা - রংপুর। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। ২০১৪। পৃষ্ঠা ২৭,২৮। আইএসবিএন 984-07-5118-2 
  10. "সংক্ষিপ্ত ইতিহাস"। বাংলাদেশের লোকজ সংস্কৃতি গ্রন্থমালা - নীলফামারী। ঢাকা: বাংলা একাডেমি। ২০১৪। আইএসবিএন 984-07-5356-8 
  11. "তেভাগা আন্দোলন ও রক্ত ঝরা পয়লা জানুয়ারি"দৈনিক নয়া দিগন্ত। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৪ 
  12. "ডিমলা হানাদার মুক্ত দিবস পালিত"দৈনিক জনকন্ঠ। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৪ 
  13. "এক নজরে ডিমলা"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ডিমলা উপজেলা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  14. "৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা"। ২০১৮-০১-০৮। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৪ 
  15. "ইউনিয়ন সমূহ"জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ডিমলা উপজেলা। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  16. "জাতীয় সংসদীয় আসনপূর্ণবিন্যাস (২০১৮) গেজেট" (পিডিএফ)। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ৩০ এপ্রিল ২০১৮। ৭ মে ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৮ 
  17. আব্দুস সাত্তার (২০১২)। "ডিমলা উপজেলা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  18. সিফাতুল কাদের চৌধুরী (২০১২)। "নুড়িপাথর"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  19. জেলা পরিসংখ্যান ২০১১ (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জেলা পরিসংখ্যান (ইংরেজি ভাষায়)। নীলফামারী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। ডিসেম্বর ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৮। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুলাই ২০২০ 
  20. Dainikshiksha। "সরকারি হলো ২৭১ কলেজ - দৈনিকশিক্ষা"Dainik shiksha (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৪ 
  21. "সরকারি হলো ২৭১ কলেজ"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৪ 
  22. Correspondent, Senior। "Bangladesh nationalises 28 colleges; 15 named after Bangabandhu and family"bdnews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৪ 
  23. "সরকারি হচ্ছে আরো ১৫ কলেজ"Bangladesh Journal Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-১৪ 
  24. "দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও প্রতীক দানকারীকে 'মনে করে না' বিএনপি"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  25. Reporter, Staff। "মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী শনিবার"dhakapost.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  26. প্রতিবেদক, নিজস্ব। "জিয়া-যাদু গোপন চুক্তিটা কি প্রকাশ করবেন খালেদা জিয়া?"Prothomalo। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  27. "List of 2nd Parliament Members"www.parliament.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  28. Notebook (২০২১-১১-৩০)। "২ দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত সদস্যদের তালিকা"সংগ্রামের নোটবুক (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  29. "List of 3rd Parliament Members"www.parliament.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  30. Notebook (২০২১-১১-৩০)। "৩ তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত সদস্যদের তালিকা"সংগ্রামের নোটবুক (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  31. "নীলফামারী জেলা"www.nilphamari.gov.bd (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  32. "আফতাব উদ্দিন সরকার"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  33. "Bangladesh Election Commission"www.ecs.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  34. "এমপি আফতাব উদ্দিনকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সংবর্ধনা"ABNEWS24। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  35. "নীলফামারী ১ আসনে আ. লীগের প্রার্থী হতে চান ব্যারিস্টার ইমরান"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  36. "নীলফামারী-১ আসনে নৌকার মাঝির ভিড়॥ অন্যদলগুলোর প্রার্থীরা আছে চিন্তামুক্ত"www.uttorbangla.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-১০-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 
  37. Curator (২০২০-০১-০৩)। "1970 | ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে বিজয়ী সদস্যদের তালিকা"সংগ্রামের নোটবুক (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-০৭ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা