ডগ ইনসোল

ইংরেজ ক্রিকেটার

ডগলাস জন ডগ ইনসোল, সিবিই (ইংরেজি: Doug Insole; জন্ম: ১৮ এপ্রিল, ১৯২৬ - মৃত্যু: ৫ আগস্ট, ২০১৭) লন্ডনের ক্ল্যাপটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৭ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন তিনি। এছাড়াও, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়এসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ডগ ইনসোল। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন তিনি।

ডগ ইনসোল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
ডগলাস জন ইনসোল
জন্ম(১৯২৬-০৪-১৮)১৮ এপ্রিল ১৯২৬
ক্ল্যাপটন, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু৫ আগস্ট ২০১৭(2017-08-05) (বয়স ৯১)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৪৯)
২০ জুলাই ১৯৫০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ টেস্ট৩০ মে ১৯৫৭ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪৫০
রানের সংখ্যা ৪০৮ ২৫,২৪১
ব্যাটিং গড় ২৭.১৯ ৩৭.৬১
১০০/৫০ ১/১ ৫৪/১২৬
সর্বোচ্চ রান ১১০* ২১৯*
বল করেছে ৯,০২০
উইকেট ১৩৮
বোলিং গড় ৩৩.৯১
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৮/– ৩৬৬/৬
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১১ আগস্ট ২০১৭

খেলোয়াড়ী জীবন

সম্পাদনা

সেন্ট ক্যাথারিন্স কলেজে ইতিহাস বিষয়ে অধ্যয়নকালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর অনেকগুলো বছর এসেক্সের অধিনায়ক মনোনীত হন। এসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২০,১১৩ রান তুলেন। এ সংগ্রহটি ক্লাবের ইতিহাসে নবম শীর্ষস্থানীয়। দলে তিনি উইকেট-রক্ষক, ব্যাটসম্যান এবং বোলার হিসেবেও খেলেছেন।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে নয়টি টেস্টে অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে, ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেই খেলেন পাঁচটি। এ সফরে দলনায়ক পিটার মে’র সহঃ অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

করিন্থিয়ান-কজুয়ালস এফ.সি’র প্রথম একাদশের শৌখিন ফুটবলার ছিলেন। বিশপ অকল্যান্ডের কাছে হারার পর পুনরায় ১৯৫৬ সালে এফএ অ্যামেচার কাপের চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেন।[]

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর প্রথিতযশা ক্রিকেট প্রশাসকের দায়িত্বে ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ও এমসিসি’র সভাপতি মনোনীত হন।

১৯৬০-এর দশকে ইংল্যান্ড দলনির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি হন। ১৯৬৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ব্যাসিল ডি’অলিভেইরাকে অন্তর্ভুক্ত না করার ফলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদপ্রথার কারণেই অলিভেইরাকে উপেক্ষিত হতে হয়। ফলশ্রুতিতে কূটনীতিবিহীন অবস্থায় বর্ণবাদের দায়ে অভিযুক্ত হয় দক্ষিণ আফ্রিকা দল।[]

১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে[]১৯৮২-৮৩ মৌসুমের অ্যাশেজ সফরে দল পরিচালনা করেন।[] ২০০৬ পর্যন্ত নয় বছরের জন্য ইউরোপীয় ক্রিকেট কাউন্সিলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।[][] তার স্থলাভিষিক্ত হন রজার নাইট।

৫ আগস্ট, ২০১৭ তারিখে ৯১ বছর বয়সে ইনসোলের দেহাবসান ঘটে। পরদিন এসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করে।[]

বিতর্ক

সম্পাদনা

১৯৬৭ সালে অপরাজিত ২৪৬* রান তোলার পরও ইনসোলের দায়িত্ব পালনকালীন জিওফ্রে বয়কটকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়। বয়কটকে উপেক্ষিত করার বিষয়টি ৪০ বছর পরও সমুচ্চারিত হয়ে আসছে। ২৪ মার্চ, ২০০৮ তারিখে নেপিয়ারে অনুষ্ঠিত নিউজিল্যান্ড বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় টেস্টে ধারাভাষ্যে এ কথা ফুঁটে উঠে। এরপর ৭ জুন, ২০১২ তারিখে এজবাস্টনে ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার টেস্ট চলাকালীন টেস্ট ম্যাচ স্পেশালের ধারাভাষ্যে ইনসোল সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেন যে, ‘এ’এর ন্যায় তার নামকে ছেঁটে দিয়েছেন তিনি।[] ৯ আগস্ট, ২০১৪ তারিখে আবারো ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ৪র্থ টেস্টে ইনসোলের নাম উচ্চারিত হয় ও বয়কটের বাক্যবাণে জর্জরিত হন তিনি। এর পুণরাবৃত্তিতে ইনসোলের নাম ভেঙ্গে যায় ও জোনাথন অ্যাগ্নিউ দ্রুত নীরব করে দেন।[]

সম্মাননা

সম্পাদনা

১৯৫৬ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[] ১ অক্টোবর, ২০০৬ তারিখে বারো মাসের জন্য এমসিসি’র সভাপতি হন। ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৯ সালে সিবিই পদবীতে ভূষিত হন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 98আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Peter Mason (৬ আগস্ট ২০১৭)। "Doug Insole obituary"The Guardian 
  3. ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ডগ ইনসোল (ইংরেজি) by David Liverman
  4. ECC (জুলাই ৭, ২০০৬)। "Roger Knight to succeed Doug Insole as ECC Chairman"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৭, ২০১৭ 
  5. "Doug Insole (1926-2017)"। Essex County Cricket Club। ৬ আগস্ট ২০১৭। 
  6. "England v West Indies, third Test, day one, Edgbaston as it happened"। London: BBC। ৭ জুন ২০১২। ৮ জুন ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জুন ২০১২ 
  7. TMS
  8. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা