ডমিনো শো
একটি ডোমিনো শো এর সূচনা হয় ডমিনোকে পর্যায়ক্রমে দাড় করানোর মাধ্যমে, যেখানে প্রত্যেক ডমিনো একটা শিকলের ন্যায় সজ্জিত থাকে; এবং একটা ডমিনোর পতনের কারণে চেইন রিয়েকশনের ফলে অপরাপর ডমিনো সমুহ পড়তে থাকে। একে ডমিনো ইফেক্ট বলে। শুধুমাত্র প্রথম ডমিনোকে হাত দিয়ে ফেলা যায়। পুরো পৃথিবী জুড়ে মানুষ চেষ্টা করে অবিশ্বাস্য রকম ডমিনো প্রজেক্ট তৈরী করতে। এই প্রজেক্টের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির একটি উপাদান হল: বিপজ্জনক প্রকৃতি। কারণ বাতাস বা প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত একটু ধাক্কা পুরো প্রজেক্টকে গুবলেট বানিয়ে দিতে পারে। প্রত্যেকেই জানে; ডমিনোর নতুন নতুন সেটগুলো এক একটা নতুন নতুন রিস্ক। কারণ একটা সেটেও যদি কোনো ত্রুটির কারণে কোনো ডমিনো আন্দোলিত হয়; তাহলে সম্পন্ন হওয়া পুরো ডমিনোর সব সেটই পরে যাবে।
ভিন্ন ভিন্ন রংয়ের ডমিনো ব্যবহার করে এর প্রস্তুতকারক নানা বিন্যাস ও নানা রকম ছবির সৃষ্টি করে থাকে। ডমিনোতে সামনে এবং পিছনে ভিন্ন ভিন্ন রং থাকতে পারে; এর ফলে ডমিনো গুলো যখন দাড়িয়ে থাকে তখন এক রং এবং যখন নিচে পতিত হয়; তখন ভিন্ন রং ধারণ করে এবং দর্শকের সামনে প্রদর্শন করে।
অন্য ট্রিকস এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়; বিভিন্ন গঠন যেমনঃ নানাবিন্যাস এবং বর্ণ আকারেও এখানে সাজানো হয়। এর জন্য বিশেষ কৌশল প্রয়োগ করা হয়।
১৯৭৬ সালে ১৮ বছর বয়সে বব স্পেকা, ব্রুমালের, জেআর প্রথম ডমিনো শো প্রদর্শন করে, এবং ঘোষিত (অফিসিয়াল) বিশ্বরেকর্ড করে। যেখানে ১১,১১১ টি ডমিনো চেইন রিয়েকশনের মাধ্যমে নিচে পতিত হয়।[১] এই আয়োজন এবং দ্য টুনাইট শোতে তার উপস্থিতি[২] ডমিনো প্রস্তুতকারকদের (বিল্ডার) মধ্যে ডমিনো পতনের এক হুজুগ (ক্রেজ) তৈরী করে, তারা বিশ্বরেকর্ড করার লক্ষ্যে নিজেদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। ১৯৮৪ সালে, জার্মানির ক্লাউস ফ্রেডরিচ একক হাতে ডমিনো ফেলার সর্বশেষ বিশ্বরেকর্ড গড়েন।[৩] একইবছর টেম্পল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী-চলচ্চিত্র পরিচালক শেরি হারম্যান এবং বোনি কাটলার একটি চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনা করেন। যার শিরোনাম ছিল এণ্ড দে অল ফল ডাউন (AND THEY ALL FALL DOWN), যা বব স্পেকার মেধা প্রদর্শন করে। এই চলচ্চিত্রটি বার্লিন ফিল্ম মিউজিয়াম এর স্থায়ী সংগ্রহ হিসেবে আছে।
১৯৯৮ সালে নেদারল্যাণ্ড একটি বিরাট ডমিনো পতন শো প্রদর্শনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়। একে বলা হয়েছিল ডমিনো ডি-ডে। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয়েছে ডমিনো ডে, এই দিনের অনুসরণে ২০০৯ সাল নাগাদ প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠান পালিত হতে থাকে। ২০১০ সাল থেকে আর্থিক ও প্রশাসনিক কারণে এই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। ডমিনো ডে তে বিল্ডারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়; ডমিনোর এরকম পতনকে "ঘড়ির কাটার চেয়ে দ্রুত গতিশীল" এই মতবাদের জন্ম দিয়ে তা জনপ্রিয় করে তুলে।
২০১৫ সাল থেকে ইনক্রিডিবল সায়েন্স মেশিন নামক একটি আন্তর্জাতিক বহুমাত্রিক সংস্থা প্রতিবছর অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ডমিনো ফেলার সাম্প্রতিক একটি বিশ্বরেকর্ড করে। তাদের ডমিনোর সংখ্যা ছিল ২,৫০,০০০।[৪]
তথ্যসূত্র সম্পাদনা
বহিঃসংযোগ সম্পাদনা
- Reuters article plus two-minute video of Domino Day 2006 (URL last accessed December 30, 2006)
- A list of links related to domino-toppling.