টালা ট্যাঙ্ক
শুধু পশ্চিমবঙ্গের নয়, বিশ্বের অন্যতম বৃহত্ খাবার জলের ট্যাংক কলকাতার টালা ট্যাংক। এবার সেই ট্যাংকের শতবর্ষপূর্তি পালিত হচ্ছে। টানা ১০০ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কলকাতার মানুষকে পরিশুদ্ধ খাবার জল সরবরাহ করে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে এই টালা ট্যাংক। বিশ্বের বৃহত্তম এই জলের ট্যাংকটি তৈরি হয়েছে গ্যালভানাইজড লোহার চাদর দিয়ে। ১১০ ফুট উচ্চতায় এই ৩২১ ফুট পরিধি বিশিষ্ট ট্যাংকটি দাঁড়িয়ে রয়েছে ৯০ লাখ গ্যালন পানি ধারণ করে। ট্যাংকটির গভীরতা ১৬ ফুট। দিনের ২৪ ঘণ্টাই একদিক দিয়ে পানি সরবরাহ করা হয়, অন্যদিক দিয়ে উত্তর শহরতলির পলতা থেকে পরিশুদ্ধ পানি এসে ভর্তি করে ট্যাংকটি। আর সেই পানি ভূগর্ভস্থ পাইপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় উত্তর শহরতলির সিঁথি থেকে দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর (কলকাতা)।ভবানীপুর পর্যন্ত গৃহস্থের ঘরে ঘরে। ব্রিটিশরাই শুধু লোহালক্কড় দিয়ে তৈরি করেছিল ওই বিশালাকার ট্যাংকটি। ১৯০৯ সালে এর ভিত্তি স্থাপন করা হয়। অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন লেফটেন্যান্ট গভর্নর অ্যাডওয়ার্ড বেকার এর ভিত্তি স্থাপন করেন। ওই প্রকল্পের কাজ করেছিল ইংল্যান্ডের লিডসের বিখ্যাত ক্লেটন সন অ্যান্ড কোম্পানি। ট্যাংকটি তৈরি করতে সেই যুগে খরচ হয়েছিল পাঁচ লাখ রুপি। সময়ের ব্যবধানে টালা ট্যাংক মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। কলকাতারও এক গর্বের দ্রষ্টব্য এই ট্যাংক। তবে ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই। [১]
টালা ট্যাঙ্ক | |
---|---|
সাধারণ তথ্য | |
অবস্থা | সক্রিয় |
অবস্থান | নগরীর কাজিপাড়া এলাকায় অবিস্থিত |
শহর | কলকাতা |
দেশ | ভারত |
নির্মাণকাজের আরম্ভ | ১৯০৯ |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি উদযাপন | ১৯১১ |
নির্মাণকাজের সমাপ্তি | ১৯১১ |
খোলা হয়েছে | ১৯১১ |
নির্মাণব্যয় | ৫,০০,০০০ টাকা |
উচ্চতা | ১৮ ফুট |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | সিমেন্ট, কাস্ট আয়রণ, |
পরিচিতির কারণ | কলকাতার ঐতিহ্যবাহী জল সরবরাহ প্রকল্প বিশ্বের বৃহত্তম জলাধার |
জলধারণ ক্ষমতা
সম্পাদনাটালা ট্যাঙ্কের একারই জলধারণ ক্ষমতা ৯০ লক্ষ গ্যালন। সে ক্ষেত্রে কোনও কারণে ট্যাঙ্ক ফেটে গেলে তা কলকাতা শহরের একটা বড় অংশ ভাসিয়ে দিতে পারে। অথচ টাকার অভাবে কিছু করাও যাচ্ছিল না। পলতায় গঙ্গা থেকে পরিশোধিত জল প্রায় ২২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ৬টি পাইপের মাধ্যমে টালায় পৌঁছায়। তা জমা হয় নিচের জলাধারে। সেখান থেকে ৬০ ইঞ্চি পাইপে সেই জল ওঠে মাটি থেকে প্রায় ১১০ ফুট উপরের ওই ট্যাঙ্কে। পুরসভার দাবি, এশিয়ার বৃহত্তম এই জলাধার এক সময়ে সারা কলকাতায় জল সরবরাহ করত। পরে গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প হওয়ায় টালার উপরে চাপ কিছুটা কমেছে।
সমস্যা
সম্পাদনা১০০ বছরের বেশি পুরোনো এই জলাধার বা ট্যাঙ্কটির বিভিন্ন অংশে ছিদ্র হয়েছে।ফলে এই ছিদ্র গুলি ট্যাঙ্কের জলধারণ ক্ষমতা কমেছে।এছাড়া কিছু লোহার পাতে ক্ষয় ধরেছে।
সংস্কার
সম্পাদনাসংস্কারের কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে অম্রুতের সাহায্য মোট ব্যয়ের এক তৃতীয়াংশ, অর্থাৎ প্রায় ২৬ কোটি টাকা। রাজ্য সরকার দেবে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা এবং বাকি আট কোটি দেবে পুরসভা।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "টালা ট্যাঙ্কের শরীরে অসুখ, বাসা বেঁধেছে অজস্র ছিদ্র, ফাটল"। ২৪ ঘণ্টা। সংগ্রহের তারিখ ০৭-০১-২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)