ডিক ব্রিটেনডেন

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেট লেখক

রিচার্ড ট্রেভর ব্রিটেনডেন, এমবিই (ইংরেজি: Dick Brittenden; জন্ম: ২২ আগস্ট, ১৯১৯ - মৃত্যু: ১০ জুন, ২০০২) রাকাইয়া এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেট লেখক। ১৯৫০-এর দশক থেকে ১৯৮০-এর দশকে অনেকগুলো ক্রিকেট সম্পর্কীয় গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন ডিক ব্রিটেনডেন

ডিক ব্রিটেনডেন

জন্ম
রিচার্ড ট্রেভর ব্রিটেনডেন

(১৯১৯-০৯-২২)২২ সেপ্টেম্বর ১৯১৯
রাকাইয়া, নিউজিল্যান্ড
মৃত্যু১০ জুন ২০০২(2002-06-10) (বয়স ৮২)
ক্রাইস্টচার্চ, নিউজিল্যান্ড
পেশাক্রীড়া সাংবাদিকতা

২২ আগস্ট, ১৯১৯ তারিখে রাকাইয়া এলাকায় ডিক ব্রিটেনডেনের জন্ম। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত ক্রাইস্টচার্চ বয়েজ হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন।[১] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ডিক ব্রিটেনডেন রয়্যাল নিউজিল্যান্ড এয়ারফোর্সে নিযুক্ত ছিলেন এবং ব্রিটেন ও বাহামায় কাজ করেন।[২] ১৯৩৮ সালে ক্রাইস্টচার্চভিত্তিক প্রেসে যোগদান করেন। ১৯৫৫ সালে ঐ সংবাদপত্রের ক্রীড়া সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৮৪ সালে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত স্বপদে নিযুক্ত ছিলেন।[৩]

রচনাসমগ্র সম্পাদনা

১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। এ সফর নিয়ে তিনি প্রতিবেদন রচনা করেন ও সফরকে ঘিরে নিজস্ব প্রথম গ্রন্থ ‘সিলভার ফার্ন অন দ্য ভেল্ড’ ১৯৫৪ সালে প্রকাশ করেন। এরপর, ১৯৫৮ সালে ‘গ্রেট ডেজ ইন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট’ নামীয় গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এতে ২৬টি অধ্যায় ছিল। প্রত্যেকটিতে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য খেলাগুলোর বিবরণ রয়েছে। অপ্রত্যাশিতভাবে দীর্ঘতম অধ্যায় ছিল শেষেরটি। ঐ পর্যায়ে অকল্যান্ডে ১৯৫৬ সালে নিউজিল্যান্ডের প্রথম টেস্ট বিজয়কে ঘিরে লেখা হয়।[৪]

১৯৬১ সালে ৫০ অধ্যায়ে ‘নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার্স’ শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। প্রত্যেক অধ্যায়ে নিউজিল্যান্ডের অতীত বা বর্তমানের প্রথিতযশা ক্রিকেটারের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। শুরুতেই অতিরিক্ত অধ্যায়ে ৫১ বছর বয়সে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে অবসর নেয়া নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট খেলোয়াড় গভর্নর-জেনারেল লর্ড কবহামকে নিয়ে লেখা হয়েছে।[৫] ১৯২৮ সাল থেকে নিউজিল্যান্ডের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলাগুলোর দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকতেন ডিক ব্রিটেনডেন।[৬] গ্রন্থে বর্ণিত ৫০টি বিষয়ের সবগুলো ক্রিকেটারের খেলাই তিনি দেখেছেন ও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত ছিলেন। ব্যতিক্রম ছিলেন ওয়েলিংটনীয় ব্যাটসম্যান সিড হিডলস্টোন। তার ভাষায়, আমি অনেক ক্রিকেটারকেই পূর্ণাঙ্গ বয়সেও অধীর আগ্রহী ও স্বেচ্ছায় তার সাথে কথা বলতে দেখেছি।[৭]

১৯৬৫ সালে ইংল্যান্ড, ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ভারত, ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান সফরের প্রতিবেদন প্রকাশে গমন করেন। এছাড়াও, ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গমনসহ ১৯৬৯ সালে ইংল্যান্ড, ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ভারত ও ১৯৬৯-৭০ মৌসুমে পাকিস্তান গমন করেছিলেন।

১৯৭৭ সালে দ্য ফাইনেস্ট ইয়ার্স: টুয়েন্টি ইয়ার্স অব নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট শীর্ষ গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এতে ১৯৫৬ সালে অকল্যান্ডে টেস্ট জয় থেকে শুরু করে ১৯৭৬ সালে ওয়েলিংটনে ভারতের বিপক্ষে জয় পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ১৭টি টেস্ট খেলার বিবরণ রয়েছে। এরপর এ সময়ের শীর্ষস্থানীয় ২২জন খেলোয়াড়ের জীবন-বৃত্তান্ত রয়েছে। অব নিউজিল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটে তিনি লিখেছেন যে, তুলনামূলকভাবে কমসংখ্যক ক্রিকেট খেলোয়াড়কে নিয়ে দলটি সর্বদাই উত্থান-পতনের মধ্যে অবস্থান করছে। পর্যাপ্ত উৎসাহের ফলেই নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট অগ্রসর হচ্ছে।[৮]

এরপর হান্ড্রেড ইয়ার্স অব ক্রিকেট: এ হিস্ট্রি অব দ্য ক্যান্টারবারি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন, ১৮৭৭-১৯৭৭ (১৯৭৭); হ্যাডলি (উইদ রিচার্ড হ্যাডলি) (১৯৮১); এ ক্রিকেট সেঞ্চুরি: দ্য ফার্স্ট হান্ড্রেড ইয়ার্স অব দ্য ল্যাঙ্কাস্টার পার্ক ক্রিকেট ক্লাব ইনকর্পোরেট (১৯৮১); টেস্ট সিরিজ ’৮২: দি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ট্যুর অব নিউজিল্যান্ড (উইদ ডন ক্যামেরন এবং চ্যাপ্টার্স বাই গ্রেগ চ্যাপেল এন্ড জিওফ হাওয়ার্থ) (১৯৮২) বিগ নেমস ইন নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট: ফিফটি প্রোফাইলস (১৯৮৩); দ্য নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটার্স হুজ হু (উইদ রিচার্ড হ্যাডলি এন্ড ফ্রান্সিস পেইন) (১৯৮৫); ইংল্যান্ড স্কিটলেড: নিউজিল্যান্ড ভার্সাস ইংল্যান্ড, ওয়েলিংটন, ১০-১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৮ (২০০০) গ্রন্থ প্রকাশ করেছিলেন।[৯]

অন্যান্য সম্পাদনা

এছাড়াও ডিক ব্রিটেনডেন ‘গিভ এম দি এক্স: দ্য ফার্স্ট হান্ড্রেড ইয়ার্স অব দ্য ক্রাইস্টচার্চ ফুটবল ক্লাব’ (১৯৬৩) ও নেপথ্যলেখক হিসেবে বার্ট সাটক্লিফের আত্মজীবনী বিটুইন ওভার্স (১৯৬৩) রচনা করেছিলেন।[১০] ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটারের প্রকাশকাল থেকে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও এর উত্তরসূরী ক্রিকেট প্লেয়ারের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৯৮৫ সালে ক্রীড়া সাংবাদিকতায় অনন্য সাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রাণীর জন্মদিনের সম্মাননায় ওবিই উপাধীধারী হন।[১১] ক্রাইস্টচার্চভিত্তিক ল্যাঙ্কাস্টার পার্কের প্রেস বক্স তার সম্মানে নামাঙ্কিত হয়।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। অক্টোবর, ১৯৪০ সালে জয় ম্যানটেল নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। এ দম্পতির পাঁচ সন্তান ছিল।[১][১২] তার নাতি নিক পেরি এসোসিয়েটেড প্রেসে সাংবাদিকতা পেশায় রয়েছেন।[১৩] ১০ জুন, ২০০২ তারিখে ক্রাইস্টচার্চে ডিক ব্রিটেনডেনের দেহাবসান ঘটে।[১৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Taylor, Alister; Coddington, Deborah (১৯৯৪)। Honoured by the Queen – New Zealand। Auckland: New Zealand Who's Who Aotearoa। পৃষ্ঠা 78। আইএসবিএন 0-908578-34-2 
  2. "Dick Brittenden" by Matthew Appleby Retrieved 14 February 2013
  3. Wisden 2003, p. 1616.
  4. R.T. Brittenden, Great Days in New Zealand Cricket, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1958, pp. 183-95.
  5. R.T. Brittenden, New Zealand Cricketers, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1961, pp. 1-4.
  6. R.T. Brittenden, Great Days in New Zealand Cricket, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1958, dust jacket author's note.
  7. R.T. Brittenden, New Zealand Cricketers, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1961, pp. xi.
  8. Dick Brittenden, The Finest Years, A.H. & A.W. Reed, Wellington, 1977, p. 3.
  9. National Library of New Zealand catalogue Retrieved 14 February 2013
  10. "Cricket legend dies"। Times Newspapers। এপ্রিল ২৩, ২০০১। ২৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  11. "নং. 50155"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ১৫ জুন ১৯৮৫। 
  12. "[untitled]"Press: 2। ৭ অক্টোবর ১৯৪০। 
  13. "Seattle Times journalist named to AP New Zealand post"FOX NewsAssociated Press। ২৪ মে ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৭ 
  14. McConnell, Lynn (১১ জুন ২০০২)। "Dick Brittenden enjoyed rewards for his cricket perseverance"ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুলাই ২০১৭