টনি ডেল

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

অ্যান্থনি রস টনি ডেল (ইংরেজি: Tony Dell; জন্ম: ৬ আগস্ট, ১৯৪৭) হ্যাম্পশায়ারের লিমিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ বংশোদ্ভূত সাবেক কোচ ও অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকের সূচনাকালে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

টনি ডেল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামঅ্যান্থনি রস ডেল
জন্ম (1947-08-06) ৬ আগস্ট ১৯৪৭ (বয়স ৭৬)
লিমিংটন, হ্যাম্পশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার, কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৫৫)
১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৩ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪১
রানের সংখ্যা ১৬৯
ব্যাটিং গড় - ৫.৬৩
১০০/৫০ -/- -/-
সর্বোচ্চ রান ৩* ১৩*
বল করেছে ৫৫৯ ৮৫৪৯
উইকেট ১৩৭
বোলিং গড় ২৬.৬৬ ২৬.৭০
ইনিংসে ৫ উইকেট -
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৩/৬৫ ৬/১৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং -/- ১৮/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ জুন ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন টনি ডেল

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

ইংল্যান্ডে টনি ডেলের জন্ম। ১৪ বছর বয়সে কুইন্সল্যান্ডে তার বাবা স্থানান্তরিত হলে অস্ট্রেলিয়ায় আবাস গড়েন।[১] ব্রিসবেনভিত্তিক অ্যাঙ্গলিকান চার্চ গ্রামার স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি।[২]

১৯৭০-৭১ মৌসুম থেকে ১৯৭৪-৭৫ মৌসুম পর্যন্ত টনি ডেলের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। মজবুত গড়নের বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার ছিলেন। তবে, লিলি, জেফ থমসন, ম্যাক্স ওয়াকার, জিওফ ডাইমক ও গ্যারি গিলমোরের ন্যায় পেস বোলারদের প্রাচুর্যতায় অস্ট্রেলিয়া দলে নিয়মিতভাবে খেলার সুযোগ পাননি এবং তার খেলার সুযোগ প্রকৃতই সীমিত ছিল। এছাড়াও, তার খেলোয়াড়ী জীবন বেশ সংক্ষিপ্ত ছিল। মাত্র পাঁচটি ঘরোয়া মৌসুম খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন টনি ডেল। ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭১ তারিখে সিডনিতে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৯ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ তারিখে মেলবোর্নে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

টনি ডেল ফাস্ট-মিডিয়াম সিম বোলার ছিলেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল অস্ট্রেলিয়ায় পদার্পণ করে। সিডনিতে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজ সিরিজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সপ্তম টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অস্ট্রেলিয়াকে অবশ্যই জয়লাভ করতে হবে এ লক্ষ্য নিয়ে ডেনিস লিলি’র সাথে বোলিং উদ্বোধনে নামেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ২/৩২ পান। জন এডরিচকে গ্রেগ চ্যাপেলের হাতে ৩০ রানে এবং ব্যাসিল ডি’অলিভেইরাকে ১ রানে বোল্ড করলে এক পর্যায়ে ইংল্যান্ড দলের সংগ্রহ ৯৮/৫ হয়। পরবর্তীতে সফরকারী দলটি ১৮৪ রানে গুটিয়ে যায়।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৩/৬৫ নিয়ে দলের সেরা বোলার হন। ইংল্যান্ড দল ৩০২ রান তুলে ও অস্ট্রেলিয়ার জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ২২৩ রান হয়। ডেল সবশেষে মাঠে নামেন। উভয় ইনিংসেই তিনি ৩ রান তুলে অপরাজিত ছিলেন। খেলায় দল পরাজিত হয় ও অ্যাশেজ খোঁয়ায়। ১৯.৪০ গড়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে ডেনিস লিলি’র ২৪.৮৭ গড়ে আট উইকেট লাভের চেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। ইয়ান চ্যাপেল ১০.০০ গড়ে এক উইকেট পান। তার অপর উইকেটটি ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে মেলবোর্নে সফররত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে পেয়েছিলেন। ঐ টেস্টে তিনি ব্যাট হাতে মাঠে নামার সুযোগ পাননি। তবে, ১/৫৪ ও ০/৯ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস বিজয়ে যুক্ত হয়েছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৯ মে, ১৯৬৭ তারিখ থেকে ২৬ মার্চ, ১৯৬৮ তারিখ পর্যন্ত রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান রেজিম্যান্টের অধীন দ্বিতীয় ব্যাটালিয়নে ন্যাশনাল সার্ভিসম্যান হিসেবে ভিয়েতনাম যুদ্ধ অংশ নেন।[৩] নুই ডেটে অস্ট্রেলীয় ঘাঁটির আশেপাশে কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।[১] সামরিক বাহিনীতে অংশগ্রহণের ফলে টনি ডেল পিটিএসডিতে আক্রান্ত হন ও ২০০৮ সাল পর্যন্ত চিকিৎসাবিহীন ছিলেন। পিটিএসডি সহায়তাকারী সংঘ স্ট্যান্ড টল ফর পিটিএসের মাধ্যমে তাকে চিহ্নিত করা হয়।[৪][৫]

১৯৯০-এর দশকে ব্রিসবেনভিত্তিক বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করেন। প্রতিষ্ঠানটি অবলোপনের পূর্ব-পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেছিলেন টনি ডেল।[১] খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর বিশ্বব্যাপী কুইন্সল্যান্ডের সানশাইন কোস্টভিত্তিক অস্ট্রেলিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্ট একাডেমি’র আর্থিক তহবিল গঠনে কাজ করছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Greg Growden, Cricketers at War, ABC Books, Sydney, 2019, pp. 293–303.
  2. Mason, James (২০১১)। Churchie: The Centenary Register। Brisbane, Australia: The Anglican Church Grammar School। আইএসবিএন 978-0-646-55807-3 
  3. http://www.vietnamroll.gov.au/VeteranDetails.aspx?VeteranId=1275902
  4. Coverdale, Brydon। "Tony Dell still standing tall"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জানুয়ারি ২০১৫ 
  5. Kieza, Grantlee (নভেম্বর ২৫, ২০১৩)। "Tony Dell, the Test fast bowler who went from Vietnam killing fields to war with the English in Ashes"The Courier-Mail। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ১৪, ২০১৫ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা