টি. মোহনদাস পাই

ভারতীয় ব্যবসায়িক নির্বাহী (১৯৩৩-২০২২)

টনসে মোহানদাস পাই (২০ জুন ১৯৩৩ – ৩১ জুলাই ২০২২) ছিলেন একজন ভারতীয় ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং কন্নড় ভাষার দৈনিক পত্রিকা উদয়বাণী-এর প্রতিষ্ঠাতা।

টি. মোহনদাস পাই
জন্ম
টনসে মোহানদাস পাই

(১৯৩৩-০৬-২০)২০ জুন ১৯৩৩
মৃত্যু৩১ জুলাই ২০২২(2022-07-31) (বয়স ৮৯)
উডুপি, কর্ণাটক, ভারত
মাতৃশিক্ষায়তনপুনে বিশ্ববিদ্যালয়
পেশাব্যবসায়িক নির্বাহী এবং জনহিতৈষী

তিনি মণিপাল শহরের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। মণিপাল গ্রুপ এবং মণিপাল একাডেমি অব হায়ার এডুকেশন-এর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যার ফলে শহরটি ভারতের একটি প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র হয়ে ওঠে। তাঁর নেতৃত্বে কাস্তুরবা মেডিকেল কলেজ ও অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা মণিপালকে শিক্ষা ও চিকিৎসার কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত করেছে। পাশাপাশি, তিনি নগর উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন, যা মণিপালকে আধুনিক ও উন্নত শহরে রূপান্তরিত করেছে। এ উন্নয়নে তাঁর অবদানের জন্য তাঁকে "আধুনিক মণিপালের স্থপতি" বলা হয়।

প্রারম্ভিক জীবন

সম্পাদনা

মোহানদাস পাই ছিলেন টি.এম.এ. পাইয়ের জ্যেষ্ঠ পুত্র, যিনি পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং মণিপাল গ্রুপ অব ইনস্টিটিউশনের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ২০ জুন ১৯৩৩ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তারা দশ ভাই-বোন ছিল।[][][] তিনি দক্ষিণ ভারতের উদুপি শহরের উদুপি বোর্ড স্কুল থেকে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে উদুপি এমজিএম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট স্তরের শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর তিনি বর্তমান মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে গিয়ে পুনে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন।[][]

কর্মজীবন

সম্পাদনা

১৯৫৩ সালে পড়াশোনা শেষে পাই মণিপালে ফিরে আসেন এবং তাঁর বাবার প্রতিষ্ঠিত কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। তিনি পরিবারের পরিচালিত কানারা ল্যান্ড ইনভেস্টমেন্টসে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেন। এছাড়াও, তিনি মণিপাল পাওয়ার প্রেসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার হিসেবে নেতৃত্ব দেন। ১৯৬০-এর দশকে তিনি স্বয়ংক্রিয় টাইপসেটিং প্রবর্তন করেন এবং প্রেসের আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।[] পরবর্তীতে তিনি কন্নড় ভাষার দৈনিক উদয়বাণী প্রতিষ্ঠা করেন।[][]

পাই আধুনিক ছাপাখানার যন্ত্রপাতি প্রবর্তন এবং মণিপাল মিডিয়া নেটওয়ার্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।[] তিনি উপকূলীয় কর্ণাটকে শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এমজিএম যক্ষগান কেন্দ্র, আঞ্চলিক লোকনাট্য কেন্দ্র, এবং রাষ্ট্রীয় কবি গোবিন্দ পাই গবেষণা কেন্দ্র-এর মতো প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।[]

তিনি আইসিডিএস লিমিটেড, একটি অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং পরিচালক হিসেবেও কাজ করেন।[][] মণিপাল শহরের উন্নয়নে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে "আধুনিক মণিপালের স্থপতি" বলা হয়।[] তাঁর বাবা মণিপালকে শিক্ষা, চিকিৎসা, এবং অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ শুরু করেছিলেন, পাই সেই প্রচেষ্টাকে আরও এগিয়ে নিয়ে গেছেন।[][]

তিনি উদ্যোক্তা বিজয়নাথ শেনয়ের সঙ্গে মণিপালে একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম স্থাপন করেন।[][] পাশাপাশি, টি. এম. এ. পাই ফাউন্ডেশন-এর সভাপতি হিসেবে তিনি কঙ্কণী সাহিত্য এবং মণিপাল অঞ্চলের সামাজিক উন্নয়নে কাজ করেন।[][]

মৃত্যু

সম্পাদনা

মোহানদাস পাই ৩১ জুলাই ২০২২ সালে উদুপিতে ৮৯ বছর বয়সে মারা যান।[][]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Head of Kannada daily Udayavani T Mohandas Pai passes away at 89"The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ আগস্ট ২০২২। ৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  2. "T. Mohandas Pai, architect of modern Manipal, passes away"The Hindu (ইংরেজি ভাষায়)। ৩১ জুলাই ২০২২। আইএসএসএন 0971-751X। ২ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  3. Web Desk। "India: Manipal businessman T Mohandas Pai passes away at 89"Khaleej Times (ইংরেজি ভাষায়)। ২ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  4. Yamini C S (১ আগস্ট ২০২২)। "T Mohandas Pai, founder of Kannada daily 'Udayavani', passes away at 89"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। ৪ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  5. "Kannada daily 'Udayavani' founder T Mohandas Pai passes away at 89"The Economic Times। ৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  6. "Udupi: Dr TMA Pai's legacy, Udayavani founder T Mohandas M Pai passes away at 89"www.daijiworld.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৬ আগস্ট ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২২ 
  7. "'Dr T M A Pai, Dr T A Pai brought changes in lives of many'"Deccan Herald (ইংরেজি ভাষায়)। ১ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০২২ 
  8. "Hasta Shilpa Kala Village – Indian Rich Heritage Story and Culture"Karnataka Tourism (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০২২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. "Dr. TMA Pai Foundation Manipal – Best Konkani Book Award"drtmapaifoundation.com। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০২২