জুলিয়েন ফাউন্টেন

ইংরেজ ক্রিকেটার

জুলিয়েন ফাউন্টেন (ইংরেজি: Julien Fountain; জন্ম: ২৫ জুলাই, ১৯৭০) সাসেক্সের শোরহাম-বাই-সী এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ইংরেজ ক্রিকেট কোচ ও গ্রেট ব্রিটেন অলিম্পিক বেসবল দলের সাবেক খেলোয়াড়। মূলতঃ তিনি বিশেষজ্ঞ ফিল্ডিং কোচ হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও, প্রধান কোচ ও সহকারী কোচেরও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

জুলিয়েন ফাউন্টেন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজুলিয়েন ফাউন্টেন
জন্ম (1970-07-25) ২৫ জুলাই ১৯৭০ (বয়স ৫৩)
শোরহাম-বাই-সী, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ডাকনামজুলস, দ্য প্রফেসর, দ্য বেসবল গাই
উচ্চতা৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাকোচ

ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, বাংলাদেশইংল্যান্ড দলের পক্ষে ৩৬ টেস্ট, ১০৬ ওডিআই ও ২৮ টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে কোচিং কর্মকর্তা ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। এতে পঞ্চাশ ওভারের দুইটি আইসিসি বিশ্বকাপ, একটি আইসিসি টি২০ বিশ্বকাপ, একটি এশিয়া কাপ ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও, ঘরোয়া বা বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত দলের পক্ষে বিভিন্ন অবস্থানে থেকে কোচের দায়িত্বে ছিলেন।

কোচিং সম্পাদনা

প্রথম বেসবল খেলোয়াড় হিসেবে যে-কোন টেস্ট ক্রিকেট দলে বিশেষজ্ঞ ফিল্ডিং কোচের দায়িত্ব পান। ১৯৯৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন।[১] ২০০০-০১ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে অতিরিক্ত ফিল্ডার হিসেবে মাঠে নামেন। ক্যানবেরার ম্যানুকা ওভালে প্রধানমন্ত্রী একাদশের বিপক্ষে খেলেন। বাউন্ডারি এলাকা থেকে সরাসরি আঘাত করে অ্যান্থনি ম্যাককুইরকে দৌঁড়ানো অবস্থায় আউট করলে এ দায়িত্ব পালনে আগ্রহ ব্যক্ত করেন।[২] অতিরিক্ত ফিল্ডার (১২শ ব্যক্তি) হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০১ ও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ২০১৩ সালে পাকিস্তানের পক্ষে মোট চারবার এ দায়িত্বে ছিলেন।

আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া বা বিশেষ প্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্রিকেট দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালে বিপিএল বিজয়ী ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের কোচিং কর্মকর্তা দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালে স্ট্যানফোর্ড সুপারস্টার্সের কোচিং কর্মকর্তা ছিলেন। অ্যান্টিগুয়ায় অনুষ্ঠিত স্ট্যানফোর্ড সুপার সিরিজে বিশ মিলিয়ন ডলারের একটি খেলায় দলটি ইংল্যান্ডকে পরাজিত করেছিল।

প্রধান কোচ সম্পাদনা

২০১০ সালের ৫ ওডিআইয়ের সমন্বয়ে গড়া মাইক্রোম্যাক্স ওডিআই সিরিজে জিম্বাবুয়ে স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে অংশ নেয়। জেমি সিডন্স তার ২য় সন্তানের জন্মগ্রহণ উপলক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান। ফাউন্টেনকে ৩য় ও ৪র্থ ওডিআইয়ের জন্য সাময়িকভাবে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ নিযুক্ত করা হয়। তন্মধ্যে বাংলাদেশ ৩য় ওডিআইয়ে জয় পায় ও ৪র্থ ওডিআই বৃষ্টির জন্য পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়। এরফলে ফাউন্টেন প্রথম বেসবল কোচ হিসেবে যে-কোন আইসিসি পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচের মর্যাদা পান।[৩] পাশাপাশি প্রথম বেসবল কোচ হিসেবে যে-কোন আইসিসি পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত ক্রিকেট দলকে নির্দেশনা দেন (১৯৯৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।

ইংল্যান্ডে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সম্পাদনা

পাকিস্তান তিনটি খেলাসহ প্রস্তুতিমূলক খেলায় অংশ নেয়। প্রতিপক্ষীয় দলগুলো হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত। দূর্ভাগ্যজনকভাবে পাকিস্তান সবগুলো খেলায় পরাজিত হয় ও তাদেরকে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়। স্পষ্টতইঃ পাকিস্তানের ফিল্ডিংয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি স্বত্ত্বেও তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেখানে অবস্থান করেননি।

২০১৪ এশিয়ান গেমস সম্পাদনা

আইসিসি পূর্ণাঙ্গ সদস্যভূক্ত দলসহ আইসিসি সহযোগী ও আইসিসি অনুমতিপ্রাপ্ত ক্রিকেট দলে কোচের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। আয়ারল্যান্ড, বারমুদা, ত্রিনিদাদ ও কানাডায় তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।

সাম্প্রতিককালে ২০১৪ সালে ইনছনে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে স্বাগতিক দক্ষিণ কোরিয়া দলের প্রধান কোচ ছিলেন।[৪] ইওনহুই ক্রিকেট মাঠে টি২০ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। মালয়েশিয়া, চীন ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন খেলায় অংশ নেয় দক্ষিণ কোরিয়া দল। দলের ইতিহাসে খুব কম অভিজ্ঞতা স্বত্ত্বেও কোয়ার্টার ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আট উইকেট তুলে নেয়। ঐ খেলায় দক্ষিণ কোরিয়া পরাজিত হয়।.[৫]

টিভি, বেতার, সাময়িকীতে কোচিং শিক্ষা সম্পাদনা

ক্রিকেট এবং বেসবলে ফিল্ডিং ও কোচিং সম্পর্কীয় অনেক নিবন্ধ রচনা করেছেন ফাউন্টেন। ইন্টারনেটের কল্যাণে বিশ্বব্যাপী তা ছড়িয়ে পড়েছে। টেলিভিশন ও বেতার অনুষ্ঠানের মাধ্যমেও বিশাল পরিসরে বিশ্বের সকল অংশে তার অবদান উল্লেখ করা হচ্ছে। আইসিসি, ইসিবি, পিসিবি ও ডব্লিউআইসিবিসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন সংগঠনের জন্য কোচিং শিক্ষা উপকরণ নিয়ে গবেষণা, নির্মাণ ও উপস্থাপনা কর্মকাণ্ডে তিনি জড়িত রয়েছেন।[৬]

জানুয়ারি, ২০১৫ সালে মার্কিন নকশায় সাবেক পেশাদার বেসবল খেলোয়াড়দের সহায়তায় নির্মিত সুইচ হিট ২০ নামের একটি প্রকল্প চালু করেন। পরবর্তীতে এটি টি২০ ক্রিকেট খেলায় রূপান্তর ঘটান।[৭]

ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সালে আমেরিকান ক্রিকেট ফেডারেশন পরিচালিত সম্মানসূচক পরামর্শক সভায় যোগদানের জন্য ফাউন্টেনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।[৮]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Good move by Windies Board[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] Cricinfo retrieved 3 November 2009
  2. Gilchrist leads young Australians to spirited win Cricinfo retrieved 3 November 2009
  3. "Siddons leaves for Australia" Dhaka Mirror retrieved 04/04/2011
  4. "Fountain moulds Asian Games Host's"। SportAsia.com। [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. Peter, Rutherford। "Baseball switch a boon for South Korea"। Reuters। ১ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  6. Fountain, Julien (ডিসেম্বর ২০০৭)। "Tips From The Top: Become A Power Hitter"। The Wisden Cricketer। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১১-০২ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  7. Paul, Rhys। "T20 takes off:Baseball fuels cricket's rise" 
  8. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৬ নভেম্বর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা