জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর

জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর (২৪ জানুয়ারি, ১৮২৬ – ৫ জানুয়ারি, ১৮৯০) ছিলেন আইনবিদ্যার ইতিহাসে প্রথম এশীয় ব্যারিস্টার।[১]

জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর
জন্ম(১৮২৬-০১-২৪)২৪ জানুয়ারি ১৮২৬
মৃত্যু৫ জানুয়ারি ১৮৯০(1890-01-05) (বয়স ৬৩)
পেশাব্যারিস্টার
দাম্পত্য সঙ্গীকমলমণি

প্রথম জীবন সম্পাদনা

জ্ঞানেন্দ্রমোহন ঠাকুর ছিলেন ঠাকুর পরিবারের পাথুরিয়াঘাটা শাখার গোপীমোহন ঠাকুরের (হিন্দু কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা) পৌত্র এবং প্রসন্নকুমার ঠাকুরের পুত্র। হিন্দু কলেজে তার সহপাঠী ছিলেন রাজনারায়ণ বসু ও গোবিন্দ্রচন্দ্র দত্ত (তরু দত্তের পিতা)। ১৮৪১ সালে মাসিক ৪০ টাকা সিনিয়র স্কলারশিপ নিয়ে ১৮৪২ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। যদিও তিনি চিকিৎসাবিদ্যার পাঠ সমাপ্ত করেননি।[১]

১৮৫১ সালে শিক্ষক কৃষ্ণমোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাবে জ্ঞানেন্দ্রমোহন খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হন এবং কৃষ্ণমোহনের কন্যা কমলমণিকে বিবাহ করেন।[১] এর ফলে প্রসন্নকুমার তাকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন এবং সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করেন।[২] প্রসন্নকুমার তার বিশাল সম্পত্তি ভ্রাতুষ্পুত্র মহারাজা বাহাদুর স্যার যতীন্দ্রমোহন ঠাকুরকে দান করে গিয়েছিলেন।[৩] অবশ্য জ্ঞানেন্দ্রমোহন পরে মামলা করে সম্পত্তির কিছু অংশ পেয়েছিলেন।[১]

পরবর্তী জীবন সম্পাদনা

১৮৫৯ সালে চিকিৎসার জন্য জ্ঞানেন্দ্রমোহন সস্ত্রীক ইংল্যান্ডে যান। আরোগ্যলাভের পর তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দু আইন ও বাংলা ভাষার শিক্ষক রূপে যোগদান করেন। আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৮৬২ সালে তিনি লিঙ্কন’স ইনে বারে ডাক পান। তিনিই ছিলেন প্রথম এশীয় ব্যারিস্টার।[১] ১৮৬৪ সালে জ্ঞানেন্দ্রমোহন ভারতে ফিরে আসেন এবং ১৮৬৫ সালে কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দেন।[১]

১৮৬৯ সালে স্ত্রীর মৃত্যুর পর দুই কন্যা ভবেন্দ্রবালা ও সত্যেন্দ্রবালাকে নিয়ে জ্ঞানেন্দ্রমোহন ইংল্যান্ডে ফিরে যান।[১] ১৮৭৭ সালে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী জ্ঞানদানন্দিনী দেবী পুত্রকন্যা নিয়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে কিছুদিনের জন্য তার বাড়িতে উঠেছিলেন।[৪] ইংল্যান্ডেই জ্ঞানেন্দ্রমোহনের মৃত্যু হয়।[১] তাকে লন্ডনের ব্রম্পটন কবরখানায় সমাহিত করা হয়।[৫]

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. Sengupta, Subodh Chandra and Bose, Anjali (editors), Sansad Bangali Charitabhidhan (Biographical dictionary) Vol I, 1976/1998, (বাংলা), p. 184, Sahitya Sansad, আইএসবিএন ৮১-৮৫৬২৬-৬৫-০
  2. Deb, Chitra, Jorasanko and the Thakur Family, in Calcutta, the Living City, Vol I, edited by Sukanta Chaudhuri, p. 65, Oxford University Press, আইএসবিএন ০-১৯-৫৬৩৬৯৬-১
  3. Cotton, H.E.A., Calcutta Old and New, 1909/1980, p. 345, General Printers and Publishers Pvt. Ltd.
  4. Devi Choudhurani, Indira, Smritisamput, (বাংলা), Rabindrabhaban, Viswabharati, pp. 3-4
  5. অসিত দাস। "বাঙালির ১৩০ বছরের ভুলের বোঝা কমল"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৯