জে. ক্যারল নেইশ

মার্কিন অভিনেতা

জোসেফ প্যাট্রিক ক্যারল নেইশ (ইংরেজি: Joseph Patrick Carroll Naish; পেশাগতভাবে জে. ক্যারল নেইশ নামে পরিচিত, ২১ জানুয়ারি ১৯০০ - ২৪ জানুয়ারি ১৯৭৩) ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেতা। তিনি প্রায় দুইশত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।[১] সাহারা (১৯৪৩) ও আ মেডেল অব বেনি (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি দুবার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং আ মেডেল অব বেনি (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন। তিনি পরবর্তী কালে সিবিএস রেডিওর লাইফ উইথ লুইজি (১৯৪৮-১৯৫৩)-এ নাম ভূমিকায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন। টেলিভিশনে তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬০ সালে হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত তারকা খচিত হয়।[২]

জে. ক্যারল নেইশ
J. Carrol Naish
লাইফ উইথ লুইজি (১৯৫০)-এ নেইশ
জন্ম
জোসেফ প্যাট্রিক ক্যারল নেইশ

(১৯০০-০১-২১)২১ জানুয়ারি ১৯০০
মৃত্যু২৪ জানুয়ারি ১৯৭৩(1973-01-24) (বয়স ৭৩)
লা জোলা, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
সমাধিকালভারি সমাধি, পূর্ব লস অ্যাঞ্জেলেস
অন্যান্য নামক্যারল নেইশ
পেশাঅভিনেতা
কর্মজীবন১৯২৬-১৯৭১
দাম্পত্য সঙ্গীগ্লাডিস হিয়ানি
(বি. ১৯২৯; মৃ. ১৯৭৩)
সন্তান
পুরস্কারগোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার (১৯৪৪)

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

নেইশ ১৮৯৬ সালের ২১শে জানুয়ারি নিউ ইয়র্ক সিটিতে জন্মগ্রহণ করেন।[৩] তার পিতা প্যাট্রিক নেইশ ১৮৯০ সালে আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি লিমেরিক থেকে অভিবাসিত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। প্যাট্রিক ছিলেন আয়ারল্যান্ডের লর্ড চ্যান্সেলর জন নেইশের ভ্রাতুষ্পুত্র।

তিনি গুস এডওয়ার্ডসের ভডেভিল দলে শিশু শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তিনি নৌবাহিনীতে যোগ দেন এবং তাকে ইউরোপে পাঠানো হয়।[৩] পরে নেইশ প্যারিসে তার নিজের গান ও নাচের দল গঠন করেন।

কর্মজীবন সম্পাদনা

নেইশ পর্দায় স্বীকৃতিহীন হোয়াট প্রাইস গ্লোরি? (১৯২৬) চলচ্চিত্রে ছোট ভূমিকায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে বড় পর্দায় আবির্ভূত হন। তার প্রথম বড় কাজ ছিল দ্য হ্যাচেট ম্যান। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এডওয়ার্ড জি. রবিনসন এবং নেইশকে একজন চীনা ব্যবসায়ী হিসেবে দেখা যায়।[৩] তিনি সাহার (১৯৪৩) চলচ্চিত্রে গুসেপ্পে চরিত্রে অভিনয় করে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এই চলচ্চিত্রে তার প্রদত্ত যুদ্ধকালীন সংলাপটি যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রের অন্যতম মর্মস্পর্শী সংলাপ হিসেবে স্বীকৃত। দুই বছর পর তিনি আ মেডেল অব বেনি (১৯৪৫) চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকার পিতার চরিত্রে অভিনয় করেন,[৪] যার জন্য তিনি দ্বিতীয়বার শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং সেরা পার্শ্ব অভিনেতা বিভাগে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার অর্জন করেন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর বসলি ক্রাউদার তাকে "বেনির পিতা চরিত্রে স্নেহপ্রবণ ও বৈশিষ্ট্যমন্ডিত" বলে উল্লেখ করেন।[৩] তিনি পরবর্তীকালে সিবিএস রেডিওর লাইফ উইথ লুইজি (১৯৪৮-১৯৫৩)-এ নাম ভূমিকায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন।

 
১৯৫২ সালে নেইশ পরিবারের তিন প্রজন্ম। বসা অবস্থায় প্যাট্রিক নেইশ, বামে দাঁড়ানো তার ছেলে জে. ক্যারল এবং ডানে দাঁড়ানো নাতনী এলাইন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

নেইশ ১৯২৯ সালে অভিনেত্রী গ্ল্যাডিস হিনিকে (১৯০৭-১৯৮৭) বিয়ে করেন। তাদের এলাইন নামে এক কন্যা ছিল। এলাইন নেইশ লাইফ উইথ লুইজি চলচ্চিত্রে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।[৫]

নেইশ এমফিসিমায় আক্রান্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৪শে জানুয়ারি তার ৭৭তম জন্মদিনের তিন দিন পর ক্যালিফোর্নিয়ার লা জোলার নিকটবর্তী স্ক্রিপস মেমোরিয়াল হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[২] তার মরদেহ ক্যালিফোর্নিয়ার ইস্ট লস অ্যাঞ্জেলেসের কালভারি সেমাট্রিতে সমাহিত করা হয়। টেলিভিশনে তার অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৩ সালের ২৭শে জানুয়ারি ৬১৪৫ হলিউড বুলেভারের হলিউড ওয়াক অব ফেমে তার নামাঙ্কিত তারকা খচিত হয়।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Overview for J. Carrol Naish"টার্নার ক্লাসিক মুভিজ। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ 
  2. র‍্যাউইচ, রবার্ট (২৭ জানুয়ারি ১৯৭৩)। "J. Carrol Naish"লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ 
  3. "J. Carrol Naish, Actor, 73, Dead"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৩। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২০ 
  4. দিস, মার্ক (২০০৮)। Hollywood Winners & Losers A to Z (ইংরেজি ভাষায়)। হ্যাল নিওনার্ড করপোরেশন। আইএসবিএন 978-0-87910-351-4। সংগ্রহের তারিখ ২১ জানুয়ারি ২০২০ 
  5. "Character Actor J. Carrol Naish Dies"। দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট। জানুয়ারি ২৭, ১৯৭৩। পৃষ্ঠা B10। 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা